আদালত
বিচারপ্রার্থীদের আদালতের বারান্দা থেকে দ্রুত বাড়ি ফেরানোর নির্দেশ প্রধান বিচারপতির
বিচারপ্রার্থীদের আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দ্রুত বাড়ি ফেরানোর জন্য সকলকে যথাযথভাবে বিচারকর্ম পরিচালনা করার নির্দেশনা প্রদান করেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
মঙ্গলবার সারাদেশের অধস্তন আদালতের জেলা ও দায়রা জজগণের উদ্দেশ্যে অভিভাষণ প্রদানকালে প্রধান বিচারপতি এই নির্দেশনা দেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতিগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, আইনজীবীরা বারবার সময় আবেদন করলেই তা যেন গ্রহণ করা না হয় সেদিকে সচেষ্ট থাকতে হবে। অযথা শুনানি মুলতবি করলে বিচার প্রার্থীদের হয়রানি বাড়ে। বিচার প্রার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে জেলা জজদের আইনানুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিচারকদের সুশৃঙ্খলভাবে কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।
তিনি সততা ও দক্ষতা নিয়ে ন্যায়বিচার করার মানসে মনোনিবেশ করার জন্য দেশের সকল বিচারকগণকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় চাই শক্তিশালী বিচার বিভাগ: প্রধান বিচারপতি
এছাড়াও দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িত কোনো বিচারককে ছাড় দেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন প্রধান বিচারপতি।
এছাড়া দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি কিভাবে করা যায় সে বিষয়ে বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেনহাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
সারা দেশের তিন শতাধিক জেলা ও দায়রা জজ এবং সমমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা অংশ নেন।
বিচারকগণের পক্ষ থেকে মোট ১২জন বিচারক বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: বর্তমানে বিচার ব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রিতা বেড়েছে: প্রধান বিচারপতি
আদালতে মানুষের দুর্দশার সুযোগ নেয়া বরদাশত করা হবে না: প্রধান বিচারপতি
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে মাইগ্রেশন বন্ধের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
গুচ্ছ অধিভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে মাইগ্রেশন বন্ধের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং মেধারভিত্তিতে ভর্তির নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
দশ দিনের মধ্যে শিক্ষা সচিব ও ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে রিট আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে সপ্তম মাইগ্রেশনের মাধ্যমে ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন আদালত। এর ফলে তারা মাইগ্রেশনের মাধ্যমে ভর্তি হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী। এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: দণ্ডিত আবদুস সামাদকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বদরুদ্দোজা বাদল। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার কাজী জাওয়াদ বদরুদ্দোজা। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ। পরে ব্যারিস্টার বাদল বলেন, হাইকোর্ট রুল জারি করে রিটকারীদের ক্ষেত্রে সপ্তম মাইগ্রেশনের মাধ্যমে ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন। এর ফলে তারা মাইগ্রেশনের মাধ্যমে ভর্তি হতে পারবেন।
এর আগে সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) রুবেল মিয়া, সাকিব আহমেদ ও আলভী নামে তিন শিক্ষার্থী গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তিতে মাইগ্রেশনবন্ধ করার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে একের পর এক নতুন সিদ্ধান্তে পিষ্ঠ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। সেশনজট এড়াতে যেভাবে তড়িঘড়ি করে ভর্তি পরীক্ষা এক মাস এগিয়ে আনা হয়েছিল তার ফল তো পেলোই না শিক্ষার্থীরা, বরং ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার চার মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও ভর্তি প্রক্রিয়া এখনও শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। উল্টো এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইগ্রেশন পদ্ধতি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এতে চরম বিপাকে শিক্ষার্থীরা।
২০ আগস্ট পরীক্ষার কার্যক্রম সম্পন্ন হলেও গুচ্ছ কর্তৃপক্ষ ওয়েবসাইট আপডেট করার নামে শিক্ষার্থীদের বসিয়ে রাখে প্রায় দুই মাস। এরপর নভেম্বর মাস থেকে শুরু হয় ভর্তি কার্যক্রম। এখন পর্যন্ত ছয়টি মেধাতালিকায় বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন চালু থাকলেও সপ্তম মেধা তালিকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে ৫৫ এর বেশি নাম্বার পাওয়া শিক্ষার্থীরাও বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশনের সুবিধা নিতে পারছে না। যেহেতু একজন শিক্ষার্থী একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাচ্ছিল, এখন মাইগ্রেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। উপরের সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের সিট ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও তারা এখন আর সেখানে ভর্তি হতে পারবে না।
উপাচার্যদের কাছে শিক্ষার্থীদের দেয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, গুচ্ছ ভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধ করার সিদ্ধান্তে তারা ভালো স্কোর নিয়ে ভালো সাবজেক্ট এ পড়ার সুযোগ পাবে না ও পছন্দমতো আবেদনের সুযোগ পেলেও একটি প্রতিষ্ঠানে (বিশ্ববিদ্যালয়ে) ভর্তি থাকায় তা পরিবর্তনের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। মাইগ্রেশন চালু করে ও সিট ফাঁকা রেখে ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ না করার দাবিও জানানো হয়েছে ওই স্মারকলিপিতে।
তারা বলছে, এ সিদ্ধান্তের ফলে ভালো স্কোর করেও তারা ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে বা ভালো সাবজেক্টেভর্তি হতে পারবেন না। যা তাদের সঙ্গে অন্যায় করা হবে। একজন শিক্ষার্থী কম স্কোর নিয়ে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে বা ভালো সাবজেক্টে ভর্তি হলেতারা অবিচারের শিকার হবেন।
তবে সভায় উপস্থিত ছিলেন এমন একজন উপাচার্য বলেন, সপ্তম মেধাতালিকা থেকে গুচ্ছের বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল সেটিই বহাল রাখা হয়েছে। এটি পরিবর্তন হচ্ছে না। গুচ্ছভুক্ত অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাইগ্রেশন বন্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধ না করলে ক্লাস শুরুর প্রক্রিয়া অনেক পিছিয়ে যাবে। এতে সেশনজট তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের কল্যাণের কথা বিবেচনা করে মাইগ্রেশন বন্ধ রাখার আগের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনার সদ্য সাবেক ডিসি ও ডুমুরিয়ার ইউএনওকে হাইকোর্টে তলব
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেক ডিজঅনার মামলা করতে পারবে না মর্মে হাইকোর্টের রায় স্থগিত
প্রধান বিচারপতি পদক পেলেন ৫ বিচারক
অধস্তন আদালতের বিচারকদের সততা, মেধা-যোগ্যতা ও কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রথমবারের মতো ব্যক্তিগতভাবে পাঁচজন বিচারককে ও দলগতভাবে একটি জেলার আদালতকে ‘প্রধান বিচারপতি পদক’ দেয়া হয়েছে।
রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পদক গ্রহণ করেন পদকপ্রাপ্তরা।
আরও পড়ুন: রামগড়ের ইউএনওকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা থেকে বিরত রাখার নির্দেশ
ব্যক্তিগতভাবে পদক পাওয়া পাঁচ ক্যাটাগরির বিচারকরা হলেন- জেলা ও দায়রা জজ ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুন্নেছা, অতিরিক্ত জেলা জজ ক্যাটাগরিতে টাঙ্গাইলের মুখ্য বিচারিক হাকিম সাউদ হাসান, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ক্যাটাগরিতে নওগাঁর যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. খোরশেদ আলম, সিনিয়র সহকারি জজ ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রামের সিনিয়র সহকারি জজ মোসা. রেশমা খাতুন এবং সহকারি জজ ক্যাটাগরিতে রংপুরের সহকারী জজ মো. হাসিনুর রহমান মিলন।
এদিকে, দলগতভাবে পদক পেয়েছে ময়মনসিংহ জেলা ও দায়রা জজ। এ জেলার পক্ষে জেলা ও দায়রা জজ হেলাল উদ্দিন পদক গ্রহণ করেন।
বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দায়িত্ব নেয়ার পর প্রধান বিচারপতি পদক চালুর ঘোষণা দেন।
সে অনুযায়ী এপ্রিলে আপিল বিভাগের একজন বিচারককে সভাপতি করে হাইকোর্ট বিভাগের আরও পাঁচ বিচারককে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেন প্রধান বিচারপতি।
কমিটি গঠন সংক্রান্ত সুপ্রিমকোর্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আপিল বিভাগের বিচারপতি বোরহান উদ্দিনকে কমিটির সভাপতি করা হয়েছে।
সদস্য হিসাবে আছেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী, বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর এবং বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান।
এ কমিটি ‘প্রধান বিচারপতি পদক’ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি পদকের জন্য ব্যক্তি বাছাইয়ের দায়িত্বও দেয়া হয়। পরে কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী রবিবার পদকপ্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ধানমন্ডিতে অননুমোদিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান: চারজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল
আদালত চত্বর থেকে ২ জঙ্গি ছিনতাই: ১০ আসামির ৫ দিনের রিমান্ড
পুলিশ পরিচয়ে পথরোধ করে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪
খুলনা মহানগরীতে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে নগরীর আড়ংঘাটা থানার বাইপাস সড়কের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো-নগরীর আড়ংঘাটা মোড়লপাড়ার মো. খোরশেদ মোড়লের ছেলে বেল্লাল মোড়ল (৪৬), দেয়ানা মধ্যপাড়ার মৃত ফরুক আলম চৌধুরীর ছেলে মো. আজিজুর রহমান ওরফে মিঠু চৌধুরী (৪০), দিঘলিয়া ব্রহ্মগাতী গ্রামের রেজা মুন্সির ছেলে মো. জিহাদ মুন্সি (২৪) ও আড়ংঘাটা দক্ষিণপাড়ার মো. আব্দুস সাত্তার শেখের ছেলে মো. রাসেল শেখ (২২)।
র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোসতাক আহমেদ জানান, নগরীর আড়ংঘাটা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: মামলা দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে বদলির নির্দেশ
র্যাব-৬ এর এ কর্মকর্তা জানান, আড়ংঘাটা এলাকায় ভুক্তভোগী স্বামী-স্ত্রী ঘুরতে বের হন। ঘোরাফেরা শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আড়ংঘাটা বাজারে যাওয়ার পথে চার ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের গতিরোধ করে। পরে তারা ভয়ভীতি দিয়ে ভুক্তভোগীর স্বামীকে একটি স্থানে আটকে রাখে। পরে ভুক্তভোগী ওই নারীকে চার ব্যক্তি পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় আসামিরা মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে। ধর্ষণের ঘটনাটি কোথাও জানালে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। পরে গভীর রাতে ভুক্তভোগীকে ছেড়ে দেয়। ভুক্তভোগী ওই নারী বিষয়টি তার স্বামীকে জানায়। পরে ভুক্তভোগীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী আড়ংঘাটা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরও জানান, এই ঘটনা জানতে পেরে অভিযানে নামে র্যাব। তথ্য প্রযুক্তি ও সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৩ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায় ভিকটিম তার স্বামী জীবন শেখকে নিয়ে ঘোরার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা দৌলতপুর থেকে একটি ইজিবাইকযোগে আড়ংঘাটা বাইপাস মোড়ে এসে নামে। বাইপাস মোড়ে কিছু সময় ঘোরা ফেরার পর পায়ে হেঁটে তারা আড়ংঘাটা বাজারের দিকে আসার পথে মোড়ল পাড়াস্থ নূরানী জামে মসজিদের নিকট আসলে উল্লেখিত আসামিরা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের পথরোধ করে। ভিকটিমের স্বামীকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় এবং ভিকটিমকে অভিযুক্ত বেল্লাল মোড়লের বাড়ির একতলা ছাদে নিয়ে রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এ সময় ৪নং আসামি মো. রাসেল শেখ মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। বিষয়টি জানাজানি করলে ধারণ করা ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়।
ভিকটিমের স্বামী জানায়, পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমাদেরকে তল্লাশির নাম করে একটি স্থানে নিয়ে যায়। পরে আমাকে চোখ বেঁধে একটি স্থানে আটকে রাখে। আমার স্ত্রী দুই ঘন্টা পর অজ্ঞাত স্থান থেকে আমাকে ফোন দিয়ে কান্নারত অবস্থায় ঘটনার বিবরণ দেয়।
তিনি ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদেরকে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়। পরে শুনানি শেষে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
আরও পড়ুন: লোহাগাড়ায় মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
যশোরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
তৃতীয় দফায় ফখরুল ও আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর
রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মামলায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের পক্ষে তৃতীয় দফায় করা জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকালে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এদিন জামিন আবেদনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু জামিনের বিরোধিতা করেন।
আরও পড়ুন: ফখরুল-আব্বাসকে আগেই ডিভিশন দেয়া উচিত ছিল: হাইকোর্ট
এর আগে বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালতে বিশেষ জামিন আবেদন করেন মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের আইনজীবী। আদালত বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন।
৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে তাদের গ্রেপ্তার দেখায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
৯ ডিসেম্বর বিকালে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর ১২ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসসহ ২২৪ জনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।
আরও পড়ুন: ফখরুল ও আব্বাসকে কারাগারে প্রথম শ্রেণীর বন্দীর মর্যাদা দেয়া হয়েছে: রাষ্ট্রপক্ষ
ফখরুল ও আব্বাসের কারাগারে ডিভিশন চেয়ে হাইকোর্টে রিট
বিএনপির কার্যালয়ে বোমাগুলো পুলিশ রেখেছিল: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেন যে পুলিশ দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বোমাগুলো রেখেছিল।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব হয়েও আমাকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে দেয়া হয়নি। এটা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। আমাদের অফিসে বোমা সম্পর্কে পুলিশ অফিসার যা বলেছেন তা নির্লজ্জ মিথ্যা। তারা (পুলিশ) নিজেরাই বোমাগুলো নিয়ে গিয়েছিল এবং সেখানে রেখেছিল।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বৃহস্পতিবার সকালে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে বাধা দেয়া হয়।
সকালে ঢাকার একটি আদালতে হাজির হওয়ার পর ফখরুল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে বিজয়নগর মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ তাকে বাধা দেয়।
আরও পড়ুন: বিএনপির সংবাদ সম্মেলন বিকালে
পুলিশ কর্মকর্তারা বিএনপির সিনিয়র এই নেতাকে বলেন যে নিরাপত্তার কারণে তাদের প্রয়োজনীয় কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে বিএনপি কার্যালয়ে ঢুকতে দেয়া হবে না, কারণ তারা সেখান থেকে বোমা উদ্ধার করেছে।
ফখরুল বলেন, ‘পুলিশ মিথ্যা বলছে... এটা আমাদের অফিস, আমি ভেতরে যাব। সেখানে যাওয়া আমার অধিকার।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব সরকার ফখরুলকে বলেন যে বিএনপি নেতারা গতকাল ওই এলাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল ছুড়ে মারে এবং বিএনপির অফিস নিরাপদ নয়, যা এখন একটি ‘ক্রাইম সিন’।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।’ ফখরুল উত্তেজিত হয়ে পড়লে বিপ্লব অনুরোধ করেন, ‘অনুগ্রহ করে রাগ করবেন না এবং আমাদের সহযোগিতা করুন।’
জবাবে ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতাদের মতো কথা বলবেন না।’
ফখরুল বলেন, বিএনপির কার্যালয় তাদের সম্পত্তি এবং তাদের ভেতরে যাওয়ার অধিকার রয়েছে।
তিনি সরকারের কাছে বিএনপির কার্যালয় খুলে দেয়ার ও গ্রেপ্তার সকল নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানান। স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে পারে সেজন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
১০ ডিসেম্বর তাদের জনসভা কোথায় হবে জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) বিকাল ৩টায় সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানানো হবে।
আরও পড়ুন: ফখরুলকে নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে যেতে বাধা
নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে যান চলাচল বন্ধ
মায়ের মামলায় জেলহাজতে গেল ২ ছেলে
শরীয়তপুরে মায়ের করা একটি মামলায় দুই ছেলেকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে ডামুড্যা আমলী আদালতে আসামিরা জামিনের জন্য আসলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে দেন বিচারক।
আসামিরা হলো- ডামুড্যা উপজেলার ধানকাটি ইউনিয়নের মোল্যাকান্দি গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মাদ বেপারী বড় ছেলে রফিক বেপারী ও মেঝো ছেলে জহুরুল বেপারী।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ডামুড্যা উপজেলার ধানকাটি ইউনিয়নের মৃত নুর মোহাম্মাদ বেপারী স্ত্রী জিন্নাত নেছা।
দুই ছেলে আর ছেলেদের স্ত্রীরা প্রায়দিন'ই তাকে নির্যাতন করতো।
গত ২৯ নভেম্বর তার সন্তান আর সন্তানের স্ত্রীরা ঘরের দরজা ভেঙ্গে তাকে অমানবিকভাবে মারধর করেন।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে পুলিশের গাড়িতে হামলা, বিএনপির ৪৯ নেতাকর্মী জেলহাজতে
আত্মরক্ষায় নিজের সন্তাদের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার জনের বিরুদ্দে মামলা করেন তিনি।
এ মামলায় দুই ছেলেকে ওয়ারেন্ট করে। আর ছেলেদের স্ত্রীদের বিরুদ্ধে আদালত সমন জারি করে।
সোমবার আসামিরা জামিনের জন্য আসলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার বাদী জিন্নাত নেছা জানান, আমার বড় দুই সন্তান আর তাদের স্ত্রীরা আমাকে প্রায়দিন মারধর করে। আর এদিকে আমার ছোট ছেলে প্রবাসী আবু তাহেরের ঘর দখল করার জন্য আমাকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। আমি ঘর থেকে বের না হওয়াতে, তারা ঘরের দরজা ভেঙ্গে আমাকে ও আমার ছোট ছেলের বউকে মারধর করে।
এসময় তিনি কান্না কন্ঠে জানান, এক জন মা কত কষ্টে সন্তানদের বিরুদ্ধে মামলা করে সেটা শুধু ওই মা'ই জানে। তারা জেলে গেছে এটা যে আমার কত কষ্ট লাগে, সেটা শুধু আমি'ই জানি। আমি বাধ্য হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।
মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. এনামুল হক এনাম জানান, আমি এই অসহায় মায়ের পক্ষ হয়ে মামলা করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আদালত ওয়ারেন্ট জারি করে।
সোমবার তারা জামিনের জন্য আসলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে। যতদিন এই অসহায় মা মামলাটি চালাতে চায়, ততদিন আমি তার পাশে থাকবো।
আরও পড়ুন: সংযোগই পাননি, বিদ্যুৎ বকেয়া বিলের মামলায় জেলহাজতে দিনমজুর মতিন
বাগেরহাটে আ. লীগ নেতা হত্যা মামলায় ১৪ জনের যাবজ্জীবন
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী দিহিদার (৫৩) ও আওয়ামী লীগ কর্মী শুকুর শেখকে (৪২) হত্যার দায়ে ওই ইউনিয়নের বহিষ্কৃত ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ফকিরসহ ১৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে তাদের পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় গলা কেটে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন
সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন-আবুয়াল ফকির, মো. হুমায়ুন হাওলাদার, মিল্টন খান, মো. মফিজ খান, মো. ফারুক, মো. আবুল হোসেন শেখ, মো. মোদাচ্ছের শেখ, সুনীল দাস, বিশ্বনাথ ওরফে বিশ্ব প্রমাণিক, মো. লিয়ন শিকদার, সুব্রত কুমার সাহা ওরফে পল্টু (পলাতক), মেহেদী ওরফে রুবেল ফকির ও মো. মহি মোল্লা।
আদালতে এ মামলার ৫০ জন আসামী উপস্থিত ছিল।
রায় ঘোষণার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিহত আনসার আলী দিহিদারের ছেলে মেহেদী হাসান শাওন।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ফকিরসহ আমার বাবা-মার হত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে আপিল করা হবে।
আমরা এ রায়ে মোটেও সন্তুষ্ট নই।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের স্থানীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদের বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকির ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী দিহিদারের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধের জের ধরে এ ট্রিপল হত্যাকাণ্ড ঘটে।
ওই সময় পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ফকিরের লাইসেন্স করা একটি বিদেশি শটগান, একটি রিভলবার, একটি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটার গান, একটি কুড়াল ও তিনটি গুলি জব্দ করে।
আদালত ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর মোড়েলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ফকিরের নেতৃত্বে তার লোকজন দৈবজ্ঞহাটি বাজার থেকে দুপুর আড়াইটার দিকে যুবলীগ নেতা শুকুর শেখকে সেলিমাবাদ ডিগ্রি কলেজ মাঠে গুলি করে ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে নিয়ে ফেলে রাখে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ডাকাতির সময় হত্যার দায়ে ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী দিহিদারের বাড়িতে আক্রমণ করা হয়। হত্যাকারীদের অবস্থান বুঝে আনসার আলী তার ঘরের পাটাতনে পালান। আসামিরা ঘরের চালার টিন কেটে পাটাতনে প্রবেশ করেন। ওখান থেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে, পিটিয়ে টেনে-হিচড়ে তাকে ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে নিয়ে যান। পরে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে নিয়ে শুকুর শেখ ও আনসার আলী দিহিদারকে বোরকা পরিয়ে নির্যাতন করেন। পরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেন। একাধিক গুলি ও মারধরে ঘটনাস্থলে শুকুর শেখ মারা যান ও বাগেরহাট থেকে খুলনা নেয়ার পথে মারা যান আনসার আলী দিহিদার।
ওইদিন আনসার আলী দিহিদারের স্ত্রী মঞ্জু বেগম ও শ্রমিক নেতা বাবলু শেখকে মারধর করে সন্ত্রাসীরা। মারধরে মঞ্জু বেগমের দুই পা ও বুকের হাড় ভেঙে যায়।
দীর্ঘ ২২ মাস বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২০ সালের ৩০ জুলাই মারা যান মঞ্জু বেগম।
২০১৮ সালে আনসার ও শুকুর মৃত্যুর পর ৪ অক্টোবর রাতে মোড়েলগঞ্জ থানায় নিহত শুকুর শেখের ভাই শেখ ফারুক হোসেন বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা বাদী হয়ে আরও একটি মামলা করেন। ২০১৯ সালের ৪ জুন পুলিশ ৫৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে আসামিদের মধ্যে রয়েছেন-দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকির, ইউপি সদস্য আজিম, আল আমিন, সুনীল, শ্যাম ও মোদাচ্ছের, দৈবজ্ঞহাটি ইউপির গ্রাম পুলিশের সদস্য আবুয়াল হোসেন ফকির, আবুল শেখ ও জুলহাস ডাকুয়া।
এরা সবাই আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকিরের অনুসারী, দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থক।
জানা গেছে, চেয়ারম্যান ফকির শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২৩টি হত্যা মামলাসহ ৭১টি মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ছাত্রাবাসে ছাত্রীকে ধর্ষণ, শিক্ষকের যাবজ্জীবন দণ্ড
খালেদা জিয়া ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে যোগ দিলে আদালত ব্যবস্থা নিবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া যদি ঢাকায় দলের ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে যোগ দেন, তাহলে আদালত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) ঢাকার রাজারবাগ এলাকায় বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের বার্ষিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় মন্ত্রী এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া শর্তসাপেক্ষে কারাগারের বাইরে আছেন এবং তিনি জনসভায় যোগ দিলে আদালত ব্যবস্থা নিবে।’
বিএনপি ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাদের সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে এবং সরকার তাদের সুষ্ঠুভাবে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যদি কোনো ধরনের সহিংসতার সূচনা করে তাহলে সেটা হবে বড় ভুল।’
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচনে খালেদার অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত আইনগতভাবে নেয়া হবে: সিইসি
প্রথমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা মানিক মিয়া এভিনিউতে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিল বিএনপি। তিনি বলেন, মানিক মিয়া এভিনিউ, যেখানে জাতীয় সংসদ অবস্থিত, একটি সীমাবদ্ধ এলাকা হওয়ায় তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠান করার অনুমতি পেয়েছে।
আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, ‘আমরা তাদের বলেছি যে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে কারণ এটি তাদের রাজনৈতিক অধিকার, তবে সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে আর কারাগারে পাঠাবে না সরকার: আইনমন্ত্রী
খালেদা জিয়া ও তারেকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার: শিল্পমন্ত্রী
আদালতে যাওয়ার পথে আসামির মারপিটে সাক্ষী নিহত, আটক ৫
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আদালতে সাক্ষী দিতে যাওয়ার পথে মামলার আসামিদের মারপিটে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের কোদলাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুল খালেক(৬৫) বগুড়া ধুনট উপজেলার কোদলাপাড়া গ্রামের মৃত আজাহার আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন: হাজিগঞ্জে বিএনপির ১০ নেতা-কর্মী আটক
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কোদলাপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষের কাছ থেকে মুষ্ঠির এক মন চাল বাকিতে কিনে নেন আব্দুস সাত্তার। কিন্তু টাকা দিতে তালবাহানা করায় গত ৩ নভেম্বর তার সঙ্গে কোষাধ্যক্ষ মোজাম্মেল হকের মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আব্দুস সাত্তার বাদি হয়ে কোষাধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক ও তার ছেলে ফজলুল হকসহ সাতজনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার সাক্ষী ছিলেন নিহত আব্দুল খালেক।
মামলার বাদী আব্দুস ছাত্তার ও তার ভাই সাক্ষী আব্দুল খালেক মঙ্গলবার সকালে আদালতের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। পথে আসামিদের বাড়ির পাশের রাস্তায় পৌঁছলে তাদের ওপর হামলা চালায় মামলার ১ নম্বর আসামি ফজলুল হক ও তার লোকজন। এতে আহত হন আব্দুস সাত্তার ও আব্দুল খালেক। পরে আব্দুল খালেককে অচেতন অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। নিহত আব্দুল খালেকের লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। সন্ধ্যার পর লাশ দাফন করা হয়।
আরও পড়ুন: ফুলবাড়ীতে সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণা, আটক ৩
চট্টগ্রামে স্বামীকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী আটক