সিভিএফ
বাস্তুচ্যুতি হ্রাসে সম্মিলিত পদক্ষেপের আহ্বান বাংলাদেশ সরকার, আইওএম ও সিভিএফ’র
জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিনিয়ত স্থানচ্যুতি এবং অভিবাসনের মূল চালক হয়ে উঠেছে। অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়া না হলে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাবে বাস্তুচ্যুত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) যৌথভাবে জলবায়ু প্রভাবিত অভিবাসন ও স্থানচ্যুতির বিষয়ে অধিকতর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার মিশরের শারম আল-শেখে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক কাঠামো সম্মেলনের (ইউএনএফসিসিসি) ২৭তম অধিবেশন (কপ-২৭) প্রেক্ষাপটে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিএফভি) প্যাভিলিয়নে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এসব কথা ও আহ্বান উঠে আসে। ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে মানব গতিশীলতা- অভিবাসন এবং জলবায়ু পদক্ষেপে ইতিবাচক ন্যারেটিভ গঠন’ নামের অনুষ্ঠানটির যৌথ আয়োজন করে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইওএম ও সিভিএফ।
কপ-২৭ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই বিশেষ সাইড-ইভেন্টে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে মানব গতিশীলতা বিষয়ক নানা বিষয়ে সরকারের উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, সুশীল সমাজ ও বিশেষজ্ঞরা যোগ দেন।
উল্লেখ্য কপ-২৭ অভিবাসনের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে মোকাবিলা করার জন্য অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহকে আলোচনার একটি সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকার, আইওএম ও সিভিএফ-এর প্রতিনিধিরা শনাক্ত করেন যে মানুষ এবং তার সম্প্রদায়ের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধার ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে।
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালের মধ্যে জলবায়ু অর্থায়ন দ্বিগুণ চায় বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো
অভ্যন্তরীণ স্থানচ্যুতি বিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিবেদন ২০২১ অনুসারে, ২০৫০ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে আনুমানিক ২১৬ মিলিয়ন মানুষ জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাবে অভ্যন্তরীণ অভিবাসী হতে পারে।
বন্যা, ঝড়-বৃষ্টি, নদীভাঙন ও লবণাক্ততার উচ্চ সংবেদনশীলতাসহ ১৬ কোটি জনসংখ্যা নিয়ে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূলতায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। একইসঙ্গে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও ব্যবস্থাপনা এবং সেইসঙ্গে বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ফোরামে জনমত তৈরিতে এগিয়ে রয়েছে।
২ বছর আগে
কপ-২৬: তাপমাত্রা হ্রাস ও ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিতে আশাবাদী বাংলাদেশ
বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে কমিয়ে আনা এবং ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের ব্যাপারে এবারের কপ-২৬ সম্মেলনে ঐক্যমতে পৌঁছানোর আশা প্রকাশ করছে সম্মেলনে অংশ নেয়া বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার কপ-২৬ সম্মেলনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন ইউএনবিকে বলেন, আমি মনে করছি এবারের কপ-২৬ সম্মেলনে কিছুটা হলেও সফলতা অর্জন করতে পারবো।
মন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলো বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা ও প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের অর্থায়নের বিষয়ে মোটামুটি একমত। যদিও দুই একটি দেশ বিষয়টি চাচ্ছে না, তবে আলোচনা পজেটিবলি এগুচ্ছে। আশা করছি শেষ পর্যন্ত এটিও ঠিক হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামে (সিভিএফ) এ আমরা আমাদের লক্ষ্য তুলে ধরেছি। আশা করছি আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করতে পারব। আমাদের সাথে আরও ১৩টি দেশ যুক্ত হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় শীর্ষে থাকা বাংলাদেশ। দূষণকারী দেশগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ এবং সিভিএফের নেতৃত্বে থাকায় কপ-২৬ সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণ শূণ্যে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে শক্ত অবস্থানে আছে।
আরও পড়ুন:বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে কপ-২৬ শুরু
তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের জোর দাবি-তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি অথবা ২ ডিগ্রিকে (সর্বোচ্চ) টার্গেট করে এনডিসি হালনাগাদকরণ, উন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণের হার কমানো, সকল দেশের জলবায়ু পরিকল্পনা (এনডিসি, ন্যাপ, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা) অনুযায়ী গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমন কার্যক্রমকে তরান্বিত করা।
শাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশসহ যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফসল প্যারিস চুক্তিতে ‘লস এন্ড ড্যামেজ’ এর স্বতন্ত্র অন্তর্ভুক্তি। উন্নত দেশগুলো যদিও খুব বেশি সদিচ্ছায় লস এন্ড ড্যামেজ নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী না। কিন্তু বাংলাদেশ ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের নেতৃত্বে থাকায় এই ক্ষেত্রে আমরা জোরদার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
মন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে কার্বন নির্গমন কমানোর কাজে ব্যবহারের জন্য বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল তৈরি করার প্রতিশ্রুতি এসেছিল প্যারিস সম্মেলনে। কিন্তু এখনও এটি ফাইনাল হয়নি। ২০২০-২৪ সাল পর্যন্ত ৫০০ বিলিয়ন ডলারের রূপরেখা প্রণয়ন হবে (কোন দেশ কত পরিমাণ টাকা দেবে, কখন, কিভাবে দেবে)।২০২৫ সাল পরবর্তী অর্থায়ন লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা ও রূপরেখা প্রণয়ন হবে।
এদিকে শুক্রবার গ্লাসগোর স্থানীয় সময় বিকালে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে একটি সাইড ইভেন্টে মন্ত্রী বলেন, গত ২৬ আগস্ট বাংলাদেশ আপডেট এনডিসি ইউএনএফসিসিসিতে দাখিল করেছে। উক্ত এনডিসিতে ২০১২ সালকে বেস ইয়ার ধরা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের এনডিসি বাস্তবায়নে ২০৩০ সাল নাগাদ আনকন্ডিশনাল কন্ট্রিবিউশানে ৩২ বিলিয়ন এবং কন্ডিশনাল কন্ট্রিবিউশানের জন্য ১৪৩ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে,বাংলাদেশ নিজস্ব তহবিল থেকে আনকন্ডিশনাল কন্ট্রিবিউশান এবং উন্নত বিশ্ব থেকে কারিগরি এবং আর্থিক সহায়তা পেলে কন্ডিশনাল কন্ট্রিবিউশান বাস্তবায়ন করা হবে।
আরও পড়ুন:কপ-২৬ এ বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জলবায়ু সম্মেলন বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আতিকুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম ইস্যু হলো:ক্ষয় ও ক্ষতি বা লস এন্ড ডেমেজ, ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে টেম্পারেচার এবং ১০০ বিলিয়ন অর্থায়ন। এসব বিষয়ে পজেটিভ আলোচনা চলছে। সম্মেলনে শেষ পর্যায়ে এ বিষয়ে অগ্রগতি হবে বলে আশা করছি।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দলের সদস্য ও এলডিসি গ্রুপের কো-অর্ডিনেটর জিয়াউল হক ইউএনবিকে বলেছেন, উন্নত দেশগুলো ২০২০ সাল থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার মোবিলাইজ এবং ডিস্টিবিউশন করার কথা ছিল। কিন্তু তারা বলছে, গত বছর করোনার জন্য দিতে পারেনি। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। আশা করছি ২০২১ সালের মধ্যেই ১০০ বিলিয়ন টাকা দেয়া শুরু হবে।
২০২০ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত মোট ৫০০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার কথা রয়েছে। ২০২৬ সাল থেকে নতুন করে আরও বেশি ৩০০/৫০০ বিলিয়ন দেয়ার দাবি থাকতে পারে। এ বিষয়ে পরে আলোচনা হবে, আগে বকেয়া ১০০ বিলিয়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
জলবায়ু সম্মেলনে গ্লাসগোতে অবস্থানরত বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার ইউএনবিকে বলেন,ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য জলবায়ু সম্মেলনের পরও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে আন্তঃযোগাযোগের মাধ্যমে দায়ী রাষ্ট্রগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ করে যেতে হবে।
আরও পড়ুন:গ্লাসগো থেকে লন্ডন পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
৩ বছর আগে
অর্থায়ন ছাড়া কার্যকর জলবায়ু কর্মপরিকল্পনা সম্ভব নয়: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পর্যাপ্ত, টেকসই এবং সহজলভ্য জলবায়ু অর্থায়ন ছাড়া কার্যকর কর্মপরিকল্পনা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘এটি দুঃখজনক এবং হতাশাজনক যে এখন পর্যন্ত প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারী দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুত বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ দিতে ব্যর্থ হয়েছে।’
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী কপ-২৬ ভেন্যুতে ‘ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম লিডারস ডায়ালগ: ফরজিং এ সিভিএফ-কপ-২৬ ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি প্যাক‘ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং সিভিএফ-এর দূত সায়মা ওয়াজেদ হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবজনিত অস্তিত্ব হুমকির মুখোমুখি হয়ে সিভিএফ সদস্যরা, এই কপ-এ ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই পাঁচ বছরের অভিযোজন ও প্রশমনের ৫০:৫০ আনুপাতিক হারে প্রতিবছর মোট ৫০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন বিতরণের দাবি জানাই।’
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সিভিএফ সদস্য দেশগুলোকে বেশি ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিজেরাই নিজেদের মতো করে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বকে জলবায়ু অভিবাসীদের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
৩ বছর আগে
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ চায় ঢাকা
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের স্থায়ী প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সম্প্রতি নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সাথে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়নবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমদের সাক্ষাতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: আইসিআরসির সক্রিয় ভূমিকা চায় ঢাকা
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি হিসেবে এবং যুক্তরাজ্য জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন কপ-২৬ এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে যৌথভাবে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিতব্য কপ ২৬-এর পাশাপাশি একটি ইভেন্ট আয়োজন করতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন লর্ড আহমদকে জলবায়ুর অভিযোজনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেন।
লর্ড আহমদ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্রিয় নেতৃত্বের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: মস্কোর সহযোগিতা চায় ঢাকা
৩ বছর আগে
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশে সহায়তা বাড়াবে জার্মানি
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে জার্মানি। বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত অচিম ট্রস্টার বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম এবং বাংলাদেশে চলমান উন্নয়নে জার্মানির সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
সোমবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এর সাথে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে জার্মান রাষ্ট্রদূত এ আশ্বাস দেন। এসময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন এবং জলবায়ু পরিবর্তন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল: মন্ত্রী
বাংলাদেশকে জার্মানির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মিত্র উল্লেখ করে জার্মান রাষ্টদূত বলেছেন, ‘পারস্পরিক আলাপ আলোচনা ও চাহিদার ভিত্তিতে এ সহযোগিতা দেয়া হবে।’
বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের প্রশংসা করে জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি ও গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের মাধ্যমে জার্মান তার সহযোগিতা চালিয়ে যাবে।’পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন জার্মান রাষ্ট্রদূতকে জানান, বাংলাদেশ ক্লাইমেট ভালনারিবিলিটি ফোরাম (সিভিএফ) এবং ভালনারেবল-২০ এর সভাপতি হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সম্পর্ক: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা মূল বিষয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে
সিভিএফ এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামগ্রিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ ঘোষণা করেছেন। পরিবেশমন্ত্রী এসময় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ধনী দেশগুলোর প্রতিশ্রুত বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান, আর্টিকেল-৬ (মার্কেট মেকানিজম)-সহ প্যারিস জলবায়ু চুক্তির অন্যান্য বিষয়ে বিশ্ব নেতারা ঐক্যমতে পৌঁছাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মন্ত্রী বাংলাদেশের ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেইঞ্জ স্ট্র্যাটেজি এন্ড একশন প্ল্যান’ হালনাগাদকরণ এবং বন ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার জন্য বিএমজেড এবং জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেডকে ধন্যবাদ জানান। মন্ত্রী এসময় প্রযুক্তি হস্তান্তর, সক্ষমতা বৃদ্ধি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং শহর এলাকায় অভিযোজন কার্যক্রম বাস্তবায়ন সহ জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোতে জার্মানির সহযোগিতা কামনা করেন।
৩ বছর আগে
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান খুঁজছে জাপান
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই সমাধান খুঁজছে জাপান। এই পুরো অঞ্চলে ভবিষ্যতে স্থিতিশীলতা আনতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তাঁর দেশ রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য সক্রিয় পরিবেশ তৈরি করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে এবং যখনই উপযুক্ত সময় আসবে তখনই মিয়ানমার পক্ষের কাছে বিষয়টি উত্থাপন অব্যাহত রাখবে।
কসমস গ্রুপের জনহিতকর প্রতিষ্ঠান কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক: ভবিষৎতের পূর্বাভাস’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে ইতো এসব কথা বলেন। রবিবার অনুষ্ঠিত এ সংলাপে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান। সভাপতিত্ব করেন প্রখ্যাত কূটনীতিক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
সভায় আলোচক প্যানেলে ছিলেন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) বিশেষ দূত মো. আবুল কালাম আজাদ, জাইকার বাংলাদেশ অফিসের প্রধান প্রতিনিধি হায়াকাওয়া ইউহো, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ডা. সালেহউদ্দিন আহমেদ, টোকিওর স্যাক্রেড হার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাসাকা ওহাশি, লেখক ও কলামিষ্ট মনজুরুল হক, টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব পাবলিক পলিসির ডিন অধ্যাপক তাকাহারা আকিও এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম।
রাষ্ট্রদূত ইতো জানান, যখন তাঁরা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও শান্তির কথা বলেন, তখন মানবিক সহায়তা এবং মানবিক সংকট খুব বড় একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তিনি বলেন, ‘১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে এই মুহূর্তে দেশটিতে কী ঘটছে তা অনুমান করা খুব কঠিন। মিয়ানমার এখন কোন দিকে চলছে সে সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট চিত্র নেই। এখন সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রকৃতপক্ষে কেউই সুস্পষ্ট ধারণা দিতে পারবেন না।’
আরও পড়ুন: ঢাকা-টোকিও সম্পর্ক এগিয়ে নিতে রাষ্ট্রদূত ইতোর চোখে ৫ চ্যালেঞ্জ
তারিক এ করিম বলেন, ‘আশা করছি ২০২২ সালে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাচনে অস্থায়ী সদস্য প্রার্থী জাপান নিরাপত্তা পরিষদে এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
এই সাবেক কূটনীতিক বলেন, ‘সম্ভবত নীল হেলমেটের অধীনে শান্তিরক্ষা বাহিনী বা একই নীল হেলমেটের অধীনে আবার কোনও আঞ্চলিক শান্তিরক্ষা বাহিনীর প্রয়োজন হবে। মিয়ানমারে যে অশান্তি চলছে একবার আপনি তা নিরসন করতে পারলে দেশটির অভ্যন্তর থেকেই সম্ভবত একটি সমাধান বের হতে শুরু করবে। আমি আমাদের সমস্ত বন্ধুকে বিশেষ করে জাপানের প্রতি অনুরোধ করবো যাতে এশিয়ায় তাদের অংশে শান্তি বজায় থাকে এবং বিশৃঙ্খলা দেখা না দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়ানোর উপায় বের করতে হবে। মিয়ানমার প্ররোচনার মধ্যে রয়েছে এবং এই প্ররোচনাই এক সময় বিস্ফোরণে রূপ নেবে।’
বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক প্রসঙ্গে তারিক করিম বলেছেন, স্বপ্নকে একসাথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীলতা অর্জনে বাংলাদেশকে জাপানের সহায়তা করা উচিত।
কক্সবাজার এবং ভাসান চর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো বলেছেন, ‘কক্সবাজার এবং ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যুক্ত করা খুবই জরুরি। ভাসান চর ও কক্সবাজার রোহিঙ্গা শিবির উভয়ের জন্য আমাদের একটি বড় পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। এক্ষেত্রে জাতিসংঘ শিগগিরই ভূমিকা রাখবে বলে জাপান আশা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘টেকসই সমাধানের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভাসান চর প্রকল্পটি সফল হতে চলেছে। অন্যথায়, পুরো প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হতে পারতো।’
বাংলাদেশ কক্সবাজার এবং ভাসান চরে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং এনজিওগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশে জাপান রোহিঙ্গা সহায়তায় ১৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে।
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোতেগি তোশিমিৎসু এবং মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রানার বারগেনার গত মে মাসে মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এর আগে, ২০২১ সালের মার্চ মাসে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনকালে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া মিশন রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: কসমস সংলাপ: ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রত্যাশা
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চায় বাংলাদেশ
৩ বছর আগে
জলবায়ু সমস্যা নিরসনে কমনওয়েলথের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
কমনওয়েলথকে অনুন্নত দেশের দারিদ্র্যতা এবং জলবায়ুগত দূর্বলতা কমিয়ে আনতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এশীয় অঞ্চলের কমনওয়েলথ প্রধানের সাথে ভার্চুয়াল এক বৈঠকে তিনি বলনে, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি উন্নত ভবিষ্যৎ এর জন্য স্থায়ী এবং প্রাকৃতি সমাধান নির্ণয়ে কমনওয়েলথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।'
আরও পড়ুন: ইসরায়েল সম্পর্কে বাংলাদেশের নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কুইন দ্বিতীয় এলিজাবেথের বড় ছেলে প্রিন্স অফ ওয়েলস চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জ এই গোলটেবিল বৈঠকের আহ্বান করেন।
শেখ হাসিনা কমনওয়েলথের সদস্য এবং সিভিএফের সভাপতি হিসেবে সিওপি২৬ এর জন্য তিনটি পদক্ষেপ প্রস্তাব করেন। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্বব্যাপী বনায়ন বা বৃক্ষরোপণ এবং স্থায়ী অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রচার এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিকে ভালো অবস্থানে নেওয়ার জন্য বিনিয়োগের ব্যবস্থা।
অন্য দুটি পদক্ষেপ হলো- ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রেখে কার্বন নিঃসরণ মাত্রা কমিয়ে প্রাকৃতিক প্রযুক্তির ওপর জোড় দেওয়া এবং কমনওয়েলথ দেশগুলোর মাঝে জ্ঞান এবং প্রযুক্তির স্থানান্তর ও জলবায়ুগত ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো যাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আর্থিক সাহায্য পায় সে ব্যাপারে সাহায্য করা।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ নিয়ে সতর্ক থাকতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর অভিযোজন এবং জলবায়ুগত স্থিতিস্থাপক্তার জন্য আমাদের সম্পদ থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর স্বার্থের উন্নতিকল্পে এবং আঞ্চলিকভাবে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছে এবং নদী ভাঙন ও অন্যান্য ক্ষতিকর জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যারা গৃহহীন হয়েছেন তাদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বংলাদেশ ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারেটি ইনেসিয়েটিভ’গ্রহণ করেছে।
৩ বছর আগে
জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানালেন সায়মা ওয়াজেদ
জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের লক্ষ্যে সামগ্রিক প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন সিভিএফ থিমেটিক অ্যাম্বাসেডর ফর ভালনারেবিলিটি সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
৪ বছর আগে
সিভিএফ, জিসিএতে লন্ডনের দৃঢ় অবস্থান চায় ঢাকা
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এবং গ্লোবাল সেন্টার অব অ্যাডাপ্টেশন (জিসিএ) দক্ষিণ এশিয়া- উভয় ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যের দৃঢ় অবস্থান প্রত্যাশা করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
৪ বছর আগে