এলডিসি
বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণে ইইউ’র কাছে জিএসপি+ চান প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশকে জিএসপি+ দেবে।
তিনি বলেন, 'আমি আশা করি, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর আমাদের উন্নয়নে সহায়তা করতে ইইউ বাংলাদেশকে জিএসপি+ দেবে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের সদর দপ্তরে দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন এ কথা বলেন।
এ বছর বাংলাদেশ-ইইউ অংশীদারিত্বের ৫০তম বার্ষিকী উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা আনন্দিত যে ইইউ এখন বাংলাদেশের বড় বাণিজ্য অংশীদার।
তিনি বলেন, ইইউ'র এভরিথিং-বাট-আর্মস স্কিম বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছে। তিনি ২০০০ সালে তার প্রথম মেয়াদে এই ব্যবস্থাটি আনুষ্ঠানিকভাবে করার কথা স্মরণ করেন।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার বেলজিয়াম সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী
ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের সঙ্গে ঢাকার সই করা সাড়ে ৩০০ মিলিয়ন ইউরোর আর্থিক চুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পদক্ষেপ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ইইউ'র সঙ্গে অংশীদারিত্বে ইইউ'র আগ্রহের প্রশংসা করে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখ রোহিঙ্গার মানবিক সহায়তার জন্য ইইউকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের মধ্যে নিহিত। সংকটের দ্রুত টেকসই সমাধানের জন্য আমি ইইউকে সম্পৃক্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, শ্রমিকদের অধিকারের পাশাপাশি নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসনের বিষয়ে তারা অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, 'আমাদের কিছু স্থানীয় চ্যালেঞ্জের সমাধান খুঁজতে গবেষণা ও উদ্ভাবনে অংশীদারিত্বের আগ্রহ প্রকাশ করেছি আমি। আমরা কৌশলগত উপাদানগুলোতে আরও মনোনিবেশ করে ইইউর সঙ্গে ভবিষ্যতের অংশীদারিত্বের পরিকল্পনা করছি।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ-ইইউ'র ৪০০ কোটি ইউরোর চুক্তি সই
তিনি বলেন, তারা খুব শিগগিরই একটি অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছেন। তিনি বলেন, এটি আমাদের চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
ইউরোপীয় কমিশন প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন তার বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এত বছর ধরে আমরা একটি দৃঢ় অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছি এবং এখন আমরা এটিকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাচ্ছি।’
বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ঋণ ও অনুদান প্যাকেজ প্রসঙ্গে ইসি বলেন, ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি বিনিয়োগ প্যাকেজ জলবায়ুর জন্য ভালো এবং স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্যও ভালো।
আরও পড়ুন: উন্নত ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ-অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
এলডিসি উত্তোরণে বাংলাদেশকে সহায়তায় ইইউ’র প্রতি বিজিএমইএ প্রধানের আহ্বান
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান জিএসপির পরিবর্তনের মেয়াদ বর্তমান তিন বছর থেকে বাড়িয়ে ছয় বছর করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এই সম্প্রসারণ বাংলাদেশকে এলডিসি বিভাগ থেকে মসৃণ গ্র্যাজুয়েশনের জন্য প্রস্তুত করতে এবং এলডিসি-পরবর্তী যুগেও প্রবৃদ্ধির গতি অব্যাহত রাখতে সহায়তা করবে।
গত ১০ মে ঢাকায় ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের (ইইএএস) অর্থনৈতিক ও বৈশ্বিক সমস্যা বিষয়ক ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল হেলেনা কোনিগের সঙ্গে বৈঠকে বিজিএমইএ প্রধান এ অনুরোধ জানান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন-ইইএএস এর সাউথ এশিয়া বিষয়ক ডেপুটি হেড অব ডেলিগেশন মনিকা বাইলাইট; বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি; বাংলাদেশে ইইউ প্রতিনিধি দলের ডেপুটি হেড ড. বার্ন্ড স্প্যানিয়ার; মিনিস্টার কাউন্সেলর এবং হেড অফ কোঅপারেশন মাউরিজিও সিয়ান; এবং কাউন্সেলর এবং টিম লিডার- শিক্ষা, মানব উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের পিএফএম জুরেট স্মালস্কাইট মারভিল এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি সমীর সাত্তার।
আরও পড়ুন: ঈদের আগেই বিজিএমইএ আওতাধীন কারখানার মার্চ মাসের মজুরি পরিশোধ: বিজিএমইএ
বৈঠকে তারা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ), এলডিসি-পরবর্তী সময়ে ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং দ্বিপক্ষীয় গুরুত্বসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান হেলেনা কোনিগকে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রধান অগ্রগতি, বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা, পরিবেশগত টেকসইতা এবং শ্রমিকদের অধিকার ও কল্যাণের বিষয়ে অবহিত করেন।
তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে, বিশেষ করে দেশের লাখ লাখ মানুষের দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নারীর ক্ষমতায়ন, মেয়েদের স্কুলে ভর্তি বৃদ্ধি এবং বাল্যবিবাহ কমানোর ক্ষেত্রে কীভাবে আরএমজি শিল্প গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণও দেন।
ফারুক হাসান এসব ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত যে অর্জনগুলো অর্জন করেছেন তা ধরে রাখতে শিল্পের অব্যাহত প্রবৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ইইউকে বাংলাদেশের আরএমজি রপ্তানির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি ইইউর জিএসপি স্কিমের আওতায় শিল্পের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সুনির্দিষ্ট বাণিজ্য পছন্দ সম্প্রসারণের গুরুত্ব তুলে ধরেন, যার ফলে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি ইইউকে ইইউ-এর সুরক্ষা টেক্সটাইল থ্রেশহোল্ড মানদণ্ড পরিত্যাগ বা ২০২৪-২০৩৪ সালের জন্য প্রস্তাবিত জিএসপি স্কিমে বাংলাদেশের জন্য প্রক্রিয়াটি পুনর্বিন্যাস করার কথা বিবেচনা করারও আহ্বান জানান, যাতে বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরে জিএসপি প্লাস থেকে উপকৃত হতে পারে।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে হাইকমিশনের সহায়তা চায় বিজিএমইএ
তৈরি পোশাক শিল্পে জুলাই-ডিসেম্বরে ১৬% বেড়ে রপ্তানি ২৩ বিলিয়ন ডলার: বিজিএমইএ
এলডিসি-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাধার সম্মুখীন হতে পারে: বাণিজ্য সচিব
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) পরবর্তী সময়ে তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানিতে বাংলাদেশকে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং, আমাদের আরএমজি রপ্তানির প্রবণতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক কিছু নীতি সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে।’
রবিবার বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউশনে (বিএফটিআই) ‘স্টাডি অন পলিসি সাপোর্ট এন্ড ইনসেন্টিভস বিফোর এন্ড আফটার এলডিসিস গ্র্যাজুয়েশন ফর আরএমজি সেক্টর’-শীর্ষক ওয়ার্কশপে এসব কথা বলেন।
বিএফটিআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাফর উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান এবং সঞ্চালনা করেন বিএফটিআই মহাপরিচালক মো. ওবায়দুল আজম।
মো. জাফর উদ্দিন বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের আগেই আরএমজি রপ্তানিতে প্রণোদনা ও ভর্তুকির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বাংলাদেশকে: বাণিজ্যমন্ত্রী
এলডিসি উত্তরণ নতুন চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি সুযোগ তৈরি করবে: বাণিজ্য সচিব
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এলডিসিতে প্রকৃত কাঠামোগত রূপান্তরের প্রতিশ্রুতি পুনর্নবীকরণ করতে হবে: দোহা সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর কাঠামোগত রূপান্তরের অঙ্গীকার পূরণ ও নবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেহেতু দেশগুলো ‘চ্যারিটি’ দাবি করে না।
রবিবার জাতিসংঘের পঞ্চম এলডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী পূর্ণাঙ্গ সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দোহা প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য আশার আরেকটি নিশ্চয়তা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে প্রকৃত কাঠামোগত রূপান্তরের জন্য তার প্রতিশ্রুতি পুনর্নবীকরণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন যে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে তালিকা থেকে উন্নীত করার লক্ষ্যে পারফরম্যান্সের জন্য কিছু প্রণোদনা থাকা উচিত এবং তাদের বর্ধিত সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থা উপভোগ করা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের উৎপাদনশীল সক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য তাদের বর্ধিত বিনিয়োগ ও জ্ঞান প্রয়োজন। তাদের জন্য কিছু উদ্ভাবনী এবং ক্রান্তিকালীন অর্থায়ন ব্যবস্থা থাকতে পারে।’
আরও পড়ুন: এলডিসি-৫ সম্মেলন: দোহার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি উন্নত দেশগুলোকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশগুলোও দরকষাকষিতে তাদের পক্ষ নেবে। এই দেশগুলো দান-খয়রাত চায় না; আমরা যা চাই তা হল আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির অধীনে আমাদের পাওনা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বৈশ্বিক বাণিজ্যে তাদের অংশ দ্বিগুণ করার জন্য টেকসই সহায়তা প্রয়োজন এবং উন্নত দেশগুলো থেকে এলডিসির জন্য ওডিএ লক্ষ্যমাত্রা পূরণের দাবি রাখে।
তিনি দাবি জানান, ‘আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে ঋণের স্থায়িত্বকে সমর্থন করার উপায় রয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নকে নমনীয় ও অনুমানযোগ্য করতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে প্রযুক্তি হস্তান্তর বাস্তব ও অর্থবহ হতে হবে।’
তিনি বলেন, অভিবাসী শ্রমিকদের তাদের অধিকার ও কল্যাণের জন্য সুরক্ষা প্রয়োজন। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ২২ কোটি ৬০ লাখ তরুণকে আমরা ব্যর্থ করতে পারি না।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের এলডিসি সম্মেলনে যোগ দিতে কাতারে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মহামারি ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে এসব দেশের অধিকাংশ দেশে মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জলবায়ু সংকট এবং কিছু স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্ব।
তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১২ লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে আমরা তাৎক্ষণিক কোনো সমাধান ছাড়াই কাজ করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেছে এবং এখন ২০২৬ সালে উত্তরণের অপেক্ষায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী এলডিসি-৫ সম্মেলনে যোগ দিতে দোহার উদ্দেশে রওনা হবেন শনিবার
এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মন্ত্রিসভায় আরটিএ নীতি অনুমোদন
এলডিসি পরবর্তী সময়ের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশের রপ্তানি বাজার রক্ষা ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মন্ত্রিসভা সোমবার আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি (আরটিএ) নীতি, ২০২২-এর বাংলা ও ইংরেজি সংস্করণের খসড়া অনুমোদন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ যেহেতু স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে উন্নীত হয়েছে, তাই অনেক দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি বাজারগুলোকে রক্ষা এবং প্রসারিত করার পাশাপাশি এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে আমাদের পণ্যগুলোর জন্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে, আমরা আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তির জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি। তাই, এর জন্য নীতি নেয়া হয়েছে (আরটিএ স্বাক্ষর করা)।
আরও পড়ুন: এলডিসি-পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশ শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা পাবে: অস্ট্রেলিয়া
এছাড়া বৈঠকে বিসিকের আওতাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও কার্যকর করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন আইন, ২০২২-এর খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান।
প্রস্তাবিত আইনটি বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করবে কারণ বিদ্যমান আইন-বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন আইন, ১৯৫৭-একটি পুরানো আইন, যাতে সঠিকভাবে নারীদের ওপর যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়নি।
মন্ত্রিসভা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অধীনে একটি ভাষা গবেষণা ট্রাস্ট গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট (সংশোধন) আইন, ২০২২-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।
ভাষা গবেষণা ও উন্নয়নে ট্রাস্টের স্থায়ী তহবিল থেকে বৃত্তি ও ফেলোশিপ দেয়া হবে জানিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এর নাম হবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা গবেষণা ট্রাস্ট’।
বৈঠকে কূটনৈতিক, অফিসিয়াল, বিশেষ বা সার্ভিস পাসপোর্টধারীদের জন্য পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতির বিষয়ে বাংলাদেশ ও ওমানের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির অনুমোদনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল-মোটর ভেহিকেল এগ্রিমেন্টের (বিবিআইএন-এমভিএ) অধীনে নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে ট্রানজিট কার্গো পরিবহনের অপারেটিং মোডালিটিস সংক্রান্ত পূর্বের সিদ্ধান্ত বাতিল করে নেপালকে ট্রানজিট সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
জমকালো আয়োজনে পদ্মা সেতু উন্মুক্ত করা হবে: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে ‘সুপার গর্জিয়াস’ কারণ একই সঙ্গে দেশের ৬৪টি জেলায় মূল উৎসবের প্রতিলিপি হবে।
আরও পড়ুন: এলডিসি থেকে উত্তরণ নিয়ে পোশাক মালিকরা উদ্বিগ্ন নন: বিজিএমইএ সভাপতি
এলডিসি-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বার্লিনের সমর্থন চায় ঢাকা
দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পদ্মা সেতু আগামী ২৫ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।
বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত এডিবির
এলডিসি থেকে উত্তরণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশকে সহায়তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেবে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।
এতে ২০৩১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ-আয়ের দেশে পরিণত হতে বাংলাদেশকে সাহায্য করবে।
এডিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এডিবির ভাইস-প্রেসিডেন্ট শিক্সিন চেন গত ৯ মে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সাক্ষাতের সময় এই প্রতিশ্রুতি দেন।
তিনি কোভিড-১৯ মহামারি থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিস্থাপক এবং সবুজ বৃদ্ধিতে সহায়তা করার জন্য তিরি এডিবি’র প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে চেন প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘সরকারের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের প্রতি এডিবি’র সমর্থন প্রতিযোগিতামূলক খাত, কর্মসংস্থান ও বেসরকারি খাতের উন্নয়নে ফোকাস করবে। এছাড়া সবুজ বৃদ্ধি ও জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা প্রসার করবে এবং মানব পুঁজি ও সামাজিক সুরক্ষা শক্তিশালী করবে।
আরও পড়ুন: বিকিরণ প্রযুক্তির বিনিময় সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ ও ভারত
চেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গেও দেখা করেন এবং রেলওয়ের অপারেশনাল দক্ষতার উন্নতি, দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং ঢাকা-কুমিল্লা কর্ড লাইন প্রকল্পসহ সম্ভাব্য ভবিষ্যতের প্রকল্পগুলোর জন্য উচ্চ পর্যায়ের প্রস্তুতি নিশ্চিত করার বিষয়েও আলোচনা করেন।
অর্থমন্ত্রী এবং এডিবি গভর্নর এ এইচ এম মুস্তফা কামালের সঙ্গে বৈঠকে চেন অর্থনীতির সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা এবং মহামারি থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে শক্তিশালী করার জন্য (সরকারের) দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন।
চেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে সাক্ষাত করেন এবং ডেল্টা প্ল্যান ২১০০, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, রেলওয়ে উন্নয়ন এবং সুনীল মহাসাগরভিত্তিক অর্থনীতি বাস্তবায়নের জন্য এডিবি’র অব্যাহত সহায়তার আশ্বাস দেন।
৮ মে থেকে বাংলাদেশে তার ছয় দিনের সফরের সময় চেন অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা করেন।
এছাড়াও তিনি এডিবি’র সহায়তায় পরিচালিত দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (এসএএসইসি) চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলওয়ে প্রকল্প, দ্বিতীয় পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প, পাওয়ার সিস্টেম ইফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট এবং পাওয়ার সিস্টেম এক্সপেনশন অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম পরিদর্শন করেন এবং প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দ. কোরিয়ার ‘আরও উদ্যোগ’ চায় বাংলাদেশ
উন্নত ভবিষ্যতের জন্য একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-সিউল
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার আকাঙ্খায় বন্ধুপ্রতীম দেশ,বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বর্ধিত বিনিয়োগ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে ২০২৬ সালের এলডিসিতে উত্তরণের সুপারিশ করা হয়েছে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। সেই উদ্দেশ্যে আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলো থেকে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বর্ধিত বিনিয়োগ প্রয়োজন।’
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রথমবারের মতো ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে এডিবির সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য। ভৌত অবকাঠামোর পাশাপাশি সরকার বিনিয়োগ ও ব্যবসা সংক্রান্ত নিয়ম-নীতিগুলোকে আপগ্রেড ও শিথিল করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ নীতি রয়েছে এবং বিদেশি বিনিয়োগ সংসদের আইন ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তি দ্বারা সুরক্ষিত হচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের শতভাগ এলাকা বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের সড়ক, রেলপথ ও নৌ যোগাযোগের উন্নয়ন করছি।
আরও পড়ুন: খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে জলবায়ু সহিষ্ণু ফসল উদ্ভাবনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। আপনারা যদি চান তবে আমরা একচেটিয়াভাবে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি অঞ্চল নির্ধারণ করতে পারি।
তিনি বলেন, দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিশ্চিত করে যে এখানে বিনিয়োগকারীরা প্রতিযোগিতামূলক মজুরিতে দক্ষ মানবসম্পদ পাবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মার্কিন বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার এবং অন্যান্য বাণিজ্য সুবিধার মাধ্যমে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করা যেতে পারে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উপযুক্ত সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি-এফটিএ আলোচনা শুরু করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত।
তিনি উল্লেখ করেন, গত পাঁচ বছরে রপ্তানির পরিমাণ তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বেড়েছে। রপ্তানির পরিমাণ ২০১৬-১৭ সালে ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২১-২২ সালে সাত দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী এবং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে অবদান রাখছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য এফডিআই এবং রপ্তানি বাজারের একক বৃহত্তম উৎস।
আরও পড়ুন: বিদেশিদের কাছে অভিযোগ না করতে শ্রমিক নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ইউএস কোম্পানিগুলো এই সুবিধা গ্রহণ করবে এবং শক্তি ও জ্বালানি, আইসিটি, অবকাঠামো, হালকা প্রকৌশল পণ্য, মোবাইল ফোন এবং ইলেকট্রনিক পণ্য, অটোমোবাইল, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিক ইত্যাদির মতো সম্ভাব্য খাতে আরও বিনিয়োগ করবে।’
শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেন, ইউএস-বাংলাদেশ এনার্জি টাস্কফোর্স যা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে চালু করা হয়েছিল তা উভয় দেশের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।
এসময় বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের মিশন লিড জে আর প্রায়র, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের বোর্ড সদস্য এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: পেছনের দরজায় নয়, আ’লীগ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রে ‘বিশাল সম্ভাবনা’ দেখছেন সুইস রাষ্ট্রদূত
জ্ঞানের অংশীদারিত্বের ওপর ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক সম্প্রসারণে ‘বিশাল সম্ভাবনা’ দেখছে সুইজারল্যান্ড।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যত সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ভাগ করে নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ন্যাথালি চুয়ার্ড বলেছেন, ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগ হলো একটি ডোমেইন যা ধীরে ধীরে বাছাই করা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে এই ক্ষেত্রে আরও বেশি ফোকাস করতে চাই।’
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ছাড়াও সুইস রাষ্ট্রদূত আরও দুটি উপাদান উল্লেখ করেছেন-উন্নয়ন ও স্থায়িত্ব, বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ ও বহু পাক্ষিকতাবাদ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-সুইজারল্যান্ড সম্পর্ক নিয়ে কসমস ডায়ালগের প্রিমিয়ার বুধবার
কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত ভার্চুয়াল সংলাপে মূল বক্তব্যে সুইস রাষ্ট্রদূত দুই দেশ কীভাবে একটি উন্নত ভবিষ্যত এবং উদ্ভাবনের দিকে একসাথে অংশীদারিত্ব চালিয়ে যেতে পারে সেই বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
‘বাংলাদেশ-সুইজারল্যান্ড সম্পর্ক: ভবিষ্যতের জন্য পূর্বাভাস’ শীর্ষক এই সংলাপের আয়োজন করে কসমস গ্রুপের জনহিতকর শাখা কসমস ফাউন্ডেশন।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) কসমস ফাউন্ডেশনের ফেসবুক পেজে ভার্চুয়াল এই সংলাপের প্রিমিয়ার হবে।
সংলাপে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাহার খান।
অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট কূটনীতিক এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
আলোচক প্যানেলে ছিলেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আনিস এ খান, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম।
আরও পড়ুন: র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে দিল্লির সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে নাহার খান বলেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চেও সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
তিনি বলেন, গত পাঁচ দশকে অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, মানবিক সহায়তা, সেইসাথে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বিনিময়সহ দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বৃহত্তর ও গভীরতর হয়েছে।
খান বলেন, সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশনের (এসডিসি) মাধ্যমে সুইজারল্যান্ড দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়ন প্রচেষ্টায় অবদান রাখছে।
নতুন সহযোগিতা কর্মসূচীটি জাতিসংঘের এজেন্ডা ২০৩০ এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকারের সাথে সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের টেকসই এলডিসি উত্তরণ,সমৃদ্ধ, ন্যায্য ও স্থিতিস্থাপক সমাজকে উন্নীত করা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে অবদান রাখার সামগ্রিক লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: জয়শঙ্কর সুখবর নিয়ে আসতে পারেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্লাস্টিক খাতকে উৎসাহিত করতে আরএমজি সাফল্য মডেল অনুসরণের আহ্বান
এলডিসি পরবর্তী সময়ে প্লাস্টিক খাতের টেকসই উন্নয়ন, প্লাস্টিকের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কাঠামো সহজীকরণ,সংশ্লিষ্ট নীতির আধুনিকীকরণ, বায়ো-প্লাস্টিকের ব্যবহারকে উৎসাহিত করা, সম্ভাব্য দেশগুলোর সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর করার আহ্বান জানিয়েছেন ওয়েবিনারের বক্তারা।
শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘এলডিসি-পরবর্তী বিশ্বে টেকসই রপ্তানি বৃদ্ধি: প্লাস্টিক খাতের কৌশল’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব বিষয়ের ওপর জোর দেন।
বক্তারা প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগে (এফডিআই) আকৃষ্ট করার জন্য দেশীয় বাজার রক্ষায় আলোচনার দক্ষতা বৃদ্ধি, পণ্যের বৈচিত্র্য আনয়ন, প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, স্বীকৃত বিশ্বমানের টেস্টিং ল্যাব সুবিধা বাড়ানোর জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্লাস্টিক ব্যবসা বৃদ্ধি এবং সৃজনশীল পণ্য ডিজাইনিং এর আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: আগামী দশকে ৮০ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য কমানোর প্রতিশ্রুতি অস্ট্রেলিয়ার
ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী যা বাংলাদেশকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।প্লাস্টিক খাতে বিভিন্ন সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করতে তিনি সরকারি ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণের সমন্বয়ে একটি জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনের পরামর্শ দেন।
তিনি আরও ভালো প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সমাধানের আহ্বান জানান।
কায়কাউস বলেছেন, ‘আমাদের নিজস্ব সার্টিফিকেশন এজেন্সি থাকা উচিত এবং তিনি পিপিপি মডেলকে সর্বোত্তম বিকল্প হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সার্টিফিকেশনের জন্য এখন আমরা প্রচুর অর্থ ব্যয় করছি। ‘আমরা প্লাস্টিক ব্যবহার এড়াতে পারি না, বরং দূষণ কমানোর জন্য আমাদের ১০০ শতাংশ পুনর্ব্যবহার করা উচিত।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ওষুধ, প্লাস্টিক, ইলেক্ট্রিক পণ্য নিতে আগ্রহী ইথিওপিয়া
প্লাস্টিক খাতের রপ্তানির জন্য লজিস্টিক খরচ সত্যিই বেশি এবং এটি হ্রাস করা দরকার বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
রিজওয়ান রহমান বলেন, জিডিপিতে প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানির অবদান দশমিক ৩৩ শতাংশ। তিনি উল্লেখ করেন, প্লাস্টিক খাতে প্রায় পাঁচ হাজার ১১০টি কোম্পানি কাজ করছে এবং এর মধ্যে ৯৮ শতাংশই এসএমই।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, টেকসই শিল্প প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সরকার একটি খসড়া প্লাস্টিক নীতি তৈরি করেছে। যেহেতু এলডিসি-পরবর্তী সময়ে অনেক অগ্রাধিকার থাকবে না তাই সম্ভাব্য দেশগুলোর সঙ্গে এফটিএ এবং আরটিএ স্বাক্ষর করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, আমাদের আরএমজি সাফল্যের মডেলটিকে অন্যান্য রপ্তানিমুখী উৎপাদন খাতেও প্রযোজ্য করতে হবে।
এলডিসি-পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশ শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা পাবে: অস্ট্রেলিয়া
২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি থেকে উত্তরণের পরেও বাংলাদেশকে রপ্তানিতে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা দেয়া অব্যাহত রাখবে বলে আশ্বাস দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় অনুষ্ঠিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রথম যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। ক্যানবেরাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন এই তথ্য জানিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া অর্থনৈতিক সম্পর্কের গতিশীলতা বৃদ্ধি করার জন্য বৃহত্তর বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ প্রবাহের সম্ভাবনার ওপর একটি গবেষণা শুরু করতে সম্মত হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্টের (টিফা) অধীনে গঠিত, জেডব্লিউজি-এর প্রথম বৈঠকে সাধারণ বাণিজ্য সমস্যা, পণ্য ও পরিষেবার বাণিজ্য, বাণিজ্য সহজীকরণ, বিনিয়োগের প্রচার, শক্তি এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেছে।
আরও পড়ুন: আইটি কানেক্ট প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে আগ্রহী বাংলাদেশ ও ইইউ