এলডিসি
এলডিসি থেকে উত্তরণ ছয় বছর পেছানোর দাবি ব্যবসায়ীদের
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের (গ্রাজুয়েশন) সময়সীমা ৬ বছর বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, আগামী বছর বাংলাদেশের এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়া হবে ভুল সিদ্ধান্ত, ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের বেসরকারি খাত।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশ (আইসিসিবি) আয়োজিত ‘এলডিসি গ্রাজুয়েশন: সাম অপশনস ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ দাবি জানান ব্যবসায়ী নেতারা।
সেমিনারে সূচনা বক্তব্যে আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ এখনো এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। মুক্ত বাণিজ্যে বাংলাদেশের দর কষাকষির সক্ষমতা, রপ্তানি বৈচিত্র্য, শিল্পখাতে দক্ষ মানবসম্পদ, বিদেশি বিনিয়োগ আনা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু সহনশীলতা সৃষ্টি না করেই এলডিসি গ্রাজুয়েশন দেশের অর্থনীতিকে বিপদের মুখে ফেলবে।
মাহবুব জানান, এলডিসি গ্রাজুয়েশনের প্রথম ঝাপটা আসবে শুল্ক বৃদ্ধির ওপর। জিএসপিসহ অন্যান্য সুবিধা হারালে দেশে রপ্তানি ৬ থেকে ১৪ শতাংশ কমে আসবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষণা সংস্থা দ্য থার্ড ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের (টিডব্লিউএন) লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ও গবেষক সানিয়া রেইড স্মিথ।
সানিয়া বলেন, অনেক দেশই এলডিসি গ্রাজুয়েশনের সক্ষমতা অর্জনের পরেও পিছু হটেছে। অ্যাঙ্গোলার মতো দেশ গ্রাজুয়েশনের এক সপ্তাহ আগে প্রক্রিয়া থেকে সরে এসেছে। মিয়ানমারের ২০২৪ সালে গ্রাজুয়েশন হওয়ার কথা থাকলেও তারা আগ্রহ দেখায়নি।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ (বিএপিআই) সভাপতি আবদুল মুক্তাদির জানান, দেশের ওষুধ শিল্প কঠিন সময় পার করছে। শীর্ষ ১০০ কোম্পানির মধ্যে ৩০ শতাংশ কোম্পানিই বাজারে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে। পেটেন্ট বাধ্যবাধকতা না থাকায় বর্তমানে অনেক দুর্মূল্য ওষুধ কম দামে পাওয়া গেলেও এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর দাম বাড়বে ১০ গুণ। কয়েকশত টাকার হেপাটাইটিস-বি টিকার দাম হবে ১ হাজার ডলার।
অভিযোগ জানিয়ে মুক্তাদির বলেন, ‘এলডিসি গ্রাজুয়েশনে কোন কোন ওষুধে কী প্রভাব পড়বে, দাম কেমন হবে, পেটেন্ট পাওয়া কতটা কঠিন হবে সব তালিকা বিআইপির হাতে আছে। সরকারকে বারবার বলার পরেও তাদের সঙ্গে বসা যাচ্ছে না, আগ্রহ দেখাচ্ছে না তারা। যে ওষুধ শিল্প এখন বছরে ৩ বিলিয়ন ডলার রফতানি আনে—এ শিল্পের ওপর গুরুত্ব দিলে আয় দ্বিগুণ হতো।’
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফেকচারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, বাংলাদেশ অবশ্যই এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাবে, তবে এখন নয়। দেশের প্রস্তুত হতে আরও সময় দরকার। দেশের জ্বালানি খাতের এমন করুণ দশার মধ্যে কোনো সমাধান না নিয়ে এলডিসি গ্রাজুয়েশনে গেলে পোশাক খাতে ধস নামবে।
পড়ুন: মালয়েশিয়ার শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
‘যদিও এক বছরে ব্যাংকের রিজার্ভ বেড়েছে; এলএনজি আমদানি পর্যাপ্ত ডলার আছে, কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণ এলএনজি আমদানির সক্ষমতা বাংলাদেশের নেই। গভীর সমুদ্র বন্দর এখনো প্রস্তুত হয়নি—এলএনজি আমদানি সহজ করতে আগে গভীর সমুদ্র বন্দরের কাজ শেষ করতে হবে,’ জানান বাবু।
লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফেকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘৬ বছরের আগে এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী হবে। ২০২৬ সালের নভেম্বরে কোনোভাবেই বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়া উচিত হবে না। গ্রাজুয়েশনের জন্য ২০৩২ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত।’
মঞ্জুর জানান, দিনকে দিন বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাচ্ছে। জাহাজ ভাড়ার কারণে রপ্তানি খাতে প্রতিটি ব্যবসায়ী বিপদে। বাংলাদেশের মতো এত জাহাজ ভাড়া অন্য কোনো দেশকে দিতে হয় না। এ অবস্থায় খাত কলমে এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়ার সক্ষমতা থাকলেও ভবিষ্যতের জন্য এটি ভুল সিদ্ধান্ত।
ঢাকা চেম্বার অ্যান্ড কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘দেশের রপ্তানির ৯০ শতাংশ ওষুধ, পোশাক ও চামড়াখাতে। এ খাত সংশ্লিষ্ঠ ব্যক্তিরা বলছেন গ্রাজুয়েশনের জন্য ৬ বছর অপেক্ষা করতে হবে, সেটি সরকারের ভেবে দেখা উচিত। আর এর চেয়েও ভালো কোনো প্রস্তাব সরকারের হাতে থাকলে তাদের উচিত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসা।’
ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সায় দিয়ে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনোমিক মডেলিং (সানেম) এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, সরকার, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে একটি সিদ্ধান্তে দ্রুত আসা উচিত। বাংলাদেশের সঙ্গে আগামী বছর নেপালও এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাবে—তাদের সঙ্গেও সমন্বয় জরুরি।
‘ব্যাংকিং খাত বাদে দেশের অন্যান্য অর্থনৈতিক খাতে উল্লেখযোগ্য সংস্কার আসেনি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে নানান বিষয় নিয়ে আলাপ হলেও অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়টি কেউ আমলে নেয়নি। শ্বেতপত্র কমিটির বেশিরভাগ সুপারিশই গ্রহণ করা হয়নি। এ অবস্থায় সংস্কার ছাড়া এলডিসিতে গেলে দেশের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ও বিনিয়োগে বিপদের মুখে পড়বে,’ শঙ্কা প্রকাশ করেন সেলিম।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, এলডিসির জন্য বাংলাদেশ যতটা না অর্থনৈতিক বিবেচনায় এগিয়েছে, তার থেকেও এর পেছনে রাজনৈতিক কারণ ছিল বড়। বিগত সময়ের রাজনৈতিক সাফল্য দেখাতে সক্ষমতা ও প্রস্তুতি ছাড়াই এলডিসি গ্রাজুয়েশন ভালো ফল বয়ে আনবে না।
২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশের এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়ার কথা। এলডিসি গ্রাজুয়েশনে গেলে এতদিন স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে বাংলাদেশ যে শুল্ক ও পেটেন্ট সুবিধা পেত তা আর বলবৎ থাকবে না।
এ অবস্থায় পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়ে এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা।
১১২ দিন আগে
এলডিসি উত্তরণের আগে অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক সুরক্ষায় বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ: রাষ্ট্রদূত মিলার
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে উত্তরণের পথে এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে সমৃদ্ধি, স্থিতিশীলতা ও সামাজিক সহযোগিতা ও সহনশীলতা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ঢাকায় সহায়তা ঘোষণা করার সময় ইইউ রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন। তিনি বলেন, সামাজিক সুরক্ষা মানে হলো সম্মান, মর্যাদা ও সহনশীলতা।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সামাজিক সুরক্ষা মানুষকে জীবনের অনিশ্চয়তা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করে। এটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনসাধারণের আস্থা পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখে।’
বাংলাদেশে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে সহায়তা হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশ সরকারকে ২ কোটি ৩৫ লাখ ইউরো দিয়েছে। এই অনুদান দেশের জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশল বাস্তবায়নের অগ্রগতিকে স্বীকৃতি দেয়, এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য আরও কার্যকর উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত করে।
যদিও পোশাক খাতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও চাকরি হারানোসহ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বাংলাদেশ। ইইউ দীর্ঘমেয়াদি বাংলাদেশের উন্নত সামাজিক সুরক্ষা খাতের অংশীদার, যা দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার।
ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাস জানায়, ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ইইউ সামাজিক সুরক্ষা খাতে ২৮ কোটি ৫০ লাখ ইউরো অনুদান দিয়েছে, যার মধ্যে ২ কোটি ইউরো এসেছে জার্মানি থেকে। সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে সহায়তার জন্য অতিরিক্ত দেড় কোটি ইউরো প্রযুক্তিগত সহায়তা হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এই অর্থায়নের মাধ্যমে সরকার ‘গভর্নমেন্ট-টু-পারসন’ (জিটুপি) ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে ৯০ শতাংশের বেশি নগদ ভাতা সরাসরি উপকারভোগী জনগোষ্ঠীর অ্যাকাউন্টে দিয়েছে।
পড়ুন: গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আশা প্রকাশ করেছেন ইইউ রাষ্ট্রদূত: খসরু
একক নিবন্ধনব্যবস্থা (সিঙ্গেল রেজিস্ট্রি) চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ৩০টিরও বেশি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সংযুক্ত করা হয়েছে—যা স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, পুনরাবৃত্তি কমানো ও সঠিকভাবে লক্ষ্য অর্জনকে নিশ্চিত করতে সহায়তা করছে।
‘ইম্পলয়মেন্ট ইনজুরি স্কিম‘ বা কর্মস্থল দুর্ঘটনা পেনশন স্কিম পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে, যা কর্মক্ষেত্র বা যাতায়াতকালে দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের আজীবন পেনশন দিচ্ছে। এ স্কিমটি এখন এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনসহ আরও বিভিন্ন খাতে সম্প্রসারিত হচ্ছে।
প্রথমবারের মতো একটি কারখানার ১ হাজার ২০০-এর বেশি বেকার শ্রমিক সরকারের বেকারত্ব সহায়তা কর্মসূচির আওতায় সুবিধা পেয়েছেন।
বাংলাদেশ সরকারকে ২০২৬ সালের পর নতুন করে জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশল নিয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কারে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে ইইউ।
ইইউ জানিয়েছে, সংশোধিত কৌশলটিতে উন্নত লক্ষ্যমাত্রা, নগর ও জলবায়ু-সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আরও দক্ষ ব্যবস্থাপনা, টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন নিশ্চিত করা উচিত।
এছাড়াও, সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর করতে বাস্তব পদক্ষেপের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে ইইউ।
১৪৯ দিন আগে
টেকসই সংস্কারে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস জাতিসংঘের
স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে টেকসই সংস্কারে সহযোগিতা করতে জাতিসংঘ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে সংস্থাটির আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘ কান্ট্রি টিমের যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির (জেএসসি) দ্বিবার্ষিক সভায় তিনি এ আশ্বাস দেন।
সভায় যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং গোয়েন লুইস। এতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
লুইস বলেন, ‘বাংলাদেশের এলডিসি তালিকা থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে টেকসই সংস্কার, জলবায়ু সহনশীলতা, অর্থনৈতিক রূপান্তর, জেন্ডার সমতা ও সমাজের কেউ যেন পিছিয়ে না পড়ে সেজন্য সহযোগিতা করতে জাতিসংঘ প্রস্তুত রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য বিগত বছরটি চ্যালেঞ্জিং ছিল, যদিও এই সময়ে বাংলাদেশের মানুষ আত্মমর্যাদাবোধ ও দৃঢ়তা প্রদর্শন করেছে।’ এই সময়ে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের অংশীদারত্বের জন্য তিনি গর্ববোধ করেন উল্লেখ করে বলেন, ‘এই অংশীদারত্ব আমাদের যৌথ মূল্যবোধ ও আকাঙ্ক্ষার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম বাণিজ্য চুক্তি সই, শুল্কবাধা দূর করার পরামর্শ
বৈঠকে জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন সহযোগিতা কাঠামোর (ইউএনএসডিসিএফ) বাস্তবায়ন মূল্যায়ন কর্মসূচির আওতায় ২০২৪ সালের বাংলাদেশের জাতিসংঘ কান্ট্রি রেজাল্ট রিপোর্ট প্রকাশ এবং আগামী বছরের জন্য কৌশলগত অগ্রাধিকার অনুমোদন করা হয়।
জাতিসংঘ ২০২৪ সালে উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২১ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিয়েছে বাংলাদেশকে। এই অর্থায়নের আওতায় উল্লেখযোগ্য কাজগুলো হচ্ছে— বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মসৃণ উত্তরণ কৌশল তৈরিতে সহায়তা, বেসরকারি খাতের সঙ্গে অংশীদারত্বে ৪ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ১১৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টার্নওভার উন্নত করতে সহায়তা এবং ১১ হাজারের বেশি তরুণ-তরুণীকে ডিজিটাল দক্ষতা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
জাতিসংঘের এ সহায়তার আওতায় অন্তত ৪ কোটি মানুষ সামাজিক সুরক্ষা সেবা পেয়েছেন। এর মধ্যে শিশু সুরক্ষা কর্মসূচি থেকে উপকৃত হয়েছে ৫ লাখ ৮০ হাজার। এ ছাড়া সারা দেশে ৫৬ লাখ কিশোরীকে জরায়ুমুখের ক্যান্সার থেকে রক্ষা করার জন্য হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়েছে। এতে দেশে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী মেয়েদের অন্তত ৯৩ শতাংশ টিকা পেয়েছে।
তাছাড়া জলবায়ু দুর্যোগে চিহ্নিত বছরে ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলারের বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় সহায়তা সমন্বয় করেছে সংস্থাটি। পাশাপাশি প্রায় ১৭ লাখ ২০ হাজার দুর্যোগকবলিত মানুষকে মানবিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে এবং ২০ লাখ মানুষের মধ্যে জলবায়ু ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা হয়েছে।
অর্থ সহায়তার পাশাপাশি শাসনব্যবস্থা ও লিঙ্গ সমতার কাজের মাধ্যমে জাতিসংঘ গ্রামীণ এলাকার ৬৬ শতাংশ গ্রাম্য আদালত কার্যকর করতে সহায়তা করেছে। প্রায় ৬ কোটি ১০ লাখ মানুষের কাছে এই সেবা পৌঁছে গেছে। এ ছাড়া, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা বিলকে সমর্থনের পাশাপাশি গার্হস্থ্য সহিংসতা আইন সংশোধনের পক্ষেও প্রচার চালিয়েছে জাতিসংঘ।
আরও পড়ুন: আলী রীয়াজের সঙ্গে হিউম্যান রাইটস প্রেসিডেন্টের বৈঠক
বৈঠকে সরকার অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এক বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউএনএসডিসিএফ (২০২২-২০২৬) এক বছরের সম্প্রসারণের অনুমোদন দেয় জেএসসি।
বৈঠক শেষে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ঘোষণাপত্র এবং যুব সম্পৃক্ততা নিয়ে জাতিসংঘ কী কী কাজ করে থাকে, তা নিয়ে একটি সেশন হয়।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা গত বছরের ‘সামিট অফ দ্য ফিউচারের’ ধারাবাহিকতায় তরুণদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরেন এবং আন্তঃপ্রজন্ম সমতাকে জাতীয় নীতিমালার অগ্রাধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়েও আলোচনা করেন।
এ সময় জাতিসংঘের চলমান অংশীদারত্বের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের। পাশাপাশি সম্প্রসারিত ইউএনএসডিসিএফ এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় করতে একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
শাহরিয়ার কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপের মতো জলবায়ু অর্থায়ন প্ল্যাটফর্মের অগ্রগতিকে আমরা স্বাগত জানাই। এ ব্যাপারে জাতিসংঘ ও উন্নয়ন অংশীদারদের সমর্থন অব্যাহত থাকা প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার ‘তিন শূন্য নীতির’ লক্ষ্য পূরণে যুবকদের কর্মসংস্থান, সামাজিক উদ্যোগ এবং প্রভাবভিত্তিক অর্থায়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। একই সঙ্গে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় শাসনব্যবস্থা এবং আসন্ন সংস্কার ও নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের কার্যকর সহায়তা জরুরি।”
এদিন সভা শেষে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরবর্তী পদক্ষেপে সম্মতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে— চলতি বছেরের শেষ নাগাদ ইউএনএসডিসিএফের চূড়ান্ত বছর মূল্যায়নের সূচনা এবং এসডিজি বাস্তবায়ন ও এলডিসি উত্তরণে গতি আনার প্রতিশ্রুতি।
আরও পড়ুন: আ. লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় দিল্লির উদ্বেগ প্রকাশ, দ্রুত নির্বাচনের প্রত্যাশা
ইউএনএসডিসিএফ কাঠামোটি এসডিজি অর্জনে জাতিসংঘের পাঁচটি কৌশলগত অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে। এর মধ্যে রয়েছে— অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন; সমতার ভিত্তিতে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কল্যাণ; টেকসই, সহনশীল ও উপযোগী পরিবেশ; রূপান্তর, অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সুশাসন এবং লিঙ্গ-সমতা ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা নির্মূল।
জেএসসির পরবর্তী সভা চলতি বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয়।
২০২ দিন আগে
এলডিসি উত্তরণে জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে মসৃণ ও সময়মতো উত্তরণ নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
রবিবার (১১ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এলডিসি উত্তরণ কমিটির সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। বৈঠকে এলডিসি উত্তরণের প্রধান সূচকগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।
বৈঠকে এলসিডি উত্তরণ কার্যক্রমে সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি পুরোটাই সমন্বয়ের ব্যাপার। আমরা ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারী, অর্থদাতা ও উন্নয়ন সহযোগীদের মনোযোগ আকর্ষণ ও সমর্থন পেয়েছি। এখন বিদ্যমান উদ্যোগগুলোকে ভিত্তি করে আমাদের একত্রে দ্রুত ও সুনির্দিষ্টভাবে অগ্রসর হতে হবে।’
প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক ইউনূস এলডিসি উত্তরণের সব অংশীজনকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানান। বলেন, ‘আমাদের এমন একটি দল দরকার, যারা অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর মতো কাজ করবে। যখনই সাইরেন বাজবে, তখনই তারা দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাবে এবং সমস্যার সমাধান করেই ক্ষান্ত হবেন।’
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এই প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধায়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে আশ্বস্ত করেন ড. ইউনূস। তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে উত্তরণ-সম্পর্কিত সব উদ্যোগের বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করা হবে।’
আরও পড়ুন: নিষিদ্ধের বিধান যুক্ত করে সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশ অনুমোদন
বৈঠকে এলডিসি উত্তরণ কমিটি জরুরিভিত্তিতে সম্পন্ন করতে হবে এমন পাঁচটি অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপ চিহ্নিত করে।
পদক্ষেপগুলো হলো—সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার অংশগ্রহণে ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’ পূর্ণভাবে কার্যকর করা, একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে জাতীয় শুল্ক নীতি ২০২৩-এর বাস্তবায়ন, অবকাঠামো প্রকল্পসহ জাতীয় লজিস্টিকস নীতি ২০২৪-এর মূল কার্যক্রম বাস্তবায়ন, সাভার ট্যানারি পল্লীতে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট (ইটিপি) প্ল্যান্টের কার্যক্রম প্রস্তুতি সম্পন্ন করা এবং মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় সক্রিয় ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) পার্কের পূর্ণ মাত্রায় কার্যক্রম শুরু করা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এসব কেবল রুটিন (প্রাত্যহিক) কাজ নয়। প্রতিটি পদক্ষেপ আমাদের উত্তরণকে এগিয়ে নিতে এবং একটি ন্যায্য ও শক্তিশালী অর্থনীতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং আন্তর্জাতিক-বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীসহ এলডিসি উত্তরণ কমিটির সদস্য ও নীতিগত উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন।
২০৭ দিন আগে
এলডিসি থেকে উত্তরণে বাণিজ্য সুবিধা রোডম্যাপ বাস্তবায়ন জরুরি: উপদেষ্টা
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন বা বাণিজ্য সুবিধার রোডম্যাপ বাস্তবায়ন জরুরি বলে অভিমত দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দীন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকার বিয়াম ফাউন্ডেশন মাল্টিপারপাস হলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ন্যাশনাল ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন কমিটির (এনটিএফসি) সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ২০২৬ সালের নভেম্বরে এলডিসি গ্র্যাজুয়েট হতে যাচ্ছি। এই গ্রাজুয়েশনের কারণে সামনে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের ওপর বিভিন্ন নিয়ম আসবে।’
‘এলডিসি থেকে উত্তরণের কারণে আমাদের অর্থনীতিতে যে ধাক্কাটা আসবে; তা থেকে পরিত্রাণের নিয়ামক হচ্ছে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।’
আরও পড়ুন: এলডিসি গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু উত্তরণে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস জাতিসংঘের
দক্ষতার মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়াতেও পরামর্শ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। ২০৩০ সাল পর্যন্ত আমাদের সময় আছে। আমি মনে করি, এটি দীর্ঘ সময়। যদি ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে আমরা গ্রাজুয়েট করি, আমি মনে করি আমাদের ওয়ার্কিং গ্রুপগুলো একসাথে কাজ করলে একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ সম্ভব।’
এ সময়ে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের একটি সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, পাশাপাশি ব্যবসা সহজীকরণ করতে হবে। আমরা সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়াতে চাই।’
সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সেতু বিভাগের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (চলতি দায়িত্ব), বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক, স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবসহ (এফটিএ) কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন এগ্রিমেন্টের মূল উদ্দেশ্য বাণিজ্য উদারীকরণের স্বার্থে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কিত বিধি-বিধান ও কর্মপদ্ধতি পর্যালোচনা করে আমদানি ও রপ্তানি পণ্যের প্রসার ও চলাচল ত্বরান্বিত করা।
আরও পড়ুন: এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও বাংলাদেশকে জিরো ট্যারিফ সুবিধা দেবে চীন
৩০৩ দিন আগে
এলডিসি গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু উত্তরণে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস জাতিসংঘের
স্বল্পোন্নত দেশ, স্থলবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ ও ক্ষুদ্র দ্বীপ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং উচ্চ প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এলডিসি গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু উত্তরণে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্মানের উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ইউএনওএইচআরএলএলএস’র কাজে দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন এবং এলডিসি ইস্যুতে দৃঢ় অঙ্গীকারের জন্য আমি বাংলাদেশের প্রশংসা করি।’
তারা দোহা প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন (ডিপিওএ) বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: তরুণ নাগরিকদের পেছনে বিনিয়োগ করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি অধ্যাপক ইউনূসের আহ্বান
৪৩২ দিন আগে
এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও বাংলাদেশকে জিরো ট্যারিফ সুবিধা দেবে চীন
২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণের পরেও একটি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য চীনের কাছ থেকে করযোগ্য ৯৮ শতাংশ পণ্যের শূন্য-শুল্ক (জিরো ট্যারিফ) সুবিধা পাবে।
২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে পেয়ে আসা এ সুবিধার জন্য চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
চীনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন দিনের সরকারি সফর শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থায়ন খাতে সহযোগিতা আরও বাড়ানো, বাংলাদেশ-চীন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষ করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান: একমত ঢাকা-বেইজিং
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার ভোরে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ থেকে চীনে আম রপ্তানির প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও পাট, চামড়া, জলজ পণ্য এবং অন্যান্য উচ্চমানের বিশেষ পণ্য রপ্তানি সম্প্রসারণে বাংলাদেশকে স্বাগত জানিয়েছে চীন।
এছাড়াও উচ্চমানের বাংলাদেশি কৃষিপণ্য চীনে রপ্তানির বিষয়ে যোগাযোগ আরও জোরদার করতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।
পাশাপাশি বাণিজ্য সহজীকরণ, সহায়তা ও প্রকল্প বা কর্মসূচির জন্য অর্থায়ন বিষয়ে ভবিষ্যত সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছে চীন ও বাংলাদেশ।
দুই দেশই যত দ্রুত সম্ভব চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ চুক্তির আধুনিকায়নের বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মতি দিয়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও শিল্প পার্ক, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান, নতুন জ্বালানি, পানিসম্পদ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, পোশাক ও অন্যান্য উৎপাদন খাতের মতো খাতে চীনা উদ্যোক্তাদের আরও বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হয়। পাশাপাশি চীনা প্রকল্প ও কর্মীসহ সব বিদেশি বিনিয়োগের নিরাপত্তা, বৈধ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
উভয় পক্ষ পিপিপি মডেলের মাধ্যমে অবকাঠামো ও নির্মাণ প্রকল্পগুলোতে সহযোগিতা গভীর করার বিষয়ে একমত প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে স্থানীয় মুদ্রার ব্যবহার বাড়াতে সম্মত বাংলাদেশ-চীন
এছাড়াও 'স্মার্ট বাংলাদেশ' বিনির্মাণে সমর্থন ও অংশগ্রহণ, দুই দেশের ডিজিটাল ও আইসিটি থিংক ট্যাংকগুলোর মধ্যে সহযোগিতা ও ডিজিটাল সক্ষমতা বাড়াতে যৌথভাবে একটি ডিজিটাল ইনোভেশন ল্যাব প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে চীন।
ডিজিটাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সহযোগিতা জোরদার করতে দুই দেশই সম্মতি জানিয়েছে।
ডিজিটাল অর্থনীতি শিল্পে দ্বিপক্ষীয় বিনিময়ে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে চীন। বাংলাদেশের ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নে চীনা সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করা হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল ও আইসিটি শিল্পের উন্নয়নে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে চীন-বাংলাদেশ উদ্ভাবন সহযোগিতা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা দেখবে।
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ডিজিটাইজেশনের প্রচারের জন্য “তথ্য শিল্প এবং ডিজিটাল বাণিজ্যের আন্তর্জাতিক বন্দর” এ সহযোগিতা চালাতে প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছে চীন।
এসব উদ্যোগের প্রশংসা ও ধন্যবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের সামুদ্রিক টেকসই উন্নয়ন ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সামুদ্রিক পর্যবেক্ষণ, দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রশমন, ওশান টু ক্লাইমেট সিমলেস ফোরকাস্টিং সিস্টেম (ওএসএফ) এবং মেরিন হ্যাজার্ডস আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড মিটিগেশন সিস্টেমের ক্ষেত্রে মেরিটাইম এবং ব্লু ইকোনমি সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে দুই দেশই।
এছাড়াও সামুদ্রিক বিষয়ে আরও এগিয়ে যেতে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে চীন।
শিগগিরই দ্বিতীয় দফায় সামুদ্রিক সহযোগিতা সংলাপ আয়োজনে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রে, সব পর্যায়ে এবং বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনী ও বিভাগের মধ্যে বিনিময় আরও জোরদার করতে এবং ব্যবহারিক সহযোগিতাও বাড়াতে রাজি হয়েছে চীন-বাংলাদেশ।
পাশাপাশি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণের বিষয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্পৃক্ততা ধরে রাখতে একমত হয়েছে দুই দেশ।
মানবতার তাগিদে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষা করতে হবে এবং জীবিকা নির্বাহ ও উন্নয়নের অধিকারগুলো সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক মানবাধিকার এ বিষয়ে দুই দেশই একমত হয়েছে।
সমতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সব দেশের মধ্যে মানবাধিকার বিষয়ে বিনিময় ও সহযোগিতা সমর্থন করে চীন ও বাংলাদেশ। এছাড়াও দুই দেশই মানবতার সাধারণ মূল্যবোধকে সমর্থন করে, মানবাধিকারের রাজনীতিকরণের বিরোধিতা করে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এজেন্ডার সব ক্ষেত্রে যৌথভাবে সুষ্ঠু অগ্রগতি প্রচারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: শি-হাসিনার বৈঠক: বাংলাদেশকে অনুদান ও ঋণ সহায়তা দেবে চীন
৫১১ দিন আগে
বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণে ইইউ’র কাছে জিএসপি+ চান প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশকে জিএসপি+ দেবে।
তিনি বলেন, 'আমি আশা করি, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর আমাদের উন্নয়নে সহায়তা করতে ইইউ বাংলাদেশকে জিএসপি+ দেবে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের সদর দপ্তরে দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন এ কথা বলেন।
এ বছর বাংলাদেশ-ইইউ অংশীদারিত্বের ৫০তম বার্ষিকী উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা আনন্দিত যে ইইউ এখন বাংলাদেশের বড় বাণিজ্য অংশীদার।
তিনি বলেন, ইইউ'র এভরিথিং-বাট-আর্মস স্কিম বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছে। তিনি ২০০০ সালে তার প্রথম মেয়াদে এই ব্যবস্থাটি আনুষ্ঠানিকভাবে করার কথা স্মরণ করেন।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার বেলজিয়াম সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী
ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের সঙ্গে ঢাকার সই করা সাড়ে ৩০০ মিলিয়ন ইউরোর আর্থিক চুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পদক্ষেপ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ইইউ'র সঙ্গে অংশীদারিত্বে ইইউ'র আগ্রহের প্রশংসা করে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখ রোহিঙ্গার মানবিক সহায়তার জন্য ইইউকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের মধ্যে নিহিত। সংকটের দ্রুত টেকসই সমাধানের জন্য আমি ইইউকে সম্পৃক্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, শ্রমিকদের অধিকারের পাশাপাশি নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসনের বিষয়ে তারা অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, 'আমাদের কিছু স্থানীয় চ্যালেঞ্জের সমাধান খুঁজতে গবেষণা ও উদ্ভাবনে অংশীদারিত্বের আগ্রহ প্রকাশ করেছি আমি। আমরা কৌশলগত উপাদানগুলোতে আরও মনোনিবেশ করে ইইউর সঙ্গে ভবিষ্যতের অংশীদারিত্বের পরিকল্পনা করছি।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ-ইইউ'র ৪০০ কোটি ইউরোর চুক্তি সই
তিনি বলেন, তারা খুব শিগগিরই একটি অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছেন। তিনি বলেন, এটি আমাদের চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
ইউরোপীয় কমিশন প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন তার বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এত বছর ধরে আমরা একটি দৃঢ় অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছি এবং এখন আমরা এটিকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাচ্ছি।’
বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ঋণ ও অনুদান প্যাকেজ প্রসঙ্গে ইসি বলেন, ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি বিনিয়োগ প্যাকেজ জলবায়ুর জন্য ভালো এবং স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্যও ভালো।
আরও পড়ুন: উন্নত ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ-অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
৭৭১ দিন আগে
এলডিসি উত্তোরণে বাংলাদেশকে সহায়তায় ইইউ’র প্রতি বিজিএমইএ প্রধানের আহ্বান
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান জিএসপির পরিবর্তনের মেয়াদ বর্তমান তিন বছর থেকে বাড়িয়ে ছয় বছর করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এই সম্প্রসারণ বাংলাদেশকে এলডিসি বিভাগ থেকে মসৃণ গ্র্যাজুয়েশনের জন্য প্রস্তুত করতে এবং এলডিসি-পরবর্তী যুগেও প্রবৃদ্ধির গতি অব্যাহত রাখতে সহায়তা করবে।
গত ১০ মে ঢাকায় ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের (ইইএএস) অর্থনৈতিক ও বৈশ্বিক সমস্যা বিষয়ক ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল হেলেনা কোনিগের সঙ্গে বৈঠকে বিজিএমইএ প্রধান এ অনুরোধ জানান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন-ইইএএস এর সাউথ এশিয়া বিষয়ক ডেপুটি হেড অব ডেলিগেশন মনিকা বাইলাইট; বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি; বাংলাদেশে ইইউ প্রতিনিধি দলের ডেপুটি হেড ড. বার্ন্ড স্প্যানিয়ার; মিনিস্টার কাউন্সেলর এবং হেড অফ কোঅপারেশন মাউরিজিও সিয়ান; এবং কাউন্সেলর এবং টিম লিডার- শিক্ষা, মানব উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের পিএফএম জুরেট স্মালস্কাইট মারভিল এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি সমীর সাত্তার।
আরও পড়ুন: ঈদের আগেই বিজিএমইএ আওতাধীন কারখানার মার্চ মাসের মজুরি পরিশোধ: বিজিএমইএ
বৈঠকে তারা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ), এলডিসি-পরবর্তী সময়ে ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং দ্বিপক্ষীয় গুরুত্বসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান হেলেনা কোনিগকে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রধান অগ্রগতি, বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা, পরিবেশগত টেকসইতা এবং শ্রমিকদের অধিকার ও কল্যাণের বিষয়ে অবহিত করেন।
তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে, বিশেষ করে দেশের লাখ লাখ মানুষের দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নারীর ক্ষমতায়ন, মেয়েদের স্কুলে ভর্তি বৃদ্ধি এবং বাল্যবিবাহ কমানোর ক্ষেত্রে কীভাবে আরএমজি শিল্প গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণও দেন।
ফারুক হাসান এসব ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত যে অর্জনগুলো অর্জন করেছেন তা ধরে রাখতে শিল্পের অব্যাহত প্রবৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ইইউকে বাংলাদেশের আরএমজি রপ্তানির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি ইইউর জিএসপি স্কিমের আওতায় শিল্পের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সুনির্দিষ্ট বাণিজ্য পছন্দ সম্প্রসারণের গুরুত্ব তুলে ধরেন, যার ফলে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি ইইউকে ইইউ-এর সুরক্ষা টেক্সটাইল থ্রেশহোল্ড মানদণ্ড পরিত্যাগ বা ২০২৪-২০৩৪ সালের জন্য প্রস্তাবিত জিএসপি স্কিমে বাংলাদেশের জন্য প্রক্রিয়াটি পুনর্বিন্যাস করার কথা বিবেচনা করারও আহ্বান জানান, যাতে বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরে জিএসপি প্লাস থেকে উপকৃত হতে পারে।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে হাইকমিশনের সহায়তা চায় বিজিএমইএ
তৈরি পোশাক শিল্পে জুলাই-ডিসেম্বরে ১৬% বেড়ে রপ্তানি ২৩ বিলিয়ন ডলার: বিজিএমইএ
৯৩৮ দিন আগে
এলডিসি-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাধার সম্মুখীন হতে পারে: বাণিজ্য সচিব
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) পরবর্তী সময়ে তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানিতে বাংলাদেশকে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং, আমাদের আরএমজি রপ্তানির প্রবণতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক কিছু নীতি সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে।’
রবিবার বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউশনে (বিএফটিআই) ‘স্টাডি অন পলিসি সাপোর্ট এন্ড ইনসেন্টিভস বিফোর এন্ড আফটার এলডিসিস গ্র্যাজুয়েশন ফর আরএমজি সেক্টর’-শীর্ষক ওয়ার্কশপে এসব কথা বলেন।
বিএফটিআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাফর উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান এবং সঞ্চালনা করেন বিএফটিআই মহাপরিচালক মো. ওবায়দুল আজম।
মো. জাফর উদ্দিন বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের আগেই আরএমজি রপ্তানিতে প্রণোদনা ও ভর্তুকির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বাংলাদেশকে: বাণিজ্যমন্ত্রী
এলডিসি উত্তরণ নতুন চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি সুযোগ তৈরি করবে: বাণিজ্য সচিব
৯৪২ দিন আগে