চাল
বাগেরহাটে অস্বাভাবিক হারে চালের দাম বৃদ্ধি, মিলমালিকদের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটের অভিযোগ
বাগেরহাটের খুচরা বাজারে চালের দাম কেজি প্রতি ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর পাইকারি বাজারে ২৫ কেজির এক বস্তা চালের দাম বেড়েছে ১৫০ টাকা। অস্বাভাবিক হারে চালের দাম বাড়ায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ধাক্কা লেগেছে। মিল থেকে চাহিদা মতো চাল পাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা। চাল ব্যবসায়ীদের দাবি মিলমালিকরা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে চলেছে। এ অবস্থায় চালের বাজার কঠোরভাবে মনিটরিংয়ের কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
সম্প্রতি বাগেরহাট শহরের চাউপট্টি এবং নাগেরবাজারে খুচরা ও পাইকারি চালের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, চালের অস্বাভাবিক মূল্যে বৃদ্ধির কারণে ক্রেতা-বিক্রেতারা নানা কথায় জড়াচ্ছেন। চালের মূল্য এত বেশি কেন ক্রেতাদের এমন প্রশ্নে দোকানিদের উত্তর, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে চালের দাম বেড়েছে। যে মূল্যে চাল ক্রয় করা হচ্ছে সেই হারে বিক্রি করা হচ্ছে। আমাদের কিছুই করার নেই। দোকানিদের এমন উত্তরে ক্রেতারা খুশি নয়। নিম্ন আয়ের অনেক খুচরা ক্রেতাকে প্রয়োজনের তুলনা কম পরিমাণ চাল নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে বাগেরহাটে চালের দাম বেড়েই চলেছে। প্রতি কেজি চালের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এখানে খুচরা বাজারে সর্বনিম্ন প্রায় ৫০ টাকা থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি হচ্ছে। এমনকি স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা মোটা চালেরও দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সুযোগ বুঝে খুচরা বিক্রেতারা ইচ্ছা মতো দাম বেঁধে চাল বিক্রি করছেন। আর একের পর এক হাত বদলে গ্রামগঞ্জের হাট-বাজারে চালের দাম আরও বাড়ানো হচ্ছে।
নাগেরবাজার এলাকার পাইকারি চাল বিক্রেতা প্রদীপ কুমার সাহা জানান, তাদের যে পরিমাণ চালের দরকার অর্ডার দিলেও তা পাচ্ছে না। ১০০ বস্তা চালের অর্ডার দিলে মোকাম থেকে মাত্র ২০ বস্তা চাল দিচ্ছে। এ অবস্থায় চালের ঘাটতি দেখা গিয়েছে।
তিনি জানান, ৬ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কেজি বেড়ছে চালের দাম বেড়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি মিলমালিকদের সিন্ডকেটের কারণে চালের দাম বেড়েছে বলে ওই ব্যবসায়ী জানান।
ফলপট্টি-মসজিদ রোডের খুচরা চাল ব্যবসায়ী প্রবীর সাহা অভিযোগ করে বলেন, চালের মিলমালিকরা সিন্ডিকেট করে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতি বস্তায় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা করে চালের দাম বাড়িয়েছে। অস্বাভাবিক হারে চালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ক্রেতাদের কাছে তাদের হেনস্তা হতে হচ্ছে। এ অবস্থায় চালের ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে।
নাগেরবাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী গোপাল সাহা জানান, দিনমজুর এবং নিম্ন আয়ের মানুষ সাধারণত যে ধরণের চাল খায় বাজারে সেই চালের বেশি সংকট। চাহিদা অনুযায়ী সেই চাল পাওয়া যাচ্ছেনা। নিম্ন আয়ের মানুষের চাহিদার চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা। বাজারে চালের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী।
পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে অনাবৃষ্টিতে আমন চাষ নিয়ে শঙ্কায় কৃষক
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় চাল আমদানি শুরু
৯ মাস পর শনিবার থেকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ভারতী চালের আমদানি শুরু হয়েছে। এতে করে দেশের ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার স্থিতিশীল হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রথম দিনে শনিবার এলসির চাল নিয়ে তিন ট্রাকে ১০৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বন্ধ চাল আমদানি
হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাব মল্লিক জানান, '৯ মাস চাল আমদানি বন্ধ ছিল। আমদানিকৃত ভারতীয় চাল দ্রুত বাজারজাত করা হলে চালের দর কিছুটা কমে আসবে।
হিলি আমদানি ও রপ্তানিকারক( সিএন্ডএফ) গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) ওপেন করায় শনিবার থেকে চাল আসা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
এদিকে, দিনাজপুরের খুচরা বাজারে গুটি স্বর্ণা ৪৬ টাকা, বিআর-২৯ জাত ৪৬ টাকা, মিনিকেট ৬৪ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৫৬ টাকা, সম্পা কাটারি-৬৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
খাদ্যের অপচয় রোধে সতর্ক হওয়ার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
খাদ্যের অপচয় রোধে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
তিনি বলেন, চাল চিকন করতে গিয়ে ছাটাই করে চালের অপচয় করা হচ্ছে। এতে পুষ্টিমানও কমে যাচ্ছে। জনসাধারণকে পুষ্টি সমৃদ্ধ চাল খাওয়ার পাশাপাশি খাদ্যের অপচয় রোধে সতর্ক থাকতে হবে।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের হালিশহরে সেন্ট্রাল স্টোরেজ ডিপোর (সিএসডি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় মন্ত্রী এই সব কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন তলাবিহীন জুড়ি থেকে উন্নয়নশীল দেশ হয়েছে। দেশে এখন মঙ্গা নেই। এখন আমরা পুষ্টি নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছি।
আরও পড়ুন: বাঙালি জাতির অসীম সাহসের প্রতীক পদ্মা সেতু: খাদ্যমন্ত্রী
সরকারি খাদ্য গুদামে চুক্তি করেও যারা চাল সরবরাহ করেনি তাদের কমপক্ষে এক বছর শাস্তির কথা উল্লেখ করে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, তারপর তাদের সঙ্গে সরকার আবার চুক্তি করবে। এরপরও যদি তারা সরকারি গুদামে চাল না দেয় তাহলে ধান চালের ব্যবসা তাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে বলে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, সরকারকে চাল দিয়ে সাহায্য করা মিল মালিক আর না দিয়ে অসহযোগিতা করা মিল মালিকদের এক কাতারে আমরা মূল্যায়ন করতে চাই না।
তিনি বলেন, খাদ্য বিভাগের সকল কর্মকর্তা কর্মচারিদের নিরলস পরিশ্রমে জাতীয় শুদ্ধাচার পুরষ্কার অর্জন করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারিদের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে অর্জিত সুনাম ধরে রাখার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো.সাখাওয়াত হোসেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খুরশীদ ইকবাল রেজভী, বিভাগীয় সড়ক পরিবহণ ঠিকাদারের (ডিআরটিসি) সভাপতি মাহমুদুল হাসান, শ্রমিক ঠিকাদার সমিতির নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, চট্টগ্রাম চালকল মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন, হালিশহর সিএসডির ব্যবস্থাপক প্রণয়ন চাকমা এবং চট্টগ্রামের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: অভিযানের ফলে চালের দাম কমেছে: খাদ্যমন্ত্রী
এছাড়া মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম সিএসডির কর্মকর্তারা, চালকল মালিক সমিতির নেতারা ও শ্রমিক সমিতির নেতারা অংশ নেন।
১০ মাস পর বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু
দীর্ঘ ১০ মাস পর বেনাপোল বন্দর দিয়ে রবিবার বিকাল থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। সন্ধ্যায় ৫১২ টন চালের চালান প্রবেশ করে বেনাপোল বন্দরে। আজ সোমবার সকালে চালের চালানগুলো বন্দর থেকে খালাস দেয়া হয়।
প্রতি মেট্রিক টন চাল ৩৪০ মার্কিন ডলার মূল্যে আমদানি হচ্ছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স বেলাল হোসাইন ও মেসার্স লিপু এন্টারপ্রাইজ চিকন চাল আমদানি করে।
বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মোটা চাল প্রতি টন ৩৮০ মার্কিন ডলারে ও চিকন চাল প্রতি টন ৪৫০ মার্কিন ডলারে শুল্কায়ন করে খালাস প্রদান করছেন। আমদানি মূল্যের ওপর ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ শুল্ককর হিসাবে প্রতি কেজিতে ৯ টাকা ৯০ পয়সা আমদানি শুল্ককর পরিশোধ করতে হচ্ছে।
ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ডাইরেক্টর মো. মতিয়ার রহমান জানান, দেশে উৎপাদিত চালের বাজার মূল্য নিশ্চিত করতে গত বছরের ৩১ আগস্ট ভারতীয় চাল আমদানি বন্ধ করে দেয় সরকার। বর্তমানে দেশে বিভিন্ন স্থানে বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতিতে বেড়ে যায় চালের মূল্য। চালের বাজার স্বাভাবিক রাখতে খাদ্য মন্ত্রণালয় শর্ত সাপেক্ষে গত ৩০ জুন দেশের ৯৫ জন আমদানিকারককে ভারত থেকে ৪ লাখ ৯ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি শামছুর রহমান জানান, চাল আমদানির অনুমতির মধ্যে ৩ লাখ ৭৯ হাজার মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল ও ৩০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল রয়েছে। ২১ জুলাইয়ের মধ্যে চালের এলসি খোলা সম্পন্ন ও ১১ আগস্টের মধ্যে আমদানিকৃত চাল দেশে বাজারজাত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী জারিন এন্টারপ্রাইজের মালিক আজিম উদ্দিন জানান, বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের বঁনগা কালিতলা পার্কিংয়ে ১৭ দিন সিরিয়ালে আটকা ছিল চালের চালানগুলো। সরাসরি চালের ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করলে চাল দ্রুত খালাস করা সম্ভব হবে। ফলে দেশের বাজারে দাম অনেকটা কমে আসবে।
পড়ুন: ঈদের ছুটি শেষে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু
বৈদশিক মুদ্রার রিজার্ভের ক্ষেত্রে কঠোর বাংলাদেশ ব্যাংক, বিলাসবহুল পণ্যে আমদানি ঋণ নিষিদ্ধ
সিরাজগঞ্জে ভিজিএফের চাল উদ্ধার
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কামারখন্দ হাটের দুটি দোকানে অভিযান চালিয়ে ভিজিএফ’র এক হাজার ৯৫০ কেজি চাল উদ্ধার করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বৃহস্পতিবার রাতে কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেরিনা সুলতানা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ভিজিএফ এর চাল উদ্ধারের পর তা জব্দ করেন।
আরও পড়ুন: ঈদ উপলক্ষে ১ লাখ ৩০০ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ
এব্যাপারে ইউএনও মেরিনা সুলতানা জানান, ঈদুল আযহা উপলক্ষে অসহায় মানুষের জন্য বরাদ্দ দেয়া ভিজিএফের চাল বিতরণ না করে কামারখন্দ হাটের আল মাহমুদ এবং আব্দুল হান্নানের দোকানে রাখা হয়েছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এক এক দোকান থেকে ১৭ এবং ২২ বস্তা করে চাল জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় দোকান মালিক আল মাহমুদ ও হান্নানের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
৩ জেলায় আরও চাল, নগদ টাকা ও শুকনো খাবার বরাদ্দ সরকারের
বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে মানবিক সহায়তা হিসেবে বিতরণের লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া,কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ জেলার বন্যাদুর্গতদের জন্য চাল,নগদ টাকা ও শুকনো খাবার বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
শুক্রবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এ বরাদ্দ দেয়া হয় বলে উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মো. সেলিম হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
বরাদ্দকৃত জেলা সমূহের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় দুই হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট,কুমিল্লা জেলায় দুইশ’ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১৭ লাখ টাকা, এক হাজার ৭০০ শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট এবং কিশোরগঞ্জ জেলায় একশ’ মেট্রিকটন চাল,নগদ ১০ লাখ টাকা এবং দুই হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এর আগে দেশের ১১ টি জেলায় সাম্প্রতিক বন্যায় মানবিক সহায়তা হিসেবে জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে ১৭ মে থেকে ২২ জুন পর্যন্তচার হাজার ২০ মেট্রিক টন চাল, পাঁচ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা এবং ৯৫ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বরাদ্দকৃত ত্রাণকার্য (নগদ) অর্থ শুধুমাত্র আপদকালীন সময়ে বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে মানবিক সহায়তা হিসেবে বিতরণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বেই যেসব খাবার সংরক্ষণ করা জরুরি
সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমছে, তবে আটকে পড়া বর্জ্যে দুর্ভোগ
বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমলেও দেশীয় বাজারে প্রভাব সামান্য
বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ২৬ শতাংশ কমলেও স্থানীয় বাজারে এখনো দাম কমানোর উদ্যোগ দেখা যায়নি।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা থেকে বিপুল পরিমাণ সয়াবিন তেল আমদানি করে বাংলাদেশ। গত এক মাসে দেশটি থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম কমেছে।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)হিসাব অনুযায়ী, গত বুধবার আর্জেন্টিনায় অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল প্রতি টন এক হাজার ৪৬৪ মার্কিন ডলার, যা মাত্র এক মাস আগে টন প্রতি ছিল এক হাজার ৯৭০ মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: ব্যবসায়িক গ্রুপ থেকে সয়াবিন তেল, ডাল ও চিনি কিনবে টিসিবি
অর্থাৎ এক মাসে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম প্রায় ২৬ শতাংশ কমেছে।
শুধু সয়াবিন তেল নয়, বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার প্রবণতা এখন কমতে শুরু করেছে। চাল, ভোজ্যতেল, গম, চিনি ও মসুর ডালের দাম কমছে।
তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিশ্ববাজারের সঙ্গে সয়াবিন তেলের দাম সমন্বয়ের কোনো পদক্ষেপ এখনো নেয়নি।
বিটিটিসির সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান বলেন, বিশ্ববাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য সুখবর। তবে মার্কিন ডলারের অস্থিতিশীল বিনিময় হার পণ্য ও ভোজ্যতেলের মূল্য সমন্বয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম নির্ধারক।
এদিকে পাইকারি বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমলেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব দেখা যায়নি বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার তেলের ক্রমবর্ধমান বাজার হয়ে উঠছে ভারত, চীন
বাজেট ২০২২-২৩: ১৫ টাকা কেজি দরে চাল পাবে ৫০ লাখ পরিবার
নিম্ন আয়ের ৫০ লাখ পরিবার প্রতি মাসে ১৫ টাকা দরে ৩০ কেজি চাল সহায়তা পাবে।
বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, কর্মাভাবকালীন সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এবং মার্চ ও এপ্রিলে এই সহায়তা দেয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, জাতীয় বাজেটে দেশীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং খাদ্য সামগ্রীর সরবরাহ ব্যবস্থাপনাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
মুস্তফা কামাল বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন, সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং কৃষি বিপণন ব্যবস্থাসহ সার্বিক পণ্য উৎপাদন অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী থেকে সৃষ্ট সংকট সত্ত্বেও সরকারের সময়োপযোগী উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশ নিরবচ্ছিন্নভাবে কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: কৃষি, খাদ্য ও মৎস খাতে ৩৩,৬৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ
বাজেট ২০২২-২৩: রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা
খাদ্য ব্যবসায়ীদের এক সংস্থার অধীনে আনার প্রক্রিয়া চলছে: মন্ত্রী
খাদ্য ব্যবসায়ীদের এক সংস্থার অধীনে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদনকারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের ব্যবসায়ীরা সরকারি ১৮টি সংস্থার অধীনে কাজ করতে হয়। যে কারণে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হয়। এজন্য খাদ্য ব্যবসায়ীদের এক সংস্থার অধীনে আনার প্রক্রিয়া চলছে।’
মঙ্গলবার বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘উন্নত অর্থনীতির জন্য নিরাপদ খাদ্য’ শীর্ষক সেমিনারের তিনি এসব কথা বলেন।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘খাদ্য ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কৃষি বাণিজ্য শিল্প এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সংস্থাগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে। এজন্য কারা তদারকি করবে সে বিষয়টি কেবিনেট (মন্ত্রিপরিষদ সভা) উত্থাপন করা হয়েছে। কেবিনেট বলে দেবে এগুলো কার কাজ।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খাদ্য নিরাপদতায় সব থেকে বেশি কাজ করছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ লাইসেন্সিং অথরিটি না। এক্ষত্রে অনকে সময় কাজ করতে সমস্যা হয়।
খাদ্য ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আপনারাও খাদ্যের মান উন্নয়ন করুন। কেউ কেউ মুনাফার জন্য ইচ্ছে করে অনিরাপদ খাদ্য তৈরি করে। আমরা চাই দেশের খাদ্য বিদেশের বাজার জয় করুক। এখন যেটুকু বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে, সেটা প্রবাসী বাংলাদেশিরা খাচ্ছে। চাই, অন্যান্য দেশের মানুষ বাংলাদেশি পণ্য খাবে।
চাল নিয়ে মন্ত্রী বলেন, চাল নিরাপদ করতে আমরা সেটা কতটুকু ছাঁটায় করা যাবে, কি মেশানো যাবে, কোনটা যাবে না, সে আইন করছি। তাতে পুষ্টিমান ঠিক থাকবে। খসড়া আইনটি কেবিনেটে পাশ হয়ে এখন ভেটিংয়ে রয়েছে। আশা করছি আগামী অধিবেশনে সেটি পাস হবে। তখন চাল ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, চালের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য জনসচেতনতাও দরকার। আমরা বস্তায় চাল কিনিনা। কিন্তু সেটা যখন পালিশ করে প্যাকেটে ভরে সেটা ১০ টাকা বেশি দিয়ে কিনি। সেজন্য ব্যবসায়ীরাও সেটা করে।
খাদ্যসচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমের সভাপতিত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গিয়াসউদ্দিন মিয়া, এফএওর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ রবার্ট সিম্পসনসহ খাদ্যসংশ্লিষ্ট সংস্থাপ্রধান, এফএওর প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: চালের বাজার স্বাভাবিক রাখতে বেসরকারিভাবে চাল আমদানি: খাদ্যমন্ত্রী
অবৈধ চাল মজুত: স্কয়ারের এমডির আগাম জামিন
অভিযানের ফলে চালের দাম কমেছে: খাদ্যমন্ত্রী
বাজারে অব্যাহত অভিযানের ফলে চালের দাম কমেছে বলে দাবি করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা বন্ধের দিনেও অভিযান পারচালনা করেছি। যেখানেই অবৈধ মজুদ পেয়েছি সেখানেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ খাদ্য আইন প্রণয়ন করেছে সরকার: খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের অব্যাহত অভিযানে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে এসেছে এটা বলবো না তবে বাজার নিম্নমুখী। অভিযান চলবে।