এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে কৃতজ্ঞতা জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আবারও করতে চান নুসরাতের মা শিরীন আক্তার ও বাবা একে এম মুসা মানিক।
দ্রুত রায় কার্যকরের পাশাপাশি নিজেদের জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে শুক্রবার নুসরাতের মা শিরীন আক্তার বলেন, ‘যেদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করি, সেদিন তিনি আমাকে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, মেয়েটাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সম্ভব হয়নি। এর সুষ্ঠু বিচার হবে।’
১৬ জন আসামির ফাঁসির রায় যেন উচ্চ আদালতে বহাল থাকে এবং দ্রুত কার্যকর হয় সে প্রত্যাশা করেন তিনি।
নুসরাতের বড় ভাই ও মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান নোমান জানান, আদালতে রায়ের পর পর আসামিদের আপত্তিকর মন্তব্য আর হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন তারা। তবে ফেনীর পুলিশ সুপার নুরনবী স্যার বাড়িতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে তাদের পরিবারের সদস্যদের আতঙ্ক কমেছে।
নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান বলেন, আপুকে হারিয়ে যতটা কষ্ট পেয়েছি, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। রায় দ্রুত কার্যকর করে যেন মানুষরূপী হয়েনাদের ফাঁসিতে ঝুলানো হয়।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন নুসরাতের পরিবার। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার সঙ্গে দেখা করে মেয়েকে হত্যার বিচার চান তারা। প্রধানমন্ত্রীও তাদের দোষীদের বিচারের আশ্বাস দেন।
প্রসঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেয়া হয়। পরে ৬ এপ্রিল মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা কৌশলে পরীক্ষা কেন্দ্রের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে না নেয়ায় তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় বলে মৃত্যুশয্যায় বলে গেছেন নুসরাত। টানা ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে সে মারা যায়।
নুসরাত হত্যার ঘটনায় ৮ এপ্রিল নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন।