আয়াত
পিবিআই এখনো আয়াতের খন্ডিত দেহের সন্ধান পায়নি
চট্টগ্রামে শিশু আলিনা ইসলাম আয়াতের খণ্ডিত দেহ এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। শনিবার দ্বিতীয় দিনের মত কাট্টলী সাগড়পাড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার অভিযুক্ত আবীর আলীর (১৯) দেখানো স্থানগুলোতে তল্লাশি চালিয়েছে পিবিআই টিম।
তবে ওই স্থান থেকে গতকাল উদ্ধার করা হয়েছিল আয়াতের পোশাক ও জুতো। আয়াতের সে পোষাক বুকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাবা সোহেল রানা।
তিনি আহাজারি করে বলছিলেন-“কি অপরাধ করেছিল আমার নিষ্পাপ আয়াত আর বলেন, আমার মেয়ে কি পৃথিবীর আলোয় আর হাসবে না। রাঙাবে না আমার পৃথিবী”।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক ইলিয়াস খান বলেন, গ্রেপ্তার আবির আলীর দেখানো জায়গাগুলোতে আমরা তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখেছি। আয়াতের শরীরের টুকরোগুলো পাওয়া যায় কিনা। কিন্ত পাওয়া যায়নি। হয়তো সাগরের পানিতে সেগুলো ভেসে গেছে। তবে খুনের আলামত আমরা উদ্ধার করেছি। আয়াতের জুতা ও জামা পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ২৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে আকমল আলী সড়ক থেকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে আয়াতকে হত্যার কথা স্বীকার করে।শুধুমাত্র মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে শিশু আয়াতকে অপহরণ করা হয়। মুক্তিপণ আদায়ের সুযোগ না পেয়ে ছয় বছর বয়সী এ শিশুর লাশকে ছয় টুকরা করার পর তা কাট্টলী সাগরপাড়ে ফেলে দেয়া হয় বলে সে স্বীকার করেছে। তাকে আরও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ড চাওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মিরসরাই ট্রাজেডি: আয়াতের পর এবার চলে গেলেন তাসমির হাসান
তিনি বলেন, আয়াতের বাবা সোহেল রানার অনেক টাকা আছে ভেবে মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে ঘটনার দিন বিকালে আয়াতকে অপহরণ করে আবির আলী। পরে আয়াত চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে আকমল আলী সড়কের বাসায় নিয়ে ছয় টুকরো করা হয়। তারপর কাট্টলীর সাগরপাড়ে ফেলে দেওয়া হয়।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আবীর জানিয়েছে, ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রল’ও ‘সিআইডি’ তার পছন্দের সিরিয়াল। মূলত সেসব অনুষ্ঠান দেখেই মুক্তিপণ আদায়, লাশ গুম, আলামত নষ্ট সবকিছুই সেখান থেকে শিখেছে। এবং সে মোতাবেক আয়াতকে হত্যা করে লাশ ৬ টুকরো করেছে।
ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল করিম জানান, আজ শনিবার বলেন, আয়াত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। শিশু আয়াতের বাবা সোহেল রানা মামলাটির বাদী।তবে মামলাটি পিবিআই তদন্ত করবেন বলে জানান তিনি।
গত ১৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার বন্দরটিলার এলাকার নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় আলিনা ইসলাম আয়াত। পরদিন শিশুর বাবা সোহেল রানা এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করলেও কোন হদিস মিলেনি। অবশেষে নিখাঁজের ১০ দিন পর এ ঘটনার রহস্যের জট খুলে পিবিআই। এ ঘটনায় আয়াতের বাবার ডায়েরিকে মামলা হিসেবে নেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: শিশু আয়াতকে ৬ টুকরা করে হত্যা, লাশ উদ্ধারে সাগরে অভিযান পিবিআই’র
২ বছর আগে