গাজা-ইসরায়েল
জেরুজালেমে অস্থিরতায় গাজা-ইসরায়েল ব্যাপক গোলাগুলি
জেরুজালেম নিয়ে অস্থিরতায় শনিবার (২৪ এপ্রিল) ইসারায়েল এবং গাজা উপত্যকার মধ্যে এযাবতকালের সবচেয়ে ভয়াবহ গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
বার্তা সংস্থার এপি জানায়, ফিলিস্তিন হতে অন্তত ৩০ রকেট হামলা চালানো হয় এবং ইসরায়েল গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত হামলা ঘাঁটিগুলোতে প্রতিআক্রমণ চালায়।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলকে চতুর্থ আরব দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিল বাহরাইন
জেরুজালেমে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে, যা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষের অন্যতম কারণ। অনেকদিন ধরে দু’টি দেশের মধ্যে চলে আসা সংঘর্ষের কারণ জেরুজালেম, ইহুদি, খ্রিষ্টান এবং মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র স্থান। শহরটিতে ইসরায়েলি পুলিশ নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। একই সাথে মার্কিন দূতাবাসও দুই পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) ইসরায়েলি পুলিশ জানায়, এদিন রাতে পৃথক সংঘর্ষে ৪৪ জনকে আটক করা হয় এবং ২০ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। পবিত্র রমজান মাসে আল-আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনিদের প্রবেশে বাঁধা দেয়ায় মুসলিমদের সাথে এবং আরব-বিরোধী মিছিলে কট্টর ইহুদি আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের আলাদা সংঘর্ষ হয়।
রাতের সংঘর্ষের ঘটনায় গাজা উপত্যকায় অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার মধ্যরাতে হামাসের সশস্ত বাহিনী ইসরায়েলকে তাদের ধৈর্য্য পরীক্ষা না করার ব্যাপারে সতর্ক করে এবং গাজা উপত্যকার যোদ্ধারা ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানো শুরু করে। শনিবার সকাল পর্যন্ত হামলা অব্যাহত থাকে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, তাদের যুদ্ধবিমান এবং ট্যাংক হামাসের রকেট হামলা এবং এর বেশকিছু স্থাপনা ধ্বংস করেছে। যদিও হামাস হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাপন্থি বাম জোটের সমর্থনে একটি দল কয়েকটি রকেট হামলার দায় স্বীকার করে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা
রকেট হামলার সতর্কবার্তা আগে থেকে পাওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
পবিত্র রমজান মাসে শুক্রবার জুমার নামাজে ফিলিস্তিনি মুসলিমদের ইসরায়েলি পুলিশরা আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ করতে না দিলে, ফিলিস্তিনিরা প্রতিবাদ জানায়। পরে মুসলিম নেতাদের আহ্বানে ফিলিস্তিনিরা মসজিদে নামাজ না পড়ে চলে আসে। তখন থেকেই সংঘর্ষের আশংকা দেখা দেয়।
ওই ঘটনার জের ধরেই সন্ধ্যায় রাস্তায় নামতে শুরু করে ফিলিস্তিনিরা। এরপর থেকে জেরুজালেমের বিভিন্ন এলাকাতেই মুসলিমরা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
একই সময়ে কট্টরপন্থি ইহুদি একটি সংগঠন ‘লাহাবা’ শতাধিক ইহুদি সমর্থকদের নিয়ে দামাস্কাসের উদ্দেশ্যে মিছিল বের করে এবং আরব তথা ফিলিস্তিনিদের এই অঞ্চল ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য স্লোগান দিতে থাকে। দামাস্কাস এর সন্নিকটে চলে আসলে পুলিশ জল কামান এবং সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের সাথে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
এদিকে শনিবার (২৪ এপ্রিল) জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজের টুইটারে পোস্ট করে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
জেরুজালেমের গ্রান্ড মুফতি শেইখ মুহাম্মদ হোসেন হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “পুলিশ এবং সেটেলাররা (ইসরায়েলিরা) বিনা কারণে জেরুজালেমের ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালিয়েছে।”
৩ বছর আগে