ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষ
পাসওভারেও থেমে নেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষ
টানা দ্বিতীয় দিনেও পাসওভারের পবিত্র সময়ে বৃহস্পতিবার ভোরে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরায়েলের উদ্দেশে রকেট ছুঁড়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ভোরে গাজা উপত্যকা থেকে উৎক্ষেপণ করা সাতটি রকেট মধ্য আকাশে বিস্ফোরিত হয়েছে। গাজা থেকে ছোঁড়া রকেটের আগুনে দাবানলের আশঙ্কা তৈরি করেছিল।
তবে এ হামলার দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি।
মুসলমানরা জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদে রাতে অবস্থান করতে চাইলে ইসরায়েলি পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয় এবং সংঘর্ষে জড়ায়।
এর জেরে বৃহস্পতিবার সকালে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২২ মার্চ রমজান শুরু হওয়ার পর থেকে অনেক মুসলমান বারবার আল-আকসা মসজিদে রাতে অবস্থান করার (ইবাদত) চেষ্টা করেছে।
মুসলমান তাদের মাসব্যাপী রোজার মধ্যে মসজিদে অবস্থান করে (ইতেকাফ) ইবাদত করেন। যদিও সাধারণত রমজানের শেষ ১০ দিন মসজিদে মুসল্লিদের রাতে অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়।
ইসরায়েলি পুলিশ রাতে মসজিদের ভেতরে ঢুকে মুসল্লিদের টেনে বের করে এবং এথেকেই সহিংসতা শুরু হয়।
মঙ্গলবার থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত মুসল্লিরা মসজিদে ব্যারিকেড দিয়েছিল। পুলিশ এতে হামলা চালিয়ে জোর করে উপস্থিত লোকজনকে সরিয়ে দেয়। এতে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি আহত হন এবং শতাধিককে আটক করে ইসরায়েলি পুলিশ বাহিনী।
বুধবার একজন মুখপাত্র বলেছেন, ইসরায়েলি পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি, তবে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট বলেছে যে বুধবার কর্তৃপক্ষ তাদেরকে কম্পাউন্ডে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি।
ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎজ বলেছে, বুধবার রাতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষের মধ্যেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
অনেক ফিলিস্তিনি নাগরিকের বাড়ি ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে, যাদের সংখ্যা ওই এলাকার ৯ দশমিক ৬০ মিলিয়ন জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ।
পুলিশ জানিয়েছে,তারা উম আল-ফাহম শহরে পাঁচ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
অন্যদিকে, ওল্ড সিটির শত শত খ্রিস্টান পবিত্র বৃহস্পতিবার উপলক্ষে পবিত্র সেপুলচারে লাস্ট সাপারে অংশ নেওযার প্রস্তূতি নিচ্ছেন। অন্যদিকে মুসলমানরাও তাদের পবিত্র মাস রমজান উদযাপন করছেন।
আল-আকসা হলো ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান এবং ইহুদিদের কাছে এটি টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত। এটি একটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত,যা ইহুদি ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র স্থান।
এর আগেও এই মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইসরায়েল ও গাজা শাসনকারী ইসলামিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে দুই বছর আগে রক্তক্ষয়ী ১১ দিনের যুদ্ধ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: পশ্চিম তীরে অভিযানের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে ৩ ফিলিস্তিনির মৃত্যু
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান; যার দেশ সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করেছে, বুধবার গভীর রাতে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এই সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন।
এরদোয়ান তুর্কি ২৪টিভিকে বলেছেন, ‘আল-আকসা মসজিদের ঐতিহাসিক মর্যাদা এবং আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের জীবন ও ধর্মীয় বিশ্বাসের অধিকারের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ এবং হুমকির অবসান হওয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সব পরিস্থিতিতে আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই ও বোনদের পাশে দাঁড়াবো এবং আমাদের কাছে যা পবিত্র তা রক্ষা করব। ইসরায়েলের এটা জানা উচিত।’
লেবাননের সশস্ত্র হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী মসজিদে হামলার নিন্দা জানিয়ে এটিকে মুসলমানদের ধর্মীয়,নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।
আরও পড়ুন: সম্মিলিতভাবে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে মুসলিম উম্মাহের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
১ বছর আগে