স্বাস্থ্যবিধি
কোভিড-১৯: জীবিকা ও জনস্বাস্থ্যের ভারসাম্য রক্ষার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও জীবিকা নির্বাহের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা দরকার বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্বাহের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা উচিত। আমরা মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলতে পারি না। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অপরিহার্য।'
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করুন: প্রধানমন্ত্রী
বৃহস্পতিবার দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বিসিএস কর্মকর্তাদের ‘৭১তম বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
তিনি দেশের জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আহ্বান জানান।
কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গের বিষয়ে তিনি বলেন, 'করোনাভাইরাস মহামারি আবার দেখা দিয়েছে এবং এখন আমরা তারই আঘাত দেখতে পাচ্ছি। যদিও আমরা তাৎক্ষণিক কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি, জনগণকে বাঁচাতে আমাদের আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং আমরা তা করব।'
মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে এবং অন্যকে সুরক্ষিত করার জন্য সকলকে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
নতুন ক্যাডারদের প্রধানমন্ত্রী তাদের কর্মক্ষেত্রে, যেখানে তারা যোগদান করতে চলেছে, প্রত্যেকে যেন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সে বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: জনসমাগম এড়িয়ে চলা ও মাস্ক পরিধানের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব শাইখ ইউসুফ হারুন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বিপিএটিসি রেক্টর রাকিব হোসেন ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ কোর্সের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও বগুড়ায় ছয়টি কেন্দ্রে ৮৯ জন নারীসহ মোট ৩০৭ জন নতুন ক্যাডার এই কোর্সটিতে অংশ নেয় এবং তারা সকলেই সফলভাবে প্রশিক্ষণ শেষ করে।
৩১ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ১৮ জন পুরুষ কর্মকর্তা এবং ১৩ জন নারী কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ কোর্সে কৃতিত্বের জন্য সার্টিফিকেট অর্জন করেন।
আরও পড়ুন: জনসমাগমে বিধিনিষেধসহ কোভিডের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ১৮ দফা নির্দেশনা
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে প্রতিমন্ত্রী প্রশিক্ষণ চলাকালীন অসামান্য দক্ষতার জন্য প্রথম তিন অংশগ্রহণকারীকে সার্টিফিকেট তুলে দেন।
অন্যান্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অংশগ্রহণকারীরা ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
গণপরিবহন চালু হওয়ায় ঢাকার রাস্তায় যানজট, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির অবনতি
দেশব্যাপী সাত দিনের লকডাউনের তৃতীয় দিন বুধবার গণপরিবহন পুনরায় চালু হওয়ায় ঢাকার রাস্তায় যানজট দেখা গেছে।
যাত্রীদের দুর্ভোগের কারণে সরকার প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়।
আরও পড়ুন: লকডাউনের তৃতীয় দিন: আন্তনগর বাস চলছে
এই শিথিলতা গণপরিবহনের অভাবে গত দু'দিন ধরে ভোগান্তিতে থাকা যাত্রী, বিক্রেতা, ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতাদের জন্য এক ধরণের স্বস্তি এনেছে।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী শফিকুল ইসলাম বলেন, 'এটিই ভালো! এর ফলে আমরা সহজেই চলাচল করতে পারছি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এখনও একটি সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। লোকজন এখনও তা মানছে না।'
তবে, তিনি বলেন, গণপরিবহন আবার চালু হওয়ার সাথে সাথে ঢাকায় যানবাহনের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম হলেও আগের ট্র্যাফিক বিশৃঙ্খলা ও শব্দদূষণ ফিরে এসেছে।
রাস্তায় গণপরিবহন তুলনামূলকভাবে কম হলেও মগবাজার, বনানী ও গুলিস্তান এলাকায় যানজট দেখা যায়।
আরও পড়ুন: লকডাউনে সিটি এলাকায় সকাল সন্ধ্যা গণপরিবহন চলবে
যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) আবু সালেহ শেখ রাসেল বলেন, 'আন্তঃনগর বাস বুধবার সকালে পুনরায় কার্যক্রম শুরু করে তবে বাসের সংখ্যা কম। যাত্রী কম থাকায় মালিকরা খুব সীমিত সংখ্যক বাস বের করেছেন।'
ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (মহাখালী) আসাদুজ্জামান বলেন, 'নগরীতে সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে সকাল থেকেই বাস চলাচল করছে। সরকার রাইড শেয়ারিং সার্ভিস বন্ধ করায় এখনও যারা এই সার্ভিস দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করছি।'
তিনি বলেন, 'লোকজন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করছে কিনা তাও আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।'
ইউএনবির সাথে আলাপকালে আলিফ পরিবহনের ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান বলেন, 'আমরা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে ৬০ শতাংশ বাস চালাচ্ছি। অন্যসময়, চারটি রুটে ২০০টি বাস চলাচল করে। যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় এবং দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় আমরা এখন ৬০ শতাংশ বাস রাস্তায় নামিয়েছি।'
আরও পড়ুন: জনগণের উদাসীনতার মাঝেই দেশে লকডাউনের ২য় দিন শুরু
তবে বাস সার্ভিস পুনরায় চালু করায় রাজধানীর অফিসগামী যাত্রী ও অন্যান্য যাত্রীদের দুর্ভোগ স্পষ্টতই হ্রাস পেয়েছে।
বুধবার কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা নতুন করে বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধি ও লকডাউন মেনে চলার ক্ষেত্রে জনগণের অনীহা দেখা গেছে।
ইউএনবি সংবাদদাতা মালিবাগ এলাকায় রেললাইনের পাশে কাঁচাবাজারে সাধারণ মানুষের ভিড় দেখেন যেন ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এই কাঁচাবাজারে সবজি বিক্রেতা সজল বলেন, 'আজ অনেক ক্রেতা আসায় ব্যবসা আবার আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে।'
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হওয়ায় কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকর না করা হলে করোনভাইরাসের সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে।
বেশিরভাগ হাসপাতাল রোগীতে পরিপূর্ণ থাকায় অনেক রোগী ভর্তি হতে বা অক্সিজেনের জন্য এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে যেতে থাকেন।
আরও পড়ুন: দেশব্যাপী চলমান লকডাউনকে 'অবৈজ্ঞানিক ও আংশিক' মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা
প্রাইভেটকার, রিকশা ও অটোরিকশা, মাইক্রোবাস এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং অনেক রাইড শেয়ারিং সার্ভিস আগের দু'দিনের মতো রাস্তায় চলাচল করতে দেখা গেছে।
সরকারি নির্দেশনা অনুসারে শহর জুড়ে শপিংমল বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট দোকান খোলা দেখা গেছে।
দেশের করোনা পরিস্থিতি
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ ৫৯ হাজার ২৭৮ জনে পৌঁছেছে।
এছাড়া সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে আরও ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ হাজার ৪৪৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯: দেশে শনাক্তে নতুন রেকর্ড, মৃত্যু আরও ৬৩
২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২২.০২ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৩ হাজার ২৫৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬১ হাজার ৬৩৯ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ১৯ শতাংশ।
স্বাস্থ্যবিধি না মানলে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে না: মন্ত্রী
স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চললে কোনভাবেই করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘মহাখালীর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মার্কেট হাসপাতালে নতুন ২০০টি আইসিইউ বেড করা হচ্ছে যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বিরল। এর পাশাপাশি এখানে আরও ১ হাজার নতুন আইসোলেশন বেডও হচ্ছে। তবে বেড সংখ্যা যতই বৃদ্ধি করা হোক মানুষ যদি স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলে তাহলে কোনকিছুতেই করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে না।’
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুতে নতুন রেকর্ড
মঙ্গলবার মহাখালীতে ডিএনসিসি আইসোলেশন সেন্টার পরিদর্শনে তিনি এসব এই কথা বলেন।
মঙ্গলবার বিকালে ডিএনসিসি মার্কেট হাসপাতালের করোনা আইসিইউ বেড ও আইসোলেশন বেডের প্রস্তুতকরণ ও কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএনসিসি মার্কেট হাসপাতালটি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে উদ্বোধন করা সম্ভব হতে পারে বলে এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় আরও ৪৭ জন করোনায় আক্রান্ত
জাহিদ মালেক বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার লকডাউন ঘোষণা করেছে। এর আগেপ্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ১৮টি জনগুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এখন করোনা প্রতিরোধে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সর্বত্র সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ চলছে। অথচ দেশের কোথাও কোথাও লকডাউন তুলে নিতে আন্দোলন করা হচ্ছে।
‘এই মুহূর্তে সরকারের লকডাউন জরুরি ছিল তাই সরকার দিয়েছে। যখন লকডাউন তুলে নেয়ার প্রয়োজন হবে সরকার সঠিক সময়েই সেই সিদ্ধান্ত নিবে। এখন এসব সরকারি নির্দেশনা মেনে না চললে আগামীতে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যু উভয়ই নিয়ন্ত্রণহীন হতে পারে।'
আরও পড়ুন: হাসপাতালের শয্যা বাড়ানোর বিকল্প নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের নতুন সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশিদ আলম, হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার এটিওএম নাসির উদ্দিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন।
জনগণের উদাসীনতার মাঝেই দেশে লকডাউনের ২য় দিন শুরু
রাস্তায় বিপুল সংখ্যক ব্যক্তিগত যানবাহন, রিকশা এবং অটোরিকশা চলাচল এবং কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে জনগণের অবাধে চলাফেরার মতো উদাসীনতার মাঝেই দেশে চলমান সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের দ্বিতীয় দিন শুরু হয়েছে।
তবে, ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় দোকানপাট বন্ধ থাকায় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আগের দিনের মতোই অফিসগামী কর্মীদের কর্মস্থলে পৌঁছাতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
পাশাপাশি, রাজধানীতে প্রাইভেট কার, রিকশা ও অটোরিকশা, মাইক্রোবাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং অনেক রাইড শেয়ারিং সার্ভিসকে যথারীতি চলাচল করতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: কুয়াকাটায় লকডাউন প্রচারণায় হামলার শিকার ইউএনও
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শপিংমল বন্ধ থাকলেও অনেক এলাকায় দোকানপাট খোলা দেখা গেছে। লকডাউন সত্ত্বেও রাজধানীর অনেক এলাকা ঘুরে অলি-গলিতে দোকানপাট খোলা দেখতে পান ইউএনবি-র সংবাদদাতা।
স্বাস্থ্যবিধি অগ্রাহ্য করে মাস্ক ছাড়াই চলাচলকারীদের মাস্ক বিতরণ করতে দেখা গেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে মাস্ক বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) ইফতেখারুল ইসলাম।
লকডাউনের প্রথম দিনে আন্দোলন ও হামলা
বাংলাদেশ সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের প্রথম দিন সোমবার বিক্ষোভ ও হামলার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশব্যাপী চলমান লকডাউনকে 'অবৈজ্ঞানিক ও আংশিক' মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা
নিউমার্কেট এলাকায় লকডাউনে প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা করে দোকান খোলা রাখার অনুমতি দেয়ার দাবি জানিয়ে কয়েকশ দোকান মালিক ও কর্মচারী বিক্ষোভ করে।
এছাড়া, সোমবার রাতে ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলায় এক সরকারি কর্মচারীর অতর্কিত হামলায় এক ব্যক্তি আহত হলে স্থানীয়রা বেশ কয়েকটি অফিস এবং ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়।
উপজেলা পরিষদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন, থানা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়, উপজেলা কৃষি অফিস, এবং সাব-রেজিস্ট্রি অফিসসহ বেশ কিছু ভবনে ভাঙচুর করা হয় এবং আগুন দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: সেই আলোচিত ইউএনও এবারও লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এটিই বাংলাদেশের প্রথম আনুষ্ঠানিক লকডাউন। গত বছরের ২৬ মার্চ সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউন কার্যকর করার পরিবর্তে পরিবহন বন্ধের পাশাপাশি সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৭ হাজার ২১৩ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ ৫১ হাজার ৬৫২ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: লকডাউন মানা হচ্ছে না কেরানীগঞ্জে, গণপরিবহনসহ সকল যান চলছে
এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে রেকর্ড আরও ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ হাজার ৩৮৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে গত বছরের ৩০ জুন ৬৪ জন মারা যান, যা একদিনে মৃতের সংখ্যায় এতদিন সর্বোচ্চ ছিল।
দেশব্যাপী চলমান লকডাউনকে 'অবৈজ্ঞানিক ও আংশিক' মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধের আশায় দেশব্যাপী জারি করা ৭ দিনের লকডাউনকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা 'অবৈজ্ঞানিক ও আংশিক' মনে করছেন যেখান থেকে কোনো ইতিবাচক ফল পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তারা বলছেন, লকডাউনের প্রথম দিনে কাঁচাবাজার এবং অন্যান্য স্থানে জনগণের ব্যাপক সমাগম, চলাচল ও জনসমাবেশ দ্বারাই বোঝা যায় জনগণ এই 'আংশিক' শাটডাউনটিকে গুরুত্বের সাথে নেয়নি যেহেতু একই সাথে অফিস, কারখানা এবং অমর একুশে গ্রন্থমেলা খোলা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সেই আলোচিত ইউএনও এবারও লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে
বিশেষজ্ঞরা জরুরি পরিষেবা ব্যতীত সকল অফিস, কল-কারখানা, বইমেলা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ১৪ দিনের একটি সম্পূর্ণ লকডাউন কার্যকর করার এবং কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে এটিকে কঠোরভাবে প্রয়োগ করার জন্য জনপ্রতিনিধিদের পরামর্শ দিয়েছেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার উভয়েরই ঊর্ধ্বগতি কমিয়ে আনার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সোমবার সকাল থেকে এক সপ্তাহব্যাপী দেশব্যাপী লকডাউন চলছে।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এটিই বাংলাদেশের প্রথম আনুষ্ঠানিক লকডাউন। গত বছরের ২৬ মার্চ সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউন কার্যকর করার পরিবর্তে পরিবহন বন্ধের পাশাপাশি সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল।
আংশিক লকডাউন নিরর্থক
ইউএনবির সাথে আলাপকালে ডব্লিউএইচও-র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রাক্তন উপদেষ্টা প্রফেসর মুজাহেরুল হক বলেন, 'সরকার কল-কারখানা, অফিস এবং এমনকি বইমেলা খোলা রাখায় আমরা এটিকে লকডাউন বলতে পারি না। এটি জনসাধারণের চলাচলকে সীমাবদ্ধ করার বৈজ্ঞানিক উপায় নয়।'
আরও পড়ুন: দেশে ৭ দিনের লকডাউনে যানজট কম রাস্তাঘাটে
তিনি বলেন, লকডাউন মানে পুরোপুরি মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা। "লকডাউন মানে সবকিছু বন্ধ হয়ে থাকবে। কেবল কয়েকটি জরুরি পরিষেবা, ওষুধের দোকান এবং নির্দিষ্ট কিছু বাজার যেখান থেকে জনগণ খাবার কিনতে পারবে তা খোলা থাকতে পারে।"
মুজাহেরুল বলেন, সরকারের জারি করা ৭ দিনের এই নিষেধাজ্ঞা লকডাউনের নীতি ও সংজ্ঞার সাথে মেলে না। "এটি একটি অবৈজ্ঞানিক, অপরিকল্পিত এবং আংশিক লকডাউন। এটি ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জাতিকে সাফল্য অর্জনে সহায়তা করবে না।"
জাতীয় প্রযুক্তি উপদেষ্টা কমিটির সদস্য বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট প্রফেসর নজরুল ইসলাম বলেন, লকডাউন হলো জরুরি সেবা ব্যতীত সবকিছু বন্ধ করে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার সর্বজনস্বীকৃত ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, 'মনে হচ্ছে সরকার অনেক কিছুই খোলা রেখে আংশিক লকডাউন কার্যকর করেছে। সারাদেশে নয়, কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে একটি আংশিক লকডাউন কার্যকর করা যেতে পারে। এটি কেবল শক্তি অপচয়, অর্থের অপচয়। এর মধ্য দিয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা যাবে না।'
আরও পড়ুন: লকডাউন মানা হচ্ছে না কেরানীগঞ্জে, গণপরিবহনসহ সকল যান চলছে
অধ্যাপক নজরুল আরও বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য কোনো আইন ও এর কার্যকর প্রয়োগ না থাকায় জনগণ লকডাউনটিকে গুরুত্বের সাথে নেয়নি।
লকডাউন ১৪ দিনের হওয়া উচিত
হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এম এইচ চৌধুরী (লেনিন) বলেছেন, ভাইরাসের সংক্রমণকে কমিয়ে আনতে কমপক্ষে ১৪ দিনের সম্পূর্ণ একটি লকডাউন কার্যকর করা উচিত।
তিনি জানান, মানবদেহে করোনাভাইরাসের ইনকিউবেশনের সময়সীমা ২ সপ্তাহ। তাই ভাইরাসের সংক্রমণ চক্রটি ৭ দিনের লকডাউন দিয়ে ভেঙে ফেলা যায় না।
লেনিন বলেন, জনগণ প্রথম দিনেই সরকারের জারি করা ৭ দিনের এই নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন করেছে। কেননা তাদের মধ্যে এই শাটডাউন নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই।
আরও পড়ুন: করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি: আরও ৭ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত, মৃত্যু ৫২
'আমি মনে করি সরকারের অবিলম্বে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। আইন প্রয়োগকারীদের তদারকি বাড়াতে হবে যাতে কোনো জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে আসতে না পারে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করা উচিত যাতে মানুষ অকারণে বাইরে ঘোরার সাহস না করতে পারে। নতুবা, আমরা এই শিথিল লকডাউন থেকে কোন ফলই পাবো না।'
জনপ্রতিনিধিদের জড়িত করা
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম জানান, প্রতিটি স্তরের মানুষের বিশেষত জন প্রতিনিধিদের সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততা ব্যতীত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর পক্ষে এককভাবে এই লকডাউন বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। 'তবে লকডাউন বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধিদের জড়িত করার জন্য সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।'
তিনি বলেন, লকডাউন কার্যকর করতে এবং জনসাধারণের অপ্রয়োজনীয় চলাচল বন্ধ করতে প্রতিটি এলাকায় একটি মনিটরিং টিম গঠন করা উচিত।
আরও পড়ুন: করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু: প্রধানমন্ত্রী
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, এই লকডাউনে কঠোরভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া দরিদ্রদের পাশে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন কীভাবে দাঁড়াতে পারে সে বিষয়ে সরকারকে নির্দেশনা দেয়া উচিত। "বাড়িতে খাবার না থাকলে লোকেরা বেরিয়ে আসবেই।"
এছাড়াও এই বিশেষজ্ঞ বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে জনগণ কীভাবে খাবার ও প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করবে সে সম্পর্কেও একটি স্পষ্ট নির্দেশনা থাকা উচিত।
'বড় ভুল'
আটটি বিভাগের জন্য গঠিত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেছেন, লকডাউনের আগে জনগণকে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে সরকার ভুল করেছে। 'লকডাউনের আগে ভাইরাস বহনকারী অনেক লোক বিভিন্ন স্থানে গিয়েছিল যা সারা দেশে কেবল ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়বে।'
তিনি বলেন, লোকদের তাদের গ্রামের বাড়িতে যেতে না দেয়ার জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। 'যে যেখানে অবস্থান করছেন সেখানে থাকার জন্যই এটি প্রয়োগ করা হয়েছে যাতে ভাইরাসটি ছড়িয়ে না পড়ে।'
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, 'লকডাউনের সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগেই সরকারের উচিত ছিল পরিবহন পরিষেবা বন্ধ করা। ফলে লোকেরা ঢাকা ছাড়তে পারত না।'
লকডাউন বাস্তবায়ন
ডা. ফয়সাল বলেন, 'লকডাউন কার্যকর করার আগে সরকার ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। ১০টি মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু তা করা হয়নি এবং শেষ পর্যন্ত সরকার লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিল।'
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে সোমবার থেকে মাঠে থাকার ঘোষণা ডিএসসিসি মেয়রের
তিনি বলেন, সরকার লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা না করেই কার্যকর করেছে। "কিছু সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে লকডাউনটিকে আরও শক্তিশালী করার সুযোগ এখনও রয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, 'দোকান ও শপিংমল এবং পরিবহন ছাড়া সবকিছুর খোলা রেখে এই লকডাউনের যৌক্তিকতা কী? বইমেলা অকারণে খোলা। এই মেলা এখনই বন্ধ করা উচিত। প্রয়োজনে এটি ভার্চুয়ালি চালানো যেতে পারে। মেলা ও অফিস খোলা রেখে জনগণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।'
দেশে ৭ দিনের লকডাউনে যানজট কম রাস্তাঘাটে
কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে সোমবার দেশে সাত দিনের লকডাউন শুরু হওয়ায় সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকার বেশিরভাগ রাস্তা নির্জন ছিল।
সকালে রাস্তায় অল্প সংখ্যক প্রাইভেট কার, রিকশা ও অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করুন: প্রধানমন্ত্রী
সরকার, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসগুলো 'সীমিত জনবল' দ্বারা পরিচালনার অনুমতি দেয়ায় অনেককে তাদের অফিসে পৌঁছানোর জন্য রিকশা ও অটোরিকশা ভাড়া করতে দেখা গেছে।
মতিঝিলে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত এবং রামপুরার বাসিন্দা রেহানা বেগম বলছিলেন, 'আজ আমার অফিসে পৌঁছাতে অনেক বেশি ভাড়ায় একটি অটোরিকশা নিতে হয়েছে এবং প্রতিদিন এত পরিমাণ ব্যয় করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।'
তবে লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দোকান ও শপিংমলগুলো বন্ধ ছিল।
বিভিন্ন এলাকায় কাঁচাবাজারগুলো খোলা দেখা গেলেও ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল।
লকডাউন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দিনমজুর হারিস মিয়া বলেন, 'আগের বছরের কষ্টের দিনগুলো আমাদের জীবনে আবার ফিরে এসেছে, আমাদের নিয়ে ভাবার কেউ নেই। লকডাউন চলতে থাকলে ক্ষুধা আমাদের শেষ করে দেবে।'
আরও পড়ুন: সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত-জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সদস্যদের দৃঢ় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জনসাধারণের অপ্রয়োজনীয় চলাচল এবং সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করে ভাইরাসের সংক্রমণ কমিয়ে আনা এই লকডাউনের মূল লক্ষ্য।
প্রাণঘাতী করোনভাইরাস মোকাবিলায় এটি বাংলাদেশের প্রথম আনুষ্ঠানিক লকডাউন। গত বছরের ২৬ মার্চ সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউন কার্যকর করার পরিবর্তে পরিবহন বন্ধের পাশাপাশি সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল।
গত কয়েক দিন যাবত দেশে করোনায় আক্রান্তের পরিমাণ রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় রবিবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সারাদেশে সপ্তাহব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করেন।
এই সময় বেশিরভাগ অফিস এবং কারখানা খোলা থাকবে, তবে কর্মচারীরা স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশিকা বজায় রেখে পালা করে কাজ করবেন।
গত সপ্তাহে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় ১৮ দফা নির্দেশনাও জারি করে।
বিধি-নিষেধসমূহ
রবিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ করোনা পরিস্থিতি উন্নতির জন্য এবং লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য জনগণের চলাচল ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডের উপর ৭ দিনের জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
গেজেট অনুসারে, সব ধরনের গণপরিবহন (সড়ক, নৌ, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে সোমবার থেকে মাঠে থাকার ঘোষণা ডিএসসিসি মেয়রের
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ লকডাউনের সময় অভ্যন্তরীণ বিমান ও যাত্রীবাহী ট্রেন স্থগিত করার এবং পরিষেবা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জরুরী পরিষেবা, পণ্য বহন, উত্পাদন, বিদেশী যাত্রী এবং ফেরত আসা প্রবাসীরা এই বিধি-নিষেধের আওতার বাইরে থাকবে।
আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন-ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। তারা শুধু প্রয়োজনীয় জনবলকে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা-নেওয়া করতে পারবে।
শিল্প-কারখানা ও নির্মাণ কার্যাদি চালু থাকবে। শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেয়া করতে হবে।
এছাড়া, বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএকে শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের চিকিত্সা সেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় একদিনে রেকর্ড ৭ হাজারের বেশি শনাক্ত, মৃত্যু আরও ৫৩
জনগণের চলাচল সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সীমিত থাকবে এবং অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না।
স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র খোলা জায়গা থেকে কেনাবেচা করা যাবে যা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করবে।
অন্যদিকে, সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ব্যংকিং কার্যক্রম চলবে। এর বাইরে কোনো সময়ে লেনদেন করা যাবে না।
এছাড়াও সশস্ত্র বাহিনী উপযুক্ত স্থানে মাঠ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
জেলা এবং মাঠ প্রশাসন একত্রে নির্দেশগুলো কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা টহল জোরদার করবে এবং যারা এই নির্দেশাবলী লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি
রবিবার সকাল পর্যন্ত দেশে নতুন করে কোভিড-১৯ এ ৭ হাজার ৮৭ জন আক্রান্ত হয় যা গত বছরের মার্চ মাসের পর সর্বোচ্চ।
এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৪ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া, ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় ৫৩ জনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে মোট মৃত্যু ৯ হাজার ২৬৬ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবারের ১.৪৬ শতাংশ থেকে রবিবার মৃত্যুর হার কমে দাঁড়িয়েছে ১.৪৫ শতাংশে।
আরও পড়ুন: হাসপাতালের শয্যা বাড়ানোর বিকল্প নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জানুয়ারিতে মারা যায় ৫৬৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ২৮১ জন এবং মার্চে ৬৩৮ জন।
এই পরিস্থিতিতে সরকার ক্রমবর্ধমান রোগীদের সংখ্যা মোকাবেলায় কোভিড-মনোনীত হাসপাতাল এবং আইসিইউ বেডের সংখ্যা বাড়াচ্ছে।
বগুড়ায় আরও ৪৭ জন করোনায় আক্রান্ত
বগুড়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত সংখ্যা ১০ হাজার ৪৯৪ জনে পৌঁছেছে।
রবিবার জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: মহামারি করোনায় ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লায় আক্রান্ত ৩৮, মৃত্যু ২
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০৬টি নমুনার ফলাফলে নতুন করে ৪৭ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৬ জন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সদরে ৩৯ জন, শাজাহানপুর ৩ জন, আদমদীঘি ২ জন এবং বাকি ৩ জন শেরপুর, কাহালু ও শিবগঞ্জের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করুন: প্রধানমন্ত্রী
মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানান, জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৪৯৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ৮৪৭ জন, মৃত্যু হয়েছে ২৬৪ জন এবং চিকিৎসাধীন আছেন ৩৮৩ জন।
এদিকে করোনা সংক্রমণ রোধে বগুড়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেছে প্রশাসন।
রবিবার দুপুরে শহরের প্রবেশমুখ মাটিডালী মোড়ে অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ইউএনও) আজিজুর রহমান।
আরও পড়ুন: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ: ১৮ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে সরকার
এ সময় শহরে চলাচলকারী সকল যানবাহন ও যাত্রীদের মাস্ক পরিধানসহ সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান ইউএনও।
মাস্ক না পরায় এ সময় ৪ জনকে ১ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সাথে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে পথচারীসহ যানবাহন চালকদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করা হয়।
করোনায় হচ্ছে না এবারের বৈসাবি উৎসব, পাহাড়ে নেই কোনো আনুষ্ঠানিকতা
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবার পাহাড়ের প্রধান ও সামাজিক উৎসব বৈসাবি পালন করা হচ্ছে না।
মহামারির কারণে বিজু, সাংগ্রাইং, বৈসুক, বিষু, বিহু ও বাংলা নববর্ষ-২০২১ উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে এসব অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে।
আগামী ১২ এপ্রিল পাহাড়ের বৈসাবি উৎসবের প্রথম দিন। আর আগামী ১৩ এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিনকে বলা হয় ‘ফুল বিজু’।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে বৈসাবি উৎসব শুরু
উৎসবের প্রথম দিনে চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমারা বন থেকে ফুল আর নিমপাতা সংগ্রহ করে সেই ফুল দিয়ে ঘর সাজায় ও মা গঙ্গার উদ্দেশে নদীতে ফুল ভাসায়। কিন্তু এবার মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে কোথাও কোনো আনুষ্ঠানিকতা নেই।
বিজু, বৈসু, সাংগ্রাইং, বিষু-২০২১ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইন্টু মনি চাকমা বলেন, ‘দেশব্যাপী করোনা মহামারির কারণে সরকারি নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের সব অনুষ্ঠান স্থগিত রাখছি। জনসমাবেশ হবে এমন অনুষ্ঠান বাদ দেয়া হয়েছে। তবে প্রকাশনা বের করা হবে।’
আরও পড়ুন: মুজিব শতবর্ষ: গাইবান্ধায় বিশ্বের ‘দীর্ঘতম’ আলপনা উৎসব
ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুরেশ ত্রিপুরা বলেন, ‘সরকারি নিদের্শনার পরিপ্রেক্ষিতে ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মা গঙ্গার উদ্দেশে নদীতে ফুল ভাসানোসহ সব ধরনের অনুষ্ঠান স্থগিত করেছি। গত বছরের ন্যায় এ বছরও কোনো উৎসব আনুষ্ঠানিকভাবে করা হবে না।’
বৈসাবির উৎসবকে কেন্দ্র করে এই দিনটিকে ঘিরে আনন্দ উৎসবে মেতে থাকে পাহাড়ের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ। সরকারের নির্দেশনা মানতে ও নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বৈসাবি উৎসব থেকে বিরত রয়েছেন পাহাড়ের মানুষ। বেঁচে থাকলে আগামী বছর এই বিজু উৎসব আনন্দ ঘন পরিবেশে পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন পাহাড়ে বসবাসরত সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন: ঘরে বসে ভিন্ন আঙ্গিকে পহেলা বৈশাখ উদযাপন
আর বৈশ্বিক এই মহামারি থেকে বিশ্ব সুস্থ হয়ে আগামী বছর বৈসাবি উৎসব আরও আনন্দঘন পরিবেশে পালন করতে পারে তার জন্য পাহাড়ের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ যার যার অবস্থান থেকে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা জানাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে রাঙ্গামাটিতে বসবাসরত ১৩ নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর উদ্যোগে বিজু, সাংগ্রাইং, বৈসুক, বিষু, বিহু, জল উৎসব ও বাংলা নববর্ষ উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করা হয়। এ উৎসব পাহাড়ের সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে প্রতিবছর ৯ এপ্রিল থেকে উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে র্যালিসহ বিভিন্ন ধরনের পাহাড়ি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
রবিবারের এমবিবিএসের চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষা স্থগিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সকল মেডিকেল কলেজের রবিবারের নির্ধারিত এমবিবিএস চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
দেশে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: সারাদেশে সোমবার থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন: কাদের
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পরীক্ষার পরবর্তী সময়সূচী পরে জানানো হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, প্রথম ও দ্বিতীয় পেশাগত এমবিবিএস মে-২০২০ এবং নভেম্বর-২০২০ মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা সকল স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে হবে।
চাঁদপুরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বিয়ের আয়োজন, লাখ টাকা জরিমানা
চাঁদপুরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বিয়ের আয়োজন করায় আয়োজকদের এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুক্রবার বিকালে শহরের হাজী মহসীন রোডস্থ রসুইঘর চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও পার্টি সেন্টার এবং বিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজককে এ জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উজ্জ্বল হোসাইন।
আরও পড়ুন: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ: ১৮ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে সরকার
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ইতোমধ্যে করোনা প্রতিরোধে চাঁদপুরে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সকাল থেকেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সকালে শহরের কয়েকটি পার্টি সেন্টারে গিয়ে সতর্কতামূলক প্রচারণা করে শেষবারের মত সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘বিকাল ৩টার দিকে এসে রসুইঘর নামে পার্টি সেন্টারে গিয়ে দেখলাম তারা কোন কিছুই মানছে না। প্রায় ২ শতাধিক লোকজন নিয়ে বিয়ের খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন চলছে। তাই এই পার্টি সেন্টারের মালিক ও অনুষ্ঠান আয়োজনকারীকে উভয়কে ৫০ হাজার টাকা করে মোট এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।’
আরও পড়ুন: করোনা: অনির্দিষ্টকালের জন্য মিরপুর ও রংপুর চিড়িয়াখানা বন্ধ
রসুইঘর চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ও পার্টি সেন্টারের মালিক মিলন মিয়া ও অনুষ্ঠান আয়োজনকারী ফরিদগঞ্জ উপজেলার দায়ছাড়া গ্রামের শিক্ষক আব্দুল লতিফকে এ জরিমানা করা হয়।
এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে শহরের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় নয় জনকে এক হাজার ৯০০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা করেন চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ও জেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যরা।