মিয়ানমার
ভাসানচর থেকে পালানোর সময় রোহিঙ্গা নারীর মৃত্যু
নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচর রোহিঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে পালানোর সময় এক রোহিঙ্গা নারীর মৃত্যু হয়েছে।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক তরিক জানান, মৃত সেতারা বেগম (৩০) ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১০নং ক্লাস্টারের ১৩নং কক্ষের নূর মোহাম্মদের মেয়ে। এসময় তার সাথে থাকা মা নূর বাহারকে (৬০) আটক করেছে পুলিশ।
ওসি জানান, সেতারা বেগম গত ২০-২৫ দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিল। এর মধ্যে গত ১৮ ডিসেম্বর শনিবার দালালের মাধ্যমে ভাসানচর থেকে পালিয়ে কুতুপালং যাওয়ার উদ্দেশ্যে মাছ ধরার নৌকাযোগে পালিয়ে আসে। ওইদিন রাতের কোন এক সময় দালালরা তাদের কৌশলে সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চর মোজাম্মেল গ্রামের ঘাটে নামিয়ে দিয়ে যায়। পরে সেখানে আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে রবিবার বিকালে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় ভাসানচর আশ্রায়ণ প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের পক্ষে একা রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নেয়া উচিত না: জাতিসংঘ
১ বছর আগে অপহৃত রোহিঙ্গা মাঝির লাশ উদ্ধার, আটক ৩
অষ্টম ধাপে ভাসানচর পৌঁছেছে ৫৫২ রোহিঙ্গা
রোহিঙ্গারা নিরাপদে ফিরে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই চায় না: জাতিসংঘ
বাংলাদেশে আগত জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রুস বলেছেন, রোহিঙ্গারা নিরাপদে সসম্মানে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই চায়না।
সোমবার বাংলাদেশে সপ্তাহব্যাপী সফর শুরু করা অ্যান্ড্রুস বলেন, বিশ্ববাসীর ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে মিয়ানমারের প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা নিজ দেশের সেনাবাহিনীর গণহত্যা থেকে বাঁচতে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষ এই প্রতিনিধি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির এবং ভাসানচর পরিদর্শন করবেন - যেখানে ইতোমধ্যে অনেক রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
পরিদর্শনকালে অ্যান্ড্রুস সরকারের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের অন্যান্য কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করবেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকটের বোঝা ভাগ করে নেয়ার আহ্বান ঢাকার
অ্যান্ড্রুস বলেছেন, মিয়ানমারের জান্তা পরিকল্পিতভাবে মিয়ানমারের জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। প্রাণের ভয়ে যারা মিয়ানমার ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন, বিশ্ববাসী তাদের সমর্থন করছে। আমি তাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়ে সম্মানিত বোধ করছি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার আমাকে এই পরিদর্শনের যে বিশেষ প্রবেশাধিকার দিয়েছেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। এই সফরের মাধ্যমে মিয়ানমার সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ পাবো।
অ্যান্ড্রুস বলেন, বিশেষ করে তিনি রোহিঙ্গাদের কথা শোনার জন্য, তাদের প্রতি নিজের সমর্থন জানাতে এবং তাদের সঙ্গে টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য একসাথে কাজ করার জন্য তাদের সঙ্গে দেখা করতে উন্মুখ।
আরও পড়ুন: ফেসবুকের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের মামলা, ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ডকে ভূমিকা রাখার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
সু চির ৪ বছরের কারাদণ্ড
উসকানি ও করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করে সোমবার মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতা গ্রহণ করে সেনাবাহিনী এবং এর ফলে দ্বিতীয় বারের মতো সরকার গঠন করতে পারেনি নির্বাচনে জয়ী সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)।
এরপর থেকে ৭৬ বছর বয়সী নোবেল বিজয়ী সু চির বিরুদ্ধে দায়ের করা বেশ কয়েকটি মামলার মধ্যে প্রথম কোনো মামলায় এ রায় দেয়া হয়েছে।
উসকানির মামলায় তার দলের ফেসবুক পেইজ থেকে পোস্ট দেয়ার কথা বলা হয়। তবে এর আগেই সু চিসহ তার দলের অন্য নেতাদের সেনা সরকার গ্রেপ্তার করে। এছাড়া গত বছরের নভেম্বরে নির্বাচন সামনে রেখে এক প্রচারণা কর্মসূচিতে করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। আর এ নির্বাচনেও সু চির দল জয়ী হয়।
নির্বাচনে সেনা সমর্থিত দল অনেক আসনে পরাজিত হয় এবং এ নির্বাচনে ব্যাপক ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করেছে সেনাবাহিনী। তবে স্বাধীন পর্যবেক্ষক দল নির্বাচনে তেমন অনিয়ম পাননি।
সু চির এ বিচার কার্যক্রম গণমাধ্যম ও দর্শকদের দেখার সুযোগ দেয়া হয়নি। এছাড়া এই নেত্রীর পক্ষের আইনজীবীদেরও গণমাধ্যমে তথ্য প্রদানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে সু চির বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ দায়ের
সু চিকে আটক রাখার মেয়াদ বাড়ল
সু চির বিরুদ্ধে মামলা, পাওয়া গেল তাকে আটক রাখার আইনি ভিত্তি
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ডকে ভূমিকা রাখার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ডকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে এ অঞ্চলের শান্তি ও প্রগতির পথে অন্তরায় হয়ে উঠতে পারে।’
রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে নিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে থাইল্যান্ডের ৯৪তম জাতীয় দিবস ও থাইল্যান্ডের রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদে এর জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
থাইল্যান্ড বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্র উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, থাইল্যান্ডের সাথে সুদীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও সাংস্কৃতিক যোগসূত্র রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে থাইল্যান্ড বাংলাদেশেকে সহযোগিতা করে আসছে।
এসময় আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির জন্য দু’দেশের সম্পর্ক আরও জোরদারের সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ এ বছর এলডিসি গ্রাজুয়েশনের মাইলফলক অর্জন করেছে। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক উন্নত দেশে রূপান্তর করা।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বর-কনে পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আটক ২
করোনা মহামারিকালীন থাই সরকারের সহায়তার কথা স্মরণ করে সাধন চন্দ্র বলেন, সমন্বিত উদ্যোগ করোনার মত মহামারিকে পরাজিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
বৈশ্বিক মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশের সফলতা এশিয়ার দেশগুলোর জন্য অনুকরণীয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং থাইল্যান্ডের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য থাই সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে উন্নত রেল, সড়ক, সামুদ্রিক ও বিমান যোগাযোগ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে আরও অবদান রাখবে।
এসময় তিনি দুদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের ওপর জোর দেন এবং থাইল্যান্ডের জনগণকে জাতীয় দিবসে শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মিজ মাকাওয়াদি সুমিটমোর শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশ দুটি রাষ্ট্রই নিজেদের জনগণের কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে বিগত পাঁচ দশক ধরে উভয়ের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে আসছে। ভবিষ্যতে এ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে অব্যাহত সমর্থন দেবে: মিয়া সেপ্পো
মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার আশ্বাস জাপানের
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইয়োশিমাসা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে জাপান কাজ করে যাবে।
সম্প্রতি জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে হায়াশি ইয়োশিমাসার নিযুক্তিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ.কে.আব্দুল মোমেন তাকে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি প্রেরণ করেন। এ প্রেক্ষিতে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিঠি দিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে অব্যাহত সমর্থন দেবে: মিয়া সেপ্পো
চিঠিতে তিনি জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের নিরাপদে,স্বেচ্ছায় এবং সম্মানজনকভাবে প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে জাপান কাজ করে যাবে। বাংলাদেশের পদক্ষেপে সহযোগিতার পাশাপাশি দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর লক্ষ্যে বিদ্যমান পরিস্থিতি উন্নতির জন্য জাপান মিয়ানমারকে উৎসাহিত করবে বলেও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিঠিতে উল্লেখ করেন।
চিঠিতে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, জাপান ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আস্থা, সহযোগিতা ও পারস্পরিক কল্যাণের দৃঢ় নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। তিনি ২০২২ সালে দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে এই ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
এছাড়া, তিনি বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে একসাথে কাজ করার প্রত্যাশার কথাও জানান।
আরও পড়ুন: সব দেশ স্বীকার করেছে রোহিঙ্গারা যেন দেশে ফেরত যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা রেজুলেশন গৃহীত
দেশের বিভিন্ন স্থানে আবারও ভূমিকম্প অনুভূত
চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শনিবার বিকালে ৪.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, বিকাল ৩টা ৪৭ মিনিটে এ ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ভূমিকম্পটির কেন্দ্রবিন্দু ছিল ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকা যা ঢাকা থেকে ৩০৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত।
তবে এখন পর্যন্ত এ ভূমিকম্পের কারণে কোনো ক্ষয়-ক্ষতি ও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এর আগে শুক্রবার ভোরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল মিয়ানমারের চিন প্রদেশের হাকা শহরের প্রায় ৩৩ কিলোমিটার কাছে।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্প: চট্টগ্রামে ৩টি ভবন হেলে পড়েছে
ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সহিংসতা সীমান্তের বাইরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে: প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও অপরাধ শিগগিরই সীমান্তের বাইরে ছড়িয়ে পড়তে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে এই ইস্যুতে যথাযথ মনোযোগ দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে এবং ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও অপরাধ শিগগিরই আমাদের সীমান্তের বাইরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।’
শুক্রবার কম্বোডিয়ায় দুই দিনব্যাপী ১৩তম আসেম (এএসইএম) শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিনে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে সতর্ক করে বলেন, এই সংকটের প্রতি অস্থায়ী প্রতিক্রিয়া খুব সামান্য উদ্দেশ্য পূরণ করবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বহুপাক্ষিক সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হবে মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত জনগণ-রোহিঙ্গাদের জন্য একটি স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করা।’
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী আশ্রয় দিয়েছে এবং পরিস্থিতি স্থিতিশীল করেছে।
তিনি বলেন, আমরা মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনে জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা যে উদ্বেগ প্রকাশ করছি তার প্রতি যথাযথ মনোযোগ দেয়ার জন্য আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম থেকে ভাসানচরের পথে ৩৭৯ রোহিঙ্গা
শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও অর্থনীতির ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের আমাদের উন্নয়ন সংস্থানগুলো ঘুরিয়ে জরুরি চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন কার্যক্রমে ব্যয় করতে বাধ্য করেছে।’
এই বিষয়ে তিনি বলেন, তার সরকার জীবন ও জীবিকা উভয় সুরক্ষার কৌশল গ্রহণ করেছে। মহামারির প্রভাব মোকাবিলায় ৫৪০ কোটি মার্কিন ডলারের ২৮টি উদ্দীপনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার এখন আমাদের কষ্টার্জিত উন্নয়ন ধরে রাখা, দারিদ্র ও ক্ষুধা হ্রাস করা, মা ও শিশুদের রাঁচানো, শিক্ষা ও সাক্ষরতা বৃদ্ধি করা এবং স্বাস্থকর জীবনযাপন নিশ্চিত করা।’
তিনি বলেন, সরকার ২০২২ সালের মার্চের মধ্যে দেশের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশকে টিকা দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
আরও পড়ুন: উখিয়া থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা যুবক যশোরে আটক
সব দেশ স্বীকার করেছে রোহিঙ্গারা যেন দেশে ফেরত যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
চার ট্রলারসহ ২২ জেলেকে ফেরত দিয়েছে মিয়ানমার
সেন্টমার্টিন দ্বীপের সমুদ্র উপকূল থেকে চার ট্রলারসহ অপহরণ করা বাংলাদেশি ২২ জেলেকে ফেরত দিয়েছে মিয়ানমার নৌবাহিনী।
শনিবার মধ্য রাতে ২২ জেলেসহ চারটি ফিশিং ট্রলার সেন্টমার্টিন্স দ্বীপের জেটিতে এসে পৌঁছে বলে সেন্টমার্টিন্স ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ২২ মাঝিসহ চার বাংলাদেশি ট্রলার আটক করল মিয়ানমার
তবে এ বিষয়ে স্থানীয় কোস্ট গার্ড কিংবা বিজিবি কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, মাঝিমাল্লাসহ ধরে নিয়ে যাওয়া ফিশিং ট্রলারগুলো ফেরত দিয়েছে। জেলেরা সবাই সুস্থ আছেন।
আরও পড়ুন: মনপুরায় ট্রলারে জাহাজের ধাক্কা, ২ জেলের মৃত্যু
গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের পুর্ব সমুদ্র উপকূলে বাংলাদেশ জলসীমায় মাছ শিকার করার সময় মিয়ানমার নৌবাহিনীর সদস্যরা দুই দফায় চারটি ফিশিং ট্রলারসহ ২২ জেলেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে রাতে আটক জেলেদেরকে ফেরত দিতে বাধ্য হয় মিয়ানমার নৌবাহিনী।
২২ মাঝিসহ চার বাংলাদেশি ট্রলার আটক করল মিয়ানমার
টেকনাফের বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারকালে সেন্টমার্টিনের অদূর থেকে মাঝিমাল্লাসহ চারটি বাংলাদেশি ট্রলার নিয়ে গেছে মিয়ানমার নৌবাহিনীর সদস্যরা। শনিবার সকাল ১০ টার দিকে সেন্টমার্টিনের পূর্ব দিক থেকে দুই দফায় মাছ ধরার ট্রলারসহ ২২ জন মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে যায় তারা।
বিষয়টি স্বীকার করে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর আহমদ জানান, তার দ্বীপের চারটি ট্রলারসহ ২২ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমার নৌবাহিনী। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছেন।
স্থানীয় জেলেরা জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা নুরুল আমিন, মো. আজিম, মো. হোসেন এবং তার ছেলে মো. ইউনুছের মালিকাধীন চারটি মাছ ধরার ট্রলারে করে ২২ জন মাঝিমাল্লা সাগরে মাছ শিকারে যান। সকালে দ্বীপের পূর্বদিকে মিয়ানমার নৌবাহিনীর সদস্যরা এসে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ওইগুলো ট্রলারসহ ২২ জন মাঝিমাল্লাদের ধরে নিয়ে যায়। পরে তারা তীরে এসে জনপ্রতিনিধিসহ ট্রলার মালিকদের বিষয়টি জানান।
আরও পড়ুন: সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত, পিরোজপুরে নিরাপদ আশ্রয়ে মাছ ধরার ট্রলার
এ বিষয়ে ট্রলার মালিক মো. আজিম জানান, সকালে সেন্টমার্টিনের পূর্ব দিকে এপারে ঢুকে মিয়ানমার নৌবাহিনীর সদস্যরা তার মাছ ধরার ট্রলারটি ধরে নিয়ে যায়। ট্রলারে ছয়জন মাঝিমাল্লা ছিল। এছাড়া আরও তিনটি ট্রলার ধরে নিয়ে গেছে। ঘটনাটি বিজিবি ও কোস্ট গার্ডকে জানিয়েছেন।
সেন্টমার্টিন স্টেশনের কোস্ট গার্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, মাঝিমাল্লাসহ ট্রলার ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। তবে তারা কি রোহিঙ্গা নাকি বাংলাদেশি সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী জানান, 'মাছ ধরার ট্রলার ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে কোস্ট গার্ড ও বিজিবি ব্যবস্থা নিবে। এ ব্যাপারে টেকনাফ ২ বিজিবির কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: মনপুরায় ট্রলারে জাহাজের ধাক্কা, ২ জেলের মৃত্যু
বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ডুবির ঘটনায় ৩ জেলের লাশ উদ্ধার
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে মিয়ানমারকে শক্তিশালী বার্তা পাঠাবে ইন্দোনেশিয়া
দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারকে শক্তিশালী বার্তা দিতে যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। বুধবার ঢাকায় সফররত ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা জানিয়েছেন।
এসময় মারসুদি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে আমরা মিয়ানমারকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবো।’
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয় দেয়ার পর, তিন বছর পার হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ক্ষতিপূরণের জন্য অপেক্ষা করে যাচ্ছে…. কারণ বর্তমানে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বোঝায় পরিণত হয়েছে।’
১৮তম ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) মন্ত্রী পরিষদ বৈঠকে যোগ দিতে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় এসেছেন।
এছাড়া এ বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকায় আসা দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ড. প্যন্ডরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে পদক্ষেপ নিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি শেখ হাসিনার আহ্বান
এসময় প্রধানমন্ত্রী ড. প্যন্ডর বলেন, নেলসন ম্যান্ডেলা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রাম একই ছিল, কারণ দুই নেতাই দীর্ঘ সময় জেলে বন্দী থাকা ছাড়াও ব্যক্তি জীবনে অসামান্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে জানান,বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,‘আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত সুনীল অর্থনীতি বিকাশের স্বার্থে ভারত মহাসাগরকে শান্তিপূর্ণ রাখা।’
এসময় ড. প্যন্ডর বৈশ্বিক করোনা মহামারির কথা উল্লেখ করে দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইজার এবং জনসনের করোনা টিকা তৈরির কথা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরেক পৃথক বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, বিশেষ করে যোগাযোগ প্রযুক্তি, ব্যবসা ও ব্যাংকিং কার্যক্রম এবং সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ইহসানুল করিম জানান, এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহামারি মোকাবিলায় সরকারের ক্ষুদ্র সঞ্চয় কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন। এছাড়া মহামারি পরবর্তী সময়ে দেশে খাদ্য ঘাটতি এড়াতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা খাদ্য সুরক্ষার ওপর বিশেষ জোর দিয়েছি।’
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সঙ্কটে ফ্রান্স বাংলাদেশের পাশে থাকবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গাদের নিয়ে সৃষ্ট নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে ঢাকা-প্যারিসের মতবিনিময়