পঞ্চগড়
পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা আরও কমেছে
শীতপ্রবণ জেলা পঞ্চগড়ে এক অঙ্কে নেমে এসেছে তাপমাত্রা। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপামাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে তেঁতুলিয়ায়। গত তিনদিন ধরে এখানে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। তাপমাত্রা নিচে নেমে যাওয়ায় শীতের তীব্রতাও বাড়ছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ জানান, কুয়াশা কম হওয়ায় উত্তরের হিমেল হাওয়া জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত হিমেল বাতাসে কনকনে ঠাণ্ডায় দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল অসহায় খেটে খাওয়া মানুষ।
আরও পড়ুন: মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে ৩ জেলায়
ভোর থেকে সূর্য উঠা পর্যন্ত কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকায় দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক ও চাকুরিজীবীরা যাতায়াত করতে পারছে না। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে ঘনকুয়াশা বেশি দেখা যাচ্ছে। হাত পা মুখ শরীরে মোটা কাপড় পড়ে মোটরসাইকেলে যাতায়াত করছেন অনেকে। শহর বন্দর গ্রাম সর্বত্র খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে মানুষ। দিনের বেলাতেও যানবাহনগুলো চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে।
ফিরোজ আলম নামে এক কর্মচারী জানান, সময়মতো অফিসে না আসলেও হয় না। ফলে সকাল সকাল বাসা থেকে বের হতে হয়। ঘনকুয়াশার কারণে সকালে বাসা থেকে অফিসে আসতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
আসাদুল হক নামে এক ট্রাক চালক বলেন, ঘনকুয়াশায় গাড়ি চালাতে অনেক কষ্ট। ঘনকুয়াশায় দশ হাত দূরের কিছুই দেখা যায় না। সাবধানে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। ফলে সময়ও বেশি লাগছে।
সাথী আক্তার নামে এক গৃহিণী জানান, সকালে পানি নাড়তে পারিনা। পানিটা মনে হয় বরফ হয়ে থাকে। ঠাণ্ডা পানি লাগলে গা শিউরে উঠে।
জেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ব্রম্মতল মোমিনপাড়া এলাকার বাসিন্দা জহির আলী জানান, আমরা সীমান্তের মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপদে আছি। শহরেও যাওয়া হয় না। আমাদের এদিকে কেউ কম্বলও দিতে আসে না। আমরা বরাবরেই বঞ্চিত থাকি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, বর্তমান যে আবহাওয়া এই আবহাওয়ায় সকল ফসলেরই উপকার হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশা থাকছে। তারপর সূর্যের আলো থাকায় কোনো ফসলেরই ক্ষতি হচ্ছে না। সূর্যের আলো পাওয়ায় ফসলের উৎপাদনও বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত ৪০ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এরমধ্যে কম্বল ও সোয়েটার রয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগে যে সব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে সেগুলোও আমরা সমন্বয় করছি।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মান এখনও 'খুবই অস্বাস্থ্যকর'
মৃদু শৈত্যপ্রবাহ: পঞ্চগড়ে টানা ৩দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা
পঞ্চগড়ের বোদা পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার বিপুল ভোটে জয়
পঞ্চগড়ের বোদা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজাহার আলী বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ছয় হাজার ৭৪০ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পৌরসভা নির্বাচনে সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ১
বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় বোদা পৌরসভার ৯টি কেন্দ্রের ভোট গণনা শেষে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (কন্ট্রোল রুম) থেকে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলমগীর বেসরকারিভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করেন।
আজাহারের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বোদা উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আখতার হোসেন হাসান নারিকেল গাছ প্রতীকে পেয়েছেন তিন হাজার ৫৯৭ ভোট।
এ ছাড়া অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বোদা পৌর কমিটির সদস্য সচিব দিলরেজা ফেরদৌস চিন্ময় জগ প্রতীকে ৭৮৩ এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বোদা উপজেলা কমিটির মো. মওদুদ খান হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৭৩২ ভোট।
সংরক্ষিত আসনে নারী কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে (১ থেকে ৩নং ওয়ার্ড) ইসমতারা দ্বিতল বাস প্রতীকে দুই হাজার ২১৮, ২নং ওয়ার্ডে (৪ থেকে ৬নং ওয়ার্ড) মোছা. ঝর্না আনারস প্রতীকে দুই হাজার ২২৫ ও ৩নং ওয়ার্ডে (৭ থেকে ৯নং ওয়ার্ড) মোছা. সুলতানা বেগম চশমা প্রতীকে ১৭৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
সাধারণ কাউন্সিলর পদে- ১নং ওয়ার্ডে মো. আরিফুর রহমান আরিফ উট পাখি প্রতীকে এক হাজার ৯৭, ২নং ওয়ার্ডে আমজাদ হোসেন বাবলা টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে ৯৮৮, ৩নং ওয়ার্ডে মো. খাদেমুল ইসলাম টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে ৭৪১, ৪নং ওয়ার্ডে মো. জামাল উদ্দীন পাঞ্জাবি প্রতীকে ৫২৫, ৫নং ওয়ার্ডে আব্দুল মালেক টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে ৯১০, ৬নং ওয়ার্ডে আবু সাদাত মো. সায়েম রুবেল পাঞ্জাবি প্রতীকে ২৯৪, ৭ নং ওয়ার্ডে কাউসার আলম রুমি উটপাখি প্রতীকে ৬১১, ৮নং ওয়ার্ডে মো সৈয়দ আলী পাঞ্জাবি প্রতীকে ৪২৬ ও ৯নং ওয়ার্ডে মো. শাহজাহান আলম গাজর প্রতীকে ৫৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ৯টি কেন্দ্রের ৪৮টি বুথে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে একটানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
ইভিএমে ভোটগ্রহণে কিছুটা ধীরগতি থাকলেও ভোটাররা সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
এছাড়া নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে একজন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ও ৯টি কেন্দ্রে ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশ, র্যাব, আনসার ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বোদা পৌরসভার ১৪ হাজার ৫১২ জন ভোটারের মধ্যে নির্বাচনে ১১ হাজার ৮১২ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচনে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে।
আরও পড়ুন: পৌরসভা নির্বাচন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেয়র পদে লড়বেন ৬ জন
ভোলা পৌরসভা নির্বাচন: দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে নারীসহ আহত ২০
পঞ্চগড়ে তক্ষক উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫
পঞ্চগড়ে একটি তক্ষক উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) রাতে জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ সুকাতু প্রধান স্কুল মাঠ থেকে তক্ষকটি উদ্ধারের সময় পাচারকারী সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আটক ব্যক্তিরা হলো- ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পূর্ব শুখানপুকুরি এলাকার রেজাউল করিম (৪০), বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মনিপাড়া এলাকার দেবারু চন্দ্র (৩৫), পাঁচপীর ইউনিয়নের বৈরাতি সেনপাড়া এলাকার আফাজ উদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪০), পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলি ইউনিয়নের রাজারহাট এলাকার আব্দুল বাসেদের ছেলে আমজাদ হোসেন (৪৫) ও একই উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের ভাউলাগঞ্জ এলাকার তাফাজ্জল হোসেনের ছেলে মো. হাসান আলী (৩২)।
এছাড়া পুলিশের অভিযান চলাকালে অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় কলাবাগান থেকে অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার
এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাদের বিরুদ্ধে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশ। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জামাল হোসেন জানান, পাচারকারীরা পাচার করার জন্য তক্ষকটি বিক্রির চেষ্টা করছিল। এ ধরনের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রঞ্জু আহম্মেদসহ দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল ক্রেতা সেজে উপজেলার কালীগঞ্জ সুকাতু প্রধান স্কুল মাঠে উপস্থিত হয়।এইসময় তক্ষক পাচারকারী দলের সদস্যদের সঙ্গে কথা হলে তারা তক্ষকটির মূল্য তিন কোটি টাকা দাবি করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সদস্যরা তক্ষকটি দেখতে চাইলে পাচারকারী দলের সদস্যরা তক্ষকটি দেখান। তক্ষকটি দেখানো মাত্রই পুলিশ তাদের আটক করে। এই সময় পাচারকারী দলের এক সদস্য পালিয়ে গেলে শনিবার অভিযান চালিয়ে তাকেও আটক করা হয়।
তিনি আরও জানান, বিদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রটি খাগড়াছড়ি পার্বত্য এলাকা থেকে তক্ষকটি নিয়ে আসে। এটি কালো খাকি ও মেরুন চক্রাবক্রা রংয়ের। এটির লম্বা-৮.০২ ইঞ্চি ওজন ৪০ (চল্লিশ) গ্রাম।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রঞ্জু আহম্মেদ বলেন, তক্ষকসহ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে দেবীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এছাড়া উদ্ধার হওয়া তক্ষকটি বন বিভাগের কাছে হন্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি বলেন, আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এছাড়া পাচারকারী চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিখোঁজের ৫ দিন পর বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
হরিনাকুণ্ডুতে বাগান থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পঞ্চগড় ভ্রমণের উপায়
বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা যেন আকাশের বুকে ধূসর প্রকাণ্ড পাহাড়ের ওপর একগুচ্ছ রঙিন আঁচড়। কখনো তা শ্বেত-শুভ্র, কখনো সূর্য-কমলা। ২৮,১৬৯ ফুট উচু এই চূড়া মাথায় নিয়ে মহান হিমালয়ের অবস্থান নেপাল ও ভারতের সিকিম রাজ্যের মাঝামাঝি সীমান্তরেখায়। আর বাংলাদেশ থেকে এই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পঞ্চগড় ভ্রমণে যেতে হবে। দেশের সর্ব উত্তরের এ উপজেলাতেই রয়েছে দেশের অন্যতম বৃহত্তম স্থলবন্দর। চলুন, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পঞ্চগড় ভ্রমণের উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
পাঁচ গড়ের পঞ্চগড়
দেশের উত্তরাঞ্চলের শেষ বিভাগ রংপুরের জেলা পঞ্চগড়। ১৯৮৪ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি এটি বাংলাদেশের একটি জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। এর পূর্বে ফাঁমাগড় প্রশাসন, পশ্চিমে ও উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ ও দক্ষিণে ঠাকুরগাও ও দিনাজপুর জেলা।
জেলাটির নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে দুটি প্রধান কিংবদন্তি। প্রথম কিংবদন্তি বলে যে, পঞ্চগড়ের নামকরণ হয়েছে পুণ্ডু নগর রাজ্যের পঞ্চনগরী নামক একটি অঞ্চলের নামানুসারে।
আরও পড়ুন: শীতকালে বাংলাদেশে ভ্রমণের জনপ্রিয় ১০ স্থান
আর দ্বিতীয় মতানুসারে, এই তল্লাটে ছিলো ৫টি দুর্গ বা গড়। যেগুলোর নাম- ভিতরগড়, হোসাইনগড়, মীরগড়, দেবেনগড় ও রাজনগড়। এই ৫ গড় থেকেই পরবর্তীতে জায়গাটি পঞ্চগড় নামে পরিচিতি পায়; যার অর্থ ৫ দুর্গ।
পঞ্চগড় থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার উপায়
পঞ্চগড়ের কোন জায়গা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়
পঞ্চগড়ের অন্তর্গত তেঁতুলিয়া দেশের সর্ব উত্তরের উপজেলা। এই সদরের প্রাণকেন্দ্রে আছে একটি ঐতিহাসিক ডাকবাংলো। অনেক আগের এই স্থাপনাটির নির্মাণ কৌশল অনেকটা বিলেতি ভিক্টোরিয়ান ধাঁচের। কথিত আছে- এটি নির্মাণ করেছিলেন কুচবিহারের রাজা।
জেলা পরিষদ কর্তৃক পরিচালিত ডাকবাংলোটির পাশে তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে গড়ে তোলা হয়েছে সুন্দর একটি পিকনিক স্পট। দুটি স্থাপনা একসাথে দারুণ এক দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। সৌন্দর্যমণ্ডিত এ জায়গাটি দেখার জন্য ভূমি থেকে প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিটার উচুতে উঠতে হবে। এর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে স্রোতস্বিনী মহানন্দা। নদীর ওপারে ভারত আর এপারে সুউচ্চ গড়ের ওপর এই ডাকবাংলো ও পিকনিক স্পটটি। এই ডাকবাংলোর বারান্দা থেকেই দেখা যায় দূরের দিগন্তরেখায় ভেসে আছে কাঞ্চনজঙ্ঘা।
আরও পড়ুন: নারীর একাকী ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ১০ শহর
এছাড়া তেঁতুলিয়ার অন্যান্য জায়গার মধ্যে বাংলাবান্ধা, বাইপাস, ভজনপুর করতোয়া সেতু, ভিতরগড় থেকেও দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘাকে।
পঞ্চগড় থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সেরা সময়
সাধারণত শীতকালে দূরের মেঘমুক্ত আকাশে যেন ভেসে থাকতে দেখা যায় তুষারশুভ্র পাহাড়ের চূড়া। রোদের আলোয় চিকচিক করতে থাকে কাঞ্চনজঙ্ঘার সেই মোহনীয় শোভা উপভোগ করার জন্য শীতই সবচেয়ে সেরা সময়। পাহাড় চূড়ার প্রাকৃতিক দৃশ্যটি সারা দিনের ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রুপ ধারণ করে। তাই বছরের যে কোন সময় না গিয়ে অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়টাতে যাওয়া উত্তম। এই সময়টাতে আকাশ একদম পরিষ্কার থাকে। মেঘের সঙ্গে বরফে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘার লুকোচুরি খেলার কোন উপায় থাকে না।
এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানের ফাঁকা জায়গায় দাড়ালে খুব ভোরে মেঘ ও কুয়াশামুক্ত নীল আকাশ জুড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোরম দৃশ্য পর্যটকদের খালি চোখেই এঁকে দেয় বিস্ময়ের চিহ্ন।
আরও পড়ুন: ইউএস-বাংলার বিমানে ভ্রমণ করলে হোটেল ফ্রি
ঢাকা থেকে পঞ্চগড় যাওয়ার উপায়
বাস ও ট্রেন; ঢাকা থেকে কেবল এই দুই মাধ্যমে পৌছানো যায় পঞ্চগড় জেলায়। ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনাল, শ্যামলী ও মিরপুর থেকে পঞ্চগড়ের বাস পাওয়া যায়। নন-এসি বাসে খরচ নিতে পারে মাথাপিছু ৯০০ থেকে ১১০০ টাকা, আর এসি বাস ভাড়া পড়তে পারে ১৩০০ থেকে ১৯০০ টাকা।
পঞ্চগড় নেমে লোকাল বাসে করে যেতে হবে তেঁতুলিয়ায়। এ পথে সারাদিনি চলাচল করে এই বাসগুলো। বাসের ভাড়া পড়তে পারে জনপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়া যাওয়ার পথে এশিয়ান হাইওয়ে পড়ে। ভাগ্য ভালো হলে এ পথ দিয়ে যাওয়ার সময় দূরের আকাশে চোখে পড়তে পারে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য।
ঢাকা থেকে সরাসরি তেঁতুলিয়ারও বাস আছে। এগুলোর ভাড়া জনপ্রতি ১১৫০ টাকা পড়তে পারে।
আরও পড়ুন: সমুদ্রে স্নানের সময় সতর্ক থাকতে করণীয়
ট্রেনে যেতে হলে ঢাকার কমলাপুর থেকে সরাসরি পঞ্চগড় ট্রেন আছে। শ্রেণীভেদে ট্রেন ভাড়া জনপ্রতি সর্বনিম্ন ৫৫০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৯৪২ টাকা হতে পারে।
পঞ্চগড় নেমে এখানকার কেন্দ্রীয় বাসস্টেশন ও চৌরঙ্গী মোড়ে পাওয়া যাবে প্রাইভেট কার ও মাইক্রো। এগুলোতে করে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যাবে। মাইক্রো ও প্রাইভেট কার রিজার্ভ করতে আনুমানিক কমপক্ষে ২,০০০ থেকে শুরু করে ৩,০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া লাগতে পারে।
পঞ্চগড় ভ্রমণে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
তেতুলিয়া উপজেলায় আবাসিক হোটেলের নন-এসি রুম ভাড়া ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। এসি ডাবল বেডের ভাড়া পড়তে পারে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। মহানন্দা নদীর তীরের ডাকবাংলোতে থাকা যেতে পারে। তবে তার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট থেকে অনুমতি নিয়ে নিতে হবে। এই ডাকবাংলোতে কক্ষ প্রতি ভাড়া ৪০০ টাকা। এছাড়া আছে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের জেলা পরিষদের ডাকবাংলো এবং বন বিভাগের রেস্টহাউস। এগুলোতেও থাকার জন্য অনুমতির প্রয়োজন হবে।
আরও পড়ুন: পাহাড় ভ্রমণে দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা
আর পঞ্চগড়ে এসে থাকতে চাইলে এখানে আছে সাধারণ মানের আবাসিক হোটেল। এখানে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় আছে নন-এসি কক্ষ এবং ১,০০০ থেকে ১,৫০০ টাকায় পাওয়া যাবে এসি কক্ষ।
পঞ্চগড়ের বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী খাবার রয়েছে, যেগুলো এখনো গ্রামগুলোতে রান্না হয়ে থাকে। অবশ্য এগুলোর অধিকাংশই এখন বিলুপ্তির পথে। খাবারগুলোর মধ্যে ডিম ভূনা, তেঁতুলিয়া উপজেলায় হালকা, শীদলের ভর্তা, পাটা শাকের খাটা, কাউনের ভাত, সজির মুড়ার ছ্যাকা ও মোড়ত লাভা শাকের পেলকা অন্যতম।
পঞ্চগড়ের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানসমূহ
কাঞ্চনজঙ্ঘার মোহনীয় দৃশ্য ছাড়াও পঞ্চগড় ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক নিদর্শনের অপূর্ব উপচার সাজিয়ে রেখেছে। এগুলোর মধ্যে মহারাজার দিঘী, চা বাগান, ভিতরগড়, শাহী মসজিদ, মিরগড়, জিরো পয়েন্ট, রক্স মিউজিয়াম, এবং বারো আউলিয়া মাজার অন্যতম।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদী ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
পরিশিষ্ট
বাংলাদেশ থেকে সুদূর কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সৌন্দর্য দর্শনে পঞ্চগড় ভ্রমণে পাওয়া যাবে এক অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পের অভিজ্ঞতা। ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর নানা শ্রেণীর পর্যটকদের আসা-যাওয়ার ফলে এ অঞ্চলটিতে তৈরি হয়েছে পর্যটন শিল্পের সমৃদ্ধির সুযোগ। হাজার বছরের চমকপ্রদ ইতিহাস-ঐতিহ্য, পাথর ও চা শিল্প; সব মিলিয়ে ভ্রমণের জন্য এক পরিপূর্ণ এলাকা। শুধু প্রয়োজন অবকাঠামোগত উন্নয়নের। বিশেষ করে সরকারি উদ্যোগে এখানে পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হলে, এই ছোট্ট উপজেলাই পরিণত হতে পারে রাজস্ব আয়ের একটি কার্যকর উৎসে।
কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে হিমালয় পর্বতমালার পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় তেঁতুলিয়া-পঞ্চগড় মহাসড়কের ভজনপুর নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মো.মোস্তাফিজুর রহমান (৩০) ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের দক্ষিণ হাজীপাড়া মহল্লার মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও দেড় বছরের এক সন্তানকে রেখে গেছেন।
ঠাকুরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কামাল হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: বরগুনায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১
তিনি জানান, মোস্তাফিজুর রহমান মোটরসাইকেলে করে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে ঠাকুরগাঁও ফিরছিলেন। এসময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এসময় ট্রাকের নীচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, কোনো অভিযোগ না থাকায় তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার বাদ মাগরিব পৌর শহরের হাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তার প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে লাশ নিহতের গ্রামের বাড়ি বগুড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: মীরসরাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
বগুড়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
পঞ্চগড় সীমান্ত থেকে কষ্টিপাথরের বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার
পঞ্চগড়ের নালাগঞ্জ সীমান্ত থেকে কষ্টিপাথরের একটি বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার করেছে বর্ডার গাড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শুক্রবার মধ্যরাতে সীমান্তের মেইন পিলার থেকে টোকাপাড়া বিজিবি ক্যাম্পের টহলরত সদস্যরা মূর্তিটি উদ্ধার করে। তবে এসময় চোরাকারবারীদের কাউকে আটক করতে পারেনি বিজিবি।
পরে শনিবার রাতে মূর্তিটি পরীক্ষার জন্য ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নে পাঠানো হয়েছিল।
মূর্তিটি কষ্টিপাথরের বলে নিশ্চিত করেছেন বিজিবি। এছাড়া পাচারের উদ্দেশ্যে মূর্তিটি সীমান্ত এলাকায় আনা হয়েছে বলে ধারণা করছেন বিজিবি।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় কষ্টিপাথরের ২টি শ্রীকৃষ্ণ মূর্তি উদ্ধার
টোকাপাড়া বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আসাদুজ্জামান হাকিমের পরিকল্পনায় জেলার সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের নালাগঞ্জ সীমান্তের ৫০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে ৯৫ দশমিক ৮০০ কেজি ওজনের একটি কষ্টিপাথরের মূর্তি। যার দৈঘ্য ৪৬ ইঞ্চি প্রস্থ ২০ ইঞ্চি উপরের অংশে পুরুত্ব দুই ইঞ্চি মাঝের অংশে ছয় ইঞ্চি এবং নিচের অংশে পাঁচ দশমিক ছয় ইঞ্চি। এটি মালিকবিহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এর সিজার মূল্য ৯৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
বিজিবির টহলদলের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারিরা মূর্তিটি ফেলে পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আসাদুজ্জামান হাকিম বলেন, মূল্যবান এই কষ্টিপাথরের মূর্তিটির আনুমানিক মূল্য কোটি টাকারও বেশি। দুর্লভ এই মূর্তিটি কোন জাদুঘরে রাখা যেতে পারে।
সীমান্তে বিজিবির অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে কষ্টিপাথরের ১১ মূর্তি দিল বিজিবি
নীলফামারীতে কোটি টাকা মূল্যের কষ্টিপাথর উদ্ধার
পঞ্চগড়ে দিনে গরম, রাতে শীতল আবহাওয়া
পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। বিশেষ করে গভীর রাত থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত শীত শীত লাগছে। আবার সকাল ৮টার পর প্রখর রোদের তেজে গরম আবহাওয়া বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছাদিত ছিল গোটা জেলা। ফসলে মাঠ, রাস্তা-ঘাটসহ ঘাসের ডগায় কুয়াশা চিক চিক করছে। ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। বাইরে বেরিয়ে আসা মানুষ গরম কাপড় পরিধান করেছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সপ্তাহজুড়ে তাপমাত্রা ১৭ থেকে ২২ ডিগ্রিতে উঠানামা করলেও বৃহস্পতিবার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৮ দশমিক তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপামাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
এসময় দিনের বেলা সর্বোচ্চ ২৮ থেকে ৩১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যান চলাচল সচল
অন্যদিকে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম ভাব বেড়ে যাচ্ছে। এসময় হালকা কাপড় পরিধান করতে হচ্ছে। গরমের কারণে অফিস বাসাসহ সর্বত্রই ফ্যান চালাতে হচ্ছে।
শহরের ইসলামবাগ এলাকার রফিকুল হাসান বলেন, শেষ রাতে ঠান্ডা লাগছে। এসময় কাঁথা কম্বল গায়ে চাপাতে হয়। আবার দিনের বেলা গরমের কারণে ফ্যান চালাতে হয়।
শহরের ডোকরোপাড়া এলাকার শিক্ষক কামরুজ্জামান কামু বলেন, রাতে শীত আর দিনে গরম আবহাওয়ার বিরাজ করায় বিভিন্ন রোগ বালাই শুরু হয়েছে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এস এম মাহবুব উল আলম বলেন, এসময় বিভিন্ন ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বিশেষ করে অ্যাজমা, হাঁপানি জাতীয় রোগ বেশি হয়।
পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের ভূগোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গোলাম কিবরিয়া মুকুল বলেন, দিনে ও রাতের তাপমাত্রায় পার্থক্য বেশি থাকায় আবহাওয়ার এমন বিচিত্র রূপ আমরা দেখতে পাচ্ছি। সন্ধ্যার পর তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় রাতে কুয়াশা নামছে। একারণে শীত অনুভূত হচ্ছে। অন্যদিকে সকালে সূর্যের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় দিনে বেশ গরম পড়ছে।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে আবহাওয়ার এমন তারতম্য হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, রাতে কুয়াশা পড়ায় রাত থেকে সকাল পর্যন্ত আবহাওয়া ঠান্ডা থাকছে। আবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। ফলে গরম আবহাওয়া বিরাজ করছে।
তবে অক্টোবরের শেষে তাপমাত্রা আরও কমে যাবে। নভেম্বরের শুরু থেকেই পুরোপুরি শীত নামবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’
সিত্রাং: মোংলা-পায়রায় ৭ নম্বর, চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ৬ নম্বর সতর্ক সংকেত
পঞ্চগড়ে সড়কে স্বামীর সামনে মাদরাসা শিক্ষিকার মৃত্যু
পঞ্চগড়ে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে এক মাদরাসা শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া-পঞ্চগড় মহাসড়কের ভজনপুর ডিগ্রি কলেজের সামনে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত শিক্ষিকা আনোয়ারা খানম আনু (৪০) একই উপজেলার শালবাহান বাজার এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে ৪০৭ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জনের প্রাণহানি: আরএসএফ
তিনি ওই এলাকার জহির রায়হানের স্ত্রী এবং শালবাহান দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষিকা।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আনু জহির রায়হানের মোটরসাইকেলযোগে দিনাজপুর যাচ্ছিলেন। তেঁতুলিয়া-পঞ্চগড় মহাসড়কের ভজনপুর ডিগ্রি কলেজের সামনে একটি কুকুরের সঙ্গে মোটরসাইকেলটির সংঘর্ষ হলে পিছনে বসে থাকা আনু সড়কে ছিটকে পড়েন।
স্থানীয়রা গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ ও তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে এক মাদরাসা শিক্ষিকা নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়া সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশি পর্যটক নিহত
বেনাপোলে সড়ক দুর্ঘটনায় ভারতীয় ট্রাকচালক নিহত
করতোয়ায় নৌকাডুবি: তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে ধুম্রজাল
পঞ্চগড়ের বোদায় করতোয়া নদীতে নৌকা ডুবির ঘটনায় জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত দল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। রবিবার রাতে তদন্ত দলের প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর কুমার রায় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলামের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সোমবার জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম প্রতিবেদন জমা দেয়ার বিষয়টি জানান।
এদিকে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের জানানো হয়নি।
গণমাধ্যমকর্মীরা তদন্ত প্রতিবেদনের কপি চাইলে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, আপনাদের (সাংবাদিকদের) দেয়া যাবে না, এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে ভয়াবহ নৌদুর্ঘটনার জন্য খেয়াঘাটের ইজারাদারকে দায়ী করা, মাঝির অদক্ষতা, ধর্মীয় অনুভূতি, অসচেতনতার কারণ উল্লেখ করে বলেন ভৌগলিক পরিস্থিতি ও নদীকেন্দ্রিক জীবন জীবিকাকে উল্লেখ করে ১১৮ পৃষ্টার তদন্ত প্রতিবেদনে বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে যেন এমন নৌদূর্ঘটনা না ঘটে এজন্য তদন্ত কমিটি পাঁচ দফা সুপারিশ পেশ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় নৌকাডুবি: ৬ষ্ঠ দিনের মত চলছে উদ্ধার অভিযান
এদিকে পুরো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করাসহ গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি না জানানোয় ভুক্তভোগীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে এ নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা ও প্রকৃত দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না তা নিয়ে আশংকাও সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি প্রকৃত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হোক। কি আছে এই তদন্ত প্রতিবেদনে তা জানতে না পারায় সর্বমহলে এ নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
অবশ্য তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দীপঙ্কর কুমার রায় জানান, এলাকার ভৌগলিক পরিস্থিতি এবং নদী কেন্দ্রীক জীবন জীবিকাকে উল্লেখ করে ১১৮ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তদন্তে সংশ্লিষ্ট সকলের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রতিবেদনটি মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশ প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসেরও তদন্ত টিম করা হয়েছে। তিনটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা হওয়ার পর মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ যে নির্দেশনা দেবে সে অনুযায়ী পরবর্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাঝি (নৌকা চালক) জানান, নৌকাটি ছোট ছিল এবং পুরনো ছিল। ওই নৌকায় সবোর্চ্চ ৫০ জনের বেশি যাত্রী তোলা উচিত হয়নি। অতিরিক্ত যাত্রী উত্তোলন করায় চোখের সামনে নৌকাডুবে যাত্রীরা মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় নৌকাডুবি: দু’দিনে অর্ধশত লাশ উদ্ধার
বধেশ্বরী মন্দির কমিটির সভাপতি নীতিশ কুমার বকশী ওরফে মুকুল বকশী জানান, অনুষ্ঠানের আগে ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্ট কমিটির সকলকে ৬টি নৌকা ঘাটে রাখার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ইজারাদার তা করেননি। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও বাকি নৌকাগুলো না আসায় একটিতেই উঠে পার হওয়ার চেষ্টা করেন পুণ্যার্থীরা। দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘাটে সজাগ থাকলে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
ঘাটে উপস্থিত পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও গ্রাম পুলিশের সদস্যদের আরও কঠোর হয়ে অতিরিক্ত যাত্রী উঠতে বাধা না দেয়ারও সমালোচনা করেন নিতিশ কুমার।
মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু আনছার মো. রেজাউল করিম (শামীম) জানান, নৌকাডুবির ব্যাপারে জেলা পরিষদ এবং ইজারাদার দায় এড়াতে পারেন না। ঘাটের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এখানে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ বা আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
সমাজকর্মী আব্দুল্লাহ আল জুবেরী জানান, মহালয়ার মত বড় অনুষ্ঠানের জন্য যেমন সমন্বয় দরকার হয়, আয়োজনকারি কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনসহ সকল সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে তেমন কোন সমন্বয় ছিলো না। একারণে কয়েক মিনিটের ব্যাবধানে শুধু মাত্র দায়িত্বশীল পদাধিকারীক ব্যক্তিদের উদাসীনতা অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে পরিবারগুলো ভগ্নাংশে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এদেশে মানুষ যখন কোথাও বিচার পায় না তখন সে আদালতে যায় এই আশায়, যে সেখানে সে বিচার পাবে। আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে কত বিষয়েই ব্যাখ্যা দাবী করেন। এই ৬৯ জন লাশ ৩ জন অতল জলে হারিয়ে যাওয়া মানুষ কি আদালতের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়ার মতো পর্যাপ্ত মনে হবে না?
সমাজকর্মী আব্দুল্লাহ আল জুবেরী জানান, মহালয়ার মত বড় অনুষ্ঠানের জন্য যেমন সমন্বয় দরকার হয়, আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনসহ সকল সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে তেমন কোন সমন্বয় ছিলো না। একারণে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে শুধুমাত্র দায়িত্বশীল পদাধিকারীক ব্যক্তিদের উদাসীনতা অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে পরিবারগুলো ভগ্নাংশে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় ট্রলারডুবি: নিহত বেড়ে ২৫
তিনি আরও জানান, এদেশে মানুষ যখন কোথাও বিচার পায় না তখন সে আদালতে যায় এই আশায়, যে সেখানে সে বিচার পাবে। আদালত স্বপ্রনোদিত হয়ে কত বিষয়েই ব্যাখ্যা দাবী করেন। এই ৬৯ জন লাশ ৩ জন অতল জলে হারিয়ে যাওয়া মানুষ কি আদালতের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়ার মতো পর্যাপ্ত মনে হবে না?
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সানিউল কাদের জানান, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের হস্তান্তরিত ফেরীঘাটের ইজারা ও ব্যবস্থাপনা এবং উদ্ভুত আয় বন্টন সম্পর্কে নীতিমালা ২০০৩ অনুযায়ী জানা এসব ঘাট পরিচালনা করা হচ্ছে। নদী বন্দরগুলোর জন্য বন্দর পরিদর্শক বা ফিটনেস দেখভালের জনবল রয়েছে। কিন্তু বর্তমান যে আইন রয়েছে তাতে এখানে এমন কোন নীতিমালা নেই। এজন্য প্রয়োজন আইনী কাঠামো। এটা হলে ঘাটগুলো কিভাবে চলবে। নৌযানগুলো কেমন হবে, কোন যন্ত্রের সাহায্যে চলবে, সবোর্চ্চ যাত্রী কত হবে, জনবল কাঠামো কেমন হবে এমন নানা বিষয় নির্দেশনা থাকতো। থাকতো ঘাট পরিদর্শক বা ফিটনেস পরীক্ষক। তাহলে নৌকার ফিটনেস যাচাই করা সম্ভব হতো।
জেলা পরিষদের প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাট জানান, বধেশ্বরী মন্দিরে মহালয়ার পূজা উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি কমিটি করে দেয়া হয়। তারা অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও উপস্থিত ছিলেন। তারা মাঝিকে নির্দেশ দিলে এত যাত্রী উঠত না। এত মৃত্যুর ঘটনাও ঘটত না। ওই নৌদুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর কুমার রায় এই কমিটির আহ্বায়ক।
তিনি জানান, তদন্তের পর দায় কার তা বোঝা যাবে।
এদিকে পঞ্চগড়ের নৌকাডুবির ঘটনায় দশম দিনেও সীমিত আকারে উদ্ধার অভিযান চলেছে। কিন্তু এখনো নিখোঁজ কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বোদা উপজেলা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার শাহজাহান আলী জানান, অভিযানে এখন পর্যন্ত কোন অগ্রগতি নাই। মাটি এবং বালির নিচে লাশগুলো চাপা পড়ে যেতে পারে।
এ জন্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিন সকাল এবং বিকালে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
করতোয়ায় নৌকাডুবি: জেলায় অনাড়ম্বরভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনের সিদ্ধান্ত
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার আউলিয়ার ঘাট এলাকায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় নিহতদের প্রতি সম্মান জানিয়ে পঞ্চগড় জেলা হিন্দু বৌদ্ধ ক্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, পঞ্চগড় জেলা শাখা যৌথভাবে এবারের দুর্গোৎসব অনাড়ম্বরভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শুক্রবার পঞ্চগড় জেলা হিন্দু বৌদ্ধ ক্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, পঞ্চগড় জেলা শাখার পক্ষ থেকে দেয়া পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জীবধন বর্মন ও সাধারণ সম্পাদক বিপেন চন্দ্র রায় জানান, পঞ্চগড় জেলা হিন্দু বৌদ্ধ ক্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, পঞ্চগড় জেলা শাখা যৌথভাবে সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় নৌকাডুবি: দু’দিনে অর্ধশত লাশ উদ্ধার
তিনি জানান, সভায় যেসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে সেগুলো হলো-পূজা চলাকালীন কালোব্যাজ ধারণ, সপ্তমী তিথিতে প্রত্যেক পূজা মণ্ডপে প্রয়াত ব্যক্তিদের আত্মার শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা, প্রত্যেক পূজামণ্ডপ থেকে আদায়কৃত অর্থ প্রয়াত ব্যক্তিদের বাড়িতে গিয়ে সমবেদনাসহ আর্থিক সহায়তা প্রদান।
এছাড়া সরকারের কাছে প্রয়াত ব্যক্তিদের নামে ঘটনাস্থলে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছে।
পঞ্চগড় জেলা হিন্দু বৌদ্ধ ক্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল রায় জানান, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, পঞ্চগড় জেলা শাখার সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমরাও একমত হয়েছি। এ সিদ্ধান্তের কথা জেলার ২৯৬টি মণ্ডপ কমিটিকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
সভার শুরুতে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় নৌকাডুবি: নিহত বেড়ে ৬৯
করতোয়ায় নৌকাডুবি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৮