এদিকে, মঙ্গলবার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নেবুবুনিয়ায় ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে সাধারণ মানুষকে বেড়িবাঁধ সংস্কারে উদ্বুদ্ধ করেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল।
সকালে তিনি গাবুরা ইউনিয়নের নেবুবুনিয়ায় যান এবং ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজ নেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক নেবুবুনিয়ার ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ সংস্কারে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজে নামা এলাকাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘উপকূলের মানুষের প্রাণ শক্তিই সবচেয়ে বড় শক্তি। এই দুর্যোগকালে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক মনে কাজ করে রিং বাঁধ মেরামত করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
এ সময় জেলা প্রশাসক আগামী শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী টেকসই বাঁধ নির্মাণের কাজ করবে বলে স্থানীয়দের আশ্বস্ত করে বলেন, আপনাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হবে।
শ্যামনগরের গাবুরার ধসে পড়া বেড়িবাঁধ নির্মাণে গত দুইদিন ধরে স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে রাত-দিন কাজ করছে। দুয়েক দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তারা।
ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ পরিদর্শনকালে শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম আবুজর গিফারী, গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম, সাবেক চেয়ারম্যান শফিউল আযম লেলিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৯ আগস্ট প্রবল জোয়ারের চাপে কপোতাক্ষ নদের নেবুবুনিয়া অংশে ছয়টি পয়েন্টে ভেঙে যায়। এর মধ্যে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে পাঁচটি পয়েন্টে রিং বাঁধ দিতে সক্ষম হলেও একটি অংশে এখনো রিং বাঁধ দেয়া সম্ভব হয়নি। সেখানে স্থানীয় মানুষ গত তিনদিন ধরে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন।
এদিকে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ও শ্রিউলা ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। অসংখ্য মানুষ এলাকায় বসবাসের আশা ছেড়ে দিয়ে অন্যত্রে চলে যেতে শুরু করেছে। অনেকের বাড়ির চিহ্ন পর্যন্ত নেই। তারা নৌকা বা কলার ভেলায় বাড়ির সামান্য কিছু আসবাবপত্র সাথে নিয়ে এলাকা ছাড়ে চলে যাচ্ছেন।
প্রতাপনগর ইউনিয়নের ১৭ টি গ্রামের ৩৬ হাজার মানুষ এবং শ্রিউলা ইউনিয়নের ২২ গ্রামের ৩৭ হাজার মানুষ নদীর জোয়ারের পানিতে তাদের সব কিছু হারিয়ে ফেলেছে। জোয়ারের পানির কারণে সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।