দুর্নীতিগ্রস্ত
নির্বাচন কমিশন ১৬ বছরে সবচেয়ে বড় দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল: সারজিস আলম
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, ‘শুধু নির্বাচনের জন্য ২ হাজার মানুষ জীবন দেয়নি, আর এই অভ্যুত্থানও হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত সিস্টেমগুলোর জন্য এই মানুষগুলো বিগত ১৬ বছরে বিরক্ত হতে হতে দেয়ালে পিঠ লেগে গিয়েছিল।’
সারিজস আলম আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলের ১৬ বছরে সবচেয়ে বড় দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন কমিশন সংস্কার না করলে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই আশা করা যাবে না।’
শনিবার (৯ অক্টোবর) সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
আরও পড়ুন: কর্তৃপক্ষ তাদের কথা রাখেনি, আন্দোলন চলবে: সমন্বয়ক সারজিস আলম
নির্বাচন প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, আমরা বলছি না রাষ্ট্রের সবকিছু সংস্কার করে নির্বাচনে যান। আমরা এটাও বলছি না আগামী ৫ থেকে ৬ বছর সংস্কার করেন। কিন্তু সংস্কারের জন্য ন্যূনতম একটা সময় লাগবে।
তিনি আরও বলেন, কোনো বিবেকবান মানুষ তার জায়গা থেকে চিন্তা করতে পারবে না যে এক বছরের মধ্যে সবকিছু সংস্কার হয়ে যাবে।
১৬ বছরে যে সিস্টেমগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে, সেই সিস্টেমগুলোকে সংস্কার করতে একটা যৌক্তিক সময় প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৬ বছর এমনকি ৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশের সংবিধান পাঁচ বছরের জন্য মানুষকে একটি ‘জনতার সরকার’ উপহার দিতে পারেনি। আমাদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেই সাংবিধানিক সংস্কারও প্রয়োজন। পাঁচ বছরের জন্য ইশতেহার দিয়ে প্রতিটি সরকার ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় আসার পরপরই ইশতেহার ভুলে যায়। ভুলে যায় তারা যে জনতার সরকার।’
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শুধু একটা নির্বাচন কমিশনও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারে না। এর পাশাপাশি অনেকগুলা প্রতিষ্ঠান জড়িত। এরমধ্যে অন্যতম হলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে একটা সিস্টেমের মধ্যে আনতে হবে। তা না হলে নির্বাচন দিলে আবার জবরদখলের ঘটনা ঘটতে পারে। ক্ষমতার অপব্যবহার হতে পারে। আবার এই নির্বাচন ঘিরে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সে জন্য একটা বিচারিক প্রক্রিয়া প্রয়োজন। তাই বিচার ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন।’
সারজিস আলম আরও বলেন, ‘হাইকোর্টে এখনও আওয়ামী লীগের কিছু দোসর-ফ্যাসিস্ট বসে আছে। যারা তাদের যোগ্যতার বলে সেখানে যায়নি। তোষামোদি আর তেলবাজি করে তারা সেখানে গিয়েছিল। তাদেরকে এই জায়গা থেকে অপসারণ করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে যারা এই জায়গাগুলোর জন্য যোগ্য তাদেরকে সেখানে বসাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই অভ্যুত্থান কিছু লোক দিয়ে হয়নি। যেই ফ্যাসিস্ট সরকারকে ১৬ বছরে বাংলাদেশের নামিদামি রাজনৈতিক সংগঠন এক টনক নড়াতে পারেনি, সেই শেখ হাসিনা কিছু লোকের জন্য এই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। পুরো বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছিল বলে অভ্যুত্থান ঘটেছিল এবং শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েছিল।’
শহীদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সারা দেশ থেকে প্রায় ১ হাজার ৬০০ জনের বেশি শহীদ পরিবারের তালিকা আমাদের কাছে এসেছে। যাচাই-বাছাই করে নির্বাচিতদের পরিবারের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক দেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রতিটি বিভাগীয় পর্যায়ে গিয়ে শহীদদের পরিবারের হাতে অনুদানের চেক তুলে দিচ্ছি। এটা আমাদের দায়িত্ব। বাকি যারা রয়েছেন তাদের কাগজপত্র সংগ্রহের কাজ চলছে। সেগুলো হাতে পেলে অনুদানের চেক তুলে দেওয়া হবে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সিলেট বিভাগে নিহত ১৮ জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’।
শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এসব পরিবারের সদস্যদের মাঝে অনুদানের চেক প্রদান করা হয়। দেওয়া হয়েছে ৫ লাখ টাকা করে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম এবং ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।
এছাড়া সংগঠনটির আরও ৮ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নিজেদের কর্মের ফল ভোগ করছে: সারজিস আলম
রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় দেশবাসীর প্রতি আহ্বান সারজিস আলমের
১ মাস আগে
বাংলাদেশ বিশ্বের ১২তম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ: সিপিআই ২০২২ রিপোর্টে টিআইবি
‘দুর্নীতির ধারণা সূচক-২০২২’ বা ‘করাপশন পারসেপশন ইনডেক্স (সিপিআই) ২০২২’- অনুসারে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২তম স্থানে রয়েছে।
মঙ্গলবার সংস্থাটির ধানমন্ডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময় বলেন, ২০২১-এর অবস্থান থেকে এক ধাপ নেমে বাংলাদেশ এ বছর ১০০-এর মধ্যে ২৫ স্কোর করেছে।
১৮০টি দেশের মধ্যে ২০২২ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৭তম। ২০২১ সালেও বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৭তম ছিল, যেখানে ২০২০ সালে সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৬তম।
টিআইবি হলো বার্লিনভিত্তিক একটি দুর্নীতিবিরোধী নিবেদিত নাগরিক সমাজ সংস্থা। বিশ্বব্যাপী ১৮০টি দেশ এবং অঞ্চলের সরকারি ক্ষেত্রের দুর্নীতির প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সিপিআই রিপোর্ট তৈরি করে টিআইবি।
আরও পড়ুন: লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহ্বান টিআইবি’র
বিশ্বব্যাপী গড় স্কোর হল ৪৩। দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি দেশ ৫০-এর নিচে স্কোর করেছে, যেখানে ২৬টি দেশ তাদের সর্বনিম্ন স্কোরে নেমে এসেছে।
২০২২ সালের সিপিআই এ দেখা যায় যে বেশিরভাগ দেশ দুর্নীতি বন্ধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
সূচক অনুযায়ী, এশিয়া প্যাসিফিকের ৩১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও মালদ্বীপ যৌথভাবে ৪০, শ্রীলঙ্কা ৩৬, নেপাল ৩৪, পাকিস্তান ২৭ এবং আফগানিস্তান ২৪ স্কোর করেছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রসঙ্গে সিইসির বক্তব্য আত্মঘাতী ও অপরিণামদর্শী: টিআইবি
নির্বাচনে সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিতে আইনি সংস্কারের সুপারিশ টিআইবির
১ বছর আগে