সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) গবেষণায় বাংলাদেশে জলজ খাদ্য ব্যবস্থা, জলজ সম্পদ ও সম্প্রদায়ের কোভিড-১৯ এর প্রভাব নিরূপণ বিষয়টি উঠে এসেছে। গবেষণাটি শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বব্যাপী একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে যা যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ‘মেরিন পলিসি’ জার্নালে প্রকাশিত হয়। প্রকাশনার মাত্র এক বছরেরও কম সময়ে গবেষণাটি ১০০ এর অধিক গবেষণা প্রবন্ধে উদ্বৃত (সাইট) করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামসুল হক প্রধান ও ড. মো. আশরাফুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি গবেষক আতিকুর রহমান সানী গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালনা করেন।
গবেষণাপত্র সূত্রে জানা যায়, কোভিড-১৯ একটি বড় বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট, যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে মারাত্মক খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। যদিও বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য প্রভাবকে বিভিন্ন সেক্টরে কিভাবে সমাধান করা যায় তা আলোচনা করেছে, তবে এখানে জলজ সম্পদ ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যা এবং খাদ্য সংকট অনুপস্থিত ছিল।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
এ রকম এক বাস্তবতাকে মাথায় রেখে, এই গবেষণায় জলজ খাদ্য খাত এবং নির্ভরশীল জনসংখ্যার সঙ্গে ছোট আকারের মৎস্য চাষের ওপর এর প্রভাবকে সংযুক্ত করে বিদ্যমান পরিস্থিতি এবং কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জগুলো নিরূপণ করে তা সমাধানের ব্যবধান পূরণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।
পিএইচডি গবেষক আতিকুর রহমান সানী জানান, কোভিড-১৯ ওভারভিউ; একইসঙ্গে জলজ ইকোসিস্টেম, ক্ষুদ্র আকারের মৎস্য চাষ, জলজ খাদ্য উৎপাদন, চাহিদা ও সরবরাহের সঙ্গে এর সংযোগ বিশ্লেষণ করে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়।
তিনি জানান, কোভিড-১৯ এর প্রভাব কিভাবে অনুভূত হয়েছিল এবং কিভাবে তারা জলজ খাদ্য ব্যবস্থা এবং ছোট আকারের মৎস্য চাষকে প্রভাবিত করেছে সে বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জলজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল সম্প্রদায়গুলোর মতামতের ভিত্তিতে বিভিন্ন বিধ্বংসী প্রভাবের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে গবেষণাটিতে।
তিনি জানান, আকস্মিক অসুস্থতা, আয় কমে যাওয়া, উৎপাদন ও ইনপুট সংগ্রহ শুরু করতে জটিলতা, শ্রম সংকট, পরিবহন বিমূর্ততা, খাদ্য সরবরাহে জটিলতা, দুর্বল মূল্য শৃঙ্খল, নিম্ন ভোক্তা চাহিদা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, পাওনাদারের চাপকে প্রাথমিকভাবে প্রভাবিতকারী চালক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে অধ্যাপক ড. শামসুল হক প্রধান বলেন, জলজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিরা মনে করেন যে সরকারের গৃহীত ব্যবস্থাগুলো স্বাস্থ্য এবং খাদ্য নিরাপত্তা উভয় সুরক্ষার ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। বিকল্প আয় সৃষ্টির সুযোগ, রেশনিং ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ ও প্রেরণামূলক কর্মসূচি পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে পারে। তাই, গবেষণাটিতে জলজ খাদ্য খাত এবং ছোট আকারের মৎস্য চাষের ওপর মহামারির প্রভাব প্রশমিত করার জন্য নীতি নির্ধারকদের দ্বারা গৃহীত নীতিগুলোরও অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত