প্রয়াণ দিবস
সেলিম আল দীনের ১৪তম প্রয়াণ দিবস আজ
নাট্যচার্য সেলিম আল দীনের ১৪তম প্রয়াণ দিবস আজ। ২০০৮ সালের এই দিনে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
দিবসটি উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
ফেনীতে ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট জন্ম নেয়া সেলিম আল দীন ১৯৭৪ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৬ সালে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ প্রতিষ্ঠা হলে তিনি এ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ঔপনিবেশিক সাহিত্য ধারার বিরুদ্ধে গিয়ে তিনি নাটকে আবহমান বাংলার গতিশীল ধারা ফিরিয়ে আনেন। বাংলাদেশে গ্রাম থিয়েটারের স্বপ্নদ্রষ্টা এই মহারথী। ঢাকা থিয়েটারের প্রাণপুরুষও তিনি।
আরও পড়ুন: জাবিতে সশরীরে ক্লাস বন্ধ ঘোষণা
সেলিম আল দীন অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ১৯৮৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯৭ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও ২০০৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্যও ছিলেন।
আরও পড়ুন: জাবিতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী উপভোগ করলেন ‘মিশন এক্সট্রিম’
২ বছর আগে
মাস্টারদা সূর্য সেনের ৮৯তম প্রয়াণ দিবস আজ
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনসহ বহুবিধ বিপ্লবের অগ্রনায়ক মাস্টারদা সূর্যসেনের ৮৯তম প্রয়াণ দিবস আজ। ১৯৪৩ সালের ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে মাস্টার দা সূর্যসেন ও তাঁর সহযোগী তারকেশ্বর দস্তিদারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।
এরপর গত ৮০ বছরে এখানে আর কোনো ফাঁসি কার্যকর হয়নি। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য তৈরি হয়েছে নতুন ফাঁসির মঞ্চ। চট্টগ্রামের অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের স্মৃতিবিজড়িত এই ফাঁসির মঞ্চ ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণ করছে কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।
মাস্টারদার পুরো নাম সূর্য কুমার সেন। সংক্ষেপে সূর্যসেন নামে অধিক পরিচিত। তবে মাস্টার দা নামে সহযোদ্ধাদের কাছে পরিচিত ছিলেন। ফাঁসির পর ব্রিটিশ সরকার তার লাশ গুম করে ফেলে।
আরও পড়ুন: ক্যাম্পাসের পোস্টারে সূর্য সেন হলের ‘প্রভোস্ট নিখোঁজ’
সূর্য সেন ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়ার একটি অসচ্ছল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম রাজমনি সেন এবং মাতার নাম শশী বালা সেন। রাজমনি সেনের দুই ছেলে আর চার মেয়ের মধ্যে সূর্য সেন পরিবারের চতুর্থ সন্তান। সূর্য সেন ছেলেবেলা থেকেই খুব মনোযোগী ছাত্র ও গম্ভীর প্রকৃতির ছিলেন।
সূর্য সেনের ফাঁসি দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার সকালে তার নিজ জন্মস্থান রাউজানের নোয়াপাড়ার সূর্যসেন পল্লীতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন নোয়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ স্থানীয় সামাজিক সংগঠন। এছাড়া রাউজান উপজেলা সদরস্থ সূর্যসেন চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
পড়ুন: চট্টগ্রামে গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা: প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
২ বছর আগে
চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ২৭তম প্রয়াণ দিবস আজ
বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ২৭তম প্রয়াণ দিবস আজ। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। জন্মভূমি নড়াইলের কুড়িগ্রামে তাকে শায়িত করা হয়।
শিল্পীর বর্ণিল জীবন
এসএম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ায় বাবা মেছের আলী ও মামাজু বিবির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। দারিদ্রতার মাঝে বেড়ে ওঠা সুলতান ১৯২৮ সালে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েটস্কুলে ভর্তি হন। স্কুলের অবসরে রাজমিস্ত্রি বাবাকে কাজে সহযোগিতা করতেন এবং মাঝে মাঝে ছবি আঁকতেন শিশু সুলতান। ১৯৩৩ সালে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রাবস্থায় জমিদার শ্যামাপ্রাসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবি এঁকে তাকে তাক লাগিয়ে দেন। মুগ্ধ হন শ্যামাপ্রাসাদসহ নড়াইলের তৎকালীন জমিদাররা। পড়ালেখা ছেড়ে ১৯৩৮ সালে চলে যান ভারতের কলকাতায়। চিত্রসমালোচক শাহেদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে সুলতান পরিচয় হয়। অ্যাকাডেমিক যোগ্যতা না থাকাসত্ত্বেও সোহরাওয়ার্দীর সুপারিশে ১৯৪১ সালে কলকাতা আর্ট স্কুলে ভর্তি হন।
আরও পড়ুন: চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের বসতঘরের করুণ দশা
১৯৪৩ মতান্তরে ১৯৪৪ সালে কলকাতা আর্ট স্কুল ত্যাগ করে ঘুরে বেড়ান এখানে-সেখানে। কিছুদিন কাশ্মীরের পাহাড়ে উপজাতিদের সাথে বসবাস এবং তাদের জীবন-জীবিকাভিত্তিক ছবি আঁকেন সুলতান। ১৯৪৫ মতান্তরে ১৯৪৬ সালে ভারতের সিমলায় শিল্পী সুলতানের প্রথম একক চিত্রপ্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের লাহোরেও চিত্রপ্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। চিত্রপ্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর বোন ফাতিমা জিন্নাহ। ১৯৫০ সালে চিত্রশিল্পীদের আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে পাকিস্তান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আমেরিকা যান সুলতান। এরপর ইউরোপে বেশ কয়েকটি একক ও যৌথপ্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেন তিনি। এ সময় বিখ্যাত চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো, সালভেদর দালি, পল ক্লিসহ খ্যাতিমান চিত্রশিল্পীদের ছবির পাশে এসএম সুলতানের ছবি স্থানপায়। ১৯৫৩ সালে নড়াইলে ফিরে আসেন সুলতান। শিশু-কিশোরদের সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি চারুকলা শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। ১৯৬৯ সালের ১০ জুলাই ‘দি ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্ট’ প্রতিষ্ঠা করেন। যশোরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক ইনাম আহম্মদ চৌধুরী এর উদ্বোধন করেন। ১৯৮৭ সালে স্থাপিত হয় ‘শিশুস্বর্গ’। অবশ্য অনেক আগেই স্বপ্নের শিশুস্বর্গ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন এসএম সুলতান।
এদিকে, সুলতান তার সঞ্চিত অর্থ দিয়ে ১৯৯২ সালে ৯ লাখ মতান্তরে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট দ্বিতলা নৌকা (ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ) নির্মাণ করিয়ে ছিলেন। সুলতান তার শিল্পকর্মের মাধ্যমে খেটে খাওয়া মানুষ এবং সংগ্রামী জীবনের কথাই বেশি চিত্রিত করেছেন। রয়েছে পরিবেশবন্ধু বৃক্ষরোপনের ছবিও। চিত্রাঙ্কনের পাশাপাশি বাঁশি এবং সুরযন্ত্র বাজাতেও পটু ছিলেন তিনি। সুলতান বিষধর সাপ, ভল্লুক, বানর, খরগোশ, মদনটাক, ময়না, গিনিপিক, মুনিয়া, ষাঁড়সহ বিভিন্ন পশু-পাখি পুষতেন।
আরও পড়ুন: এসএম সুলতানের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
সুলতান হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি পছন্দ করতেন না বলে জানিয়েছেন সুলতানশিষ্য চিত্রশিল্পী বলদেব অধিকারীসহ ভক্তরা।
পুরস্কার
চিত্রশিল্পের মূল্যায়ন হিসেবে ১৯৮২ সালে ‘একুশে পদক’, ১৯৮৪ সালে ‘রেসিডেন্ট আর্টিস্ট’ ১৯৮৬ সালে ‘বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা’ এবং ১৯৯৩ সালে ‘স্বাধীনতা পদক’ পেয়েছেন। এছাড়াও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ পুরস্কার লাভ করেন।
আরও পড়ুন: নড়াইলে দুই দিনব্যাপী এসএম সুলতান উৎসব শুরু
১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এরপর নড়াইলে প্রিয়জন্মভূমিতে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জানান, এসএম সুলতানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার সকালে সংগ্রহশালা চত্বরে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল এবং শিল্পীর সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের অয়োজন করা হয়েছে।
৩ বছর আগে