পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
আগামী ৫ ও ৭ সেপ্টেম্বর হচ্ছে আসিয়ান ও পূর্ব-এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন
আগামী ৫ সেপ্টেম্বর আসিয়ানের ৪৩তম শীর্ষ সম্মেলন এবং ৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৮তম পূর্ব-এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, চলতি বছরের আসিয়ান চেয়ার হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় এ সম্মেলনের আয়োজন করছে দেশটি। সম্মেলনে আসিয়ান ও ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) এর মধ্যে একটি সহযোগিতমূলক চুক্ত সই হবে। এই চুক্তি সই অনুষ্ঠানে দুই সংস্থার মহাসচিব উপস্থিত থাকবেন।
আরও পড়ুন: প্রাক-নির্বাচন অপপ্রচার প্রতিরোধে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
এ ছাড়া পাকিস্তানের মারিতে ৩ থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত তৃতীয় ডি-৮ সম্মেলনে পর্যটনবিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক ও চতুর্থ ডি-৮ সম্মেলনে পর্যটনবিষয়ক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-এর পরিচালক (আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ) বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। মন্ত্রী পর্যায়ের এ সভায় “ডি-৮ পর্যটন করপোরেশন ইসলামাবাদ ঘোষণা” গৃহীত হয়।
এ ছাড়াও, সভায় পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের যৌথ প্রশিক্ষণের উপর জোর দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ডি-৮ ভুক্ত দেশের ব্যবসায়ীদের ভিসা প্রাপ্তির প্রক্রিয়া সহজতর করার উপর সভায় গুরুত্বারোপ করা হয়। এ ছাড়াও, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের সঙ্গে ডি-৮ ভুক্ত দেশগুলোর পর্যটন সহযোগিতা সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে অর্থায়নের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ডি-৮ সচিবালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রতি দুই বছর অন্তর ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের সভা এবং নিয়মিত কর্মকর্তা পর্যায়ে বৈঠক আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সংঘাতপূর্ণ সুদান থেকে দেশে ফিরেছেন ৭২১ জন বাংলাদেশি: সেহেলী সাবরীন
শাস্তি এড়াতে বিদেশের আইনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিরা
বিদেশে আশ্রয় নেওয়া বঙ্গবন্ধুর ৫ খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের চেষ্টা এখনো সফল হয়নি। এদের মধ্যে দুইজন তাদের অপরাধের শাস্তি এড়াতে সেইসব দেশের আইনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে চলেছেন।
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের অন্যতম আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পথে আরও এক ধাপ এগিয়েছে।
আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হয় ২০২০ সালের ১২ এপ্রিল। ফাঁসির আগ পর্যন্ত দীর্ঘদিন বিদেশে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। এর আগে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি ফাঁসি কার্যকর হওয়া অন্য ৫ জন হলেন- সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ ও মহিউদ্দিন আহমেদ। এ ছাড়া বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার ১৪ বছর আগে ২০০১ সালে বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি আজিজ পাশা জিম্বাবুয়েতে মারা যান।
পলাতক ৫ খুনি হলেন- খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিন খান। এদের মধ্যে নূর চৌধুরী ও রাশেদ চৌধুরী কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন।
বিভিন্ন অজুহাতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাংলাদেশে হস্তান্তর না করে আশ্রয় দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সমালোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের ফিরিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি দেশ দু’টির জন্য লজ্জার এবং আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।’
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের তথ্য দিলে পুরস্কার দেবে সরকার: মোমেন
মোমেন বলেন, ‘সব খুনিদের বিচারের মুখোমুখি করা হলে সরকার খুব খুশি হবে। কিন্তু আমরা এখনো তা করতে পারিনি। আমরা যদি তা করতে পারি, তাহলে বড় অর্জন হিসেবে মনে করব।’
তিনি বলেন, খুনিদের ফেরত পাঠানোর পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সরকারকে অনেক চিঠি দিয়েছে সরকার। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে চিঠিও লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিদের দুই খুনির বাসভবনের সামনে নিয়মিত বিক্ষোভ করার আহ্বান জানান মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের সম্পর্কে যারা তথ্য দিতে পারবে সরকার তাদের পুরস্কৃত করবে।
যারা ২১ বছর ধরে খুনিদের ব্যাপারে নীরব এবং খুনিদের পেছনে যারা ছিল তাদের মুখোশ উন্মোচন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা যদি তথ্য দিতে পারেন তবে আপনাদের পুরস্কৃত করা হবে। এই সমস্ত লোকদের মুখোশ খুলে দিতে হবে।’
কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের আইনের শাসন অত্যন্ত শক্তিশালী উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের খুনিদের আশ্রয় দেওয়া উচিত নয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ছায়াকেও ভয় পেতেন খুনিরা: তথ্যমন্ত্রী
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে এই আত্মস্বীকৃত খুনিরা তাদের অপরাধের শাস্তি এড়াতে দেশগুলোর (কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র) আইনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। কোনো দেশই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি সমাধানে আগ্রহ দেখায়নি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের এই দাবির বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরী ও নূর চৌধুরীকে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওইসব দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস অথবা হাইকমিশনের মাধ্যমে এই আত্মস্বীকৃত খুনিদের সরাসরি দেশে ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়ে আসছে।
সাবরিন বলেন, সমস্ত উচ্চ পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বাংলাদেশ সরকার এই ন্যায়সঙ্গত দাবি উত্থাপন করেছে এবং মনে করিয়ে দিয়েছে- যদি অপরাধীদের সাজা থেকে ছাড় দেওয়া হয়, তবে এটি কেবল ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকে বাধাগ্রস্ত করে না, বরং ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত ব্যক্তি ও পরিবারের মানবাধিকারকে মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী হারজিৎ এস সজ্জনের সাম্প্রতিক বৈঠক, ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং বাংলাদেশ সফররত মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে খুনিদের প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশের দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে দিতে কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ নেই
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, বিষয়টি তাদের বিচার বিভাগের এখতিয়ারভুক্ত এবং এর সঙ্গে যুক্ত আইনি প্রক্রিয়ার জটিলতার কথা উল্লেখ করে জানানো হয়, তাদের বিচার বিভাগ বাংলাদেশের দাবি সম্পর্কে অবগত রয়েছে।
কানাডা বলছে, তারা স্বাধীন বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করে না। তবে, বিষয়টি (নূর চৌধুরীর নির্বাসন ইস্যু) সঠিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য যথাযথ স্থানেই রয়েছে।
কিছুদিন আগে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং আত্মস্বীকৃত খুনিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে হস্তান্তরের বিষয়ে দেশটির মতামত জানতে চান।
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘বিদেশি পলাতক অপরাধীদের সমর্পণের বিষয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করি না।’
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করা হবে। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পরিবারের ১৮ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
আরও পড়ুন: এটা তাদের জন্য লজ্জার: বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয় দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বঙ্গমাতার ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এর ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় বঙ্গমাতাকে শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আজ মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বাঙালি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রতিটি ধাপে বঙ্গমাতার অবদান রয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত জন্মভূমিকে শস্য-শ্যামলারূপে গড়ে তুলতে জাতির পিতার পাশে দাঁড়ান বঙ্গমাতা।’
তিনি বলেন, ‘ইতিহাসে বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব কেবল একজন প্রাক্তন রাষ্ট্রনায়কের সহধর্মিণীই নন, বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে অন্যতম এক নেপথ্য অনুপ্রেরণাদাত্রী, রাজনৈতিক সহকর্মী হিসেবে আজীবন প্রিয়তম বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী ছিলেন।’
দেশের জন্য বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বঙ্গমাতার সারাজীবনের ত্যাগের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ ফজিলাতুন নেছা আড়ালে থেকে তার গার্হস্থ্য জীবনের কর্তব্য পালন আর মন-মস্তিষ্কে স্বামী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সহযোগিতা করে গেছেন আজীবন। খোকা থেকে শেখ মুজিব, শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু এবং সবশেষে বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা - এগুলোর পেছনে আজীবন স্বামীকে সাহস জুগিয়েছেন তিনি, দিয়েছেন অনুপ্রেরণা ও গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ।’
বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গমাতা অবিচ্ছেদ্য সত্তা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ -এক অমর কবিতার নাম। আর সেই মহাকাব্য রচনায় যে নারীর অবদান অনস্বীকার্য, যিনি সোনার বাংলা বিনির্মাণে আড়ালে অন্তরালে থেকে রেখে গেছেন অসামান্য অবদান, তিনি হলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধু, বাঙালি ও বাংলাদেশ যেমন একই সূত্রে গ্রথিত, তেমনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবও পরস্পর অবিচ্ছেদ্য নাম।’
আরও পড়ুন: বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক-২০২৩ পেলেন ৪ নারী ও জাতীয় নারী ফুটবল দল
ঢাকায় চীনা বিশেষ দূত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত
এশীয় বিষয়ক চীনের বিশেষ দূত দেং সিজুন ঢাকায় দুটি পৃথক বৈঠক করেছেন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, চার মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এটি তার দ্বিতীয় সফর এবং তিনি সোমবার (৩১ জুলাই) ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন।
এবার বাংলাদেশে আসার আগে চীনের বিশেষ দূত মিয়ানমার সফর করেছেন। মঙ্গলবার তার ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে।
তবে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা বা স্বয়ং পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এখন পর্যন্ত জিজুনের সফর সম্পর্কে কিছু জানাননি।
আরও পড়ুন: ঝিনজিয়াংয়ে বন্দিশিবির নেই, বিদেশি গণমাধ্যমসহ সবার জন্য উন্মুক্ত: চীন
এপ্রিলের শুরুতে চীনের বিশেষ দূতের সঙ্গে বৈঠকের পর রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরতে শুরু করবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন তার আশা পুনর্ব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সুবিধার্থে অনেকেই কাজ করছেন। ‘আমার বলা উচিত তারা (চীন) একটি খুব ভাল উদ্যোগ নিয়েছে এবং তারা সেই অনুযায়ী কাজ করছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য অতীতে দুবার চেষ্টা করা হলেও দুটিই ব্যর্থ হয়েছে।
মোমেন বলেন, চীনা পক্ষ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনার সুযোগ দেয় এবং আশা প্রকাশ করে যে রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরতে শুরু করবে।
আরও পড়ুন: চীনের ঝিনজিয়াংয়ে 'বন্দিশিবিরের' দাবি ভিত্তিহীন: বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধি দলকে অঞ্চলটির বৃহত্তম মসজিদের ইমাম
ঢাকা-বেইজিং কৌশলগত সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে হবে: চীনা রাষ্ট্রদূত
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি যথেচ্ছভাবে প্রয়োগের পরিবর্তে বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে অনুসরণ করা হবে: বাংলাদেশের প্রত্যাশা
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশ আশা করে যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি যথেচ্ছভাবে প্রয়োগের পরিবর্তে বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে অনুসরণ করা হবে।
বৃহস্পতিবার বিকালে গণমাধ্যমের সামনে তিনি বিবৃতিটি পাঠ করেন।
ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড অ্যাক্টের অধীনে তথাকথিত থ্রিসি বিধান অনুযায়ী ভিসা সীমাবদ্ধতা নীতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার আমলে নিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখতে সকল পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের দ্ব্যর্থহীন অঙ্গীকারের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এই ঘোষণাকে দেখতে চায়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল দেশ এবং জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে ধারাবাহিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পরিচালনার জন্য কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সত্তার কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ড বা হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন: নতুন ভিসা নীতি শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার জন্য: রাষ্ট্রদূত হাস
বিবৃতি অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকসহ নির্বাচনী প্রক্রিয়া কঠোর নজরদারিতে থাকবে।
সরকার আশা করে যে স্থানীয় অগণতান্ত্রিক শক্তি যারা সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় তারা সতর্ক থাকবে এবং সংবিধানের নির্দেশিত নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করার তাদের বিভ্রান্তিকর প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘কঠিন ত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং দেশের উন্নয়ন অর্জনকে সমুন্নত রাখা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের জনগণের ওপর নির্ভর করে।’
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর অব্যাহত অঙ্গীকারের পাশে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় সমর্থনকে বাংলাদেশ সরকার ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করে।
আরও পড়ুন: মার্কিন ভিসা নীতি: বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা বিএনপির
সরকার আশা করে অগণতান্ত্রিক শক্তি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করার বিভ্রান্তিকর প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকবে
বাংলাদেশ সরকার বলেছে, তারা আশা করে যে স্থানীয় অগণতান্ত্রিক শক্তি; যারা সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞের অবলম্বন করে, তারা সতর্ক থাকবে এবং সংবিধানের নির্দেশিত নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করতে তাদের বিভ্রান্তিকর প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকবে।
সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, কঠোর পরিশ্রমে অর্জিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং দেশে উন্নয়নের সুফল টিকিয়ে রাখা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের জনগণের ওপর নির্ভর করে।
বৃহস্পতিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত নতুন ভিসা নীতির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘সরকার প্রশংসা করে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দৃঢ়ভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর টেকসই প্রতিশ্রুতির পাশে দাঁড়িয়েছে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নির্বাচনের সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক আচরণে আপস করার জন্য কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সত্তার দ্বারা কোনো বেআইনি অনুশীলন বা হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ ও মোকাবিলার জন্য সরকারি যন্ত্রপাতি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দ্বারা নির্বাচনী প্রক্রিয়া কঠোর নজরদারির মধ্যে থাকবে।
ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড অ্যাক্টের অধীনে তথাকথিত থ্রিসি বিধান অনুসারে ভিসা সীমাবদ্ধতা নীতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার নোট করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখার জন্য সকল স্তরে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তার সরকারের দ্ব্যর্থহীন প্রতিশ্রুতির বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এই ঘোষণা দেখতে চায়।’
আরও পড়ুন: মোমেনের মানহানির অভিযোগে দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের নিন্দা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল দেশ হিসেবে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে ধারাবাহিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা রয়েছে বলে সরকার জানিয়েছে।
২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে এটা স্পষ্ট যে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অব্যাহত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে দেশের জনগণ অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।
এর ফলে ২০০৬ সালের মাথাপিছু দারিদ্র্য ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং একই সময়ের মধ্যে চরম দারিদ্র্য ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংসে নেমে এসেছে।
এখন উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ একটি ‘আন্তর্জাতিক রোল মডেল’, ২০২৬ সালের মধ্যে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে উন্নীত হওয়ার যোগ্য হয়ে উঠেছে।
গত চৌদ্দ বছরে টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচিত হওয়ার কারণেই এসব অর্জিত হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক ও ভোটাধিকারের ব্যাপারে অনেক বেশি সচেতন।
এতে বলা হয়েছে, ভোট কারচুপির মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট হরণ করে কোনো সরকার ক্ষমতায় থাকার নজির নেই।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দলকে রেখে অন্য রাজনৈতিক দলকে ‘সমর্থন’ করে না যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
জনগণের ভোটাধিকারের অধিকারকে আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রীয় পবিত্রতা বলে মনে করে এবং এই অধিকারের জন্য নিরলস সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার রয়েছে।
সরকার সব শান্তিপূর্ণ ও বৈধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য সমাবেশ ও সমিতির স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশে নির্বাচনী সংস্কার প্রক্রিয়া সমস্ত সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শমূলক পদ্ধতিতে অব্যাহত রয়েছে।
প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতৃত্বাধীন সরকার কর্তৃক তালিকাভুক্ত ১০ দশমিক ২৩ মিলিয়ন জাল ভোটারের প্রতিক্রিয়ায় ছবিসংবলিত ভোটার আইডি কার্ড ইস্যু করা হয়েছিল।
ভোটারদের পাশাপাশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও এজেন্টদের মধ্যে আস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ব্যবহারেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাতীয় নির্বাচন কমিশন পূর্ণ স্বাধীনতা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গে তার কার্যাবলী সম্পাদন করার জন্য কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে।
বর্তমান সরকার প্রথমবারের মতো প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২ জাতীয় সংসদ কর্তৃক প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়।
এ আইন অনুযায়ী নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশ সংবিধান এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ দ্বারা বাধ্যতামূলকভাবে সম্পূর্ণ নির্বাহী প্রক্রিয়া নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকবে, যাতে তারা নির্দেশিতভাবে তার দায়িত্ব পালনে সহায়তা করতে পারে।
বাংলাদেশিদের সুদানে ভ্রমণ না করার পরামর্শ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
সাম্প্রতিক সুদানে সশস্ত্র সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে ভ্রমণ না করার জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শনিবার এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়।
আরও পড়ুন: সুদানে অভ্যুত্থান: গণতন্ত্রপন্থী ৩ নেতা আটক
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সুদানে মারাত্মক সশস্ত্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। যার ফলে দেশটিতে হতাহতের ঘটনা ঘটছে এবং খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির সংকট দেখা দিয়েছে।
এছাড়া খার্তুম বিমানবন্দরসহ খার্তুম শহর এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ চলছে।
তাই বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য এখন সুদান ভ্রমণ নিরাপদ নয়। এ কারণে সব বাংলাদেশি নাগরিকদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোকে এই পরামর্শটি অবগত করা হল।
দূতাবাস এ ব্যাপারে সুদানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের পরামর্শ প্রদান করেছে।
আরও পড়ুন: সুদানের সেনাবাহিনী ও প্রতিপক্ষ বাহিনীর লড়াইয়ে নিহত ৫৬
ঢাকায় দক্ষিণ সুদানের প্রতিনিধি দল
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ উদযাপন
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ উদযাপন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ফরেন সার্ভিস একাডেমি এবং ফরেন অফিস স্পাউসেস এসোসিয়েশন (ফোসা) এর যৌথ আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন।
‘স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন শিশুদের চোখ সমৃদ্ধির স্বপ্নে রঙিন’- প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘যারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ করে তাদের মাঝেই বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকবেন জন্ম থেকে জন্মান্তরে।’
জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানসিকতা, গরীব-দুঃখী মানুষের প্রতি ভালবাসা ও তাদের দুঃখ দূর করার প্রতিজ্ঞা বঙ্গবন্ধুকে রাজনীতিতে নিয়ে আসে। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি।’
আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শ্রদ্ধা
অনুষ্ঠানে শিশুদের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘জাতির পিতা ছিলেন শিশুমনের অধিকারী একজন মানুষ। শিশুদের সঙ্গে তিনি গল্প করতেন, খেলা করতেন। তিনি নিজের জন্মদিনে শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালবাসতেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন আজকের শিশুরাই আগামী দিনে দেশ গড়ার নেতৃত্ব দিবে। তোমরা জীবনে অনেক বড় হও, ভাল মানুষ হয়ে গড়ে ওঠো, সৃজনশীলতা ও নতুনের আহ্বানে এগিয়ে যাও সামনে।’
মাসুদ বিন মোমেন নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ, অধ্যবসায় আর সংগ্রামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বহুদূর। আজকের শিশুরাই হাল ধরবে আগামীর বাংলাদেশের, শিশুরাই হবে ভবিষ্যতে সোনার বাংলার কাণ্ডারি।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘জাতির পিতা যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই সোনার বাংলা বিনির্মাণে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহ।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন। একইসাথে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার এডমিরাল (অব:) মো. খুরশেদ আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমদ চৌধুরী, ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর মাশফি বিনতে শামস এবং ফরেন অফিস স্পাউসেস এসোসিয়েশন (ফোসা) এর সভাপতি মিজ ফাহমিদা জেরিন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে ফরেন অফিস স্পাউসেস এসোসিয়েশন (ফোসা) পরিবারের শিশু ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য পিএসডি (প্রোগ্রাম ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট) পরিচালিত স্কুলের শিক্ষার্থীরা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ফরেন সার্ভিস একাডেমির কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
জাতির পিতার জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ফরেন অফিস স্পাউসেস এসোসিয়েশন (ফোসা) এর পক্ষ হতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য পিএসডি পরিচালিত স্কুলের সহায়তার জন্য প্রোগ্রাম ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (পিএসডি) এর সাধারণ সম্পাদক শিরিন রহমানের কাছে ৫০ হাজার টাকার অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন ফরেন অফিস স্পাউসেস এসোসিয়েশনের সভাপতি মিজ ফাহমিদা জেরিন।
অনুষ্ঠানের শেষাংশে জাতির পিতার জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে উপস্থিত সকল শিশুকে সাথে নিয়ে কেক কাটেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। এসময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে উপস্থিত সকল শিশুকে বঙ্গবন্ধুর বই উপহার দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ফরেন সার্ভিস একাডেমির কর্মকর্তারা, ফোসা পরিবারের সদস্য ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী শুক্রবার
প্রথম জাতিসংঘ পানি সম্মেলন নিউইয়র্কে শুরু ২২ মার্চ
আগামী ২২-২৪ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে প্রথম জাতিসংঘ পানি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবররীন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, নেদারল্যান্ডস ও তাজিকিস্তান-এর যৌথ সভাপতিত্বে ‘ইউএন ২০২৩ ওয়াটার কনফারেন্স’- অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
১৯৭৭ সালের পর ৫০ বছরে পানি বিষয়ে এটিই প্রথম জাতিসংঘ সম্মেলন।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.আব্দুল মোমেন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীসহ একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল যোগ দেবেন।
তিনি আরও বলেন, সম্মেলনে ‘ওয়াটার অ্যাকশন ডিকেড (২০১৮-২০২৮)’-এর বাস্তবায়ন অগ্রগতির সমন্বিত পর্যালোচনা করা হবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত পানি-সংক্রান্ত বিভিন্ন লক্ষ্য ও কার্যক্রমগুলোকে আরও গতিশীল ও কার্যকর করে তোলা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের ৬ সংস্থার তহবিল বরাদ্দ বাস্তবায়ন
সেহেলী সাবররীন বলেন, বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল পানি বিষয়ক টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৬ এর আওতাধীন বিষয়গুলোতে দেশের অগ্রগতি এবং এ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সহায়তা নিয়ে আলোচনা করবেন।
এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানির ব্যবস্থাপনা ও প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
এক্ষেত্রে জলবায়ু পরবির্তনের ফলে পানি বিষয়ক অভিযোজনে বাংলাদেশের নিজস্ব অভিজ্ঞতাসমূহ যেমন-ভাসমান ফসল চাষ পদ্ধতি এবং জলমগ্নতা, খরা, লবণাক্ততা ও জলবায়ু সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবনসহ বিভিন্ন স্থানীয় পদ্ধতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরা হবে।
এছাড়াও, অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে পানির যথাযথ মূল্যায়নের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কারিগরি পর্যায়ে যে কাজ করেছে সে বিষয়েও অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হবে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পানিসম্পদ সহযোগিতার ক্ষেত্রে অববাহিকাভিত্তিক ব্যবস্থাপনার যেসব বিষয়ে বাংলাদেশ গুরুত্বারোপ করেছে সেসব বিষয়ে প্রতিবেশী দেশসমূহ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সকলের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
এক্ষেত্রে সুষ্ঠু পানি ব্যবস্থাপনাকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, শান্তি ও নিরাপত্তার অন্যতম নিয়ামক হিসেবে তুলে ধরা হবে। ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’- এর আওতায় অ্যাডাপ্টিভ ডেল্টা ম্যানেজমেন্ট-এর ক্ষেত্রে যেসব স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে সে বিষয়েও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করা হবে।
সর্বোপরি, ২০১৬-১৭ সালে জাতিসংঘের মহাসচিবের হাই লেভেল প্যঅনেল অন ওয়াটার-এর সরকার প্রধানদের অন্যতম হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা, তার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতার মাধ্যমে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সকলের কাছে তুলে ধরা হবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের ৭৮ মিলিয়ন শিশু কোনোদিন স্কুলে যায় না: জাতিসংঘ প্রধান
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে অপরাধের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে 'গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস' গঠন
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শ্রদ্ধা
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব শাব্বির আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানোর সময় মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার এ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম, মিশনসমূহের মহাপরিদর্শক আসাদ আলম সিয়াম এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সারাদেশে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ মঙ্গলবার