আসন্ন আন্দোলন সফলে কার্যকরী ভূমিকা রাখার মতো করেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপিকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৬০ থেকে ৬৫টি ওয়ার্ডের কর্মী সভাও হয়ে গেছে।
সম্প্রতি ইউএনবিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর আহমেদ রবিন এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো-
ইউএনবি: দীর্ঘদিন পর হওয়া মহানগরের কমিটির বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?
রবিন: এটা অত্যন্ত ইতিবাচক। ২০১৮ সালের বা এর আগের কমিটি দীর্ঘ মেয়াদে ছিল। এর ফলে বিভিন্ন থানায় ১৫ বছর, ২০ বছর একটি কমিটি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। যেসব কমিটি ছিল তাও রি-শাফল করা হয়নি। কিন্তু এখন সংগঠন চলমান হচ্ছে, গতিশীল হচ্ছে। যা ভালো একটা উদ্যোগ। যদি এইভাবে কমিটিগুলো চলমান থাকে। প্রতি দুই বছর পরপর নতুন একটি কমিটি আসার কথা। দুই বছরে না হোক আড়াই বছরে- তিন বছরের মাথায় যদি কমিটি রি-শাফল হয়, তাহলে নতুন নেতৃত্ব আসবে। ফলে যে গ্যাপটা তৈরি হয়েছে, তা দূর হতে বেশি সময় লাগবে না।
আরও পড়ুন: সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র: রুমিন ফারহানা
বর্তমান কমিটির দ্রুতগতির কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, একের পর এক কর্মী সভা হচ্ছে। মহানগর দক্ষিণের ৭৫টি ওয়ার্ড; ইতোমধ্যে ৬০ থেকে ৬৫টি ওয়ার্ডের কর্মী সভা হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তাবিত আটটি সাংগঠনিক টিমকে প্রস্তাব করতে বলা হয়েছে। এই আটটি টিমের কাজও ইতিবাচক গতিতে এগিয়েছে।
ইউএনবি:এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ঢাকার আন্দোলন কার্যকর করতে না পারার কারণ কী?
রবিন:এই প্রশ্নের উত্তর অনেক দীর্ঘ। বিবেচনার অনেক বিষয় আছে। আন্দোলন একেবারে হয়নি এটা সঠিক না। অন্যান্য জেলা শহরের তুলনায় দেখতে হবে ঢাকাতে কত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করেছে, গুম-খুন তো কোনো কিছুই বাকি রাখেনি তারা। নেতাকর্মীদের পরিবারের মধ্যে একটা ভীতি তৈরি করেছিল। আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে ভীতি তৈরি করেছিল সরকার। দলের সঙ্গে যারা জড়িত তাকে না পেয়ে তার বাবা-মা-বোনকে ধরে নিয়ে গেছে। দূর সম্পর্কের আত্মীয়দের পর্যন্ত ধরে নিয়ে গেছে। ভীতির বিষয়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। অনেককে গুম করেছে, এর তো কোনো হিসাব হয় নাই। ব্যাপক ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। এরপরেও এখানে আন্দোলন হয়েছে। মূলত পুলিশের বন্দুকের গুলির বিপরীতে নিরস্ত্রভাবে সফল হওয়া সম্ভব হয়নি। আর ঐতিহাসিকভাবে একটা বিষয় স্বীকৃত যে, সফলতা না এলে ব্যর্থদের ওপরে যা চাপানো হয় তা মেনে নিতে হয়।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনে সরকারের পদক্ষেপ আরেকটি ‘উপহাস’: বিএনপি
ইউএনবি: চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে পাঠানোর দাবিতে বিএনপির এখন পর্যন্ত আন্দোলন কি যথেষ্ট মনে করেন?
তানভীর: এই আন্দোলন চলমান। সফল হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। আর এতদিনে এই আন্দোলন সফলও হতো। কিন্তু ম্যাডামের নির্দেশনার কারণেই তা এখন পর্যন্ত হয়নি। ম্যাডামকে যখন অবৈধভাবে সাজা দেয়া হলো, ম্যাডামের নির্দেশনা ছিল, আন্দোলন করতে গিয়ে যেন দেশের সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। অনেকে বলে, আমরা ম্যাডামের জন্য কিছুই করতে পারিনি। কথাটি ঠিক নয়। আমরা ম্যাডামের আদেশ পালন করেছি।
তিনি আরও বলেন, ম্যাডাম হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে কর্মসূচি হয়েছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছি, যাতে আওয়ামী লীগ আমাদের ওপর দোষারোপ করতে না পারে। অতীতে আপনারা দেখেছেন পঙ্কজ আওয়ামী লীগের এমপি, উনারা নিজের বাসে আগুন দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারাই প্রকাশ করেছে। আমরা চাইনি আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আওয়ামী লীগ ভুল ব্যাখ্যা করুক। এ সুযোগটা এবার আওয়ামী লীগ পায়নি। আমরা সরকারকে চাপে রেখেছি। সারা বাংলাদেশে কর্মসূচি হচ্ছে।
রবিন বলেন, একদিকে ম্যাডাম অসুস্থ, আমাদের দলীয় কার্যক্রম ও দলকে সুসংগঠিত করা, দলকে গতিশীল করার কাজ কিন্তু থেমে নেই। আমাদের নেতা তারেক রহমান নিরলসভাবে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদেরকে নির্দেশনা দিচ্ছেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন। উনি কিন্তু আমাদেরকে রেডি করছেন। আমরা কিন্তু রেডি আছি। আমাদেরকে নির্দেশনা দিলে সরকার পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র।