জনদুর্ভোগ
নতুন কোনো মেগা প্রকল্পের পরিকল্পনা নেই: কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আপাতত নতুন কোনো মেগা প্রকল্প নেয়ার পরিকল্পনা নেই।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বর্তমানে নতুন কোনো মেগা প্রকল্প নেয়ার পরিকল্পনা নেই।’
রবিবার গাজীপুরের টঙ্গীতে বাংলাদেশ র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের আওতায় ফ্লাইওভারের দুই লেন উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিআরটি প্রকল্পের কারণে জনদুর্ভোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে এবং অচিরেই জটিলতার অবসান হবে।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে নিয়ে বিপদে আছে দেশের মানুষ: ওবায়দুল কাদের
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি কোনো মেগা প্রকল্প হাতে নেয়নি এবং তাদের আমলে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। কারা ক্ষমতায় যাবে আর কারা সেফ এক্সিট নেবে তা জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’
২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য তিনি বিএনপিকেও আহ্বান জানান।
এসময় ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
তিনি বলেন, ‘ফ্লাইওভারের ঢাকামুখী দুটি লেন চালু হলে গাজীপুরসহ ৩৭টি জেলার মানুষ উপকৃত হবে বলে।’
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) আলমগীর হোসেন বলেন, যানজট কমবে এবং ঢাকাগামী যাত্রীরা সহজেই ফ্লাইওভার ব্যবহার করে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারবেন।
বিআরটি সূত্র থেকে জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এটি হবে গাজীপুর, টঙ্গী ও উত্তরা এলাকায় প্রথম পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থা।
বিআরটির ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার প্রকল্পের আওতায় চার দশমিক ৫ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ছয়টি এলিভেটেড স্টেশন, দশ লেনের টঙ্গী সেতু নির্মাণাধীন রয়েছে, যার ব্যয় চার হাজার ২৬৮ দশমিক ৩২ কোটি টাকা।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান, গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার নজরুল ইসলাম ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচারে লিপ্ত: ওবায়দুল কাদের
দেশের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপি বড় অন্তরায়: ওবায়দুল কাদের
২ বছর আগে
সুনামগঞ্জে কমছে বন্যার পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ
সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। আশ্রয়কেন্দ্রের লোকজন বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় আছে। এই অঞ্চলে গত দু’দিন ধরে আকাশে কিছুটা রোদের দেখা মিলছে। এতে করে বন্যার্তদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। এভাবে আরও কয়েকদিন বর্ষণ না হলে সুনামগঞ্জ বন্যা মুক্ত হবে। কিন্তু পানি নামলেও দুর্গন্ধ ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
কয়েকটি উপজেলায় পানি নামলেও জগন্নাথপুর, দিরাই ও শাল্লায় পানি কিছুটা বাড়ছে। সেখানে বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি রেখেছে প্রশাসন।
দুর্গত এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বাড়িঘর থেকে পানি সরছে। পানি না থাকায় সড়কেও চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে নিম্ন এলাকায় গ্রামগুলো পানিবন্দী হয়ে আছে। পানি নামলেও দুর্গন্ধ ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রায় ১২শত ৫০টি পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার ক্ষতির দাবি করছে খামারিরা। অনেকেই ব্যাংকের ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করেছিলেন। সব হারিয়ে তারা এখন দিশেহারা।
আরও পড়ুন: অসময়ের বন্যা থেকে ফসল রক্ষায় নতুন প্রকল্প আসছে: পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) জানিয়েছে, রাস্তাঘাটের প্রায় ৪০০ কিলোমিটার ক্ষতি হয়েছে। টাকার অংকে মোট দেড়শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জেলা প্রশাসক জানায়, এলাকার প্রায় ১১শ’হেক্টর বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে স্থানীয় কৃষকরা ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি বলছেন। অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষতি হয়েছে অনেক। শত শত ঘরবাড়ি বিনষ্ট হয়েছে।
আলীপুর গ্রামের মাছ চাষি সিরাজ মিয়া ব্যাংক থেকে ঋণ ও ধারদেনা করে পাঁচটি পুকুরে ৫০ লাখ টাকার মাছ ছেড়েছেন। বন্যার পানিতে সব মাছ ভেসে গেছে। এখন তিনি চোখে অন্ধকার দেখছেন।
আরও পড়ুন: ত্রাণ নিয়ে হাহাকার
রহিমা খাতুন বলেন, বন্যায় আমার ঘর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এখন আমি বাবার বাড়িতে আছি। স্বামী অসুস্থ। কীভাবে ঘর মেরামত করি সেই চিন্তাই আছি।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সোমবার সকাল ৯টার দিকে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার। এখানে বিপদসীমা ৭ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ১১ মিলিমিটার।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যাকবলিত মানুষের সহায়তায় ১৬৫ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে ১২ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: তলিয়ে যাওয়া ফসল নিয়ে হাওরের কৃষকের হাহাকার
সুনামঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পানি কমতে শুরু করেছে, স্বস্তি মিলছে দুর্গতদের। বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত আছে। বন্যা পরবর্তী ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হবে। এবং ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি তালিকা করে সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।
২ বছর আগে