চলমান
চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদলের সমর্থন
সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে তাদের পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (জেসিডি)। কারণ, তারা মনে করে সীমিত সংখ্যক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন লোক ছাড়া সরকারি চাকরিতে কোটার কোনো প্রয়োজন নেই।
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, ‘আমরা ২০১৮ সালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন দিয়েছিলাম। এখন যে আন্দোলন চলছে তাতেও আমরা সমর্থন দিচ্ছি।’
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রতি ছাত্রদলের সমর্থনের কথা জানান নাসির।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রদল মনে করে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখন যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছে, তার মাধ্যমে কোটা সংস্কারের বিষয়টি চূড়ান্ত সমাধান হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আমাদের বক্তব্য হলো, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য খুব সীমিত সংখ্যক কোটা ছাড়া এই মুহূর্তে বাংলাদেশে কোনো কোটার প্রয়োজন নেই। এটা আমাদের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্রদলের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’
আরও পড়ুন: অসুস্থ খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকিতে: ফখরুল
তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডারদের প্রতিহত করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন সফল হবে বলে তারা আশাবাদী।
নাছির বলেন, ২০১৮ সালে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবি না জানিয়ে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেছিল।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু অবৈধ প্রধানমন্ত্রী কোটা সংস্কার না করে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে ইচ্ছাকৃতভাবে কোটা বাতিল করেছেন।’
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেমন আদালতকে ব্যবহার করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি নিষ্পত্তিকৃত বিষয়ের রায় তার পক্ষে নিয়ে গেছেন, তেমনি একটি মীমাংসিত বিষয়ও তিনি এখন বিচার বিভাগের মাধ্যমে কোটা পুনর্বহালের চেষ্টা করছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার গত ১০ থেকে ১২ বছরে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের ১২ থেকে ১৩ হাজার নেতা-কর্মীকে মুক্তিযোদ্ধাদের জাল সনদ দিয়েছে।
নাছির বলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সুবিধার্থে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘কোটাবিরোধী আন্দোলনে যারা আছেন তাদের অভিনন্দন জানাই। একই সঙ্গে এই ফ্যাসিবাদী ও অবৈধ সরকার যে গুম ও হত্যার সংস্কৃতি চালু করেছে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্যও আমরা আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশে ভারতের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের পক্ষে কথা বলার আহ্বান জানান।
রাকিব বলেন, ‘কোটাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ঢাকা কলেজের সকল নেতাদের আমি বলছি, আপনার কলেজের সহপাঠী আতিকুর রহমান রাসেলকে গুম করা হয়েছে। আমরা আশা করি, আপনারাও তার অবস্থান জানতে চাইবেন।’
ছাত্রদলের ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান রাসেলের সন্ধান চেয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের অভিযোগ, গত ১ জুলাই রাতে রাজধানীর আজিমপুর এলাকা থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ রাসেলকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছে।
আরও পড়ুন: চলমান আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে বিএনপি, সরকারের এ অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন ফখরুল
রাকিব বলেন, কোনো অভিযোগ বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা না থাকলেও কোনো কারণ ছাড়াই রাসেল নিখোঁজ হয়েছেন। ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ছাত্রদল ভয় পায় না। ছাত্রদলের একজন নেতাকর্মীও ভয় পায় না। রাসেলের সন্ধান চাইতে রাস্তায় নামবে ছাত্রদল।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, ‘রাসেল ১২ দিন ধরে নিখোঁজ। আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত। রাসেলের পরিবারও খুব কঠিন সময় পার করছে।’
রাসেল নিখোঁজের বিষয়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নীরব রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
দেরি না করে রাসেলকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া না হলে আগামী দুই দিনের মধ্যে দেশব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বকুল।
সংবাদ সম্মেলনে রাসেলের বাবা আবুল হোসেন সরদারও তার প্রিয় ছেলেকে নিরাপদে ফিরে পাওয়ার দাবি জানিয়ে বক্তব্য দেন।
রাসেলের বাবা আবেগাল্পুত হয়ে বলেন, 'আমি ১১ দিন ধরে খুব অসুস্থ ছিলাম কারণ আমি খেতে বা পান করতে পারি না। আমার দুই ছেলে আছে, একজন বিদেশে থাকে, আরেকজন পড়াশোনার জন্য ঢাকায় থাকে। কিন্তু এখন আমরা তার অবস্থান জানি না। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। গত ২ জুন লালবাগ থানায় জিডি করি। কিন্তু এখনও তার কোনও সন্ধান মেলেনি। আমরা পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু কোনো ফল হয়নি।’
সরদার উল্লেখ করেন, ১১ দিন আগে রাজধানীর আজিমপুর এলাকায় রাসেল নিখোঁজ হন। তিনি বলেন, 'আমার ছেলে ১১ দিন ধরে কোথায় আছে, কী খাচ্ছে জানি না। আমি আমার সন্তানকে ফেরত চাই। আমি জানি না আমার ছেলে কী অপরাধ করেছে... রাজনীতিতে যুক্ত হওয়াটা যদি অপরাধ হয় তাহলে আমার আর কিছু বলার নেই।’
আরও পড়ুন: সরকারের দুঃশাসন দেশকে ধ্বংস করছে: ফখরুল
৩ মাস আগে
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার দেশব্যাপী অবরোধ চলছে
৩ দিনের দেশব্যাপী অবরোধের পর বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা আরও একটি ৪৮ ঘণ্টার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ আজ (রবিবার) সকাল থেকে শুরু হয়েছে।
আজ সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া অবরোধ শেষ হবে মঙ্গলবার সকাল ৬টায়।
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে সড়কে যান চলাচল তুলনামূলকভাবে কম দেখা গেছে। তবে গত সপ্তাহে ৩ দিনের অবরোধের তুলনায় সড়কে বেসরকারি ও গণপরিবহনের সংখ্যা বেশি।
গণপরিবহন যথেষ্ট না থাকায় অফিসগামী, শিক্ষার্থী ও অন্যান্য যাত্রীদের পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
এদিকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধকে সামনে রেখে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েদাবাদ ও গুলিস্তান এলাকায় ৪টি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
রাত ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় নাবিল পরিবহনের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে সারাদেশে বিএনপির ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ
এ নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত পাঁচটি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতোমধ্যে সারা দেশে নজরদারি বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা জোরদারের জন্য তাদের ইউনিটগুলোকে সতর্ক করেছে।
ঢাকার প্রবেশ পথ ও সব বড় স্থানে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে এবং চেকপোস্ট স্থাপন করেছে।
২ দিনের জন্য কর্মসূচি থামিয়ে বৃহস্পতিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঘোষণা করেন, তার দল রবিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া ৪৮ ঘণ্টার দেশব্যাপী অবরোধ পালন করবে।
সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন এই অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল চলছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু রবিবার
অবরোধের তৃতীয় দিন: ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে এ পর্যন্ত ৪ গাড়িতে অগ্নিসংযোগ
১ বছর আগে