শুক্রবার দুপুরে সিংগাইর উপজেলার উত্তর পারিল গ্রামে নির্মিতব্য গুচ্ছগ্রাম এলাকায় এই মানববন্ধন করে শহীদ রফিকের পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে শহীদ রফিকের ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমার বড় ভাই ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ। আমি, আমাদের ভাইসহ পরিবারের আটজন সদস্য মুক্তিযোদ্ধা। অথচ, আমাদের পরিবার সব সময় নানা ধরণের বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। বাড়ির সামনে শহীদ রফিকের নিজবাড়িতে শহীদ মিনার হওয়ার সময় বাধা দেয়া হয়েছিল। নানা প্রতিবন্ধকতা পেড়িয়ে সেখানে শহীদ মিনারটি নির্মিত হয়। এখন, শহীদ রফিকের বাড়িতে কিংবা সেই শহীদ মিনারে প্রবেশের পথে বাড়ির সামনে নির্মিত হতে চলেছে গুচ্ছ গ্রাম। শহীদ রফিকের বাড়ির সামনে এই গুচ্ছগ্রামটি নির্মিত হলে শহীদ রফিকের বাড়িটি ঢাকা পড়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এটি শহীদ রফিকের বাড়ির মর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসক বরাবর পত্র দিয়েছি। কিন্তু গুচ্ছগ্রাম নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এ ব্যাপারে আমি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে সেখানে গুচ্ছগ্রামের পরিবর্তে শহীদ রফিকের ভাস্কর্য কিংবা একটি শিশু পার্ক করা হয়।’
বলধরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মাজেদ খান বলেন, ‘আমি এই প্রকল্প সম্পর্কে আগে কিছুই জানতাম না। প্রকল্প পাস হওয়ার পর জানলাম, সেখানে একটি সরকারি আবাসন প্রকল্প হবে। আমাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেকে নিয়ে কাজটি বাস্তবায়নে একটি কমিটির করার নির্দেশনা দেন। সেই অনুযায়ী সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্যকে সভাপতি করে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি করা হয়। নির্মাণ কাজটি চলমান রয়েছে। মোট ৫৯ শতাংশ জমির মাঝখানে ১৬ ফুট দীর্ঘ সড়ক করার জন্য ১০ শতাংশ জমি বাদে বাকি ৪৯ শতাংশ জমির ওপর ১৫টি ঘর নির্মাণ করা হবে।’
চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে দুস্থ, অসহায় এবং ভূমিহীন ১৫টি পরিবার বাছাই করা হয়েছে। নির্মাণ শেষে তাদের মাঝে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হবে। ইতোমধ্যে জমির ওপর মাটি ভরাট কাজ চলছে। অল্প সময়ের মধ্যেই ঘরগুলি নির্মাণ সম্পন্ন হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুনা লায়লা বলেন, ‘আবাসন প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মাধ্যমে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাস্তবায়ন করছে। আমি এই উপজেলায় যোগদানের আগেই মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন ঘর নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, আবাসন প্রকল্প এলাকার বাইরে ইটের প্রাচীর নির্মাণ করা হবে যাতে শহীদ রফিকের বাড়ির মর্যাদা ক্ষুন্ন না হয়। এটা চলমান কাজ। এটার পরিবর্তন করে অন্য কিছু করা সুযোগ আছে কিনা তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জানতে হবে।’