প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ পর্যায়ে বাংলাদেশ ও অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ব্যবসায়িক সুবিধা (জিএসপি+) ৩ বছরের পরিবর্তে আরও ৬ বছর বাড়ানোর জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মতো বাংলাদেশও অর্থনৈতিকভাবে চাপের মধ্যে থাকায় প্রধানমন্ত্রী এই সময়সীমা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
মোমেন ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশন (ইসি), ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকসহ প্রধানমন্ত্রীর সম্পৃক্ততার ফলাফল সম্পর্কে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম ২০২৩-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেন। ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে পৌঁছান তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণে ইইউ’র কাছে জিএসপি+ চান প্রধানমন্ত্রী
তিনি ইসির প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন, ইউরোপীয় ট্রেড কমিশনার ও ইসির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ভালদিস ডমব্রোভস্কিস, ইসির ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টের ইউরোপীয় কমিশনার জেনেজ লেনারসিক, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলা বিয়ার, ইআইবি প্রেসিডেন্ট ড. ওয়ার্নার হোয়ার এবং ইসির ইউরোপিয়ান কমিশনার ফর ইন্টারন্যাশনাল পার্টনারশিপ জুটা উর্পিলেনেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে ইইউভুক্ত দেশগুলোর কাছ থেকে বৃহত্তর বিনিয়োগ কামনা করেন।
এছাড়া ইইউ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য অতিরিক্ত ১০ দশমিক ৫ মিলিয়ন ইউরো দেওয়ার আশ্বাস দেন জেনেজ লেনার্কিক।
মোমেন বলেন, কিন্তু আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে কোনো ইস্যু আলোচনায় আসেনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও ইইউ নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ ও ইইউ'র মধ্যকার ৫০ বছরের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে পরবর্তী পর্যায়ে উন্নীত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ইইউ'র সঙ্গে একটি অংশীদারিত্ব চুক্তি সইয়ের জন্য আলোচনার সম্মতি দেন।
তিনি বলেন, গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী সকল অংশগ্রহণকারীর কাছ থেকে করতালি পেয়েছেন।
মোমেন বলেন, ইভেন্টের অংশগ্রহণকারীরা জোরে হাততালি দিয়ে প্রশংসা করেন, বিশেষত যখন তিনি যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করার আবেদন জানান।
এ প্রসঙ্গে ব্রিফিংয়ে উপস্থিত তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্লেনারি সেশনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন শেখ হাসিনা।’
এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের মাত্র দুই মাস আগে এ ধরনের বিশ্ব ফোরামে যোগদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ তাৎপর্যপূর্ণ যে বিশ্ব ও ইইউ নেতারা তার পাশে রয়েছেন।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: উন্নত ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ-অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী