বাংলাদেশের উন্নয়ন
ব্রিকস সম্মেলনে বিদেশি নেতারা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন: মোমেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদারে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের এক ফাঁকে আফ্রিকার ৩ দেশসহ ৪ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা পারস্পরিক স্বার্থে আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করতে চাই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৈঠক সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ‘লুটেরাদের’ ক্ষমতায় আসতে দেবেন না: দ. আফ্রিকায় প্রবাসীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
বুধবার স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে শেখ হাসিনা ও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট ফিলিপে জ্যাকিন্টো নিউসি, তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট ড. সাইমা সুল্লুহু এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
একই স্থানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট দিলমা ভানা রুসেফের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ব্রাজিল সফরের আমন্ত্রণ জানান।
শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন ব্যক্তিগতভাবে দেখার জন্য আবারও বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। কারণ, ৩০ বছর আগে তিনি যখন বাংলাদেশের যশোর সফর করেছিলেন, তখন দেশটি খুবই দরিদ্র ছিল।
তিনি বলেন, ‘আপনি যে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন তা দেখতে আমি বাংলাদেশ সফর করতে চাই।’
আরও পড়ুন: ব্রিকসকে বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতার দায়িত্ব নিতে হবে: জোহানেসবার্গে প্রধানমন্ত্রী
মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট ফিলিপে জ্যাকিন্টো নিউসির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশটির কাছ থেকে বৃহত্তর পরিসরে বিশেষ করে ফার্মাসিউটিক্যালসে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট দিলমা ভানা রুসেফ বাংলাদেশকে বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নের প্রকল্পে সহায়তা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে বলেছেন, বিশ্বব্যাংক ইতোমধ্যে বাংলাদেশে দুটি উন্নয়ন প্রকল্পে ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি যে আমি যতদিন ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট থাকব ততদিন বাংলাদেশ নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কাছ থেকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।’
ব্রিকসের বর্তমান সভাপতি দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ২২ আগস্ট ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে জোহানেসবার্গে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: গ্লোবাল সাউথে পরিবর্তনের প্রতিনিধি হতে হবে মেয়েদের: ব্রিকস মধ্যাহ্নভোজে প্রধানমন্ত্রী
ব্রিকস প্লাস ডায়ালগের এক ফাঁকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো এর আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, উগান্ডার ভাইস প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার উপ-প্রধানমন্ত্রী, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও শেখ হাসিনার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে জোহানেসবার্গে আসা রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে ফটোসেশনেও যোগ দেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার যাত্রায় যোগ দিন: দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যবসায়ীদের প্রধানমন্ত্রী
১ বছর আগে
কোভিড মহামারি সত্ত্বেও বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্ব অর্থনীতিকে চরমভাবে প্রভাবিত করেছে এবং অনেক উন্নত দেশে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি করেছে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২’ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘করোনা মোকাবিলা করে আমরা বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করায় জনগণ এখন দেশের ছোটখাটো সমস্যাও জানতে পারছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জানি যে অনেক উন্নত দেশেও ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি দেখা গেছে, সারা বিশ্বে অনেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে।
আরও পড়ুন: ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২’ তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, অনেক দেশের এই সমস্যাগুলো মিডিয়ায় তুলে ধরা হয়নি, কিন্তু বাংলাদেশে মিডিয়া এটা নিয়ে লিখতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি খাতে ইলেকট্রনিক মিডিয়া খোলার আগে দেশে একটি মাত্র টেলিভিশন ও একটি রেডিও স্টেশন ছিল।
তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি এবং বিপুল সংখ্যক টেলিভিশন ও রেডিও স্টেশনের মাধ্যমে এখন মানুষ ছোটখাটো সমস্যাও জানতে পারে। কিন্তু আরও অনেক দেশ আছে যারা এই ধরনের সমস্যা প্রকাশ করে না।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এখন আমরা আমাদের নিজস্ব সম্পদ থেকে ৯০ শতাংশ অর্থায়নে আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে পারি।’
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার স্বাধীনতার সুফল দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমাদের লক্ষ্য এই স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া এবং আমরা এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নয়জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে 'স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২' তুলে দেন।
এ বছর স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে পুরস্কার পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা (বীর বিক্রম), আব্দুল জলিল, সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, প্রয়াত মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন বিশ্বাস, প্রয়াত সিরাজুল হক সম্মাননা দেয়া হয়।
চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল ইসলাম, স্থাপত্যে প্রয়াত স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেনকে এই পুরস্কার দো হয়।
আরও পড়ুন: চলচ্চিত্রে গণমানুষের আত্মত্যাগ তুলে ধরার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার ৫১৩ মেগাওয়াটে উন্নীত করে দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন কভারেজের আওতায় আনার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া হয়। এছাড়া গবেষণা ও প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটকে (বিডাব্লিউএমআরআই) এই পুরস্কার দেয়া হয়।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের পক্ষ থেকে বিতরণী অনুষ্ঠানে ডা. কনক তার অনুভূতি প্রকাশ করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতিবছর স্বাধীনতা পুরস্কার দিচ্ছে সরকার।
২ বছর আগে