ইমরানের মিত্র
পাকিস্তানের সংসদ নির্বাচন: সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী ইমরানের মিত্ররা
প্রায় দুই বছর আগে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর কারাবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মিত্ররা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর চেয়ে জাতীয় নির্বাচনে বেশি আসনে জিতেছে।
রবিবার(১১ ফেব্রুয়ারি) দেশটির নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফলে এই চিত্র দেখা গেছে।
ভোট কারচুপি, নজিরবিহীন মোবাইল ফোন বন্ধ এবং ইমরান খান ও তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টিকে (পিটিআই) ভোট থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগের মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ হয়।
নির্বাচন কমিশন ও সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে তাদের দলের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপের কারণে পিটিআইয়ের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এর একটি পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে দলটির নির্বাচনী প্রতীক কেড়ে নেওয়া, যা নিরক্ষর ভোটারদের ব্যালটে প্রার্থী খুঁজে পেতে সহায়তা করে। আরেকটি ছিল দলীয় সমাবেশ নিষিদ্ধ করা।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড
২০২২ সালে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া ইমরানকে। এরপর গত আগস্ট থেকেই কারাগারে রয়েছেন তিনি। ফৌজদারি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে ইমরান খানকে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিষিদ্ধ করা হয়। এখনও তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বেশ কয়েকটি মামলা বিচারাধীন।
চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বা পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ২৬৬টি আসনের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১০১টি আসন পেয়েছেন।
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক দণ্ডপ্রাপ্ত নওয়াজ শরীফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-এন (পিএমএল-এন) ৭৫ আসন পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পি) ৫৪টি আসন পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে একটি আসনের ফলাফ স্থগিত করা হয়েছে এবং প্রার্থী নিহতের ঘটনায় আরেকটি আসনের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। ২০২২ সালে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রচারণার নেতৃত্বে ছিল পিএমএল-এন এবং পি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচন: স্বতন্ত্র প্রার্থীর কার্যালয়ে বোমা হামলায় নিহত ১৪
কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে সরকার গঠন করতে পারেনি, তাই পাকিস্তানের সরকার গঠনে এবার জোট বাঁধতে হবে। নতুন পার্লামেন্ট দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করবে।
নির্বাচনের ফলাফল নওয়াজ শরিফের জন্য বিব্রতকর। গত অক্টোবরে মসৃণভাবে দেশে ফিরে আসার কারণে শক্তিশালী নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের পছন্দের প্রার্থী হিসাবে তিনি বিবেচিত হয়েছিলেন। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বরাবরই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চূড়ান্ত মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজেদের ভূমিকা তুলে ধরেছে।
কারাদণ্ড এড়াতে নওয়াজ শরিফ চার বছর বিদেশে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকলেও পাকিস্তানে আসার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বাতিল হয়ে যায় তার সাজা।
এমনকি ভোটের দিনও নওয়াজ শরিফ জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, তিনি জোট চান না এবং একটি দলকে পুরো পাঁচ বছরের মেয়াদ দেওয়ার দাবি করেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ইমরান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পেছনে তার দল পিছিয়ে থাকতে দেখে তিনি জোটগঠন ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমঝোতার কথা বলেন।
নওয়াজ শরিফ কখনোই পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকেননি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণা করেছে ইসিপি
১০ মাস আগে