ভারত
ভারতে কোভিড হাসপাতালে আগুনে ১৮ জনের মৃত্যু
ভারতের গুজরাটে শনিবার ভোরে কোভিড হাসপাতালে আগুন লেগে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এমন সময় এই ঘটনাটি ঘটল যখন ভারতে টানা নয়দিন তিন লাখের বেশি করোনা রোগী সংক্রমণের পর গত ২৪ ঘণ্টায় চার লাখের বেশি সংক্রমিত হয়েছে।
রাজ্যের রাজধানী আহমেদাবাদ থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে ভরুচ-জামবুসা হাইওয়ের কাছে ওই হাসপাতালে মোট ৭০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন বলে জানা গেছে।
আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহত ১৮ জনের মধ্যে ১৬ জন কোভিড-১৯ রোগী যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অন্য দু'জন হাসপাতালের কর্মী।
আরও পড়ুন: দিল্লির হাসপাতালে ‘অক্সিজেন সংকটে’ ২৫ করোনা রোগীর মৃত্যু
ভরুচ জেলা প্রশাসক এমডি মোদিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আগুনে হাসপাতালের দুই কর্মচারীসহ মোট ১৮ জন মারা গেছেন। বাকি ৫০ জন রোগীকে নিরাপদে পাশের একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।’
স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে হাসপাতাল থেকে মৃতদেহগুলো বের করে আনার ফুটেজ দেখা গেছে।
এই ঘটনায় নিহতদের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাগদাদে করোনা হাসপাতালে ভয়াবহ আগুন
গত দেড় মাসে ভারতে এটি দ্বিতীয় ভয়াবহ হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা।
২৬ মার্চ ভারতের মুম্বাইয়ের একটি করোনাভাইরাস হাসপাতালে প্রচণ্ড আগুনে প্রায় ১০ কোভিড রোগী মারা গিয়েছিল।
বেনাপোল দিয়ে বাংলাদেশে ফিরলেন আরও ১০৫ জন
ভারত থেকে শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ১০৫ বাংলাদেশি বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরেছেন।
ইমিগ্রেশন ও স্বাস্থ্য বিভাগের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের বেনাপোলের একটি আবাসিক হোটেলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তারা তাদের নিজ খরচে সেখানে অবস্থান করবেন।
কলকাতাস্থ বাংলাদেশের উপ হাইকমিশন থেকে অনাপত্তিপত্র নিয়ে দেশে ফেরেন তারা। এদিকে, শুক্রবার বাংলাদেশ থেকে ২১ জন ভারতীয় নাগরিক ভারতে ফিরে যান।
আরও পড়ুন: সীমান্তে আটক ১৫ জন বাংলাদেশি বেনাপোল দিয়ে দেশে ফিরেছেন
বাংলাদেশ সরকার ১৪ দিনের জন্য ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দেয়ার আগে অনেক রোগী ও শিক্ষার্থী দেশে ফেরার জন্য রওনা হয়েছিলেন।
ভারত থেকে আসা সামাদ নামে এক যাত্রী জানান, অন্তত একদিন আগে বর্ডার বন্ধের ঘোষণা দেয়া উচিত ছিল। তাহলে বর্ডারে এসে আমাদের এই ভোগান্তিতে পড়তে হতো না। ওপারে আটকে থাকা যাত্রীদের মধ্যে বেশির ভাগই রোগী এবং শিক্ষার্থী।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, ১৪ দিন ইমিগ্রেশন বন্ধের নির্দেশনাপত্র হাতে পেয়ে যাত্রীদের পাসপোর্টের যে আনুষ্ঠানিকতা সেটি বন্ধ রাখা রয়েছে। হাইকমিশনার কর্তৃক বিশেষ অনুমতিপত্র নিয়ে আসা যাত্রীদের ছাড় দেয়া হচ্ছে। গত ৪ দিনে বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে ৮১০ জন যাত্রী দেশে ফিরেছেন।
করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি: দেশে মৃত্যু ও শনাক্ত আরও কমেছে
দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমেছে বলে শুক্রবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা, করোনায় আরও ৫৭ জন মারা গেছেন। এনিয়ে মোট মৃত্যু ১১ হাজার ৪৫০ জনে দাঁড়াল।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ১৭৭ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৭ লাখ ৫৯ হাজার ১৩২ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: করোনা চিকিৎসায় দেশে ৮৩৩৫ বেড ও ৪৫৯ আইসিইউ বেড খালি: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
এর আগে বৃহস্পতিবার অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় ৮৮ জন মারা গেছেন এবং ২ হাজার ৩৪১ জন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ হাজার ৪৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্তের হার ১০.৩৪ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৩২৫ জন। মোট সুস্থ ৬ লাখ ৮১ হাজার ৪২৬ জন। সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১.৫১ শতাংশ।
চীনা ভ্যাকসিনের অনুমোদন
সরকার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য চীনের তৈরি সিনোফার্ম ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) এক সভায় চিনের তৈরি ভ্যাকসিনটি জরুরি প্রয়োজনে প্রয়োগের জন্য অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা জানান ডিজিডিএ মহাপরিচালক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান।
এর আগে মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: করোনা: এবার চীনা ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিল সরকার
মাহবুবুর রহমান বলেন, সিনোফার্মের টিকাটি চীনসহ বিভিন্ন দেশে অনুমোদিত। এই টিকার সব ডাটা আমরা পেয়েছি। সরকারিভাবে আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এগুলো আমাদের টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের দিয়ে আমরা যাচাই-বাছাই করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের একটা পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি কমিটি আছে। এই কমিটি ১২ সদস্য বিশিষ্ট। তারা এই টিকাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেছে। আমরা দেখতে পেয়েছি কার্যকরী ক্ষমতা অনেক ভালো।
ভারত থেকে আনা অক্সফোর্ডের টিকার প্রথম ডোজের স্বল্পতা দেখা দেয়ায় গত সোমবার (২৬ এপ্রিল) থেকে করোনার প্রথম ডোজের টিকা দেয়া কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে সরকার। ভারতে করোনা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে চুক্তি অনুযায়ী টিকা প্রাপ্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় এই পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।
বিশ্ব পরিস্থিতি
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় (জেএইচইউ) থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি ১ লাখ ২৪ হাজার ২৪৮ জনে।
এছাড়া, ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩১ লাখ ৬১ হাজার ৯৭১ জনে।
চীনের উহানে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ৩ কোটি ২২ লাখ ৮৮ হাজার ৭৬৪ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ৫ লাখ ৭৫ হাজার ১৯৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
আরও পড়ুন: করোনায় বিশ্বে আক্রান্ত ১৫ কোটি ছাড়াল
ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল আক্রান্তে তৃতীয় ও মৃত্যুর দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগী ১ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ১ হাজার ১৮৬ জনের।
পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারতে করোনায় আক্রান্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় এবং মৃত্যু নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ১ কোটি ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ২ লাখ ৪ হাজার ৮৩২ জন।
মেক্সিকো মৃত্যুর দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মারা গেছেন ২ লাখ ১৬ হাজার ৪৪৭ জন।
ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে আসার সময় সাতক্ষীরা সীমান্তে আটক ৪
ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে আসার সময়সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকেচার বাংলাদেশিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বুধবার রাতে সদর উপজেলার তলুইগাছা সীমান্ত থেকে তাদের আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: সীমান্তে আটক ১৫ জন বাংলাদেশি বেনাপোল দিয়ে দেশে ফিরেছেন
আটককৃতরা হলেন, শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা গ্রামের রহমান উজিয়া কাগুজির ছেলে মো. আজগর আলী (৪৫), তার স্ত্রী রুবিয়া বিবি (৩৫), আজগর আলীর কন্যা আফরোজা খাতুন (১৫) ও আশা খাতুন (৭)।
সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি-র অধিনায়ক লে. কর্নেল আল মাহমুদ জানান, ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে আসার সময় সাতক্ষীরার তলুইগাছা সীমান্ত থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চারজন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করা হয়। এ সময় অভিযানে নেতৃত্ব দেন তলুইগাছা বিওপি-র টহল কমান্ডার নায়েব সুবেদার আব্দুস সবুর। মামলা দিয়ে তাদেরকে সাতক্ষীরা সদর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বন্ধ থাকবে ১৪ দিন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সীমান্ত সুরক্ষা ও মানব পাচাররোধে বিজিবি-র অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে আরো জানান বিজিবি-র এই অধিনায়ক।
কোভিড-১৯: জরুরি মেডিকেল সহায়তা দিয়ে ভারতের পাশে বাংলাদেশ
ভারতের করোনা মহামারি পরিস্থিতির অবনতির মধ্যেই জরুরি ভিত্তিতে ওষুধ ও অন্যান্য মেডিকেল সামগ্রী প্রেরণ করে ভারতের মানুষের পাশে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ভারতে জরুরি সহায়তা হিসেবে ১০ হাজার শিশি অ্যান্টি-ভাইরাল ইঞ্জেকশন, ওরাল অ্যান্টি-ভাইরাল, ৩০ হাজার পিপিই কিট এবং কয়েক হাজার জিংক-ক্যালসিয়াম-ভিটামিনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রেরণ করা হবে।
করোনায় ভারতে ব্যাপকভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পরার ফলে অগণিত মানুষের অনাকাঙ্খিত মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে কসমসের ভার্চুয়াল সভা বৃহস্পতিবার
ভারতে করোনায় একদিনে রেকর্ড মৃত্যু ও শনাক্ত
বাংলাদেশের নিকট প্রতিবেশী দেশ ভারতের বর্তমান কঠিন অবস্থার প্রতি সংহতি জানিয়ে দেশটির সবরকম প্রয়োজনে পাশে থাকা এবং মানুষের জীবন বাঁচাতে ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় সকল সম্ভবপর সহযোগিতার ইচ্ছা প্রকাশ করা হয় বিবৃতিতে।
ভারতের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি
গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংখ্যক মানুষ করোনা শনাক্তা এবং আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। দেশটিতে মোট শনাক্ত হয়েছে ১ কোটি ৮৩ লাখের ৮০ হাজারের বেশি মানুষ।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ২৫৭ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৩ হাজার ৬৪৫ জন। মহামারির শুরু থেকে এই পর্যন্ত দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ৪ হাজার ৮৩২ জনে পৌঁছেছে।
ভারতে করোনায় একদিনে রেকর্ড মৃত্যু ও শনাক্ত
ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন ৩ হাজার ২৯৩ জন এবং নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৬২ হাজার ৭৫৭ জন। যা একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও শনাক্তের নতুন রেকর্ড।
এ নিয়ে ভারতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৭৯ লাখে দাঁড়াল। মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও মেক্সিকোর পর এখন ভারতে মৃত্যু ২ লাখ ছাড়াল।
টানা সাত দিন ধরে ভারতে ৩ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। আমেরিকার পর আক্রান্তের দিক দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ভারত। সর্বমোট ২ লাখ ১ হাজার ১৮৭ জন মারা গিয়েছেন এখন পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: করোনায় বিশ্বে আক্রান্ত পৌনে ১৫ কোটি ছাড়াল
মঙ্গলবার সর্বাধিক কোভিড আক্রান্ত রাজ্য মহারাষ্ট্রে ৮৯৫ জন করোনায় মারা গিয়েছেন এবং নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ।
মহারাষ্ট্রের পরে কেরালা, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং দিল্লিতে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ রয়েছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দর দিয়ে হঠাৎ করে জরুরি অক্সিজেন আমদানি বন্ধ
গত জানুয়ারিতে ভারতের কেরালায় প্রথম করোনাভাইরাস সনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিল যেখানে মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো ৩০ হাজারের বেশি নতুন সংক্রমণ হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের করোনায় সংক্রমন ২৫৫ শতাংশ বেড়েছে।
আরও পড়ুন: জুনের আগে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না: বিশেষজ্ঞ মতামত
গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে করোনায় ৩৮১ জন মারা গিয়েছে এবং নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ২৪ হাজার ১৪৯ জন। রাজধানীতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছে ৯৮ হাজারের বেশি মানুষ। করোনায় আক্রান্তের হার ৩২.৭২ শতাংশ।
ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে যা দেশটির জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দিয়েছে।
হাসপাতালে অক্সিজেনের সংকট নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভারত থেকে অক্সিজেন আমদানি হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলেও উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস অক্সিজেনের অভাবে ভারতকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা এখন ভারত থেকে অক্সিজেন পাচ্ছি না। তবে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু নেই। আমরা সারা বছর ভারত থেকে অক্সিজেন আমদানি করি না। করোনাভাইরাসের সময় আমরা ৪০-৫০ টন অক্সিজেন আমদানি করেছি।’
বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) প্রাঙ্গণে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘চার-পাঁচ দিন ধরে ভারত থেকে অক্সিজেন আসছে না, তবে আমরা সবকিছু পরিচালনা করছি এবং আমাদের কোনো সংকট নেই।’
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালগুলো কেবল লিকুইড অক্সিজেনই নয়, গ্যাস অক্সিজেনও ব্যবহার করে। এর বিশাল উত্পাদন ক্ষমতার কারণে বাংলাদেশে গ্যাস অক্সিজেনের অভাব নেই।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ার টিকা 'স্পুটনিক ভি’ ব্যবহারের অনুমোদন দিল বাংলাদেশ
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মোটামুটি ভালো অবস্থানে রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, জরুরি পরিস্থিতিতে রোগীদের ব্যবহারের জন্য আমরা শিল্পখাতে ৪০ টন অক্সিজেনও বুকিং দিয়ে রেখেছি।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় দেশের হাসপাতালে এখন অক্সিজেনের সংকট নেই। যদি কোভিড রোগীদের সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে যায় এবং বর্তমান ৭ হাজার থেকে ২১ হাজার পৌঁছে যায় তবে আমরা অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ করতে পারব না। সুতরাং, কোভিড সংক্রমণ কমাতে আমাদের অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে এমন শিল্পগুলোর সাথে যোগাযোগ করেছে যারা সঙ্কটের সময় এটি ব্যবহার থেকে সংগ্রহ করতে তরল অক্সিজেন ব্যবহার করে। আমরা ছোট অক্সিজেন প্ল্যান্ট আমদানির পরিকল্পনা করছি।’
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা শিগগিরই কেটে যাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহে ২ সপ্তাহ সময় লাগবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, সরকার ১০০টি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন লাইন স্থাপন করেছে যাতে কোভিড রোগীদের যখনই প্রয়োজন হয় তা পেতে পারেন।
‘আমরা এখন ৭ হাজার শয্যা দিচ্ছি। যদি রোগীদের সংখ্যা ২১ হাজার হয়ে যায় তবে আমরা তাদেরকে স্থান দিতে পারব না। আমাদের এটি মাথায় রাখা উচিত,’ বলেন তিনি।
মালেক বলেন, ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এবং মাস্ক পরতে হবে।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ এ বছরের গোড়ার দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে, কিন্তু মানুষের বেপরোয়া মনোভাব, ভ্রমণ, জনসমাগম এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়মের প্রতি উদাসীনতার কারণে ভাইরাসটির দ্বিতীয় ঢেউ তৈরি হয়েছে। আমরা যদি এই ধরনের ভুল থেকে শিক্ষা না নেই তবে তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট ও খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। সুতরাং, এই এলাকার লোকদের সচেতন থাকা এবং কঠোরভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি অনুসরণ করা প্রয়োজন।’
কোভিড-১৯: দেশে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ও শনাক্ত কমেছে
দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও শনাক্ত কমেছে।
মঙ্গলবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৭৮ জন মারা গেছেন। এনিয়ে মোট মৃত্যু ১১ হাজার ২২৮ জনে দাঁড়াল।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ওবায়দুল কাদেরের
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৩১ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৭ লাখ ৫১ হাজার ৬৫৯ জনে পৌঁছেছে।
এর আগে সোমবার অধিদপ্তর জানায়, এক দিনে মহামারি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৯৭ জন মারা গেছেন এবং ৩ হাজার ৩০৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ হাজার ২৩৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্তের হার ১২.৫১ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ২৩৪ জন। মোট সুস্থ ৬ লাখ ৬৬ হাজার ৯২৭ জন। সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১.৪৯ শতাংশ।
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ভারতফেরত ১০ করোনারোগী পালিয়েছে
বিশ্ব পরিস্থিতি
এদিকে, মঙ্গলবার সকালে জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় (জেএইচইউ) থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ৭৫ লাখ ৪০ হাজার ৯৭৭ জনে।
এছাড়া, ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩১ লাখ ১৭ হাজার ৪৩৮ জনে।
চীনের উহানে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ৩ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৬৯ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ৫ লাখ ৭২ হাজার ৬৬৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
আরও পড়ুন: করোনায় বিশ্বে আক্রান্ত পৌনে ১৫ কোটি ছাড়াল
ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল আক্রান্তে তৃতীয় ও মৃত্যুর দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগী ১ কোটি ৪৩ লাখ ৬৯ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৯১ হাজার ৯৩৬ জনের।
পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারতে করোনায় আক্রান্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় এবং মৃত্যু নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ১ কোটি ৭৩ লাখ ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ১ লাখ ৯৫ হাজার ১২৩ জন।
মেক্সিকো মৃত্যুর দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মারা গেছেন ২ লাখ ১৫ হাজার ১২৩ জন।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে হঠাৎ করে জরুরি অক্সিজেন আমদানি বন্ধ
ভারতে অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়ায় করোনার চিকিৎসায় ব্যবহৃত জরুররি তরল অক্সিজেনের আমদানি বন্ধ রয়েছে। গত ৪ দিনে কোনো অক্সিজেনবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। তবে গত ২২ এপ্রিল একটি অক্সিজেনবাহী ট্যাংকার খালাশ হয় বেনাপোল বন্দর থেকে।
গত এক সপ্তাহে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১ হাজার ৮১৫ মেট্রিক টন তরল অক্সিজেন ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। যার আমদানি মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ১৬৫ মার্কিন ডলার। ২৯টি ট্যাংকারে এই তরল অক্সিজেন বাংলাদেশে আমদানি হয়।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাড়লেও রপ্তানি বাণিজ্যে ধস
বাংলাদেশের আমদানিকারক লিনডে বাংলাদেশ লি: ভারত থেকে অক্সিজেন আমদানি করে থাকে।
কাস্টমস সূত্র জানায়, দেশের চিকিৎসা খাতে অক্সিজেনের চাহিদার বড় একটি অংশ আমদানি হয় ভারত থেকে। প্রতি মাসে শুধু বেনাপোল বন্দর দিয়েই প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন অক্সিজেন আমদানি হয়ে় থাকে। করোনাকালীন সময়ে আক্রান্তদের জীবন বাঁচাতে সম্প্রতি এ অক্সিজেনের চাহিদা আরও বেড়ে যায়। হঠাৎ করে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যেমন ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন, তেমনি দেশে চিকিৎসা খাতও বড় ধরনের সংকটের মুখে পড়ল।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে পাসপোর্টধারীদের যাতায়াত বাড়ছে
অক্সিজেন পরিবহনকারী বাংলাদেশি ট্রাক চালকেরা জানান, গত ৪ দিন ধরে বেনাপোল বন্দরে ট্রাক নিয়ে় তারা দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু ভারত থেকে কোনো অক্সিজেন বন্দরে প্রবেশ করেনি।
ভারতীয় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি বিশ্বজিত দাস জানান, ভারত থেকে সাময়িকভাবে অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। ভারতে ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা ভেবে বাংলাদেশে অক্সিজেন রপ্তানি সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দরকে ঘিরে সক্রিয় শক্তিশালী চোরাচালান সিন্ডিকেট
অক্সিজেন আমদানিকারকের প্রতিনিধি ও ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ডিরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, ভারতে করোনা সংক্রমনের দ্বিতীয় ধাপ চলছে ভয়াবহভাবে। এতে আক্রান্ত ও মৃএতর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে ব্যাপকহারে। কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় ভারত আপাতত অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সৌহার্দ্য, সম্প্রতি ও বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে তরল অক্সিজেন দেবে আশা রাখি। তবে লিনডে বাংলাদেশ বিকল্প হিসেবে সিঙ্গাপুর থেকে অক্সিজেন আমদানির পরিকল্পনা করছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার মুস্তাফিজুর রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১ হাজার ৮১৫ মেট্রিক টন অক্সিজেন লিনডে বাংলাদেশ আমদানি করে। গত বৃহস্পতিবার থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে অক্সিজেন আমদানি বন্ধ রয়েছে।
হাসপাতাল থেকে ভারতফেরত ১০ করোনারোগী পালিয়েছে
যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে ভারতফেরত ১০ জন করোনা রোগী পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার সকাল থেকে রবিবার দুপুরের মধ্যে তারা হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে।
আরও পড়ুন: জুনের আগে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না: বিশেষজ্ঞ মতামত
হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারীদের অবহেলার কারণে তারা পালিয়ে যেতে পেরেছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এতে করে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দাবি করে বলছেন, মাত্র দুইজন রোগী পালিয়েছেন।
আর সিভিল সার্জন বলছেন, হাসপাতাল থেকে পালানো রোগীদের দেয়া নাম ঠিকানা যদি ঠিক থাকে তবে অবশ্যই তাদের খুঁজে বের করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: সরকার গণপরিবহন চালুর চিন্তা ভাবনা করছে: কাদের
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ব্রাদার তারক চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, গত শনিবার সকাল ১০টা ৫৭ মিনিটের দিকে ভারতফেরত কিছু রোগী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর রবিবারও রোগী আসেন। সব মিলিয়ে ২ দিনে ১০ জন করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের সবাইকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় করোনা ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।
হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্ট্রার মতে, ভর্তি রোগীরা হলো যশোর শহরের খালধার রোডের বিশ্বনাথের স্ত্রী মালা দত্ত (৫০), শহরের বিমান অফিস মোড়ের আবুল কাসেমের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫৭), সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা বেগম(১৯), একই গ্রামের একরামের স্ত্রী রোমা (৩০), প্রতাপকাঠি গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে মমিন, রামকান্তপুর গ্রামের গোলাম রব্বানীর স্ত্রী নাসিমা বেগম (৫০), বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর গ্রামের ফজর আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৫), ঝিনাইদাহ জেলার কালীগঞ্জের মনোতষের স্ত্রী শেফালী রানী, খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রামরাইল গ্রামের আহম্মদ সানার ছেলে আমিরুল সানা ও একই জেলার রুপসা এলাকার শের আলীর ছেলে সোহেল (১৭)।
আরও পড়ুন: করোনার ১ম ডোজের টিকাদান সোমবার থেকে স্থগিত
করোনা ওয়ার্ডের দায়িত্বরত সিনিয়র নার্স লাবনী বিশ্বাস বলেন, ভারত থেকে করোনাভাইরাসে আক্রন্ত হয়ে আসা ১০ জন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল। কিন্তু রবিবার সকালের পর থেকে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক বলছেন, করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফলে পালিয়ে যাওয়া রোগীরা যদি ভারতীয় ভেরিয়েন্টের বাহক হন তাহলে তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়াও ভাইরোলজিস্টরা বলেছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী যদি কোনো পরিবারে থাকে তাহলে তার মাধ্যমে প্রথমে তার পরিবার ও আশপাশের লোকজনও আক্রান্ত হতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, ভারত থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোনো রোগী হাসপাতালে আনা হলে তা পুলিশ স্কট করে দিয়ে যাবে। একইসাথে তাদের পাসপোর্ট পুলিশ হাসপাতালে জমা করবে। কিন্তু তার কোনোটাই করা হয়নি। কোনো রোগী যাতে পালাতে না পারে সে জন্য বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার বিষয়ে আমি পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলবো।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, রোগী পালানোর কথা শুনে আমি রবিবার সকালে যশোর জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছিলাম। যে ১০ জন রোগী পালিয়েছে তাদের নাম ঠিকানা সঠিক থাকলে তাদেরকে খুঁজে বের করা সম্ভব হবে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।
যশোর কোতয়ালী থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা রোগী পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের কিছুই জানায়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখা হবে।