ইন্ডিয়াপাড়া
যশোরের চৌগাছায় অরক্ষিত ইন্ডিয়াপাড়া, ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ছড়ানোর আশঙ্কা
যশোরের চৌগাছা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার দৌলতপুর গ্রামের মাঝেই রয়েছে ইন্ডিয়াপাড়া। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে তিন পাশে বাংলাদেশ আর এক পাশে ভারত সীমান্ত।
দৌলতপুর গ্রামের সাথে ইন্ডিয়াপাড়ার মানুষের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে এই এলাকা দিয়ে করোনার ভারতীয় ভেরিয়েন্ট বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এদিকে, সামাজিক সম্পর্কের কারণে সীমারেখা চলাফেরা, লেনদেন ও সামাজিক বন্ধনে বাঁধ সাধতে পারছে না। বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে চলে অবাধ চলাফেরা। ইন্ডিয়াপাড়ার বাসিন্দারা বাগদা বাজারসহ ভারতের বিভিন্ন এলাকাতে যাতায়াত করে। কিন্তু দেশে করোনার ভারতীয় নতুন ভেরিয়েন্ট দেখা দেয়ায় দৌলতপুর গ্রামবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। তাই এলাকবাসী ইন্ডিয়াপাড়ার চারপাশে বিজিবি টহল জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সীমান্তবর্তী সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম দৌলতপুর। গ্রামটি ভারত ঘেষা। দৌলতপুর গ্রামের দক্ষিণ-পূর্ব পাশ দিয়ে ভারত থেকে একটি সড়ক প্রবেশ করেছে গ্রামটির মধ্যে। এ গ্রামের একটি অংশে ভারতীয় নাগরিকরা বসবাস করেন। যা ইন্ডিয়া পাড়া বলে পরিচিত। এখানে ৮০-৮৫টি পরিবার রয়েছে। জনসংখ্যা দেড় শতাধিক। ইন্ডিয়াপাড়ার বাসিন্দারা ভারতের নাগরিক হলেও অবাধে বাংলাদেশ অংশে যাতায়াত করেন।
আরও পড়ুন: দৌলতপুর সীমান্তে আটকের ৪ ঘণ্টা পর কৃষককে ফেরত দিল বিএসএফ
সরেজমিনে সীমান্তবর্তী দৌলতপুর গ্রামে গিয়ে অবাধ যাতায়াতের প্রমাণও পাওয়া গেছে। সীমান্তবর্তী ৪৩নং পিলার সংলগ্নে বাংলাদেশ অংশের সড়কে বাইসাইকেল চালাতে দেখা যায় ৮৫ বছরের বৃদ্ধ ইন্ডিয়াপাড়ার বাসিন্দা ও ভারতের নাগরিক আবুল কাশেমকে। তিনি মুখে মাস্ক পরিধান না করেই ঘোরাফেরা করছেন।
এ সময় আবুল কাশেম বলেন, কয়েক যুগ ধরে ইন্ডিয়া পাড়াতে বসবাস করছি। কেনাকাটা করতে যাই নিজ দেশের (ভারত) বাগদা বাজারে। কিন্তু করোনার কারণে আমরা বাগদা বাজারে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।তবে জমি জায়গা সব ভারতের মধ্যে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক আত্মীয় স্বজন আছে। ছোট বেলা থেকেই এভাবেই চলাচল করছি।
আরও পড়ুন: রৌমারী সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
দৌলতপুর গ্রামবাসী তরিকুল ইসলাম ও শরিফা খাতুন জানান, তারা বাগদা বাজারসহ সীমান্ত ঘেষা গ্রামেগুলোতে করোনার বিস্তার লাভ করেছে বলে খবর পেয়েছেন। ফলে ইন্ডিয়াপাড়াতেও করোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কায় আছেন। কারণ বাগদা বাজার এলাকার আশপাশের গ্রামে তাদের আত্মীয় স্বজন রয়েছে।
দৌলতপুর গ্রামের পাশের গ্রাম আন্দুলিয়ার বাসিন্দা আব্দুল করিম বলেন, দৌলতপুর ও ইন্ডিয়াপাড়ার পাশে আমাদের জমি আছে। প্রতিদিনই আসতে হয় কাজে।
এ করোনাকালীন সময় ইন্ডিয়াপাড়ার পাশে বিজিবি টহল আরও জোরদার করার দাবি জানান আব্দুল করিম সহ আরও অনেকেই।
আরও পড়ুন: বিএসএফ’র গুলিতে আহত ভারতীয় কিশোরকে হস্তান্তর
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও দৌলতপুর গ্রামবাসী তোতা মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামের মধ্যেই ভারতের একটি ছোট গ্রাম রয়েছে। করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট নিয়ে আমরা চিন্তিত। ইন্ডিয়াপাড়া বসবাসকারীদের নিজ পাড়া হতে বাইরে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। সেই সাথে দৌলতপুর গ্রামবাসীকেও তাদেরকে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
৪৯ বিজিবি আন্দুলিয়া ক্যাম্পের সুবেদার শাহীনুর রহমান বলেন, করোনার নতুন ভেরিয়েন্টের বিষয়ে আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। ইতিমধ্যে দৌলতপুর গ্রাম এলাকাতে আমরা টহল জোরদার করেছি।
৩ বছর আগে