শ্রীলঙ্কা
বিদেশি ঋণ পরিশোধ স্থগিত করেছে শ্রীলঙ্কা
শ্রীলঙ্কায় তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে মঙ্গলবার বিদেশি ঋণ পরিশোধ স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। দ্বীপ রাষ্ট্রটির বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশটিকে ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি ঋণ পরিশোধ করা লাগবে। আর এ বছরই পরিশোধ করা লাগবে সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
লঙ্কান অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে বিদেশি ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার নিখুঁত রেকর্ড রয়েছে। তবে করোনা মহামারি ও ইউক্রেনের সংঘাত শ্রীলঙ্কার আর্থিক অবস্থান এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে যে বিদেশি সরকারি ঋণ পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’
আরও পড়ুন: গণবিক্ষোভের মুখে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের
দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নন্দলাল ওয়েরাসিংহে সাংবাদিকদের বলেন, বিদেশি ঋণ পরিশোধ স্থগিত করার ঘোষণাটি জরুরি ছিল। কেননা শ্রীলঙ্কার আগামী সপ্তাহে প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধের কথা এবং যদি দেশটি সেই অর্থ সংগ্রহ করতে না পারে তবে এটি ‘হার্ড ডিফল্ট’ এর মুখোমুখি হবে যা খারাপ পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে।
শ্রীলঙ্কানরা গ্যাস, জ্বালানি ও দুধ কিনতে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন এবং চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেছেন, সরকারি হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ওষুধের বিপর্যয়কর ঘাটতি রয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালো ক্ষমতাসীন জোট
এদিকে তীব্র এ অর্থনৈতিক সংকটের কারণ হিসেবে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেকে দায়ী করে তার পদত্যাগের দাবিতে টানা চারদিনের মতো প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের আশ-পাশে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান প্রেসিডেন্টের বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে সোমবার রাতে এক ভাষণে জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, সরকার দেশের আর্থিক সমস্যা সমাধানে কাজ করছেন।
বিএনপি বাংলার মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
বিএনপি বাংলার মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির কষ্ট হচ্ছে কেন বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মতো হচ্ছে না? তাদের মনের চিন্তা বাংলার মানুষ অশিক্ষিত থাকবে, চিকিৎসাসেবা পাবেনা, বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এগুলো করতে করতে বিএনপি বাংলার মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তারা বাংলার মানুষকে বিপদে ফেলতে ষড়যন্ত্র করছে। এসব ষড়যন্ত্র থেকে আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে।’
বুধবার মানিকগঞ্জের আরিচায় বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার বেইজ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক উন্নয়নে মেরিন ক্যাডেটদের অবদান অপরিসীম: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীনের পর নৌপথ খননের জন্য ৭টি ড্রেজার এনেছিলেন। এরপর দীর্ঘ সময় সরকারি ড্রেজার আসেনি। নৌপথ খননের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ৪০টি ড্রেজার সংগ্রহ করেছে, আরও ৩৫টি ড্রেজার সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গত ৪০ বছরে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে,তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি হয়েছে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার শাসন আমলে। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া কোন উন্নয়ন করেনি, উন্নয়নের বিষয়টি উপলব্ধি করেনি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করছেন। গত ১৩ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে ইমাজিং টাইগারে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আরিচায় ড্রেজার বেইজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এ ড্রেজার বেইজটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি ও গেইটওয়ে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
বিক্ষোভের কারণে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে: মাহিন্দা রাজাপাকসে
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে দেশটিতে কয়েক সপ্তাহের গণবিক্ষোভের অবসান ঘটানোর জন্য বিক্ষোভকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীরা কয়েক দশকের মধ্য দেশের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের জন্য সরকারের পদত্যাগের দাবি করে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।
বিদেশি রিজার্ভ তলানিতে এবং ২৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণে জর্জরিত দেশটি এখন দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে।
আরও পড়ুন: গণবিক্ষোভের মুখে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের
জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে রাজাপাকসে বলেছেন, সরকার দেশকে পুনর্গঠনের জন্য একটি পরিকল্পনা করছে। বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় বিক্ষোভ করে ‘প্রতি সেকেন্ড’ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়ার সুযোগ হারাচ্ছে।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা তার পদত্যাগের দাবিতে সোমবার তৃতীয় দিনের মতো প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রবেশপথ দখলে রেখেছে।
খাদ্য ও জ্বালানি কেনার জন্য জরুরি ঋণের জন্য চীন ও ভারতের সাহায্য চেয়েছে দেশটির সরকার।
মাহিন্দা রাজাপাকসে বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণ হিসেবে করোনা বিধিনিষেধ এবং গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন আয়ের ক্ষতিকে দায়ী করেন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় অন্তর্বর্তী সরকার নিয়োগের আহ্বান আইনপ্রণেতাদের
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতির তুলনা ষড়যন্ত্রের অংশ: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতির তুলনা করা ষড়যন্ত্র ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের অংশ।
তিনি বলেন, ‘যারা বলে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে,তারা হয় জেনেশুনে বা ইচ্ছাকৃতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমাদের ক্যাপিটাল একাউন্ট খোলা নেই,তাই কেউ শ্রীলঙ্কার মতো ইচ্ছা করলেই বিদেশে ডলার পাঠাতে পারবে না। আপনি যদি শিক্ষা বা চিকিৎসার জন্য বিদেশে অর্থ পাঠাতে চান, তবে আপনাকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে পাঠাতে হবে।’
শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের নতুন ইউনিট পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘অনেকে মেগাপ্রজেক্ট নিয়ে কথা বলছেন। পদ্মা সেতু বিদেশি ঋণের ওপর নির্ভরশীল নয়। শেখ হাসিনা আমাদের টাকায় পদ্মা সেতু করছেন,বিদেশি ঋণ নেয়া হয়নি। আমাদের দেশে বিদেশি ঋণ নিয়ে এমন কোনো মেগা প্রকল্প করা হয়নি। বঙ্গবন্ধু কন্যা সারা বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশ কী করতে পারে। ’
আরও পড়ুন: গণবিক্ষোভের মুখে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের
তিনি আরও বলেন, আমাদের পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার অধিকাংশ ঋণ স্বল্প সময়ের মধ্যে উচ্চ সুদের হারে কঠিন শর্তে পরিশোধ করতে হয়। অন্যদিকে আমাদের অধিকাংশ ঋণ দীর্ঘমেয়াদে পরিশোধ করতে হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল প্রকল্পের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের পর এখন তারা প্রচার করছে যে বাংলাদেশ হবে শ্রীলঙ্কা। করোনা সংকট কাটিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি তৃণমূলে ভারসাম্যপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশে কোনো সংকট ছিল না।’
তিনি অপপ্রচারকারীদের ব্যাপারে বলেন, বাংলাদেশ কখনই শ্রীলঙ্কা হবে না। এসব বলে অপপ্রচার করে লাভ নেই।
কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেল, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর কাজ প্রায় শেষ। এগুলো নিয়ে অনেক অপপ্রচার হয়েছে, কিন্তু অপপ্রচার করে অগ্রগতি ঠেকানো যায়নি।
রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য বাড়লেও এখন তা সহনীয় পর্যায়ে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ কখনো খেলাপি হয়নি। শ্রীলঙ্কার ঋণের অনুপাত ৬১ শতাংশ এবং বাংলাদেশের ঋণের অনুপাত ১৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় অন্তর্বর্তী সরকার নিয়োগের আহ্বান আইনপ্রণেতাদের
তিনি বলেন, ‘করোনা সংকট কাটিয়ে, আমাদের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে এখনও স্থিতিশীল থাকায় আমাদের রপ্তানি আয় রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র দুই বিলিয়ন আর আমাদের রিজার্ভ ৪৫ বিলিয়ন। শ্রীলঙ্কায় টাকা ধার দিয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সম্ভাবনা দেখিয়েছেন।
সভায় ২৬টি থানা, ৬৪টি ওয়ার্ড ও একটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা মোট ১৬০০ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যোগ দেন বলে সংগঠকেরা জানান।
আয়োজকরা আরও জানান,প্রথমবারের মতো শিকড়কে শক্তিশালী করতে উত্তর আওয়ামী লীগের প্রতিটি এলাকায় কাউন্সিলের মাধ্যমে ইউনিট চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার ছাঁচে বাংলাদেশকে মূল্যায়ন করবেন না: পরিকল্পনামন্ত্রী
গণবিক্ষোভের মুখে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের
শ্রীলঙ্কায় একদিন আগে জারি করা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করেছে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। এর আগে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে গণবিক্ষোভের জেরে জরুরি অবস্থা জারি করে প্রেসিডেন্ট।
মঙ্গলবার রাতে জারি করা এক ডিক্রিতে গোতাবায়া রাজাপাকসে বলেছেন, তিনি জরুরি আদেশ প্রত্যাহার করছেন।
এদিকে মঙ্গলবার শাসক জোটের প্রায় ৪০ জন আইনপ্রণেতা বলেছেন, তারা জোটের নির্দেশনা অনুযায়ী আর ভোট দেবেন না। তাদের বারবার আহ্বানের পরও প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করা ও অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখান করছেন। আইনপ্রণেতাদের দাবি গোতাবায়া অন্তর্বর্তী সরকার গঠন না করলে সহিংসতার জন্য তাদেরকে দায়ী করা হবে।
গত সপ্তাহে রাজধানী কলম্বোতে প্রেসিডেন্টের বাড়ির কাছে বিক্ষোভকারীদের তুমুল বিক্ষোভের পর গোতাবায়া রাজাপাকসে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন।
রান্নার গ্যাস, পেট্রোল, বিদ্যুৎ ও গুঁড়ো দুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের ঘাটতি নিয়ে প্রথমদিকে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে এই বিক্ষোভ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং এখন বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও তার সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় অন্তর্বর্তী সরকার নিয়োগের আহ্বান আইনপ্রণেতাদের
সোমবার থেকে টিভি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীরা ক্ষমতাসীন দলের আইন প্রণেতাদের অফিস ও বাড়িতে ঢুকে পড়েছে এবং কিছু জায়গা ভাংচুর করেছে।
মঙ্গলবার, বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর প্রথম নতুন সংসদ অধিবেশনে আইনপ্রণেতারা স্পিকারকে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেছেন।
জনগণের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হওয়া সত্ত্বেও রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী রাজাপাকসে পরিবার থেকে প্রেসিডেন্ট এবং তার বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ক্ষমতায় ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ক্রীড়ামন্ত্রী নামাল রাজাপাকসের সঙ্গে যারা পদত্যাগ করেছেন তাদের মধ্যে আরও দুই ভাই, অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসে এবং সেচ মন্ত্রী চামাল রাজাপাকসে ছিলেন।
রবিবার রাতে ৪০ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করে এবং গোতাবায়া রাজাপাকসে সকল দলকে ঐক্য সরকারে যোগদানের আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকট, লোডশেডিং, জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘাটতির সমাধানের দাবিতে বেশ কিছু দিন ধরে বিক্ষোভ করছেন জনগণ।
দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও তীব্র জ্বালানি সংকট নিয়ে ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের মুখে পড়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালো ক্ষমতাসীন জোট
ঐক্য সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধী দলের
শ্রীলঙ্কায় অন্তর্বর্তী সরকার নিয়োগের আহ্বান আইনপ্রণেতাদের
শ্রীলঙ্কার শাসক দলের আইনপ্রণেতাদের একটি দল দেশটির চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকার নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে। সংসদে স্পিকারকে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়কের সমর্থনে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে সব দলের সঙ্গে আলোচনার নেতৃত্ব দেয়ার আহ্বান জানান তারা।
মঙ্গলবার দেশটির আইনপ্রণেতা সতর্ক করে বলেছেন,এটি করতে ব্যর্থ হলে সহিংসতা ও নৈরাজ্য বাড়বে।
অন্যদিকে বৃহত্তম বিরোধী দল অবশ্য বলেছে, তারা কোনো অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করবে না এবং অবিলম্বে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের ওপর জোর দিয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালো ক্ষমতাসীন জোট
ইউনাইটেড পিপলস ফোর্স বা এসজেবির নেতা সজিথ প্রেমাদাসা বলেন, আমাদের বিক্ষোভকারীদের কথা শুনতে হবে। রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে সরকারকে সরে যেতে হবে।
দেশটিতে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবি অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় নতুন ৪ মন্ত্রীর শপথ গ্রহণ
শ্রীলঙ্কার ছাঁচে বাংলাদেশকে মূল্যায়ন করবেন না: পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিবেচনায় শ্রীলঙ্কার ছাঁচে ফেলে বাংলাদেশকে মূল্যায়ন করা ভুল। বাংলাদেশ কোনো অবস্থাতেই অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ করে না।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী।
একনেক চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে মোট ১২টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।
মান্নান বলেন, একনেকে এক হাজার ২০১৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল ৭,৯৯০.১৪ কোটি টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ৩,০০০.৩৯ কোটি টাকা এবং নিজস্ব উৎস থেকে অর্থায়ন ৫৯৪.৪৩ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালো ক্ষমতাসীন জোট
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করবেন না। কিছু লোক এটা করার চেষ্টা করছে। এটা ঠিক নয়।’
শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেও অনুৎপাদনশীল প্রকল্প নেয়া হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অপ্রয়োজনীয় কাজ করি না। দেশের মানুষের জন্য যা ভালো তা করি। শ্রীলঙ্কা আর আমাদের প্রেক্ষাপট এক নয়। শ্রীলঙ্কা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করব না।’
‘আমরা গবেষণা করছি, দেখছি এবং শুনছি। আমি আবারও বলছি, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি আর বাংলাদেশের অর্থনীতি এক নয়,’ যোগ করেন মান্নান।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় নতুন ৪ মন্ত্রীর শপথ গ্রহণ
ঐক্য সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধী দলের
শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধী দল ইউনাইটেড পিপলস ফোর্স বা এসজেবি ঐক্য সরকার গঠনের জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে।
এসজেবির প্রধান রঞ্জথ মাদুমা বানাদারা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন,‘এই দেশের মানুষ চায় গোতাবায়া এবং পুরো রাজাপাকসে পরিবার ক্ষমতা ছাড়ুক। আমরা জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেতে পারি না এবং আমরা দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে মিলে কাজ করতে পারি না।’
২২৫ সদস্যের সংসদে এসজেবি’র ৫৪ জন আইনপ্রণেতা রয়েছে।
সোমবার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের অফিস থেকে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিনি এই জাতীয় সংকটের সমাধান খুঁজতে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সমস্ত রাজনৈতিক দলকে সরকারে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
তার এ আহ্বানের পরে নতুন চার মন্ত্রী শপথ নিয়েছেন।
দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাবেক বিচারমন্ত্রী আলি সাবরি নতুন অর্থমন্ত্রী, জিএল পিরিস পররাষ্ট্রমন্ত্রী, দিনেশ গুনাবর্র্দেনা শিক্ষামন্ত্রী ও জনস্টন ফার্নান্দো পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
তবে এসজেবি তাৎক্ষণিকভাবে ঐক্য সরকার গঠনে প্রেসিডেন্টের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
এদিকে সোমবারও নেতৃত্ব পরিকর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। এসময় হাজার হাজার মানুষ জরুরি অবস্থা ও কারফিউ অমান্য করে রাস্তায় নেমে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় নতুন ৪ মন্ত্রীর শপথ গ্রহণ
গত রবিবার রাতে দেশটির ২৬ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন।
শুক্রবার মধ্যরাতে ডিক্রির মাধ্যমে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
জনগণের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হওয়া সত্ত্বেও রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী রাজাপাকসে পরিবার থেকে প্রেসিডেন্ট এবং তার বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ক্ষমতায় ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ক্রীড়ামন্ত্রী নামাল রাজাপাকসের সঙ্গে যারা পদত্যাগ করেছেন তাদের মধ্যে আরও দুই ভাই, অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসে এবং সেচ মন্ত্রী চামাল রাজাপাকসে ছিলেন।
এই পদত্যাগগুলোকে নির্বাহী, প্রতিরক্ষা এবং আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ধরে রেখে জনগণের ক্ষোভ প্রশমিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়া অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার দায়ে অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাও সোমবার পদত্যাগ করেছেন।
আরও পড়ুন: সংকট সমাধানে দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলকে অংশগ্রহণের আহ্বান শ্রীলঙ্কান প্রেসিডেন্টের
শ্রীলঙ্কায় একসঙ্গে ২৬ মন্ত্রীর পদত্যাগ
শ্রীলঙ্কায় নতুন ৪ মন্ত্রীর শপথ গ্রহণ
শ্রীলঙ্কায় নতুন মন্ত্রী হিসেবে চারজনকে সোমবার শপথ পড়িয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। দ্বীপ দেশটিতে তীব্র অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে মন্ত্রীদের পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টা পর তারা শপথ নিলেন।
দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাবেক বিচারমন্ত্রী আলি সাবরি নতুন অর্থমন্ত্রী, জিএল পিরিস পররাষ্ট্রমন্ত্রী, দিনেশ গুনাবর্র্দেনা শিক্ষামন্ত্রী ও জনস্টন ফার্নান্দো পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিরোধী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সরকার গঠনে রাজি হলে আগামী দিনে আরও মন্ত্রী শপথ নেবেন।
আরও পড়ুন: সংকট সমাধানে দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলকে অংশগ্রহণের আহ্বান শ্রীলঙ্কান প্রেসিডেন্টের
শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকট, লোডশেডিং, জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘাটতির সমাধানের দাবিতে বেশ কিছু দিন ধরে বিক্ষোভ করছেন জনগণ।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও তীব্র জ্বালানি সংকট নিয়ে ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের মুখে রবিবার রাতে লঙ্কান মন্ত্রিসভা থেকে মন্ত্রীরা পদত্যাগ করেন।
সোমবার প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে চলমান সংকটের সমাধান খুঁজতে সব রাজনৈতিক দলকে সরকারে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় একসঙ্গে ২৬ মন্ত্রীর পদত্যাগ
সংকট সমাধানে দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলকে অংশগ্রহণের আহ্বান শ্রীলঙ্কান প্রেসিডেন্টের
দেশের চলমান সংকটের সমাধান খুঁজতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে সরকারের সঙ্গে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
দেশটির মন্ত্রিপরিষদ মন্ত্রীরা তাদের পদ থেকে পদত্যাগ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই আহ্বান জানানো হয়।
সোমবার একটি বিবৃতিতে প্রেসিডেন্টের মিডিয়া বিভাগ বলেছে, বর্তমান সঙ্কটটি বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক কারণ ও বৈশ্বিক উন্নয়নের ফলাফল এবং একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কার সমাধান খুঁজে বের করা উচিত।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় একসঙ্গে ২৬ মন্ত্রীর পদত্যাগ