আন্দোলন
শাবিতে ভিসির পদত্যাগ আন্দোলন: রক্তিম হস্তছাপ অঙ্কন
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং ১৬ জানুয়ারি পুলিশি হামলার স্থানে রক্তিম হস্তছাপ অঙ্কন করে।বৃহস্পতিবার আন্দোলনের নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেল সাড়ে ৪টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান ঘুরে ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি শিক্ষা ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা গত ১৬ জানুয়ারি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, আন্দোলন-অনশনের সময়ের বিভিন্ন ছবি, প্ল্যাকার্ড এবং পোস্টার নিয়ে অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে আইআইসিটি ভবনের সামনে ১৬ জানুয়ারি পুলিশের সঙ্গে যেখানে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছিল, সেই স্থানে শিক্ষার্থীরা রক্তিম হস্তছাপ অঙ্কন করে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে আসছেন শিক্ষামন্ত্রীআন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদিন বলেন, ‘আমাদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি, আমাদের দাবিগুলো এখনও পূরণ হয়নি। তাই দাবি আদায়ের জন্য আমরা মিছিল করেছি। মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে ১৬ জানুয়ারি ক্যাম্পাসের আইআইসিটি ভবনের সম্মুখের যে স্থানে ভিসির নির্দেশে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ লাঠি, শটগান, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছিল সেখানে সমস্ত অন্যায্যতা-নিপীড়ন-জুলুমের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের যে চিরন্তন লড়াই তার ইশতেহার হিসেবে রক্তিম হস্তছাপ আঁকা হয়েছে।
এদিকে বন্ধ থাকা আড়াই শতাধিক মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট খুলে দেয়া ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দেয়া দুটি মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।প্রসঙ্গত, গত ১৬ জানুয়ারি প্রভোস্ট বিরোধী আন্দোলনের সময় অবরুদ্ধ ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে মুক্ত করতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে, এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। হামলার পরপরই প্রভোস্ট বিরোধী আন্দোলন ভিসি বিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়, পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক এবং প্রক্টর বডিরও পদত্যাগ দাবি করেন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা ১৯ জানুয়ারি থেকে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে অনশন শুরু করে এবং ১৬৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর ২৬ জানুয়ারি অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান এবং সব দাবি মেনে নেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির প্রথম নারী ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিনা পারভীন
শাবিপ্রবি: আন্দোলনরতদের দেখতে ক্যাম্পাসে এমপি
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দেখতে গেলেন সিলেট-২ আসনের (ওসমানীনগর-বিশ্বনাথ) সংসদ সদস্য ও গণফোরামের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দেখতে যান। সেখানে তিনি আধাঘণ্টা অবস্থান করেন। এসময় এমপি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে শিক্ষার্থীদের কথা বলিয়ে দেন।এসময় তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বক্তব্য অনুযায়ী তাদের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। এখানে কোনো ধরনের রাজনীতি নেই। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে এগিয়ে আসেন সব সমস্যা সমাধানে। তিনি চাইলেই এই সমস্যা সমাধান করতে পারেন।’শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধানে এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ওপর ‘পুলিশি হামলা’র প্রতিবাদে রাবি শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি
শাবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ঢাকা থেকে সিলেট অভিমুখে লংমার্চ
শাবিপ্রবি ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বরিশালে মশাল মিছিল
শাবিপ্রবি আন্দোলনে ‘টাকা পাঠানো’য় আটকদের নিয়ে সিলেটের পথে সিআইডি
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আন্দোলনে ‘টাকা পাঠানোর’ অভিযোগে আটক সাবেক দুই শিক্ষার্থীকে সিলেটে নিয়ে আসছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর উত্তরা থেকে তাদের আটক করার পর সিআইডির একটি টিম তাদেরকে নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আটকরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেকচার বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রেজা নূর মঈন ও সিএসই বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি: আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অর্থ সংগ্রহের ৬ অ্যাকাউন্ট বন্ধ
উপচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে যেহেতু সিলেটে আন্দোলন হচ্ছে, তাই আটকদের বিরুদ্ধে সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় মামলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানায়।এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার আশরাফ উল্যাহ তাহের জানান, শাবিপ্রবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের টাকা পাঠানোর অভিযোগে সিআইডি’র একটি টিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুজন শিক্ষার্থীকে আটক করেছে বলে শুনেছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আটকদের সিলেটে নিয়ে আসছে সিআইডি’র একটি দল। এর বাইরে এই মুহুর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না।তবে বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান।
তিনি বলেন, শাবিপ্রবির দুজন শিক্ষার্থীকে সিলেটে নিয়ে আসছে সিআইডি পুলিশের একটি দল। এমন খবর নিশ্চিত হওয়ার জন্য অনেকেই ফোন করে জানতে চেয়েছেন। তবে বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ঢাকা থেকে সিলেট অভিমুখে লংমার্চ
ভিসির বাসায় খাবার নিতে বাধা, শাবিপ্রবিতে অনশন অব্যাহত
শাবিপ্রবি: আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অর্থ সংগ্রহের ৬ অ্যাকাউন্ট বন্ধ
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের আর্থিক লেনদেনের ছয়টি অ্যাকাউন্ট বন্ধের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, শাবিপ্রবির যেকোনো কর্মসূচিতে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা যৌথ উদ্যোগে তহবিল গঠন করে থাকেন। এ আন্দোলনেও সেভাবেই অর্থ সংগ্রহ চলছিল।
তবে সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে এসব নম্বরে আর কোনো লেনদেন করা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন
রকেট, নগদ, বিকাশ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ মোট ছয়টি অ্যাকাউন্ট থেকে তারা কোনো লেনদেন করতে পারছেন না।
শিক্ষার্থীদের মেডিকেল সাপোর্ট বন্ধ
এদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মেডিকেল সাপোর্টও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে যে মেডিকেল টিম উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছিলেন, তারাও সেবা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
আন্দোলনকারীদের এক মুখপাত্র আরিফুল ইসলাম চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলেন, 'অনশনরত শিক্ষার্থীদের সবার অবস্থার অবনতি হচ্ছে এবং তারা ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। তারা সবাই খিঁচুনি, ব্লাডে অক্সিজেন ও সুগার লেভেল কমে যাওয়া, ব্লাড প্রেশারসহ নানা শারীরিক জটিলতায় পড়ছেন। তারা অর্গান ড্যামেজের ঝুঁকিতে আছেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে ঢাবিতে সমাবেশ
ভিসির বাসায় খাবার নিতে বাধা, শাবিপ্রবিতে অনশন অব্যাহত
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সোমবার প্রক্টরের নেতৃত্বে একটি দলকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসায় খাবার নিয়ে যেতে বাধা দেয়। তারা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনশন অব্যাহত রেখেছে।
সন্ধ্যায় প্রক্টর আলমগীর কবির প্রথমে শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙতে অস্বীকার করে এবং তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।
জানা যায়, উপাচার্যের জন্য খাবার নিয়ে শিক্ষার্থীদের মানব শেকল ভেদ করে বাসভবনে প্রবেশ করতে যায় প্রক্টরিয়াল টিম। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে প্রবেশ করতে পারেননি। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মানব শেকলের ভেতর শুয়ে পড়তে দেখা যায়।
শাবিপ্রবি প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. আলমগীর কবীর গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, শিক্ষক ডরমেটরির ভেতর বেশ কিছু শিক্ষক আটকা পড়ে আছেন। এদের মধ্যে একজন শিক্ষক অসুস্থ। এছাড়া উপাচার্যের হার্টের সমস্যা, তার ওষুধও ফুরিয়ে গেছে। যদি ভেতরে যাওয়ার সুযোগ হতো তবে ওষুধের ব্যবস্থা করা যেতো। এখন আর এই সুযোগ নেই।
এদিকে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় সিলেট সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইলিয়াসুর রহমান ইলিয়াস ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোখলেসুর রহমান কামরান উপাচার্যের জন্য খাবার এনে গেট থেকে ফিরে যান।
আরও পড়ুন: জাবি ছাত্রীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য: ক্ষমা চাইলেন শাবিপ্রবি উপাচার্য
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ঢাবিতে সমাবেশ
আন্দোলন সফলে কার্যকরী ভূমিকা থাকবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির: রবিন
আসন্ন আন্দোলন সফলে কার্যকরী ভূমিকা রাখার মতো করেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপিকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৬০ থেকে ৬৫টি ওয়ার্ডের কর্মী সভাও হয়ে গেছে।
সম্প্রতি ইউএনবিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর আহমেদ রবিন এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো-
ইউএনবি: দীর্ঘদিন পর হওয়া মহানগরের কমিটির বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?
রবিন: এটা অত্যন্ত ইতিবাচক। ২০১৮ সালের বা এর আগের কমিটি দীর্ঘ মেয়াদে ছিল। এর ফলে বিভিন্ন থানায় ১৫ বছর, ২০ বছর একটি কমিটি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। যেসব কমিটি ছিল তাও রি-শাফল করা হয়নি। কিন্তু এখন সংগঠন চলমান হচ্ছে, গতিশীল হচ্ছে। যা ভালো একটা উদ্যোগ। যদি এইভাবে কমিটিগুলো চলমান থাকে। প্রতি দুই বছর পরপর নতুন একটি কমিটি আসার কথা। দুই বছরে না হোক আড়াই বছরে- তিন বছরের মাথায় যদি কমিটি রি-শাফল হয়, তাহলে নতুন নেতৃত্ব আসবে। ফলে যে গ্যাপটা তৈরি হয়েছে, তা দূর হতে বেশি সময় লাগবে না।
আরও পড়ুন: সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র: রুমিন ফারহানা
বর্তমান কমিটির দ্রুতগতির কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, একের পর এক কর্মী সভা হচ্ছে। মহানগর দক্ষিণের ৭৫টি ওয়ার্ড; ইতোমধ্যে ৬০ থেকে ৬৫টি ওয়ার্ডের কর্মী সভা হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তাবিত আটটি সাংগঠনিক টিমকে প্রস্তাব করতে বলা হয়েছে। এই আটটি টিমের কাজও ইতিবাচক গতিতে এগিয়েছে।
ইউএনবি:এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ঢাকার আন্দোলন কার্যকর করতে না পারার কারণ কী?
রবিন:এই প্রশ্নের উত্তর অনেক দীর্ঘ। বিবেচনার অনেক বিষয় আছে। আন্দোলন একেবারে হয়নি এটা সঠিক না। অন্যান্য জেলা শহরের তুলনায় দেখতে হবে ঢাকাতে কত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করেছে, গুম-খুন তো কোনো কিছুই বাকি রাখেনি তারা। নেতাকর্মীদের পরিবারের মধ্যে একটা ভীতি তৈরি করেছিল। আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে ভীতি তৈরি করেছিল সরকার। দলের সঙ্গে যারা জড়িত তাকে না পেয়ে তার বাবা-মা-বোনকে ধরে নিয়ে গেছে। দূর সম্পর্কের আত্মীয়দের পর্যন্ত ধরে নিয়ে গেছে। ভীতির বিষয়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। অনেককে গুম করেছে, এর তো কোনো হিসাব হয় নাই। ব্যাপক ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। এরপরেও এখানে আন্দোলন হয়েছে। মূলত পুলিশের বন্দুকের গুলির বিপরীতে নিরস্ত্রভাবে সফল হওয়া সম্ভব হয়নি। আর ঐতিহাসিকভাবে একটা বিষয় স্বীকৃত যে, সফলতা না এলে ব্যর্থদের ওপরে যা চাপানো হয় তা মেনে নিতে হয়।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনে সরকারের পদক্ষেপ আরেকটি ‘উপহাস’: বিএনপি
ইউএনবি: চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে পাঠানোর দাবিতে বিএনপির এখন পর্যন্ত আন্দোলন কি যথেষ্ট মনে করেন?
তানভীর: এই আন্দোলন চলমান। সফল হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। আর এতদিনে এই আন্দোলন সফলও হতো। কিন্তু ম্যাডামের নির্দেশনার কারণেই তা এখন পর্যন্ত হয়নি। ম্যাডামকে যখন অবৈধভাবে সাজা দেয়া হলো, ম্যাডামের নির্দেশনা ছিল, আন্দোলন করতে গিয়ে যেন দেশের সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। অনেকে বলে, আমরা ম্যাডামের জন্য কিছুই করতে পারিনি। কথাটি ঠিক নয়। আমরা ম্যাডামের আদেশ পালন করেছি।
তিনি আরও বলেন, ম্যাডাম হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে কর্মসূচি হয়েছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছি, যাতে আওয়ামী লীগ আমাদের ওপর দোষারোপ করতে না পারে। অতীতে আপনারা দেখেছেন পঙ্কজ আওয়ামী লীগের এমপি, উনারা নিজের বাসে আগুন দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারাই প্রকাশ করেছে। আমরা চাইনি আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আওয়ামী লীগ ভুল ব্যাখ্যা করুক। এ সুযোগটা এবার আওয়ামী লীগ পায়নি। আমরা সরকারকে চাপে রেখেছি। সারা বাংলাদেশে কর্মসূচি হচ্ছে।
রবিন বলেন, একদিকে ম্যাডাম অসুস্থ, আমাদের দলীয় কার্যক্রম ও দলকে সুসংগঠিত করা, দলকে গতিশীল করার কাজ কিন্তু থেমে নেই। আমাদের নেতা তারেক রহমান নিরলসভাবে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদেরকে নির্দেশনা দিচ্ছেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন। উনি কিন্তু আমাদেরকে রেডি করছেন। আমরা কিন্তু রেডি আছি। আমাদেরকে নির্দেশনা দিলে সরকার পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
আরও পড়ুন: বিদেশে লবিস্ট নিয়োগের অভিযোগ প্রত্যাখান বিএনপির
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়ালি বসতে চান শাবিপ্রবির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কথা বলতে চান সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষামন্ত্রীর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে শনিবার রাতে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে এই বিষয়টি গণমাধ্যমে জানানো হয়।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাই। এক্ষেত্রে অনলাইনে প্ল্যাটফর্মে আমরা বসতে চাই। এছাড়াও শিক্ষামন্ত্রী সরাসরি সিলেট না আসলেও মন্ত্রীর প্রতিনিধি আসলে তাদের সঙ্গে বসতে রাজী আছি।
এ সময় তাদের পক্ষ থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে অনড় থাকার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি: অনশনের চতুর্থ দিনে ১৬ শিক্ষার্থী হাসপাতালে, বাকিরাও অসুস্থ
টানা দশ দিনের আন্দোলনে শনিবার উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মৌন মিছিল কর্মসূচি পালন করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও রাত ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর এলাকায় মোমবাতি প্রজ্জলন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: অনশনরত অবস্থাতেও আলোচনায় বসতে পারেন শিক্ষার্থীরা: শিক্ষামন্ত্রী
অনশনরত অবস্থাতেও আলোচনায় বসতে পারেন শিক্ষার্থীরা: শিক্ষামন্ত্রী
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা অনশন থেকে সরে এসে আলোচনায় বসুক। তারা চাইলে অনশনরত অবস্থাতেও আলোচনায় বসতে পারেন। আলোচনাই একমাত্র সমস্যা সমাধানের উপায়।’
শাবিপ্রবির চলমান সংকট নিরসনে শনিবার সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রীর বাসভবনে শাবিপ্রবির শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের জন্য সবসময় দ্বার খোলা রয়েছে। তারা যখন চাইবেন তখন ই আলোচনা হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে পারিবারিক কাজের কারণে যেতে পারছি না। তবে প্রয়োজন হলে আমাদের প্রতিনিধি দল সেখানে যেতে পারেন।’
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে কাফনের কাপড় পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মৌন মিছিল
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অনশনরত শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যখনই বসতে চায় তখনই যাবে প্রতিনিধি দল।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছেন সেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক প্রতিনিধি দলের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে আমি কথা বলেছিলাম। তখন বলেছি আলোচনার মাধ্যমে সব সমাধান করা যায়। তারা বললো আমরা আজকেই আসতে চাই। আমরা এক ঘণ্টার মধ্যে জানাচ্ছি কারা কারা আসছি। কিন্তু তারা জানিয়েছে অনশনরত বন্ধুদের রেখে তারা আসতে চায় না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘শাবিতে পুলিশি আচরণ (অ্যাকশন) দুঃখজনক। কিন্তু শিক্ষকদেরও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। দুটোই অনভিপ্রেত।’
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি: অনশনের চতুর্থ দিনে ১৬ শিক্ষার্থী হাসপাতালে, বাকিরাও অসুস্থ
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ ও শাবিপ্রবির শিক্ষক সমিতির সভাপতি তুলসী সাহার নেতৃত্বে পাঁচ শিক্ষক এসময় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের নেতারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের দশম দিনেও অনশন চালিয়ে যাচ্ছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।
শাবিপ্রবিতে কাফনের কাপড় পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মৌন মিছিল
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মৌন মিছিল করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শনিবার আন্দোলনের দশম দিনে বেলা ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এই মৌন মিছিল কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মৌন মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে শুরু হয়ে চেতনা ৭১ প্রদক্ষিণ করে গোলচত্বরে এসে শেষ হয়। মৌন মিছিলে প্রতীকী লাশ হিসেবে এক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি: অনশনের চতুর্থ দিনে ১৬ শিক্ষার্থী হাসপাতালে, বাকিরাও অসুস্থ
শাবিপ্রবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত ২০০ থেকে ৩০০ শিক্ষার্থীকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে জালালাবাদ থানায় পুলিশ একটি মামলা করেছে। মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশকে দায়িত্বরত অবস্থায় বাধা দেয়া, ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণ ও পুলিশকে হত্যার উদ্দেশে মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জালালাবাদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল হান্নান পুলিশের পক্ষ থেকে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটে। গত রবিবার বেলা সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশকে দায়িত্বরত অবস্থায় শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়।
আরও পড়ুন: উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের খোলা চিঠি
এজাহারে আরও বলা হয়, ২০০ থেকে ৩০০ উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী হঠাৎ কর্তব্যরত পুলিশের কাজে বাধা দিয়ে পুলিশের ওপর চড়াও হন। কর্তব্যরত পুলিশের সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র ধরে টানাটানি করে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। তাঁরা বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করাসহ পুলিশকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছুঁড়ে। পুলিশের ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর পুলিশ ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ৩১টি শটগানের গুলি এবং ২১টি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু খালেদ মামুন মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য থানার এসআই মো. আসাদুজ্জামানকে দায়িত্ব দিয়েছেন।