শেবাচিমের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
শেবাচিমের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রোগী বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ!
সরকারি হাসপাতালে অপারেশন করালে রোগী মারা যেতে পারে এমন কথা বলে বেসরকারি হাসপাতালে রোগী নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল (শেবাচিম) হাসপাতালের চিকিৎসক এ কে এম মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী এক অভিভাবক। অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: সাধারণ রোগীদের শেবাচিম হাসপাতালে আসতে নিষেধাজ্ঞা
তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরে সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. নাজমুল হককে প্রধান করে একটি তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তবে তদন্ত প্রধান করোনা আক্রান্ত হওয়ায় প্রতিবেদন পেতে দেরি হচ্ছে। প্রতিবেদনে অভিযুক্ত চিকিৎসক দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঘটনাটি ঘটেছে চলতি বছরের ২২ আগস্ট। তবে গত শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
ভুক্তভোগী অভিভাবক রাসেল হোসেন বলেন, ১৬ আগস্ট (সোমবার) আমার ৯ বছরের অসুস্থ মেয়ে শুকরিয়াকে চিকিৎসার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করাই। তাকে অপারেশনের জন্য শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: বরিশালের শেবাচিমে দ্বিতীয় দিনে মতো ধর্মঘটে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা
সেখানে শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা এ.কে.এম মিজানুর মেয়ের শারীরিক পরীক্ষার প্রতিবেদন দেখে বলেন-এই রিপোর্ট চলবে না। তিনি হাসপাতালের সামনের আবিদ ইসলামিয়া ডায়গনস্টিক ল্যাব ও ডা. নজরুল ইসলামের আলট্রাসান থেকে টেস্ট করিয়ে আনতে বলেন।
ডা: এ.কে.এম মিজানুর রহমানের নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করানোর পর তিনি জানান শিশু শুকরিয়ার পেটের নাড়িতে প্যাচ লেগেছে। রোগীকে জরুরি অপারেশন করতে হবে।
তবে ওই অভিযুক্ত চিকিৎসক জানান, অপারেশন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হবে না। এখানে অপারেশন করার পর রোগী বাঁচবে কিনা তার নিশ্চয়তা নেই। এজন্য হেমায়েত উদ্দিন ডায়াবেটিক হাসপাতালে অপারেশন করাতে বলেন। অপারেশনে ৩০ হাজার খরচ হবে। শেষে ডাক্তারের কথামত বাধ্য হয়ে হেমায়েত উদ্দিন ডায়াবেটিক হাসপাতালে মেয়ের অপারেশন করান ওই শিশুর বাবা।
শুকরিয়ার বাবা বলেন, ‘আর্থিক অনটনের কারণেই কম খরচে ভালো সেবা পাওয়ার আশায় সরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে চিকিৎসক আমাকে আশ্বস্ত করার পরিবর্তে আমার সন্তান (রোগী) মারা যাওয়ার ভয় দেখানো ও বেসরকারি হাসপাতালের নাম উল্লেখ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো কতটা যৌক্তিক? আমার প্রশ্ন এই হাসপাতালে কি এমন রোগীর অপারেশন সম্ভব না?’
আরও পড়ুন: দুর্নীতি: শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
অভিযোগের বিষয়ে ডা. এ.কে.এম. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আবিদ ইসলামিয়া ডায়গনস্টিক ল্যাবের রিপোর্ট ভালো তাই সেখানে পরীক্ষা করাতে বলেছিলাম। আমি নিজেও সেখানে পরীক্ষা করাই। ইমারজেন্সি রোগীর অপারেশন দরকার হলে অনেক সময় সিডিউল না থাকায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশন করা সম্ভব হয় না। এজন্য প্রাইভেটে অপারেশন করার জন্য বলেছি। এতে আমার আলাদা কোনও লাভ নেই।’
৩ বছর আগে