মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় এসিড নিক্ষেপের পর সাবেক স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মো. নাঈম মল্লিক (৩১) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন মানিকগঞ্জের একটি আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মানিকগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
নিহত মোসা. সাথী আক্তার (২০) সাটুরিয়ার ধানকোড়া ইউনিয়নের কাটাখালী ফেরাজীপাড়ার আব্দুস সাত্তারের মেয়ে। তিনি ঢাকার ধামরাইয়ের একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. নাঈম মল্লিক (৩১) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা এলাকার মৃত নিজাম মল্লিকের ছেলে।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যা মামলায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড
মামলার এজহারপত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৯ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ঘরের জানালা দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী সাথী আক্তারকে এসিড নিক্ষেপ করেন নাঈম মল্লিক। এতে সাথী আক্তারের হাত-মুখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। পরে ওই দিনরাতেই গুরুতর আহত অবস্থায় সাথী আক্তারকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
এ ঘটনার ১২ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাথী আক্তারের মৃত্যু হয়।
পরে এ ঘটনায় নিহতের মামা লাল মিয়া বাদী হয়ে ২০২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সাটুরিয়া থানায় এসিড অপরাধ দমন আইনে নাঈম মল্লিককে আসামি করে মামলা করেন এবং পুলিশ আসামি নাঈম মল্লিককে গ্রেপ্তার করেন।
এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল নাঈম মল্লিককে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্শিট দাখিল করেন। এরপর আদালতের বিচারক উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আসামির উপস্থিতিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি মথুর নাথ সরকার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামি পক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন উচ্চ আদালতে আপিলের কথা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, পারিবারিক কলহ ও যৌতুকের দাবিতে শারীরিক নির্যাতনের জেরে ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর স্বামী নাঈম মল্লিককে তালাক দেন স্ত্রী সাথী আক্তার। এরপর তিনি সাটুরিয়ায় বাবার বাড়িতে থাকতেন তিনি।
আরও পড়ুন: নীতিমালা ছাড়া মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি কেন অবৈধ নয়, হাইকোর্টের রুল