রাজশাহীতে হাসপাতাল
রাজশাহীতে হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরির ঘটনায় ২ চিকিৎসকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রাজশাহী নগরীতে নবজাতক চুরির অভিযোগে দুই চিকিৎসকসহ চারজনের নামে মামলা হয়েছে।
রবিবার নগরীর রাজপাড়া থানায় মানবপাচার আইনে মামলাটি করেছেন নগরীর তালাইমারী এলাকার সৈয়দা তামান্না আখতার নামের এক নারী।
রাজপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজল নন্দী জানান, মামলায় রাজশাহী রয়েল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক নিশাত আনাম বর্ণা ও অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসক আলী চৌধুরী রিমনসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
সৈয়দা তামান্না আখতার গত বৃহস্পতিবার প্রসববেদনা উঠলে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার রয়েল হাসপাতালে যান। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শে দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি হন।
বিকাল ৩টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নেওয়া হয়। এক ঘণ্টা পর রোগীকে ওটি থেকে বের করা হয়। তবে এ সময় ওই নারীর সঙ্গে কোনো শিশু (নবজাতক) ছিল না। রোগীর স্বজনরা জানতে চাইলে চিকিৎসকরা জানান, তার পেটে কোনো বাচ্চা নেই।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে স্ত্রীর মামলায় আইনজীবী কারাগারে
রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, তামান্না আখতারের গর্ভে দু’টি সন্তান ছিল। ওটিতে নেওয়ার পর রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়ার (অজ্ঞান করার) ইনজেকশনও দেওয়া হয়। এরপর তিনি বাচ্চা প্রসব করেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার সেই বাচ্চা চুরি করেছে।
সৈয়দ তামান্না আখতার বলেন, আমি ৯ মাস ১২ দিনের অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম। এর আগেও আমি ডাক্তার দেখিয়েছি। আমার দুইটা বাচ্চা ছিল। আলট্রাসনোগ্রামে দেখা গেছে, একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তির পর আমাকে ওটিতে নেওয়া হয়। এর আগে আমার সব কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়। এরপর আমাকে একটি ইনজেকশন দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ওটিতে নেওয়ার পর তারা আমার সঙ্গে বাজে আচরণ করতে থাকেন। এর কিছুক্ষণ পরে চিকিৎসক ডাক্তার নিশাত আনাম বর্ণা বলেন, এদিকে দেখেন। তখন আমি বুঝতে পারলাম আমার পুরো শরীর ঝাঁকি দিচ্ছে। মনে হলো বাচ্চা টেনে বের করে নেওয়া হচ্ছে। এরপর আমার আর কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান ফিরল তখন আমি জানতে পারলাম আমার পেটে নাকি কোনো বাচ্চা ছিল না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রয়েল হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়ার চিকিৎসক আলী চৌধুরী রিমন বলেন, রোগীর অবস্থা গুরুতর ছিল। তার ভাইয়ের কাছে শুনেছেন তার পেটে দুইটা বাচ্চা ছিল। তারও মনে হয়েছে পেটে বাচ্চা ছিল। তাই তিনি অজ্ঞান করার ইনজেকশন দেন।
তবে গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিশাত আনাম বর্ণা বলেন, একজন নারী প্রেগন্যান্সির সব সিম্পটম নিয়ে এখানে এসেছিলেন। তাকে পরীক্ষা করার আগেই তার প্রসব বেদনা ওঠে।
তিনি দাবি করেন, তারা (রোগীর স্বজনরা) কোনো কাগজপত্র জমা দিতে পারেননি। তার কাছে কোনো পরামর্শও নেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে বিএনপি-আ.লীগ সংঘর্ষ: ৪৫০ জনের নামে মামলা
১ বছর আগে