ধ্বংসস্তূপ
কঠোর লড়াইয়ের পর ইসরায়েলি সৈন্যরা খুঁজে পান ধ্বংসস্তূপ ও শিশু হত্যার চিহ্ন
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একজন কমান্ডার ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া পুড়ে যাওয়া একটি বাড়ির সামনে থামলেন। এক সময়ের দাঁড়িয়ে থাকা বাড়ির সামনের দেয়াল এখন আর নেই। তিনি বললেন, দেখুন হামাস সশস্ত্র বাহিনীরা কী করেছে! এই ঘনবসতি সম্প্রদায়টি কিছুদিন আগেও প্রাণে চঞ্চল ছিল।
মেজর জেনারেল ইতাই ভেরুভ বলেন, ‘যে ঘরে শিশুরা ছিল, সে ঘরেই কেউ এসে তাদের মেরে ভেলেছে। ১৫ জন ছিল মেয়ে ও কিশোর বয়সী। তারা তাদের একই ঘরে রেখে হ্যান্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং সব শেষ হয়ে যায়।’
ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে পূর্ব ইউরোপে ইহুদিদের ওপর নৃশংস হামলার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘এটি জঘন্য ঘটনা, এটি গণহত্যা।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েল ও হামাসের সংঘর্ষে ৯ মার্কিন নাগরিক নিহত: এনএসসি
গাজার সঙ্গে ইসরায়েলের সুরক্ষিত সীমান্ত থেকে কয়েক মাইল দূরে অবস্থিত এই গ্রামটি সশস্ত্র বাহিনীদের কাছ থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘ লড়াইয়ের পর বুধবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক সাংবাদিকসহ একদল সাংবাদিকের নেতৃত্বে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এই গ্রামটি পরিদর্শন করে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেন, ইসরায়েলি বাহিনীর জয়ের আগে হামলাকারীরা ১০০ জনেরও বেশি বাসিন্দাকে হত্যা করেছে।
ফিলিস্তিনি ছিটমহল থেকে শুরু হওয়া ব্যাপক আক্রমণের অংশ হিসেবে শনিবার ভোরে ২০টিরও বেশি শহর ও গ্রামে হামলা চালানো হয়, যার মধ্যে ১ হাজারেরও বেশি মানুষের বসতি বে’ইরি অন্যতম।
প্রতিষ্ঠারও দুই বছর পূর্বে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা শুরু হওয়া বে'ইরি অঞ্চলে অন্যান্য স্থাপনার মধ্যে একটি বড় মুদ্রণ প্ল্যান্ট ছিল, যা ইসরায়েলি ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়। যা এখন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধের ভয়াবহ প্রতীকে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ২০০ এবং গাজায় প্রায় ১ হাজার ১০০ জন নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলে ফ্লাইট স্থগিত করল ইজিপ্টএয়ার
সামরিক বাহিনী থেকে অবসর নেওয়া ভেরুভকে আবারও আক্রমণের কবলে পড়া শহরগুলো উদ্ধার করতে আবারও শনিবার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তিনি বলেন, হামাস যোদ্ধারা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অবস্থান নিয়েছিল, ছোট ছোট দলে লুকিয়ে ছিল এবং ইসরায়েলি সৈন্যদের চমকে দিয়েছিল। কারণ বাড়ি বাড়ি গিয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘যখনই আমরা ভেবেছি যে আমরা অঞ্চলটি পরিষ্কার করেছি এবং সবকিছু নীরব ছিল, হঠাৎ করে আরও ১২ বা ২০ জন বেরিয়ে এসেছে।’
দোতলা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনী গ্রেনেড দিয়ে কিশোর-কিশোরীদের হত্যা করেছে। সৈন্যরা তাদের হাত বাঁধা অবস্থায় অন্যান্য বাসিন্দাদের লাশ খুঁজে পেয়েছে। সংক্ষিপ্ত পরিদর্শনের সময়, একজন প্রতিবেদক কিছু বাড়ির পাশে ফাঁকা গর্ত এবং গাড়িতে আগুন দিতে দেখেছিলেন। ধ্বংসাবশেষের মাঝখানে একটি বাচ্চাদের ব্যাকপ্যাকসহ পরিবারের ফ্রেমযুক্ত ছবিগুলো সেখানে পড়ে ছিল।
বুধবার সূর্যাস্তের একটু আগে যখন সাংবাদিকদের নিয়ে আসা হয়, ততক্ষণে উদ্ধারকর্মীরা নিহত বেশিরভাগ বাসিন্দার লাশ সরিয়ে ফেলেন। কিন্তু বেশ কয়েকজন সশস্ত্র বাহিনীর লাশ ছিল এবং বাতাসে প্রচণ্ড মৃত্যুর গন্ধ ছিল।
ভেরুভ বলেন, ‘আমরা গাজায় আঘাত হানব। আমরা হামাসকে আঘাত করব। এবং আমরা ধ্বংস করব।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের সমর্থনে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে রণতরী পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৬৮
ইন্দোনেশিয়ার প্রধান দ্বীপ জাভাতে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২৬৮ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার উদ্ধারকারীরা ভূমিকম্পে ভেঙে পড়া বাড়িঘর এবং ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও মৃতদেহ খুঁজে পেতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। বুধবার আরও উদ্ধারকারী ও স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার বিকালে দেশটিতে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে এই প্রাণহানি ও বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটে।
উদ্ধারকারী দল আরও ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে পশ্চিম জাভা প্রদেশের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ প্রদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ শহর সিয়াঞ্জুরে পৌঁছেছে। সোমবার বিকালের ভূমিকম্পে আতঙ্কিত বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসে। যাদের অনেকে রক্তাক্ত ও ধ্বংসাবশেষে আহত ছিল।
আরও পড়ুন: উত্তর-পশ্চিম তুরস্কে ৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
এর আগে পুলিশ, উদ্ধারকারী দল, স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই হাজারেরও বেশি সদস্য নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হলেও বুধবার এই যাত্রায় ১২ হাজারেরও বেশি সেনাবাহিনীর সদস্যদের যুক্ত করা হয় উদ্ধার কাজ দ্রুত করার জন্য।
ভূমিকম্পের পরবর্তী ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, সেতু এবং বিদ্যুতের ব্ল্যাকআউট এবং ভারী যন্ত্রপাতির অভাবের কারণে ইন্দোনেশিয়ার উদ্ধারকারীদের কাজে বিঘ্ন ঘটে। ভূমিধসের কারণে রাস্তাগুলো অবরুদ্ধ হয়ে যায় এবং বেশ কয়েকটি বাড়ি এবং গাড়িচালককে চাপা দেয়।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২৫২
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে ৪৬ জনের মৃত্যু, আহত ৭০০
ফ্লোরিডায় ১২ তলা ভবন ধসে বহু হতাহতের আশঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামিতে ১২ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন ধসে পড়েছে। এ ঘটনায় অন্তত একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাত ১ টা ৩০ মিনিটের দিকে ভবনটি ধসে পড়ে।
মায়ামির দমকল বাহিনী জানায়, উদ্ধার কাজের জন্য ঘটনাস্থলে ৮০টি দমকল বাহিনীর গাড়ি পাঠিয়েছে তারা। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত ৩৫ জনকে ধ্বংসস্তূপ থেকে টেনে বের করা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে ১০ বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট বেনিগনো মারা গেছেন
দেশটির পুলিশও উদ্ধার কাজে সহায়তা করছে।
কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, ভবন ধসে মৃতের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে উঠতে পারে বলে। এছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে বহু মানুষ হতাহত হয়ে থাকতে পারেন।
তবে ধ্বংসস্তূপে ঠিক কত জন আটকা পড়েছেন তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: কানাডার আরেকটি আদিবাসী স্কুলে গণকবরের সন্ধান
সার্ফসাইডের মেয়র চার্লস বারকেট এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ভবনের পেছনের দিকে সম্ভবত এক-তৃতীয়াংশ বা তারও বেশি সম্পূর্ণভাবে ধসে গেছে।’
কাউন্টি কমিশনার জোস দিয়াজ জানান, ভবনের ৫১ জন বাসিন্দার সবাই জীবিত আছেন কিনা, তা জানার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: কারাগারে ‘আত্মহত্যা’ করলেন অ্যান্টিভাইরাস গুরু জন ম্যাকাফি
ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিস বলেন, ‘আমরা যে ধরনের ধ্বংসস্তূপ দেখছি, তাতে খারাপ খবরই আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছি।’
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফেডারেল সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন।
পাকিস্তানে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত ৩০
পাকিস্তানে দু’টি যাত্রীবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন যাত্রী নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার ভোরে সিন্ধ প্রদেশের গোতকি জেলায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উদ্ধারকর্মী ও গ্রামবাসীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে আহত ব্যক্তি ও লাশ উদ্ধারের কাজ করেছেন।
সিন্ধ প্রদেশের গোতকি জেলার পুলিশ প্রধান উমর তুফাইল বলেছেন, মিল্লাত এক্সপ্রেস ট্রেনের ধ্বংসাবশেষে এখনও ১৫ থেকে ২০ জন যাত্রী আটকা পড়ে আছেন। কর্তৃপক্ষ আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করতে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: আরও ১৩ জোড়া ট্রেন চালু
গোতকি পুলিশের উপ-কমিশনার উসমান আবদুল্লাহ বলেন, ‘মিল্লাত এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার পরে স্যার সাঈদ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে সংঘর্ষ হয়। ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়া এবং মুখোমুখি সংঘর্ষ হওয়ার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।’
আরও পড়ুন: ঢাকার যানজট কমাতে ২০৩০ সালের মধ্যে ৬টি মেট্রোরেল: কাদের
তিনি আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হলো যারা এখনও ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়ে আছেন তাদের দ্রুত উদ্ধার করা।’
আবদুল্লাহ জানান, এ পর্যন্ত অন্তত ৩০ জন যাত্রী মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: আরও ১১ জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চালু
রেল কর্মকর্তাদের মতে, দু’টি ট্রেনে প্রায় ১ হাজার ১০০ যাত্রী ছিলেন। আর বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
নেপালে ভূমিধসে ৬ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ২৬
রাতভর বৃষ্টিপাতের কারণে রবিবার ভূমিধসে নেপালের তিন গ্রামের অন্তত ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।