কেওক্রাডং
বাংলাদেশে ৩০০০ ফুটের অধিক উচ্চতার ১৪ পাহাড়
নিম্নভূমির দেশ বাংলাদেশে পাহাড়ী অঞ্চল বলতে দক্ষিণ-পূর্বে চট্টগ্রাম পাহাড়, উত্তর-পূর্বে সিলেটের নিম্ন পাহাড় আর উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে কিছু উচ্চভূমি। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পাহাড়গুলোর আশ্রয়স্থল দেশের একমাত্র উল্লেখযোগ্য পার্বত্য প্রণালী চট্টগ্রাম, যেখানে অন্তত ৭৫টি পাহাড় রয়েছে। এগুলোর উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২,০০০ থেকে ৩,৩০০ ফুট পর্যন্ত উচু। দেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এই পর্বতশ্রেণীটি প্রায় ১৩,১৮৪ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত, যা বাংলাদেশের মোট ভূমি এলাকার এক দশমাংশ। এই অঞ্চলের মাটি প্রধানত বাদামী দোআঁশ থেকে বেলেপাথরের হয়। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে অম্ল বিদ্যমান। পাহাড় জীববৈচিত্র্যে এক অপরিপেয় ভান্ডার। আসুন জেনে নেই বাংলাদেশের কোন পাহাড়গুলো ৩০০০ ফুটের অধিক উচ্চতার।
বাংলাদেশে অবস্থিত ৩০০০ ফুটের অধিক ১৪টি পাহাড় চূড়া
কেওক্রাডং চূড়া
৪,০৩৫ ফুট উচু এই আকর্ষণীয় পর্যটন স্থানটি দেশের উত্তর-পূর্বের মিয়ানমারের নিকটবর্তী সীমান্তে অবস্থিত। এটি আসলে বান্দরবান জেলার রেমাক্রি মৌজার থাইখং পাড়ার কাছে অবস্থিত। যদিও এটিকে বাংলাদেশের ৪,০৪০ ফুটের সর্বোচ্চ চূড়া বলে ব্যাপকভাবে রিপোর্ট করা হয়, সাম্প্রতিক এসআরটিএম (শাটল রাডার টপোগ্রাফি মিশন) ডেটা, জিপিএস রিডিং এবং রাশিয়ান টপোগ্রাফিক ম্যাপিং-এ এর প্রকৃত উচ্চতা ধরা পড়ে ৩,৩০০ ফুটের কম।
কেওক্রাডং এর চূড়ায় একটি ছোট আশ্রয়কেন্দ্র এবং বাংলাদেশি সামরিক বাহিনী কর্তৃক ১০,৪০৭ ফুট উচ্চতা ঘোষণা করা একটি সাইনবোর্ড রয়েছে। গারমিন জিপিএস এই অবস্থানে ৩,১৯৬ ফুট রেকর্ড করেছে। পাশাপাশি আরো একটি ভিন্ন দল জিপিএস দিয়ে ৩,২৩৫ ফুট পরিমাপ করেছে। পরের এই দুটি পরিমাপগুলো রাশিয়ান টপোগ্রাফিক ম্যাপিং এবং এসআরটিএম ডেটার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
পড়ুন: ভিমরুলি ভাসমান পেয়ারা বাজার: বাংলার ভেনিস বরিশালের সৌন্দর্য্যে সেরা সংযোজন
সাকা হাফং
বাংলাদেশের এই সর্বোচ্চ শৃঙ্গটির নামকরণ হয়েছে মুলত স্থানীয় ত্রিপুরা উপজাতির গোত্রীয় নাম থেকে। চূড়াটি ৮,৪১২ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত, যার জিপিএস(গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) রিডিং সর্বপ্রথম রেকর্ড করা হয়েছিলো ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইংরেজ অভিযাত্রিক জিঞ্জ ফুলেনের মাধ্যমে। তিনি নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করছিলেন। এটি বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে মৌদক পর্বতশ্রেণীতে অবস্থিত।
এর চারপাশে আছে থানচি, বান্দরবান, বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের চিন রাজ্য। ২০০৭ সালে প্রথম বাংলাদেশি অভিযাত্রিক দল এই পাহাড়ে উঠতে সক্ষম হয়। দলটির নেতৃত্বে ছিলেন ইয়াহিয়া খান এবং পরবর্তীতে এভারেস্ট পর্বতারোহী সজল খালেদ তাদের সঙ্গে যোগ দেন। ২০১১ সালে দুটি প্রবাসী দলের রেকর্ড থেকে সাকা হাফং এর উচ্চতা পাওয়া যায় ৩,৪৮৮ ফুট এবং ৩,৪৬১ ফুট।
২ বছর আগে
কেওক্রাডং চূড়ায় বারবার যেতে চাই: দীঘি
অভিনেত্রী প্রার্থনা ফারদিন দীঘি সাম্প্রতিক সময়ে ব্যস্ততা অনেকটা কমিয়েছেন। তার অন্যতম কারণ পড়াশোনা। সম্প্রতি তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। তাই আপাতত পড়াশোনার দিকে মনযোগী হতে চান এই তারকা।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে দীঘি জানিয়েছেন, তিনি ঘুরতে ভীষণ পছন্দ করেন। দেশের ও দেশের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় ছুটে বেড়ানোর শখ তার। আর পাহাড় খুব পছন্দ এই তারকার। দীঘি বলেন, সুযোগ হলে কেওক্রাডং চূড়ায় বারবার যেতে চাই।
আরও পড়ুন:অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ আর নেই
শিশু শিল্পী হিসেবে দীঘির ক্যারিয়ার শুরু। পরবর্তীতে তাকে চিত্রনায়িকা পরিচয়েও পাওয়া গেছে। তুমি আছো তুমি নেই ও টুঙ্গিপাড়ার মিঞা ভাই সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে অভিষেক হয় দীঘির। 'শেষ চিঠি' শিরোনামে একটি ওয়েবফিল্মে অভিনয় করেন তিনি।
আরও পড়ুন:সেরা অভিনেত্রী হিসেবে কলকাতায় সম্মাননা পেলেন জয়া আহসান
২ বছর আগে
বগালেক, দার্জিলিং পাড়া হয়ে কেওক্রাডং মানেই হারিয়ে যাওয়া রূপকথার রাজ্যে
প্রকৃতিকে দু’চোখ ভরে দেখার পাশাপাশি যদি তাকে জয় করার ব্যাপার যুক্ত হয় তাহলে সেই অভিযাত্রা আরও রোমাঞ্চকর ও দুঃসাহসিক হয়ে যায়। বগালেক থেকে দার্জিলিং পাড়া হয়ে কেওক্রাডং যাত্রাটাও ঠিক তেমনি এক অপার সৌন্দর্য্যকে জয় করার শামিল। বগালেকের পৌরাণিক ড্রাগনের কথা সবারই জানা। আর দার্জিলিং পাড়া পেরোবার সময় বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম হিসেবে এর সুখ্যাতির কারণটা খুব ভালো ভাবেই বোঝা যায়। এরপর কেওক্রাডং-এর দিকে যতই এগোনো হয়, ৩১৭২ ফুট উচ্চতার মাধ্যাকর্ষণ টান ঠিক ততটাই যেন পিছু টেনে ধরে। এই অভিযাত্রার আদ্যোপান্ত নিয়েই এবারের ভ্রমণ ফিচার।
বগালেক, দার্জিলিং পাড়া অতঃপর কেওক্রাডং
বান্দরবানের রামু উপজেলায় প্রথমে বগালেক তারপর দার্জিলিং পাড়া হয়ে যেতে হয় কেওক্রাডং। স্বভাবতই এই ভ্রমণের প্রবেশদ্বার হিসেবে স্থলাভিষিক্ত করা যেতে পারে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উচ্চতার স্বাদু পানির হৃদ বগালেককে। শঙ্খ নদীর তীরে পলিতাইন পর্বতশ্রেণিতে বসবাসরত আদিবাসীদের একটি বম। এই বম’দের ভাষায় বগা বলা হয় ড্রাগনকে। এ নিয়ে দারুণ সব লোককাহিনী শোনা যায়, যেগুলোর কোন প্রমাণ না থাকলেও মৃত আগ্নেয়গিরি জ্বালামুখের মত লেকটির গঠনটা পিলে চমকে দেয়ার মত।
শঙ্খ নদীর তীর ঘেষে সবুজ কেওক্রাডং-এর দানবীয় সৌন্দর্য্যকে দৃষ্টি সীমানায় ধারণ করার সকল প্রচেষ্টা যখন ব্যর্থ হবে তখনি উপত্যকার ছোট অদ্ভূত গ্রামটি দৃষ্টিতে পরম শান্তির পরশ বুলিয়ে দেবে। মেঘের সামিয়ানার নিচে ফুলেল গ্রামটি এই দুর্গম বিশালতায় একদম-ই বেমানান। কেওক্রাডং-এর নিঃসীম দানবীয়তা ভেদ করে যেন হঠাৎ উদয় হয়েছে এক টুকরো দার্জিলিং। এই পরিচ্ছন্ন বসতিটিই পর্বতারোহীদের প্রস্তুত করে দেয় বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ পাহাড় কেওকাডং জয় করার জন্য।
আরও পড়ুন: সাজেক ভ্রমণ: ঘুরে আসুন মেঘে ঢাকা স্বর্গে
ঢাকা থেকে বান্দরবান যাত্রা
ঢাকা থেকে এই তিন জায়গা দেখতে যেতে হলে প্রথমেই চলে আসতে হবে বান্দরবানে। গাবতলি, কলাবাগান অথবা যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ থেকে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে বাস পাওয়া যাবে, যেগুলোর নন-এসিতে ভাড়া নিবে ৬২০ থেকে ৬৮০ টাকা আর এসিতে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা।
বান্দরবানে নেমে প্রথমে রুমা বাস স্ট্যান্ড থেকে বাসে করে রুমা যেতে হবে। ৩ ঘন্টার এই জার্নিতে ভাড়া লাগবে জনপ্রতি ১২০ টাকা করে। এছাড়া চান্দের গাড়ি অথবা জীপ রিজার্ভ নিয়ে সরাসরি রুমা বাজার যাওয়া যায়। এরকম গাড়িতে লোক ধরে সর্বোচ্চ ১৫ জন আর ভাড়া পড়তে পারে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। এভাবে গেলে ২ ঘণ্টাতেই রুমা পৌঁছে যাওয়া যাবে।
পড়ুন: নাজমুন নাহার: পৃথিবীর ১৫০তম দেশ ভ্রমণ করে ইতিহাস সৃষ্টিকারী বাংলাদেশি পরিব্রাজক
৩ বছর আগে