কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি
দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক, বোঝাপড়া জোরদারের লক্ষ্যে কাতারের আমিরের সদ্য সফর: ঢাকা
২৪ ঘণ্টার রাষ্ট্রীয় সফর শেষে মঙ্গলবার বিকালে নেপালের কাঠমান্ডুর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
এই সফর বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে 'উল্লেখযোগ্য অবদান' রাখবে বলে আশা ঢাকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বন্ধুত্বপূর্ণ আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত কাতারের আমিরের এই সফর দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও বোঝাপড়া সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের আমন্ত্রণে কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করেন।
প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন কাতারের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, কাতার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান, কাতার ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির সদস্য।
সোমবার বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি আমিরকে স্বাগত জানান। এ সময় আরও ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বরাষ্ট্র, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, পররাষ্ট্র এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রায় ১৯ বছর পর এই শীর্ষ পর্যায়ের সফর অনুষ্ঠিত হয়।
সফরকালে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও কাতারের আমিরের নেতৃত্বে দুটি দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে ফলপ্রসূ দ্বিপক্ষীয় আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে। এছাড়াও সফর বিনিময় ও সব পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানো এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে।
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, জনশক্তি, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে উভয় পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়েও মতবিনিময় করেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে একটি উন্নত জ্ঞানভিত্তিক বহুমুখী সংস্কৃতির সমাজ হিসেবে কাতারের অবিশ্বাস্য অগ্রগতি ও রূপান্তর এবং আমিরের নেতৃত্বে মধ্যস্থতা ও বহুপাক্ষিক কূটনীতিতে কাতারের ভূমিকার গভীর প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্জনের প্রশংসা করেন কাতারের আমির। বাংলাদেশকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে প্রশংসা করে বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।
উভয় দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখায় কাতারের প্রবাসী কমিউনিটির প্রশংসা করেন তিনি।
জ্বালানি খাতে সমঝোতা ও সহযোগিতার বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে উভয় নেতা জানান, অদূর ভবিষ্যতে অংশীদারিত্ব পর্যায়ে এই সহযোগিতা জোরদার করতে একসঙ্গে কাজ করছে উভয় পক্ষ।
ওই দিনই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কাতারের আমির। রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সফরকালে আমিরকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং তার নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতার প্রশংসা করেন।
সাক্ষাতে দ্বিপক্ষীয় বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার সম্পর্ক এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
পরে আমির তার সম্মানে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।
মধ্যাহ্নভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও ছিলেন। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
৬ মাস আগে