কনস্টেবল পদ
একশ টাকায় পুলিশের চাকরি পেয়ে বিস্মিত কেয়া
কামিনী মোহন সেন ও সুচিত্রা রানী সেন দম্পতির ১০ সন্তান। ১০ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট কেয়া রানী সেন পঞ্চগড় জেলায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন।
ঘুষ ছাড়া চাকরি পাওয়া যায় এটা কখনই তার মাথায় ছিল না। কিন্তু সত্যি সত্যি মাত্র একশ টাকায় পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পেয়ে রীতিমত অবাক হয়েছেন কেয়া।
মেধা ও যোগ্যতায় চাকরি পেয়ে পুলিশ প্রশাসন ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ কেয়া। কেয়ার বাড়ি জেলার বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের বৈরাতি সেনপাড়া গ্রামে।
আরও পড়ুন: ১শ’ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৫০ জন
কেয়া বলেন, টাকার অভাবে পরিবারের কোন ভাই-বোনের চাকরি হয়নি, কিন্তু আমি মাত্র একশ টাকা খরচ করে সরকারি চাকরি পেয়েছি। এতে আমি খুবই আনন্দিত। পরিবারের কেউই বিষয়টি বিশ্বাস করতে চায়নি। কিন্তু ঘুষ ছাড়া চাকরি এই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছে পঞ্চগড়ের পুলিশ প্রশাসন।
পঞ্চগড় পুলিশ লাইনে কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী। মাঠ পর্যায়ে এবং লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে জেলায় মোট ২১ জনকে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। অবশ্য আরও পাঁচজনকে অপেক্ষমাণ হিসেবে রাখা হয়েছে। এরমধ্যে সাধারণ পুরুষ কোটায় ১০ জন, মহিলা কোটায় তিন জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পাচঁ জন, এতিম কোটায় দুই জন ও পুলিশ পোষ্য কোটায় এক জন।
ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে রংপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এসময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী চূড়ান্ত হওয়া প্রার্থীদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং বিভিন্ন দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: নির্যাতিত নারীদের সহায়তায় পুলিশের কিউআরটি
প্রার্থী, অভিভাবক ও প্রতিবেশীরা বলেন, পুলিশে চাকরি মানেই টাকার খেলা’ এই অপবাদ ঘুচেছে। শুধুমাত্র একশ টাকার পে-অর্ডার দিয়েই চাকরি পেয়েছেন ২১ পুলিশ কনস্টেবল।
নিয়োগ প্রাপ্ত কেয়া রানী সেন, রহিমা আক্তার সুমি, উম্মে হাবিবা, জাহাঙ্গীর আলম মুসা, সৌরভ চন্দ্র বর্মন, হযরত আলী বলেন, মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে যে পুলিশে চাকরি পাওয়া যায় তা প্রমাণ হয়েছে। টাকা ছাড়া চাকরি পেয়ে তারা সকলেই উচ্ছসিত ।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, সরকার ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশনায় কোনো রকম তদবির, ঘুষ ছাড়া নিয়োগ কার্য সম্পাদন করা হয়েছে। তদবির আসলেও মানা হয়নি। পুলিশের চাকরিতে টাকা লাগে এ ধারণা আর কখনই সত্য হবে না। এ ব্যবস্থায় জনগণের কাছে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
জানা গেছে, ২১ শূন্য পদের বিপরীতে অনলাইনে আবেদন পড়ে কয়েক হাজার। সেখান থেকে বাছাই করে প্রাথমিকভাবে ৮৪৮ জনকে নির্বাচিত করা হয়। শারীরিক পরীক্ষায় শেষে ২৮৩ জনকে ডাকা হয় লিখিত পরীক্ষার জন্য।লিখিত পরীক্ষা শেষে ৬৩ জন মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
আরও পড়ুন: পুলিশের অপরাধ তদন্তে ‘স্বাধীন কমিশন’ চেয়ে করা রিটের আদেশ রবিবার
৩ বছর আগে