নিরাপত্তা রক্ষা
বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় কূটনীতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরলেন পররাষ্ট্র সচিব
বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় কূটনীতির ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
কৌশলগত জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন সহযোগিতার বিষয়ে জোর দেন তিনি।
এসময় পেশাগত শিক্ষার উৎকর্ষ সাধনে সশস্ত্র বাহিনীর অঙ্গীকারের প্রশংসা করে জাতির প্রতি তাদের আত্মোৎসর্গের প্রশংসা করেন মোমেন।
রবিবার (৩০ জুন) ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের (এনডিসি) আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স ২০২৪ (এএফডব্লিউসি-২০২৪)- এ অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদলকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বাগত জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার সফর 'স্থগিত'
এই সফর কূটনীতি ও জাতীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে গভীরতর বোঝাপড়া ও সহযোগিতা গড়ে তোলার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠানটি কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সম্প্রদায়ের মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময়ের জন্য একটি প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়।
অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব (দ্বিপক্ষীয়) ও মিশনের মহাপরিদর্শক ড. মো. নজরুল ইসলাম সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
কূটনীতি ও নিরাপত্তার জটিল দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করে ড. নজরুল এই সমালোচনামূলক ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে গতিশীল আন্তঃক্রিয়ার ওপর আলোকপাত করেন। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সংরক্ষণের পাশাপাশি সমসাময়িক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি বিস্তৃত পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তিনি।
এর আগে মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডি এম সালাহ উদ্দিন মাহমুদ প্রতিনিধিদলকে মন্ত্রণালয়ে স্বাগত জানান।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই আয়োজনের জন্য অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এএফডব্লিউসি ২০২৪-এর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মামুন মুনতাসির হক।
তিনি সামরিক ও কূটনৈতিক মহলের মধ্যে বৃহত্তর বোঝাপড়া এবং সহযোগিতা প্রচারের জন্য মন্ত্রণালয়ের অবদানের প্রশংসা করেন।
সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধ কোর্সে অংশগ্রহণকারী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে টেকসই সম্পর্ক জোরদারে পারস্পরিক অঙ্গীকারের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রাণবন্ত ধারণা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে এই সফর শেষ হয়।
কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা প্রচেষ্টার সুসংহতির মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বার্থ রক্ষার অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির সাক্ষ্য হিসেবে এই অনুষ্ঠান কাজ করেছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ভারতে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় সফরে সই হতে পারে চুক্তি, সমঝোতা স্মারক: পররাষ্ট্র সচিব
অভ্যন্তরীণ কারণে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সফর স্থগিত: হাছান মাহমুদ
৪ মাস আগে
সিসিক নির্বাচন: নিরাপত্তা রক্ষায় ২৬০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরবিচ্ছিন্ন করতে নগরীতে কাজ করছে প্রায় ২৬০০ পুলিশ সদস্য। এছাড়াও মাঠে রয়েছেন ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং ৪২টি ওয়ার্ডে ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচনে কোনো বিশৃঙ্খলা হলে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিবেন।
মঙ্গলবার (২০ জুন) সকালে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) লাইন্সে এক সংবাদ সম্মেলনে এসএমপি কমিশনার মো. ইলিয়াছ শরিফ এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে একজন পুলিশ পরিদর্শক, উপ-পুলিশ পরিদর্শক একজন ও পাঁচজন পুলিশ সদস্য এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডে একজন পুলিশ পরিদর্শক, একজন উপ-পুলিশ পরিদর্শক ও চারজন পুলিশ সদস্য এবং সাতজন নারী ও সাতজন পুরুষসহ মোট ১৪ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
আরও পড়ুন: সিসিক নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৪৩ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি
তিনি জানান, নির্বাচন উপলক্ষে প্রতি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে পুলিশের ৪২টি মোবাইল টিম, প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে ১৪টি ট্রাইকিং টিম এবং প্রতি থানায় একটি করে ছয়টি ও ছয়টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং টিম থাকবে। পাশাপাশি থাকবে দু’টি ওয়ার্ডে একটি করে র্যাবের মোট ২২টি ও পাঁচটি ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে মোট ১০ প্লাটুন বিজিবির টহল।
এ সময় পুলিশ কমিশনার নির্বিঘ্নে ভোটদানের জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, বুধবার ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন।
এই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।
এদের মধ্যে দলীয় মনোনীত চার প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা) ও জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম দলীয় প্রতীক (গোলাপফুল) মার্কায় নির্বাচন করবেন।
আরও পড়ুন: সিসিক নির্বাচনে এক-তৃতীয়াংশ প্রার্থীই বিএনপির: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু (ঘোড়া), মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট), মো. শাহ জাহান মিয়া (বাস গাড়ি) এবং মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা (হরিণ) প্রতীকে নির্বাচন করছেন।
অপরদিকে ৪২টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭২ জন ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, নগরে মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। মেয়র পদে আটজন, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭২ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৯০টি কেন্দ্রে মোট ভোটকক্ষ (বুথ) রয়েছে ১ হাজার ৩৬৪টি।
এদিকে দীর্ঘ প্রায় ১৮দিন পর শেষ হলো সিসিক নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণা। নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী সোমবার (১৯ জুন) রাত ১২টায় মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণার নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যায়। একইসঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় মোটরসাইকেল চলাচল। এরপর থেকেই স্তব্ধ সিলেট নগর।
ভোটগ্রহণকে সামনে রেখে আগের ও পরের দিন বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী ১৯ জুন সোমবার রাত ১২টা থেকে ২২ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত সিসিক এলাকায় কোনো মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে না। আর ২০ জুন মধ্যরাত থেকে ২১ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত ট্রাক, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, জিপ গাড়ি, পিক আপ, প্রাইভেট কার ও ইজিবাইক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
তবে, অনুমতি সাপেক্ষে প্রার্থী ও তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যটকের ক্ষেত্রে ওই আইন শিথিল করা হয়েছে। এর বাইরে জরুরি সেবা কাজের সঙ্গে যুক্ত যেমন : অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুত, গ্যাস, ডাক ও টেলিযোগাযোগ কাজে ব্যবহৃত যানবাহনের ক্ষেত্রে ওই নিষেধাজ্ঞার প্রযোজ্য হবে না বলে নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
অপরদিকে সিসিক নির্বাচনে ১৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকি ৫৮টি কেন্দ্র সাধারণ (ঝুঁকিমুক্ত) বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এসএমপির করা এবারের তালিকা অনুযায়ী ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ১৫, ২২, ২৪, ২৫, ২৬, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩৬, ৩৮, ৩৯ ও ৪২ নম্বর (মোট ১৮টি) ওয়ার্ডের সব ভোটকেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও কিছু ওয়ার্ডের এক বা একাধিক কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এরমধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম নবগঠিত ৪১ নম্বর ওয়ার্ড। এখানে সবগুলো কেন্দ্রই ঝুঁকিমুক্ত বা সাধারণ।
এসএমপি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সুদিপ দাস জানান, সিসিক নির্বাচনে মোট ১৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ এবং ৫৮টি কেন্দ্রকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ১৩২টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিচারে নেওয়া বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। দূরবর্তী অনেক কেন্দ্র রয়েছে, কিছু কেন্দ্রের আশেপাশের পরিবেশ নিরাপদ নয়, কিছু কেন্দ্রে গোলযোগের সম্ভাবনা রয়েছে, সেগুলো বিবেচনা করা ১৩২টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ, গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিমুক্ত কেন্দ্রকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ওই গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ কেন্দ্র অনুযায়ী ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেশি কম নির্ধারণ করা হয়। সে অনুযায়ী কেন্দ্রগুলোর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে নির্বাচন কমিশন। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন সিসিক মেয়র আরিফ
১ বছর আগে