চিকিৎসক
কুষ্টিয়ায় অপারেশন থিয়েটারে রোগীর মৃত্যু, চিকিৎসককে মারধর
কুষ্টিয়ায় অপারেশন থিয়েটারে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসককে মারধর করেছেন রোগীর স্বজনেরা। সোমবার (১৯ জুন) বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের আদ-দ্বীন হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ফিরোজা খাতুন (৪৫) কুষ্টিয়া শহরের জিকে পুরাতন বালুঘাট এলাকার আইয়ুব আলীর স্ত্রী।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় জমি নিয়ে বিরোধ: ভাতিজার হাতে চাচা খুন
অন্যদিকে নিহতের স্বজনরা অভিযুক্ত চিকিৎসক আমিরুল ইসলামকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
রোগীর স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফিরোজা খাতুন রবিবার (১৮ জুন) সকালে পিত্তথলিতে পাথর অপারেশনের জন্য আদ্ দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি হন। সোমবার (১৯ জুন) সকালে অপারেশনর সময় রক্তের চাপ বেড়ে যাওয়ায় রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে পরবর্তীতে আদ্ দ্বীন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মান্নান হার্ট হাসপাতালে পাঠালে মান্নান হার্ট হাসপাতালে নেওয়ার পথেই ওই রোগীর মৃত্যু হয়।
অপারেশন থিয়েটারে রোগীর মৃত্যু হওয়ার খবরে ক্ষুব্ধ স্বজনরা অভিযুক্ত ডাক্তারকে হাসপাতালের মধ্যেই মারধর করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত ফিরোজা খাতুনের ছেলে অনিক আহমেদ বলেন, ‘মাকে সুস্থ অবস্থায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর আমি অপারেশনের জিনিসপত্র কিনতে বাইরে থেকে আসার পর চিকিৎসক আমিরুল ইসলাম বলেন, রোগী অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে অপারেশন করতে পারবো না। তার পরই আমার মায়ের মৃত্যু হয়।’
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার আদ-দ্বীন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার আব্দুল কাদের বলেন, ফিরোজা খাতুন নামে ওই রোগী তার পিত্তথলির পাথর অপারেশনের জন্য আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি হন।
ম্যানেজার জানান, অপারেশনকারী আমিরুল ইসলাম একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক। তিনি কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক। ভুল চিকিৎসায় নয়, মূলত ফিরোজা খাতুন হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চিকিৎসক আমিরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, সকালে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে অভিযোগ না থাকায় এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগীর স্বজনরা অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের একটা সংবাদ শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে চিকিৎসককে মারধর, প্রতিবাদে কর্মবিরতি
বাগেরহাটে হাসপাতালের চিকিৎসককে মারধর, গ্রেপ্তার ২
সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসকের ‘অবহেলায়’ মারা যাওয়া নবজাতকের মায়ের মৃত্যু
রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে গত ১০ জুন ‘ভুল চিকিৎসা’ ও ‘অবহেলায়’ নবজাতকের মৃত্যুর পর এবার প্রসূতি মাহবুবা রহমান আঁখিও মারা গেছেন। রবিবার (১৮ জুন) দুপুর ২টার দিকে ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. পারভেজ ইসলাম জানান, আঁখি গত কয়েকদিন ধরে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং দুপুর ২টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন: নাটোরে আগুনে পুড়ে ২ সন্তানসহ মায়ের মৃত্যু, আহত বাবা
এর আগে, অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ১৫ জুন সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার দুই চিকিৎসক হলেন- ডা. শাহজাদী ও ডা. মুন্না। তারা উভয়ই ধানমন্ডি এলাকার গ্রিন রোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল হাসপাতালের চিকিৎসক।
ওসি পারভেজ বলেন, আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসার কারণে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে ১০ জুন ৬ জন চিহ্নিত ব্যক্তি এবং আরও কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
তিনি আরও বলেন, মামলাযর পর ওই দুই চিকিৎসককে বেসরকারি হাসপাতালটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার বিবৃতিতে বলা হয়, আঁখি গত তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহার তত্ত্বাবধানে ছিলেন এবং তার অবস্থা স্বাভাবিক বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে বিষাক্ত ট্যাবলেট খাইয়ে নিজ শিশুকন্যাকে হত্যা, মায়ের মৃত্যুদণ্ড
এর আগে ওই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ আঁখির পরিবারকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে তিনি স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করবেন। গত ১০ জুন রাত ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে ডা. সংযুক্তা সাহার তত্ত্বাবধানে প্রসব ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন আঁখি।যদিও ডা. সংযুক্তা হাসপাতালে ভর্তির সময় উপস্থিত ছিলেন না।
তার সহকারী বলেছিলেন যে তিনি অপারেশন থিয়েটারে কাজ করছিলেন।
এদিকে গ্রেপ্তারকৃত চিকিৎসকেরা ডেলিভারি পরিচালনা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যার ফলে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।
নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট (আইসিইউ) এবং জরুরি বিভাগে অসন্তোষজনক পরিষেবার কারণে ১৬ জুন সেন্ট্রাল হাসপাতালকে তার অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে।
এছাড়া হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে লিখিত অনুমোদন না দেওয়া পর্যন্ত হাসপাতালটিতে কোনও বিশেষজ্ঞ পরিষেবা না দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে ‘মারধরে’ মায়ের মৃত্যু, ছেলে গ্রেপ্তার
কারাগারে ‘চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা’ চূড়ান্তে ১ মাস সময় দিলেন হাইকোর্ট
দেশের কারাগারগুলোয় আগামী ১ মাসের মধ্যে চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (৬ জুন) এ বিষয়ে এক আবেদনের শুনানিকালে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও কারা কর্তৃপক্ষকে শূন্য পদে কারা চিকিৎসক নিয়োগের অগ্রগতি এক সপ্তাহের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রমিকদের গ্রামীণ কল্যাণের লভ্যাংশ দেওয়ার রায়ে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জে আর খান রবিন। কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম।
এসময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান জামান।
মঙ্গলবার (৬ জুন) শুনানিকালে এখন কারা হাসপাতালগুলোতে কতজন চিকিৎসক আছেন-আদালতের এমন প্রশ্নে কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ১২৫ জন।
তখন আদালত জানতে চান, বাকিগুলো পূরণ করছেন কিভাবে?
জবাবে কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী জানান, শূন্যপদ পূরণের কাজ চলছে।
আদালত তখন বলেন, কত বছর লাগবে? ডাক্তারের তো অভাব নেই। নিয়োগ দেন না কেন? কেন্দ্রীয় কারাগারেই দিচ্ছেন না, তাহলে জেলা কারাগারগুলোর অবস্থা তো আরও খারাপ।
আদালত আরও বলেন, শুধু চিঠি চালাচালি করছেন। ক্ষমতা অপব্যবহার করার জন্য না, মানুষের সেবা করার জন্য। কারাগারে গরিব মানুষ থাকে, ধনীরা থাকে না।
ধনীরা কারাগারে গেলেও তাদের জন্য ডিভিশনের ব্যবস্থা থাকে। গরিবদের বাঁচান।
এরপর কারা চিকিৎসক নিয়োগের বিধিমালা চূড়ান্ত করা কথা বলে আদালত কারা কর্তৃপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা এক মাস পর তারিখ রাখছি। এর মধ্যেই চূড়ান্ত করবেন। এর আগে, গত ১৩ ডিসেম্বর আদালতে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৬৮ কারাগার এবং কারা হাসপাতালে ১৪১টি চিকিৎসকের পদের বিপরীতে প্রেষণে ও সংযুক্ত মিলিয়ে মোট ৯৩ জন চিকিৎসক রয়েছেন।
এরপর আদালত শূন্য পদগুলোতে অবিলম্বে কারা চিকিৎসক নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়ে অগ্রগতি জানাতে বলেন।
এর ধারাবাহিকতায় মামলাটি কার্য তালিকায় আসে। ২০১৯ সালে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন।
তখন আদালত কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা নিয়ে রুল জারি করেন। সেই সঙ্গে কারাগারের চিকিৎসা ব্যবস্থা, চিকিৎসক নিয়োগসহ কারাগারের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
পরে কারা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দিয়ে কারাগারে ২৪ জন চিকিৎসক থাকার কথা জানায়। পরে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি হাইকোর্ট শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: পুরান ঢাকায় পুকুর দখলে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
৪২ ঘন্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত; পুলিশ সুপার যোগাযোগ করায় অসন্তোষ হাইকোর্টের
রাজশাহীতে হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরির ঘটনায় ২ চিকিৎসকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রাজশাহী নগরীতে নবজাতক চুরির অভিযোগে দুই চিকিৎসকসহ চারজনের নামে মামলা হয়েছে।
রবিবার নগরীর রাজপাড়া থানায় মানবপাচার আইনে মামলাটি করেছেন নগরীর তালাইমারী এলাকার সৈয়দা তামান্না আখতার নামের এক নারী।
রাজপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজল নন্দী জানান, মামলায় রাজশাহী রয়েল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক নিশাত আনাম বর্ণা ও অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসক আলী চৌধুরী রিমনসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
সৈয়দা তামান্না আখতার গত বৃহস্পতিবার প্রসববেদনা উঠলে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার রয়েল হাসপাতালে যান। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শে দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি হন।
বিকাল ৩টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নেওয়া হয়। এক ঘণ্টা পর রোগীকে ওটি থেকে বের করা হয়। তবে এ সময় ওই নারীর সঙ্গে কোনো শিশু (নবজাতক) ছিল না। রোগীর স্বজনরা জানতে চাইলে চিকিৎসকরা জানান, তার পেটে কোনো বাচ্চা নেই।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে স্ত্রীর মামলায় আইনজীবী কারাগারে
রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, তামান্না আখতারের গর্ভে দু’টি সন্তান ছিল। ওটিতে নেওয়ার পর রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়ার (অজ্ঞান করার) ইনজেকশনও দেওয়া হয়। এরপর তিনি বাচ্চা প্রসব করেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার সেই বাচ্চা চুরি করেছে।
সৈয়দ তামান্না আখতার বলেন, আমি ৯ মাস ১২ দিনের অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম। এর আগেও আমি ডাক্তার দেখিয়েছি। আমার দুইটা বাচ্চা ছিল। আলট্রাসনোগ্রামে দেখা গেছে, একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তির পর আমাকে ওটিতে নেওয়া হয়। এর আগে আমার সব কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়। এরপর আমাকে একটি ইনজেকশন দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ওটিতে নেওয়ার পর তারা আমার সঙ্গে বাজে আচরণ করতে থাকেন। এর কিছুক্ষণ পরে চিকিৎসক ডাক্তার নিশাত আনাম বর্ণা বলেন, এদিকে দেখেন। তখন আমি বুঝতে পারলাম আমার পুরো শরীর ঝাঁকি দিচ্ছে। মনে হলো বাচ্চা টেনে বের করে নেওয়া হচ্ছে। এরপর আমার আর কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান ফিরল তখন আমি জানতে পারলাম আমার পেটে নাকি কোনো বাচ্চা ছিল না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রয়েল হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়ার চিকিৎসক আলী চৌধুরী রিমন বলেন, রোগীর অবস্থা গুরুতর ছিল। তার ভাইয়ের কাছে শুনেছেন তার পেটে দুইটা বাচ্চা ছিল। তারও মনে হয়েছে পেটে বাচ্চা ছিল। তাই তিনি অজ্ঞান করার ইনজেকশন দেন।
তবে গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিশাত আনাম বর্ণা বলেন, একজন নারী প্রেগন্যান্সির সব সিম্পটম নিয়ে এখানে এসেছিলেন। তাকে পরীক্ষা করার আগেই তার প্রসব বেদনা ওঠে।
তিনি দাবি করেন, তারা (রোগীর স্বজনরা) কোনো কাগজপত্র জমা দিতে পারেননি। তার কাছে কোনো পরামর্শও নেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে বিএনপি-আ.লীগ সংঘর্ষ: ৪৫০ জনের নামে মামলা
ঠাকুরগাঁওয়ে ভুয়া চিকিৎসক গ্রেপ্তার, হাসপাতাল সিলগালা
ঠাকুরগাঁওয়ের একটি হাসপাতাল থেকে একজন ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
শনিবার দুপুরে পৌর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার ‘আমাদের হাসপাতাল’ নামের এক হাসাপাতাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে ওই হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয় ভ্রাম্যমান আদালত।
গ্রেপ্তার ভুয়া চিকিৎসকের নাম শরিফুল ইসলাম (৩৯)।
এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শামছুজ্জামান আসিফ তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা এবং দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
শরিফুল ইসলাম নিজেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বেলঘরিয়া থানার নন্দনপুর আমতলা গ্রামের আমির শেখের ছেলে বলে তথ্য দেয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার দেওয়া ভারতের ঠিকানা যাচাই করা সম্ভব না হয়নি। তবে তার কথা-বার্তায় ধারণা করা হচ্ছে শরিফুল ইসলাম বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের চাপাইনবাবগঞ্জ এলাকার অধিবাসী।
আরও পড়ুন: বরিশালে শেবাচিম হাসপাতাল থেকে ভুয়া চিকিৎসক আটক
জানা যায়, বেশ কিছুদিন যাবত ঠাকুরগাঁওয়ের আমাদের হাসপাতালে জেনারেল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও ব্রেইন স্পাইন নার্ভ বিশেষজ্ঞ হিসেবে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন তিনি। ওই ভুয়া চিকিৎসক তার নেমপ্লেটে ভারতের রাজীব গান্ধী স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমবিবিএস ডিগ্রী অর্জন করেছেন বলে উল্লেখ করেন। সেখানে নাম কিছুটা পাল্টিয়ে ডা. শারিফুল ইসলাম উল্লেখ করে প্রতারণা করে আসছিলেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শামছুজ্জামান আসিফের নেতৃত্বে ঠাকুরগাঁও আনসার ব্যাটালিয়ন-১, পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই বাছাইয়ের পর তাকে আটক করা হয়।
মেডিকেল অফিসার ইফতেখারুল ইসলাম জানান, আটককৃত ব্যক্তির সকল সনদ ভুয়া। তার কাছ থেকে একটি ভারতীয় পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে। আটক ভুয়া ডাক্তারের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তার এসএ সি ও এইসএসসি সনদ ভিন্ন নামে রেজিষ্ট্রেশন করা। তাকে দুই বছরের জেল ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে ভুয়া দন্ত চিকিৎসককে কারাদণ্ড
খুলনায় চিকিৎসক-পুলিশ দ্বন্দ্বের ঘটনায় তদন্ত কমিটি
খুলনায় চিকিৎসক ও পুলিশ সদস্যের মধ্যে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত ২৮ মার্চ মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উদ্যোগে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। শনিবার খুলনা সার্কিট হাউসে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য শুনবে তারা।
ওই ঘটনায় দায়ের মামলার বাদী-বিবাদীদের ডেকে পাঠিয়ে চিঠি দেওয়ায় বৃহস্পতিবার বিষয়টি প্রকাশ পায়।
আরও পড়ুন: খুলনায় আ.লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা
চার সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব মীর আবুল ফজল, সদস্য সচিব খুলনার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ইউসুপ আলী।
সদস্যরা হলেন- পুলিশের একজন অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক ও চিকিৎসক নেতা অধ্যাপক শহিদুল হক।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নগরীর ‘হক নার্সিং হোম’ নামের একটি ক্লিনিকে ডা. নিশাত আবদুল্লাহকে মারধর করেন পুলিশের এএসআই নাঈমুজ্জামান। ওই ঘটনায় নাঈমুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে টানা চার দিন কর্মবিরতি পালন করেন খুলনার চিকিৎসকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন রোগীরা। নাঈমুজ্জামান সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন। চিকিৎসকদের দাবির মুখে তাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
ডা. নিশাতকে মারধর ও হাসপাতাল ভাঙচুরের অভিযোগে ২৮ ফেব্রুয়ারি সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা হয়। এতে এএসআই নাঈমুজ্জামান ও তার স্ত্রী নুসরত আরা ময়নাকে আসামি করা হয়। অন্যদিকে সাত বছরের মেয়ের অঙ্গহানি ও যৌন হয়রানির অভিযোগে নিশাত আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা করেন নুসরত আরা।
৯ মার্চ মামলা দুটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান চিকিৎসক নেতারা।
তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ইউসুপ আলী জানান, দুই মামলার বাদী-বিবাদীসহ সংশ্লিষ্টদের শনিবার সকাল ১০টায় সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ‘পুলিশের ওপর হামলার’ ঘটনায় বিএনপির ৮০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
জনবল ও যন্ত্রপাতির সংকটে খুলনা বিভাগের ফায়ার সার্ভিস, ব্যাহত কার্যক্রম
জেসমিনের মৃত্যু মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে, র্যাব হেফাজতে নির্যাতনে নয়: চিকিৎসক
র্যাব হেফাজতে নয়, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণেই সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্ত টিমের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন।
আরও পড়ুন: জেসমিনকে উঠিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে র্যাবের জুরিসডিকশন নিয়ে প্রশ্ন হাইকোর্টের
সোমবার (৩ এপ্রিল) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের এই অধ্যাপক ও ময়নাতদন্তকারী টিমের প্রধান এ কথা বলেন।
এর আগে রবিবার বিকালে জেসমিনের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন তিনি।
আরও পড়ুন: র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না: মোমেন
খুলনায় চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে সকল হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতি
খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহ’র ওপর হামলার প্রতিবাদে খুলনায় চিকিৎসকরা ২৪ ঘন্টার কর্মবিরতি পালন করছেন।
বুধবার (১ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত খুলনা জেলার স্বাস্থ্য সকল প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকরা পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করছেন। সকাল থেকেই সরকারি হাসপাতালের বর্হিবিভাগ ও বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় বিএমএ (বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন) ভবন খুলনার কাজী আজহারুল হক মিলনায়তনে সাংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএমএ খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম।
আরও পড়ুন: অমর একুশে বইমেলায় বোমা হামলার হুমকি আনসার আল-ইসলামের
তিনি বলেন, চিকিৎসকের ওপর হামলাকারী ও তার সঙ্গীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় না আনা হলে বুধবার (১ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত খুলনা জেলার স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান (সরকারি, বেসরকারি স্বায়ত্তশাসিত) সকল প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকরা পূর্ণকর্ম বিরতি পালন করা হবে। শুধুমাত্র মানবিক কারণে জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে। এছাড়া বুধবার সকাল ১০টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের বহি:বিভাগ চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি খুলনা মহানগরীর শেখপাড়ায় অবস্থিত হক নার্সিং হোমে অপারেশন চলাকালীন হামলা করে রোগীর স্বজন শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
আরও পড়ুন: ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ত্রাসী হামলার কোনো সম্ভাবনা নেই: ডিএমপি কমিশনার
হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু, টুঙ্গিপাড়ায় চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগ এনে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা কমলেশ বাগচীর ওপর হামলা করেছে রোগীর স্বজনেরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) চিকিৎসকেরা।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় বিএমএ গোপালগঞ্জ শাখার আয়োজনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
এ ঘটনায় সোমবার রাতে ১০-১৫ জনকে আসামি করে টুঙ্গিপাড়া থানায় মামলা করেন ডা. কমলেশ বাগচী। বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন: ডিমলায় ভূয়া দলিল তৈরি করে জমি দখলকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন
মানববন্ধনে চিকিৎসকেরা বলেন, টুঙ্গীপাড়াসহ সারা দেশেই বিভিন্ন সময় ডাক্তার লাঞ্ছিত হয়। তাই আমরা নিরাপদ কর্মস্থল চাই। টুঙ্গিপাড়ায় চিকিৎসকের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত বিচার না হলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
মানববন্ধনে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন, অর্থোপেডিক চিকিৎসক জুলফিকার, চিকিৎসা কর্মকর্তা তানভীর হোসেন, চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম, চিকিৎসক মনির হোসাইন, চিকিৎসক আলিফ শাহারিয়াসহ ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সংগঠন ফারিয়ার সদস্য ও হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টায় উপজেলার গিমাডাঙ্গা গ্রামের জায়েদ মুন্সী (১৭) জ্বর, শ্বাসকষ্ট, শারীরিক দুর্বলতা ও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) কমলেশ বাগচী তাকে দ্রুত গোপালগঞ্জ সদর অথবা খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নিতে বলেন। কিন্তু পরিবারের লোকজন গড়িমসি করে সময় নষ্ট করে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেননি। এমনকি রোগীর স্বজনেরা চিকিৎসকের দেয়া প্রয়োজনীয় টেস্টও করাননি।
পরে দুপুরে রোগীর অবস্থা আরও গুরুতর হলে নার্স কমলেশ বাগচীকে জানান। তখন তিনি রোগীকে দেখে মৃত ঘোষণা দিয়ে মৃত্যুসনদ দেন।
এতে রোগীর স্বজনেরা ক্ষিপ্ত হয়ে চিকিৎসককে মারধর করেন। পরে হাসপাতালে কর্মচারীরা তাকে উদ্ধার করে কক্ষে নিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
অন্যদিকে, এ বিষয়ে নিহত জায়েদ মুন্সীর চাচা আরিফ মুন্সী বলেন, হাসপাতালে কোন রোগী গেলে চিকিৎসক খারাপ ব্যবহার করে। একজন নার্সকে হুকুম দিয়ে তাদের দ্বায়িত্ব শেষ। তাদের এক থেকে দুই বার ডাকতে গেলে বলে এখান থেকে অন্য কোথাও নিয়ে যান। রোগীর কাছে আসতেই চায়না। এরা সব সময় তাদের ব্যক্তিগত চেম্বার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
এ বিষয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার পরিদর্শক (ওসি) আবুল মুনসুর বলেন, চিকিৎসকের ওপর হামলার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় সোমবার রাতে থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী চিকিৎসক। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রারের ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়মের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের মানববন্ধন
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি-আমেরিকান হত্যা: বিচারের দাবিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে মানববন্ধন
স্বাস্থ্যের ডিজিকে সেবা নিশ্চিত করতে বললেন হাইকোর্ট
চিকিৎসকরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেবা দেয়ার পরও নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
সারা দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না করায় তলবাদেশে তিনি হাজির হওয়ার পর মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন।
ডিজির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।
আরও পড়ুন: কারাগারে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ না দেয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে হাইকোর্টের তলব
এর আগে তলবাদেশে হাজির হওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, এই বিষয়টি অনেকবার এসেছে। কারাগারে থাকা মানুষদেরও স্বাস্থ্যসেবার অধিকার আছে। সেবাটা দেয়া দরকার। আমাদের তো কাউকে ডাকতে (তলব) লজ্জা লাগে। এটা শোভনীয় না। আমরা বাধ্য হয়ে ডাকি।
এ সময় ডিজির পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘এটা কনসিডার (বিবেচনা) করেন। স্বাস্থ্যের সমস্যা কোভিডের জন্য হয়েছে।’
তখন আদালত বলেন, সরকার তো কোনও খাতেই টাকা কম দেয় না।
আদালত ফরিদপুর মেডিকেলের দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, ৪০০ গুণ একটি জিনিসের দাম হতে পারে না। বিদেশিরা দেশ চালায় না?
এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সব জায়গায় ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’
আদালত বলেন, গরিব দেশ হিসেবে যথেষ্ট টাকা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেয় সরকার। ডিজিকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে কোনও কিছু (আদেশ) গেলে রেসপন্স করবেন।
পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম আদালতে বলেন, ‘কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে যে বিলম্ব হয়েছে, এটা অনিচ্ছাকৃত। আমার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমি খুবই দুঃখিত। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে এমন হবে না।’
আরও পড়ুন: সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মায়ের স্বীকৃতি দিলেন হাইকোর্ট
পরে আদালত এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২ মে দিন ঠিক করে দেন এবং ডিজিকে তার ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন।
রিটকারী আইনজীবী জে আর খান রবিন পরে সাংবাদিকদের বলেন, ডিজি আদালতে হাজির হয়ে জানিয়েছেন তিনি সব শূন্য পদে ইতোমধ্যে চিকিৎসক নিয়োগ করেছেন। ১৪১ জন নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ১৩৬ জন যোগদান করেছেন। বাকি পাঁচজন শিগগিরিই যোগদান করবেন।
এছাড়া আদেশ বাস্তবায়নে বিলম্বের জন্য ডিজি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেন।
এছাড়া আদালত ডিজিকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যহতি দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এতদিন কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ সরাসরি হয় না। প্রেষণে নিয়োগ হত। এখন সরাসরি নিয়োগের জন্য একটি কসড়া নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই খসড়া নীতিমালার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দিয়ে ২ মে পরবর্তী শুনানির জন্য ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৫ নভেম্বর দেশের সব কারাগারে শূন্যপদে ডাক্তার নিয়োগ দিতে কারা কর্তৃপক্ষ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে গত ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বলা হয়।
অন্যথায়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হলেও সে আদেশ বাস্তবায়ন না করায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে তলব করেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, কারা চিকিৎসক সংকট নিয়ে দেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে আদালতে রিট দায়ের করেছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খাঁন (রবিন)।
পরে ২০১৯ সালের ২৩ জুন জারি করা রুলে কারাগারে আইনগত অধিকার নিশ্চিত, মানসম্মত থাকার জায়গা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না এবং বন্দিদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে কারা চিকিৎসকের শূন্যপদে নিয়োগ দিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলবদের খুঁজে বের করতে স্বাধীন কমিশন কেন নয়: হাইকোর্ট
আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সুরক্ষা বিভাগ), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও কারা মহাপরিদর্শককে এসব রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
এছাড়াও অপর এক আদেশে আদালত সারা দেশের সব কারাগারে বন্দিদের ধারণক্ষমতা, বন্দি ও চিকিৎসকের সংখ্যা এবং চিকিৎসকের শূন্যপদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।