আশ্রয়ণ
গৃহহীনদের আশ্রয়ণ বাড়িতে স্বামী-স্ত্রীর সমান মালিকানা: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকের নিজস্ব বাড়ি, জমি এবং ঠিকানা তিনি নিশ্চিত করতে চান। কারণ তার সরকার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার ভয়েস অব আমেরিকার (ভোয়া) বাংলা বিভাগকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘আমার লক্ষ্য বাংলাদেশে একজনও গৃহহীন থাকবেন না, তা নিশ্চিত করা। ভূমিহীন পরিবারের স্বামী ও স্ত্রীর সমান মালিকানার অধিকার প্রদান করা।’ আশ্রয়ণ প্রকল্পের ধারণা কীভাবে তার কাছে এসেছিল তাও তিনি তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: উন্মুক্ত বর্জ্যের পরিমাণ ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে: মেয়র তাপস
আশ্রয়ণ প্রকল্প-গৃহহীনদের জন্য বাড়ি- একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য ‘শেখ হাসিনা মডেল’ হিসেবে দেখা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি তার প্রতিশ্রুতি পালন করেছেন এবং ১০ লাখ পরিবার বাড়ি পেয়েছে। ‘ আর যদি আমরা গণনা করি তাহলে দেখা যায় প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ স্থায়ী আশ্রয় পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, তারা শুধু গৃহহীনদের বাড়িই দিচ্ছেন না, জনগণকে আয়বর্ধক কাজে যুক্ত হতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণসহ নগদ সহায়তা এবং বাজারে তাদের পণ্য বিক্রির সুযোগও করে দিচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৯৮১ সালে সারাদেশে সফরের মাধ্যমে কিছু জায়গায় মানুষকে বাড়ি পেতে সাহায্য করার কথাও স্মরণ করেন। কিন্তু তিনি দেখলেন যে সে বাড়িগুলো কয়েকদিন পর বিক্রি করে দিয়েছেন তারা।
এরপরেই তিনি কিছু উপায় বের করলেন, যাতে অসহায় মানুষদের তাদের বাড়ি বিক্রি করতে না হয়।
তিনি ১৯৯৭ সালে একটি ঘূর্ণিঝড়ের পরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে সফরে গিয়ে ৭০টি পরিবারকে ঘরবাড়ি ছাড়া অবস্থায় বসবাস করতে দেখার অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন।
তিনি সেসময় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সহায়তায় তাদের জন্য বাড়ি তৈরি করতে উদ্যোগ গ্রহণ করলে আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের জমি নিয়ে এগিয়ে আসেন। ‘আমি বাড়িগুলো ডিজাইন করেছি। শুরুটা এভাবেই হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাড়ির মালিকানা স্বামী এবং স্ত্রী উভয়েরই তা তিনি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, তাদের মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে বা স্বামী স্ত্রীকে ত্যাগ করলে মালিকানা স্ত্রীর কাছে চলে যাবে।
আরও পড়ুন: আর সম্ভব নয়, রোহিঙ্গাদের ফিরে যেতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে সরকারের সমালোচনা করতে পারে: ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে
৭টি সংস্থার সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর পিএমও’র
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পসহ আরও ছয়টি সংস্থার মধ্যে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) ২০২২-২৩ স্বাক্ষর করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং সংস্থার প্রধানরা নিজ নিজ সংস্থার পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
এপিএগুলোতে সাতটি সংস্থা ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য তাদের পারফরম্যান্সের বিষয়ে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সংস্থাগুলো হলো- বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা), জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ), পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্তৃপক্ষ, এনজিও বিষয়ক ব্যুরো এবং আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প।
তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ।
বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি হল সরকারি কর্মচারীর দক্ষতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য একটি ফলাফল-ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে আওয়ামী লীগ সরকার সমস্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে উন্নত পারফরম্যান্স পাওয়ার জন্য এপিএ পদ্ধতি চালু করে।
এ প্রক্রিয়ায় সমস্ত অধস্তন বিভাগ, সংস্থা বা দপ্তরগুলোও তাদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা উচ্চতর দপ্তরের সঙ্গে এপিএ স্বাক্ষর করে।
আরও পড়ুন: লংকাবাংলা ফাইন্যান্স ও ‘নগদ’ এর মধ্যে চুক্তি সই
চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ অঞ্চলের নৌপথ খনন ও টার্মিনাল নির্মাণে চুক্তি
২ বছর আগে
আশ্রয়ণ-২: ঈদের আগে ঘর পাবে ৩২ হাজার ৯০৪ পরিবার
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে সারাদেশে ৩২ হাজার ৯০৪টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ঘর বিতরণের উদ্বোধন করবেন।
রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী ফরিদপুর জেলার নগরকান্দার কৈচাইল ইউনিয়ন, বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচোন্না ইউনিয়ন, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়ন এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।
সূত্র জানায়, ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বাড়ি দেয়ার জন্য সরকারের নেয়া উদ্যোগের একটি অংশ হবে এটি। কারণ প্রধানমন্ত্রী বার বার জোর দিয়ে বলেছেন, দেশে কেউ ঘর ছাড়া থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যৈষ্ঠ সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, প্রতিটি ইউনিটে থাকবে দুটি ঘর, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট এবং একটি বারান্দা। ভ্যাট ও ট্যাক্স ছাড়াই যার মূল্য দুই লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা।
তিনি বলেন, ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ এর পরিমাণ তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ঘর পাচ্ছে রাজশাহীর ১১৪৯ পরিবার
তিনি আরও বলেন, ঘরের পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারকে দুই শতাংশ জমির মালিকানার দলিলও দেয়া হবে।
সরকার প্রথম ধাপে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৬৩ হাজার ৯৯৯টি ঘর দিয়েছে এবং ২০২১ সালের ২০ জুন ৫৩ হাজার ৩৩০টি ঘর দিয়েছে। এছাড়া তৃতীয় ধাপে ৬৫ হাজার ৬৭৪টি ঘর নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, দ্বীপাঞ্চলের জন্য বিশেষ নকশা করা ঘরের সংখ্যা হল এক হাজার ২৪২টি। এছাড়া চরের জমিতে থাকা গৃহহীন পরিবারগুলোকে বহনযোগ্য ঘর দেয়া হয়। যাতে করে তারা ভূমিধসের সময় তাদের বাড়ি স্থানান্তর করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর জ্যৈষ্ঠ সচিব বলেন, সারাদেশে অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার করা খাসজমির পরিমাণ পাঁচ হাজার ৫১২ দশমিক চার একর, যার আনুমানিক মূল্য দুই হাজার ৯৬৭ দশমিক ৯ কোটি টাকা। আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য সরকার এখন পর্যন্ত ১৬৮ দশমিক ৩২ একর জমি কিনেছে, যার মূল্য ১১৫ দশমিক ৩৩ কোটি টাকা।
তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া জানান, দেশে ভূমি ও গৃহহীন পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনে ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্প নেয়া হয়। এর আওতায় ১৯৯৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাঁচ লাখ সাত হাজার ২৪৪টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কেউ গৃহহীন থাকবে না- তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দরিদ্র পরিবারগুলোকে বাড়ি ও জমি দেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: মুজিববর্ষ: ঠাকুরগাঁওয়ে জমি-নতুন ঘর পাচ্ছেন ২৬১২ ভূমিহীন
একসঙ্গে এত মানুষকে বিনামূল্যে বাড়িঘর দেয়ার ঘটনা পৃথিবীতে নজিরবিহীন বলেও মন্তব্য করেন তোফাজ্জল হোসেন মিয়া
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এত গৃহহীন পরিবারকে ঘর উপহার দিয়ে বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেন, দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, তাই গৃহহীন মানুষদের আবাসনের অধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তহবিল বরাদ্দ অব্যাহত রাখবে সরকার।
আশ্রয়ণ প্রকল্পকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করে মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া বলেন, ‘এতে একজন মানুষের জীবনযাত্রার মান আমূল উন্নত হয় (স্থায়ী বাড়ি পাওয়ার পর)। এটি আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) আটটি লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।’
২ বছর আগে
আশ্রয়ণ-২: ৫৯ বেদে পরিবারের স্থায়ী ঘর নিয়ে নতুন জীবনের স্বপ্ন
‘আমরা যদি স্থায়ী আশ্রয় পাই, আমরা আমাদের দুই ছেলেকে স্কুলে পাঠাব’- কথাটি বলছিলেন বেদে নারী রঙ্গিলা।
বেদে হলো যাযাবরের মতো একটি নৃ-তাত্ত্বিক সম্প্রদায়। দেশের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত এবং প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি এই বেদেরা।
রঙ্গিলা দুই ছেলের মা- আকাশ (৫) ও রবিউল(৩)। তার স্বামী আলাউদ্দিন বানর ও সাপের খেলা দেখায়।
চার সদস্যের এই বেদে পরিবারটি বর্তমানে অন্যান্য বেদে পরিবারের মতো ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বড়বাজার ইউনিয়নের বাদেদিহি গ্রামে একটি ‘ঝুপড়ি ঘরে’ (বেদেদের ছোট ও অস্থায়ী ঐতিহ্যবাহী ঘর) বাস করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে উপহার হিসেবে তার পরিবার দুই ডেসিমেল জমিসহ একটি স্থায়ী বাড়ি পেতে যাচ্ছে বলে জানান রঙ্গিলা।
তার পরিবারের মতো মোট ৫৯টি বেদে পরিবার কালীগঞ্জের বড়বাজার ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মাজদিয়া বাওড় সংলগ্ন আশ্রয়ণ প্রকল্পে বাড়ি পেতে যাচ্ছে।
এর মধ্যে ৩১টি পরিবার বাদেডিহি গ্রামের এবং ২৮টি পরিবার কালীগঞ্জ পৌরসভার অন্তর্গত কাশিপুর গ্রামের।
আরও পড়ুন: আশ্রয়ণ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে টেকসই ঘর পাবে প্রায় ৬৫,৪৭৪ পরিবার
২ বছর আগে