পানি
বরগুনায় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে
বর্ষা ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে বরগুনার গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় জেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে। নদীর পানি বাড়ায় বাঁধ ভাঙার শঙ্কায় কাটছে তাদের দিন।
তা ছাড়া পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে গেলে এইসব এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দেবে বলে বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), বরগুনা।
বরগুনার মাঝের চর এলাকার বাসিন্দা আলি আকবর বলেন, ‘আমাদের জমাজমি নেই। তাই নদীর চরে বাড়ি করেছি। ভাবছিলাম এবার বন্যা হবে না, কিন্তু পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে বোরো আবাদ মনে হয় বন্যায় খেয়ে যাবে। রাতে ঘুম হয় না, খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত
১ নম্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান রাজা বলেন, ‘মাঝের চরের বরগুনা অংশের কিছু এলাকার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। খুব শিগগিরই এই মৌসুমে এডিপির অর্থ দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মো. মাহাতাব হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) গৌরীচন্না ইউনিয়নের দক্ষিণে অবস্থিত খাকদন নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, বেতাগীর বিশখালী নদীর পানি ৩১ সেন্টিমিটার, বরগুনার আমতলীর বুড়েশ্বর/পায়রা নদীর পানি ১৭ সেন্টিমিটার, বরগুনার বিশখালী নদীর পানি ৪৩ সেন্টিমিটার এবং পাথরঘাটার বিশখালী নদীর পানি বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ৫৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপরে
কাজিপুরে বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যমুনার পানি
ভোলায় একদিনে পানিতে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু
ভোলার লালমোহনে একদিনে পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (০১ আগস্ট) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে আরও এক পানিতে পড়া শিশু।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে, সকালের দিকে উপজেলার ধলী গৌরনগর ইউনিয়নের চতলা এলাকায় মোসা. হুজাইফা নামে আড়াই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়। সে ওই এলাকার মাওলানা মো. রাকিবের মেয়ে।
এছাড়া, চরভূতা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে মো. জুনায়েদ নামে আট বছরের আরেক শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। সে ওই এলাকার মো. জাকিরের ছেলে।
সবশেষ, দুপুরের দিকে লালমোহন পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ানীগ্রাম এলাকায় পানিতে ডুবে মোসা. নুসরাত নামে ৬ বছরের আরও এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে, একই দিন সকালে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে নানা বাড়িতে বেড়াতে এসে পানিতে পড়ার পর রুহা নামে আড়াই বছরের এক শিশুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. হামিদা আকতার বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত হাসপাতালে পানিতে পড়া ৪ জন শিশুকে আনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এদের মধ্যে ৩ জনকেই মৃত অবস্থায় আনা হয়। বাকি একজনের অবস্থা কিছুটা খারাপ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে খালের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
লালমনিরহাটে পানিতে ডুবে প্রাণ গেলো ৩ জনের
লালমনিরহাটে পানিতে ডুবে প্রাণ গেলো ৩ জনের
লালমনিরহাটের পাটগ্রামে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) ধরলা নদীতে গোসল নেমে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
একই দিনে জেলার আদিতমারীর মহিষখোচায় পুকুরের পানিতে ডুবে ঝুমকি রানি নামের ২ বছরের একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
নিহত দুই শিক্ষার্থী হলো- উপজেলার বসুলগঞ্জ এলাকার রাসেল মিয়ার ছেলে নাহিদ আহামেদ রাফসান (১৩) এবং একই এলাকার নুরুল আমিনের ছেলে মিসকাত (১২)।
নাহিদ আহমেদ পাটগ্রাম ইসলামী আদর্শ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও মিশকাত ওই একই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, নাহিদ আহামেদ রাফসান ও মিসকাত ধরলা নদীতে গোসল করতে যায়। এ সময় তারা মাঝ নদীতে ডুবে যায়।
পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে পাটগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
একই দিনে জেলার আদিতমারীর মহিষখোচায় বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে পুকুরের পানিতে ডুবে ঝুমকি রানি নামের শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে ঝুমকি রানি পুকুরে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তার লাশ উদ্ধার করে।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মাছভর্তি বালতির পানিতে ডুবে প্রাণ গেল শিশুর
জামালপুরে পানিতে ডুবে ২ শিশুকন্যার মৃত্যু
জামালপুরে পানিতে ডুবে ২ শিশুকন্যার মৃত্যু
জামালপুর সদর উপজেলায় পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুকন্যার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর পিঙ্গলহাটি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই শিশুকন্যা হলো- শাহবাজপুরের সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে শুকরিয়া (৭) এবং একই এলাকার এরশাদ হোসেনের মেয়ে আতিয়া (৭)।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
তারা নুর এ মদিনা কিন্ডারগার্টেন মাদরাসার প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তারা দুজন চাচাতো বোন।
স্থানীয়রা জানায়, সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে বাড়ির পাশে পুকুরে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয়। পরে অনেক খোঁজাখুজির পর পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সৌমিত্র কুমার বণিক বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে দুই শিশুকে জরুরি বিভাগে আনা হয়। তারা মৃত ছিল।
শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী খান জানান, জামালপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্বজনদের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই পুলিশ লাশ দাফনের অনুমতি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মাছভর্তি বালতির পানিতে ডুবে প্রাণ গেল শিশুর
গাড়ি চালানো অবস্থায় চালক হৃদরোগে আক্রান্ত, দুর্ঘটনায় নিহত ২
কিশোরগঞ্জে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
কিশোরগঞ্জে খেলতে গিয়ে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২১ জুলাই) দুপুরে পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের কামারকোণা গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই শিশু হলো- কামারকোণা গ্রামের রুবেল মিয়ার মেয়ে আলো মনি (৫) ও একই এলাকার মোহাম্মদ আলীর মেয়ে তন্বী (৬)।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে পুকুরে ডুবে নানা-নাতির মৃত্যু
স্থানীয়রা জানান, আলো মনি ও তন্বী দুজন বাড়ির সামনে খেলা করছিল। অনেকক্ষণ ধরে তাদের দেখতে না পেয়ে আত্মীয় স্বজনরা খুঁজতে শুরু করে। এক পর্যায়ে বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে শিশুদের জুতা পড়ে থাকতে দেখেন। পরে, পুকুরে তল্লাশি চালিয়ে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
তাৎক্ষণিক শিশুদের পার্শ্ববর্তী মঠখোলা উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক উভয়কে মৃত ঘোষণা করেন।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান সুমন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: নড়াইলে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মায় ডুবে শিশুর মৃত্যু
নড়াইলে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু
নড়াইলের পুকুরের পানিতে ডুবে শিশু নাবিলের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২১ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে নড়াগাতী থানার উত্তর ডুমুরিয়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
১৮ মাস বয়নী শিশু নাবিল ওই গ্রামের আনিসুর মোল্যার ছেলে।
আরও পড়ুন: সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুর মৃত্যু
শিশুটির পরিবার জানায়, শুক্রবার সকালে শিশু নাবিল বাড়ির উঠানে খেলছিল। কিছুক্ষণ পর নাবিলকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। একপর্যায়ে বাড়ির পাশে পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা।
নড়াগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত সাহা বলেন, পুকুরের ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় তাদের পরিবারে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মায় ডুবে শিশুর মৃত্যু
মাগুরায় নদীতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
টাঙ্গাইলে পানিতে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু
টাঙ্গাইলের মধুপুরে গর্তের পানিতে ডুবে তিনশিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকাল ৫ টার দিকে উপজেলার ফুলবাগ চালা ইউনিয়নের হাগুড়াকুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতেরা হলো- উপজেলার শোলাকুড়ি দক্ষিণপাড়া গ্রামের আল আমিনের ছেলে সোহান (৭), হাগুড়াকুড়ি গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে আকাশ (৫) এবং একই গ্রামের হারুনের ছেলে নাঈম (সাড়ে ৪)।
এ ব্যাপারে ফুলবাগচালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ আলী বলেন, সম্প্রতি ওই এলাকায় একটি বাড়ির তৈরির জন্য মাটি উত্তোলন করা হয়। পরে সেই জায়গায় গর্তের (ছোট পুকর) তৈরি হয়।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে পুকুরে ডুবে দাদি-নাতনির মৃত্যু
বৃষ্টির হলে ওই গর্তে পানি জমে। নিহত তিনজনই ওই বাড়ির পাশেই খেলাধুলা করেছিলো। খেলাধুলা শেষ করে তারা বাড়ির পাশের ওই গর্তে গোসল করতে নামে।
গোসল করার এক পর্যায়ে তারা গর্তের পানিতে ডুবে যায়। পরিবারের লোকজন তাদেরকে খোঁজাখুজি করেও কোনো সন্ধান পাচ্ছিলো না। প্রথমে এক শিশুর লাশ ভেসে ওঠে। পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে অন্য দুইজনের লাশ উদ্ধার করে। নিহতদের মধ্যে সোহান নানীর বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলো। এ ঘটনার পর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হবে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় পানিতে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু
কিশোরগঞ্জে গর্তে জমা বৃষ্টির পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
হবিগঞ্জে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
হবিগঞ্জের মাধবপুরে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল অনুমান সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বহরা ইউনিয়নের দলগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুরা হলো- ওই গ্রামের জহিরুলের ছেলে আরিফ (৫) এবং একই গ্রামের নাজির মিয়ার মেয়ে কারিমা (৭)।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে পুকুরে ডুবে ফুপু-ভাতিজির মৃত্যু
স্থানীয়রা জানান, আরিফ ও কারিমা বাড়ির পাশে খেলা করছিল। সেখানে জমির মাটি কেটে একটি গভীর গর্ত তৈরি করা হয়েছিল। সম্প্রতি গভীর গর্তটিতে পানি জমে ডোবায় পরিণত হয়েছিল। হঠাৎ করে তারা অসাবধানতাবশত ডোবার পানিতে পড়ে তলিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝতে পেরে খোঁজাখুজির পর তাদেরকে উদ্ধার করে।
উদ্ধারের পর তাদেরকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।
মনতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী শিশুদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, লাশের সুরতহাল তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
ময়মনসিংহে পুকুরে ডুবে দাদি-নাতনির মৃত্যু
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত
উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে লালমনিরহাটের ১০ গ্রামের ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার, যা স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটারের চেয়ে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙন, অর্ধশতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন
দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, শুক্রবার দিবাগত গভীর রাত থেকে তিস্তার পানি মারাত্বকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে শুক্রবার ও শনিবার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা, ধরলা, বুড়ি তিস্তা ও সানিয়াজান নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলাসহ জেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) ভোর থেকে নদীগুলোর পানি বাড়তে শুরু করে। হাতীবান্ধায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে বিকালে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে।
পাউবো সূত্র জানায়, তিস্তাপাড়ের লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভারতের গজলডোবা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে। প্রচণ্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। আরও কী পরিমাণ পানি আসবে তা ধারণা করা যাচ্ছে না। পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
ফলে তিস্তার পানিতে পাটগ্রামে অবস্থিত বহুল আলোচিত বিলুপ্ত ছিটমহল আঙ্গরপোতা ও দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সির্ন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের চর এলাকার ১০ গ্রামের ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে তিস্তায় নৌকাডুবি, ৩ কৃষক নিখোঁজ
কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপরে
কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তাসহ সবকটি নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এসব নদ নদীর পানি।
পানি বৃদ্ধির ফলে প্লাবিত হয়ে পড়ছে নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চলসহ নতুন নতুন জেগে ওঠা চরাঞ্চলগুলো। এসব এলাকার কাঁচা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষেরা।
তবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে জেলায় নদী ভাঙনের তীব্রতা অনেকটা কমেছে।
বুধবার (১৩ জুলাই) বিকালে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অফিস জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের শুলকুর বাজারের ছড়ার পাড় এলাকার নওশাদ আলী বলেন, ‘কিছুদিন আগে বন্যা এসে রাস্তা ঘাট তলিয়ে গেছিল। যাতায়াতে আমাদের খুব কষ্ট ছিল। পানি কমার পর কয়েকদিন ভালোভাবে যাতায়াত করছি। আবারও পানি বাড়ার কারণে রাস্তায় হাঁটু পানি হয়েছে। আমাদের ফির চলাচলে কষ্ট শুরু হইলো।’
ওই এলাকার রুবেল মিয়া বলেন, বাড়ির চারিদিকে পানি ঠিকমতো বাহির হওয়া যাচ্ছে না। বাড়ি থেকে হাট বাজার করারও সমস্যা হয়েছে। এদিকে আবার ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়েও চিন্তার শেষ নাই। কখন যে পানিতে চলে যায় ভয়ে থাকি আমরা। গত বন্যায় সবজির খেত নষ্ট হওয়ার পর কিছু ছিল তাও এই পানিতে শেষ।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। আজ দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙন, অর্ধশতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন
কুড়িগ্রামে বন্যায় ১২ হাজার পরিবার পানিবন্দী, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট