যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন পাঁচ তারকা জাবির ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এ এম মামুন জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়।
প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর হাজার হাজার ছাত্রজনতা রাস্তায় নেমে বিজয় উল্লাস ও মিছিল করে। শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। জনতার কিছু অংশ শহরের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, শেখ রাসেলের ভাস্কর্য, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙচুর করে।
এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন পাঁচতারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনাল, বাড়ি, অফিস ও প্রেসে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা।
প্রায় ঘণ্টাখানেক পর হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়। বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার আটকে পড়া বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করা হয়।
পরে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে ১৪ তলা হোটেলটির বিভিন্ন তলা থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক মানুষ।
বিকাল পৌনে ৩টার দিকে শিক্ষার্থী ও নাগরিকরা যশোরে একটি বিজয় মিছিল বের করলে উত্তেজিত জনতা চিত্রা মোড়ের জাবির ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে ভাঙচুর শুরু করে। সোয়া ৪টার দিকে তারা হোটেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে এলে আটকে পড়া কয়েকজন ১৪ তলা থেকে সাহায্য চাইলে উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার ছাদে নামার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। তবে ছাদে থাকা এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় হেলিকপ্টারটি।
চাকলাদারের হোটেল ছাড়াও কাজীপাড়ার কাঁঠালতলায় তার বাসভবন, যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বাসভবন, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, শেখ রাসেলের ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়।
সন্ধ্যায় যশোরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাশেদ খান এক সংবাদ সম্মেলনে জাবির ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে অগ্নিসংযোগের নিন্দা জানান।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মিছিল হোটেলে পৌঁছানোর আগেই দুর্বৃত্তরা হামলা ও ভাঙচুর চালায়। সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান রাশেদ খান।