সাম্প্রতিক দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ।
বিবৃতিতে লাগাতার হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি দেশের দিনমজুর ও গরীব পরিবারগুলোর বেঁচে থাকার অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি আহ্বানকারীদের এ বিষয়টি আমলে নেওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।
গতকাল শনিবার (১৮ নভেম্বর) মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ প্যানেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: গবেষণায় ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেলেন শাবিপ্রবির ৪ গবেষক
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৪ কে সামনে রেখে বিভিন্ন দাবিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার প্রশ্নে জনস্বীকৃত প্রধান বিরোধী দল ও তার সমমনা দলগুলো বিভিন্ন রকম আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। সাংবিধানিক কাঠামো অনুযায়ী ১৫ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে। আমরা মনে করি, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখা ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ছোট-বড় সকল রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল, ইতিবাচক ভূমিকা অনস্বীকার্য।
এতে আরও বলা হয়, ‘দেশের আপামর জনসাধারণ একটি অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমূখর পরিবেশে নির্বাচন দেখতে চায়। আমরা বৈধ সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে আহ্বান জানাই।’
আরও পড়ুন: জলজ খাদ্য, সম্পদ ও সম্প্রদায়ের কোভিড-১৯ এর প্রভাব নিরূপণে শাবিপ্রবির গবেষণা বিশ্বে মডেল
প্রত্যেকটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নির্বাচনই তার নিজের সাংবিধানিক কাঠামো ও রীতিনীতির আওতায় হওয়াই প্রাসঙ্গিক উল্লেখ করে তারা বলেন, উল্লেখিত নির্বাচন ইস্যুতে বিশ্বের অতীব প্রভাবশালী রাষ্ট্র ও তার প্রতিনিধি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে সরাসরি অনধিকার চর্চা করছেন এবং তাদের এহেন আচরণ নির্বাচন বিরোধী মহলকে উস্কে দিচ্ছে। কূটনৈতিক শিষ্ঠাচার বহিঃর্ভূত এ জাতীয় আচরণ থেকে সংশ্লিষ্টদের সরে আসার আহ্বান জানান তারা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তারা মনে করেন- গণতান্ত্রিকভাবে মত প্রকাশে বা দাবি আদায়ে কর্মসূচি পালনের গ্রহণযোগ্য অনেক পন্থা আছে। জনসমাবেশ, হরতাল বা অবরোধের নামে যাত্রীবাহী বা মালবাহী গাড়িতে বা কলকারখানা বা অন্যান্য স্থাপনায় অগ্নিসন্ত্রাস মানবিক সমাজে গ্রহণযোগ্য পন্থা হিসেবে কোনোভাবেই বিবেচিত হতে পারে না।
২৮ অক্টোবর বিরোধী দল ও তার সমমনা দলগুলোর মহাসমাবেশের ক্ষেত্র থেকে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর দায়িত্বপালনরত একজন সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভাঙচুর ও অগ্নিসন্ত্রাস চালানো, প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনে হামলা, জাতীয় গণমাধ্যম কর্মীদের পিটিয়ে আহত করার দুর্বৃত্তায়নের তীব্র নিন্দা জানান তারা। একইসঙ্গে এ জাতীয় ঘটনায় দোষী সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শাবিপ্রবির ১০ শিক্ষার্থী বহিষ্কার