পুনর্বিবেচনা
নগদ অর্থ সংকটের মধ্যেই আদানি পাওয়ারের সঙ্গে চুক্তি পুনর্বিবেচনার আহ্বান
বর্তমান নগদ অর্থ সংকটের মধ্যেই বিদ্যুৎ খাতের স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি পুনর্বিবেচনা করা দরকার।
রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) বেশিরভাগ কর্মকর্তা মনে করেন, ভারতের ঝাড়খণ্ডের আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে সরকারকে প্রতি মাসে ১০০ মিলিয়ন ডলার দিতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিপিডিবির এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘যদি আদানির চুক্তি পুনর্বিবেচনা এবং শুল্ক হ্রাস করা হয়, তবে সরকার এখন আদানিকে যে অর্থ দেয় তার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সাশ্রয় করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন: ২০৩৫ সালের মধ্যে হাইড্রোজেন থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায় বাংলাদেশ: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ২০১৭ সালের নভেম্বরে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ২৫ বছরের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) সই করে বাংলাদেশ সরকার। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালের এপ্রিলে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করে বাংলাদেশ।
আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়াও ভারত থেকে প্রায় ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে বাংলাদেশ। যার প্রায় অর্ধেক ভারতের বেসরকারি খাত থেকে এবং বাকি অর্ধেক সরকারি কেন্দ্র থেকে। তবে এর সবগুলোই কয়লাভিত্তিক বা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ।
বিপিডিবির কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত কেন্দ্রগুলো থেকে প্রতি ইউনিট (কিলোওয়াট-ঘণ্টা) আমদানিতে প্রায় সাড়ে ৫ টাকা, ভারতের বেসরকারি খাত থেকে প্রতি ইউনিট সাড়ে ৮ টাকা এবং আদানির প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম প্রায় ১৫ টাকা পড়ছে।
বিপিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, 'এর অর্থ হচ্ছে ভারত সরকারের ব্যবস্থাপনায় আমদানির গড় ব্যয়ের তুলনায় আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে বাংলাদেশকে খরচ করতে হয় প্রায় দ্বিগুণ অর্থ।’
সরকার যদি চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে চায় তবে এখনই তা করার উপযুক্ত সময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই পুনর্বিবেচনা বাংলাদেশের বিশাল পরিমাণ অর্থের সাশ্রয় করবে।
আরও পড়ুন: নিম্নমানের বিদ্যুৎ প্রিপেইড মিটারের বিষয়ে তদন্তে মন্ত্রণালয়কে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ
বাংলাদেশের অনেক জ্বালানি বিশেষজ্ঞও আদানির চুক্তির সমালোচনা করছেন। তারা বলেন, বর্তমানে বিপিডিবিকে বছরে ১২০ কোটি ডলারের বেশি পরিশোধ করতে হয় এবং ২৫ বছরে পরিশোধ হবে ৩০ বিলিয়ন ডলার।
চুক্তি পুনর্বিবেচনা করা হলে এবং শুল্ক অর্ধেক করা গেলে ২৫ বছরে বিপিডিবি সাশ্রয় করতে পারবে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার।
বর্তমানে বেসরকারি খাত থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় এবং ভারত থেকে উচ্চমূল্যে আমদানির কারণে বিপিডিবির বকেয়া বিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিপিডিবি) সহসভাপতি এম শামসুল আলম বলেন, সরকারের উচিত অবিলম্বে আদানিসহ সব অযাচিত চুক্তি পুনর্বিবেচনার ব্যবস্থা নেওয়া।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশে ব্যাপক সমালোচনার পর গত বছর আদানি গ্রুপ বিদ্যুৎ রপ্তানিতে বিদ্যুতের দাম কমাতে রাজি হয়। কিন্তু বিশেষ প্রয়োজনে এ ব্যবস্থা করা হয় এবং প্রতি মাসেই বিদ্যুতের দাম নির্ধারণের জন্য ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে আলোচনায় বসতে হয় বিপিডিবিকে।
বিপিডিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, 'তবে আমাদের পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে এই চুক্তির স্থায়ী সমাধান দরকার।আরও পড়ুন: নিরবচ্ছিন্ন বিল পরিশোধে বিদ্যুৎ বিভাগকে নিজস্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বললেন নসরুল
২ মাস আগে
কালো টাকা সাদা করার বিধান পুনর্বিবেচনা করা উচিত: মোমেন
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার বিধান নিয়ে সংসদে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (২০) সংসদে তিনি এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বাজেটে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার ঘোষণার কারণে সৎ করদাতারা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় তিনি বলেন, আমি অবশ্যই মনে করি কালো টাকা সাদা করার সুযোগ পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: কালো টাকা সাদা করার বাজেট প্রণয়ন অসাংবিধানিক ও দুর্নীতিবান্ধব: টিআইবি
এসময় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রাজস্ব বৃদ্ধি, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও হয়রানির চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন মোমেন।
দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ খাদ্য স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয় উল্লেখ করে পেঁয়াজ ও আলু উৎপাদনে উদ্বৃত্তের ইঙ্গিত দিয়ে সরকারি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মোমেন।
তিনি বলেন,‘২৮ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে স্থানীয়ভাবে ৩৪ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। একইভাবে আলুর উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১০৪ লাখ টন, যা চাহিদার তুলনায় ২৫ লাখ টন বেশি। যদি তাই হয়, তাহলে এসব পণ্যের দাম বাড়বে কেন? আমাদের পরিসংখ্যানে ভুল আছে।’
কর্মসংস্থান সংকট নিয়েও কথা বলেন তিনি। মোমেন বলেন, অপর্যাপ্ত স্থানীয় চাকরির কারণে অনেক নাগরিক বিদেশে সুযোগ খোঁজেন। ‘সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে মাত্র ৩ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ বেকার। তবে আমার অফিসে আসা ১০ জনের মধ্যে ৬ জনই চাকরি খুঁজছেন।’
আরও পড়ুন: কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে: জমির উদ্দিন সরকার
মোমেন কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে বেসরকারি খাতের গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণ গ্রহণের সম্ভাব্য প্রভাব তুলে ধরেন। তিনি সতর্ক করে বলেন,‘বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার এক লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিচ্ছে, যা বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের ঋণ থেকে বঞ্চিত করতে পারে। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
রাজস্ব আদায়ের বিষয়টিকে একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ১৭ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র ৩০-৩২ লাখ মানুষ করদাতা, যা প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় সর্বনিম্ন।
তিনি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর পরিধির প্রস্তাব করেন, যাতে জাতীয় পরিচয়পত্রধারী সকল ব্যক্তিকে বার্ষিক আর্থিক বিবরণী জমা দিতে হবে। এই পদক্ষেপের ফলে করদাতার সংখ্যা বর্তমানের ৩০-৩২ লাখের পরিবর্তে দুই-তিন কোটিতে উন্নীত হতে পারে।
রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, পারিবারিক মর্যাদা বৃদ্ধি ও হয়রানি হ্রাসে রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর আহ্বান জানান সাবেক এই মন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমলাদের একটি অংশ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন, যা মানুষের হয়রানি তীব্রতর করছে। মুষ্টিমেয় কিছু দুর্নীতিবাজ আমলার কারণে গোটা আমলাতন্ত্রকে দোষারোপ করা হয়।’
আরও পড়ুন: বাজেটে কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাবে সমর্থন প্রধানমন্ত্রীর
৪ মাস আগে
পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বিষয়ক ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি থিয়া লি বাংলাদেশ সরকারকে সাম্প্রতিক ন্যূনতম মজুরির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেছেন, যাতে তা শ্রমিক ও তাদের পরিবারের চাহিদা পূরণ করে ন্যায়সঙ্গত ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে পারে।
লি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ভবিষ্যতের অস্থিরতা রোধ করার জন্য আমরা বিদ্যমান শ্রম আইন সংশোধনের আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে সমস্ত শ্রমিক আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার আহ্বান অনুযায়ী সংগঠন ও সম্মিলিত দরকষাকষির স্বাধীনতার অধিকার পুরোপুরি প্রয়োগ করতে পারেন।’
আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক ব্যুরো জানিয়েছে, বাংলাদেশের ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনার ক্ষেত্রে সহিংসতা বৃদ্ধি এবং শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের ওপর 'দমন-পীড়ন' বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম মন্ত্রণালয় 'গভীরভাবে উদ্বিগ্ন'।
মন্ত্রণালয় ৩০ অক্টোবর রাসেল হাওলাদার এবং আঞ্জুয়ারা খাতুনের পুলিশ গুলিতে নিহত হওয়ার অভিযোগের নিন্দা জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে, বাংলাদেশ কর্মকর্তা ও স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে: মুখপাত্র
লি বলেন, ‘ডিজাইন এক্সপ্রেস ফ্যাক্টরির রক্ষণাবেক্ষণ অপারেটর ও সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সদস্য হাওলাদার (২৬) বিক্ষোভের সময় নিহত হন। ২৩ বছর বয়সী সেলাই মেশিন অপারেটর এবং দুই সন্তানের জননী খাতুনও বিক্ষোভের সময় নিহত হন।’
শ্রমিকদের সমাবেশের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন, শ্রমিকদের ওপর সহিংস দমন-পীড়ন বন্ধ এবং হাওলাদার ও খাতুন হত্যাকাণ্ডে পুলিশের জড়িত থাকার অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
লি বলেন, ‘আমরা ন্যূনতম মজুরি আন্দোলনে গ্রেপ্তার বাংলাদেশ মুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশনের শ্রমিক সংগঠক জুয়েল মিয়ার অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
মঙ্গলবার গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করা হলেও শ্রমিক ও ইউনিয়নগুলো ২৩ হাজার টাকা দাবি করে আসছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায়ের জন্য সড়কে নেমে আসেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং কারখানা ও যানবাহনে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান
বাংলাদেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে কোনো সহিংসতা 'অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে' নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র: মুখপাত্র প্যাটেল
১১ মাস আগে
বিইআরসি বাল্ক বিদ্যুতের শুল্কের রিভিউ আপিলের রায় দিবে সোমবার
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সোমবার বাল্ক বিদ্যুতের শুল্ক বাড়ানোর জন্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) পুনর্বিবেচনার আপিলের বিষয়ে তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে।
রবিবার একটি অফিসিয়াল বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কিন্তু ভোক্তা অধিকারকর্মীরা আর কোনো মূল্য বৃদ্ধির বিপক্ষে।
গত ১৩ অক্টোবর নিয়ন্ত্রক কর্তৃক প্রস্তাব প্রত্যাখানের পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বিপিডিবি ১৪ নভেম্বর বিইআরসিতে রিভিউ আপিল করে।
বিইআরসি থেকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রস্তাবটি জমা দেয়ার আগে বিপিডিবি সরকারের সর্বোচ্চ নীতিগত পর্যায় থেকে একটি অনুমোদন পেয়েছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও রিভিউ আপিল করতে অনুমোদন দিয়েছেন।
বিইআরসি ১৩ অক্টোবর বিপিডিবির বাল্ক বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছিল যে সংক্ষুব্ধ পক্ষ ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে নিয়ন্ত্রকের সিদ্ধান্ত পুনমূল্যায়নের জন্য আপিল প্রস্তাব জমা দিতে পারে।
তবে, বিইআরসি এই বিষয়ে আর কোনও গণশুনানি ছাড়াই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এএসএম শামসুল আলম কোনও গণশুনানি ছাড়াই বিইআরসির সিদ্ধান্তকে স্বেচ্ছাচারী কাজ এবং বিইআরসি আইনের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘লোডশেডিং এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অত্যধিক মূল্যে মানুষ যখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে, তখন বিইআরসির এই ধরনের সিদ্ধান্ত জনগণের জন্য একটি বড় ধাক্কা হবে’।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুসারে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য সরকার প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে। যা সংকট ব্যবস্থাপনার সহায়তার অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এর আগে ১৩ অক্টোবর বিপিডিবির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সিদ্ধান্ত দেয়ার সময় বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল বলেছিলেন, বিপিডিবির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনা বেসরকারি কোম্পানিগুলোর মধ্যে কিছু লেনদেনের তথ্য জমা দেয়নি।
আরও পড়ুন: পাইকারি পর্যায়ে অপরিবর্তিত থাকবে বিদ্যুতের দাম: বিইআরসি
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তথ্যের অস্পষ্টতা ছিল। এ কারণেই আমরা ভোক্তাদের ওপর বাল্ক শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব বিশ্লেষণ করিনি।'
তিনি উল্লেখ করেন, বিইআরসি সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় বর্তমান আর্থ-সামাজিক এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েছিল।
ফলে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত পূর্ববর্তী শুল্ক অনুসারে বিদ্যুতের শুল্ক অপরিবর্তিত রয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপিডিবির বাল্ক বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর সর্বশেষ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয় ১৮ মে।
বিপিডিবি গণশুনানিতে বাল্ক বিদ্যুতের শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় এবং বিইআরসির একটি প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন কমিটি ৫৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল।
বিপিডিবি তার সর্বশেষ পর্যালোচনা আপিল প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে যে তার সরবরাহের প্রকৃত খরচ প্রতি ইউনিট আট দশমিক ১৬ টাকা পূর্বের গণনাকৃত ট্যারিফের পরিবর্তে প্রতি ইউনিট আট দশমিক ৯৬ টাকা।
প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে বিপিডিবি কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে সংস্থাটির বিদ্যুত বিতরণ সংস্থাগুলোকে সরবরাহ করতে ৮৮ হাজার ৯৯৩ মিলিয়ন কিলোওয়াট ঘন্টা (ইউনিট) বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে ৭৪ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা রাজস্বের প্রয়োজন হবে।
অফিসিয়াল সূত্র জানিয়েছে, এখন বিতরণ কোম্পানিগুলো খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য তাদের নিজ নিজ প্রস্তাব জমা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
নসরুল হামিদ আরও বলেন, বিতরণ সংস্থাগুলো খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির জন্য জ্বালানি নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা দিতে তাদের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো এখন তাদের প্রস্তাবনা প্রস্তুত করার জন্য কাজ করছে...তারা বাল্ক শুল্ক বৃদ্ধির সম্ভাব্য প্রভাব হিসাব করছে।’
বিপিডিবি কর্মকর্তারা আশা করছেন যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন কমপক্ষে ২০ শতাংশ বাল্ক শুল্ক বাড়াবে।
বিপিডিবি’র একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, সম্ভাব্য ২০ শতাংশ বৃদ্ধি বিবেচনা করে বিপিডিবি বিদ্যুতের খুচরা শুল্ক কমপক্ষে ১২ শতাংশ বাড়াতে চাইছে।
বিইআরসি একটি গণশুনানির পর ২০২০ সালের মার্চ মাসে খুচরা বিদ্যুতের শুল্ক সর্বশেষ বাড়ানো হয়েছিল।
একটি ঘোষণার মাধ্যমে বিইআরসি ২০২০ সালের ১ মার্চ থেকে কার্যকর হিসাবে খুচরা পর্যায়ে পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ এবং পাইকারি স্তরে আট দশমিক চার শতাংশ সামগ্রিকভাবে গড়ে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে।
ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খুচরা বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট (প্রতি কিলোওয়াট-ঘণ্টা) ছয় দশমিক ৭৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাত দশমিক ১৩ টাকা এবং বাল্ক পর্যায়ে চার দশমিক ৭৭ টাকা থেকে পাঁচ দশমিক ১৭ টাকা করা হয়।
আরও পড়ুন: গ্যাসের দাম বাড়ছে না: বিইআরসি
১ বছর আগে
ওষুধের দোকান বন্ধের সময়সীমা পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে: তাপস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয়তা অনুসারে সংশ্লিষ্ট ওষুধের দোকান বন্ধের সময়সীমা পর্যালোচনা ও পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে।
বুধবার নগরীর আজিমপুর পথচারী পারাপার সেতু উদ্বোধন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে মেয়র এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, অবশ্যই ওষুধ একটি অত্যাবশকীয় বিষয়। এ জন্য বিবেচনা করেই আমরা মহল্লার ওষুধের দোকানগুলোকে রাত ১২টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ সময় দিয়েছি। এছাড়া হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট ওষুধের সবসময় একটি তাগাদা থাকতে পারে এবং প্রয়োজন থাকে। এজন্য আমরা রাত দুইটা পর্যন্ত করেছি। আমরা মনে করি যে, এটা যৌক্তিক। তারপরও যদি কোনও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে লিখিত জানালে আমরা সেটা পর্যালোচনাপূর্বক বিবেচনা করব।
আরও পড়ুন: ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী জনগণের আইনজীবী ছিলেন: শেখ তাপস
তিনি বলেন, যেমন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এটি বাংলাদেশের মধ্যে অত্যন্ত ব্যস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল। তারা যদি আমাদেরকে লিখিতভাবে জানায়, তাহলে আমরা সেটা পর্যালোচনা করে পুনর্বিবেচনা করব। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে, যেখানে প্রয়োজন হয়, ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে হয়তোবা সময়টা বর্ধিত করা যেতে পারে। এটা সেই হাসপাতাল ও এলাকার প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করেই করা হবে। এখন থেকে কোনও ঢালাওভাবে কোনও সময়সূচি ছাড়া কেউ চলতে (কার্যক্রম পরিচালনা) পারবে না। সবাইকে একটা সময়সূচির মধ্যে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যে কোনও আইন বা নীতিমালা প্রয়োগ বা বাস্তবায়নে অবশ্যই কঠোর হতে হয়। তবে সেখানে জনসম্পৃক্ততা প্রয়োজন। আমি মনে করি, আমরা যে সময়সূচি দিয়েছি, এটা শুধু ঢাকাবাসীই নয়, সারা বাংলাদেশের জনগণ এবং বহির্বিশ্বে আমাদের যারা প্রবাসী আছেন, তারাও এটা সাদরে গ্রহণ করেছেন। সুতরাং আমরা জনসম্পৃক্ততা পেয়েছি। তাই, আমি মনে করি এটা বাস্তবায়ন দুরূহ হবে না। সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে।
এরপরে ডিএসসিসি মেয়র জয়কালী মন্দির থেকে যাত্রাবাড়ী মোড় পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করেন এবং হাজারীবাগে ট্যানারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের উদ্যোগে ১৫ অগাস্ট ১৯৭৫ এ নিহত সকল শহীদ স্মরণে ট্যানারি শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশ এর কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডাইরেক্টর এ কে এম নাসিম, ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় ঢাকা শহরকে সময়সূচির মধ্যে আনতেই হবে: মেয়র তাপস
দুটি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে: মেয়র তাপস
২ বছর আগে