তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সাম্প্রতিক মন্তব্য সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক চমৎকার রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ট সম্পর্ক করতে চাই। সেই কারণে আপনারা দেখেছেন সাম্প্রতিক সময়ে সরকার যাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক যাতে আরও ঘনিষ্ট হয় সেজন্য পররাষ্ট্রসহ অন্যান্য বিষয়ে অনেক ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’
রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
এসময় তিনি বলেন, ‘আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ট সম্পর্ক চাই। একইসঙ্গে আমরা অন্যান্য দেশ; যেমন দক্ষিণ আমেরিকায় আমরা বাণিজ্য খুব একটা বাড়াতে পারিনি, তাই আমরা সেখানে বাণিজ্য বাড়াতে চাই।’
মন্ত্রী বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে আমরা শুধুমাত্র শ্রমিক রপ্তানি করে থাকি। মধ্যপ্রাচ্যে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে, ফ্যাশন সচেতনতা বেড়েছে, সেখানেও আমাদের বাণিজ্য বাড়ানো প্রয়োজন। আশিয়ানভুক্ত দেশগুলোতে আমাদের বাণিজ্য সম্ভবনা প্রচুর, সেখানেও আমরা বাণিজ্য বাড়াতে চাই। ওশেনিয়া অঞ্চলে আমাদের বাণিজ্য সম্ভবনা প্রচুর, সেখানেও আমরা বাড়াতে চাই, প্রধানমন্ত্রী সে কথাই বলেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আর যারা মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণা করার পর যারা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিয়ে টেনশনে আছে, তাদের টেনশন কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ওই কথা বলেছেন।’
আরও পড়ুন: অনলাইন নিউজ পোর্টাল পরিচালনায় শৃঙ্খলা আনার পরিকল্পনা করছে সরকার: তথ্যমন্ত্রী
এর আগে শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০ ঘণ্টার বিমান ভ্রমণে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে কেউ যুক্তরাষ্ট্রে না গেলে তাতে কিছু যায় আসে না।
তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীতে আরও অনেক মহাসাগর এবং অনেক মহাদেশ আছে। সেই মহাদেশের সঙ্গে মহাসাগর হয়ে আমরা যাতায়াত করব আর বন্ধুত্ব করব। আমাদের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী এবং আরও উন্নত ও চাঙ্গা হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ নিজের পায়ে চলবে, সরকার নিজের দেশকে গড়ে তুলবে। ‘আমরা কারও মুখাপেক্ষী হবো না, যারা আমাদের ভিসা দেবে না বা যারা আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।’
আরেক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী জানান, যারা বিভিন্ন সময় আগুন সন্ত্রাস করেছে তাদের এবং তাদের হুকুমদাতা ও অর্থদাতাদের তালিকা করা হচ্ছে। এসব তালিকা বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হবে।
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে নানা সমালোচনার বিসয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আলোচনা ও সমালোচনার মধ্যে যারা পেশাদার সমালোচক, কিছু প্রতিষ্ঠান আছে পেশাদার সমালোচক, যারা রাজনৈতিক সমালোচক তারা সবাই একটি কথা বলেছেন- এটি একটি ঘাটতি বাজেট। পেশাদার সমালোচকরা একটু খোঁজখবর নিয়ে বললে ভালো হতো। পেশাদার সমালোচকরা সমালোচনা করার আগে গবষেণা করেন এটা তাদের বক্তব্য। তবে কতটুকু গবেষণা হয় সেটা আমি জানি না।’
যারা বলেন ঘাটতি বাজেট তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ডিজিপির অনুপাতে ৫ দশমিক ২ শতাংশ ঘাটতি। ভারতে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৬ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। পৃথিবীর ১০০ থেকে ১২০ দেশ বাজেট দেয়। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের তুলনায় আমাদের ঘাটতি কিন্তু কম।’
যারা রাজনৈতিক সমালোচক, তারা বাজেট না পড়েই বক্তব্য দিয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটি বিষয় হচ্ছে এই বাজেটকে জনববান্ধব ও গরীববান্ধব এ জন্যই বলেছি, সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি উপকারভোগীর সংখ্যা ও বিভিন্ন ভাতাধারীর সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে; ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর কথা হয়েছে। সরাসরি দুই কোটি মানুষ সরকারের কাছ থেকে নানাভাবে অর্থসহ নানা সহায়তা পাবে। তাহলে কি এটি গরীববান্ধব বাজেট নয়?’
আরও পড়ুন: বাজেট গরিববান্ধব গণমুখী, সমালোচনা গৎবাঁধা: তথ্যমন্ত্রী