জাতিগত
বাংলাদেশিদের ওপর সকল প্রকার সহিংসতা নিন্দনীয়
বাংলাদেশে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সহিংসতা এবং দুর্দশার কথা উল্লেখ করে অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানিমন্ত্রী ক্রিস বোয়েন বলেছেন, এই কঠিন সময়ে আমাদের সমবেদনা সব বাংলাদেশির প্রতি রয়েছে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, 'সব ধরনের সহিংসতাকে ঘৃণা করতে হবে।
'আমি শুরুতেই বলেছি, সব বাংলাদেশির ওপর সব ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানাতে হবে' উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু হিন্দু, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিষয়টি উত্থাপনের জন্য তিনি এই সুযোগটি নিতে চান।
অস্ট্রেলিয়ান মন্ত্রী বলেন, ‘আমি পশ্চিম সিডনির অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গে মিলে মন্ত্রী ওংকসহ এই বিষয়টি উত্থাপন করে চিঠি দিয়েছি। আমরা এই উদ্বেগগুলো উত্থাপন অব্যাহত রাখব।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে তাদের প্রতিনিধিরা সক্রিয়ভাবে নিশ্চিত করছে যে অস্ট্রেলিয়া স্থিতিশীলতায় বজায় রাখতে ও সহিংসতা থেকে বের হয়ে আসার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে মতামত উপস্থাপন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মোদিকে ইউনূসের ফোন, বাংলাদেশের হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার আশ্বাস
বোয়েন বলেন, ‘অতীতে এই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা হয়েছে, বিশেষত ২০২১ সালে দুর্গাপূজার সময়, তবে আমি এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হাউসের অবগতির জন্য উত্থাপন করতে এবং জাতিগত সংখ্যালঘু বাংলাদেশিদের আশ্বস্ত করতে চেয়েছিলাম যে হাউস দেখছে এবং শুনছে।’
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার এই মন্ত্রী জানান, পার্লামেন্ট সদস্যদের একটি ব্রিফিং ছিল, যাতে তিনি অনলাইনে অংশ নেন।
তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে ড. চার্লটন, ড. ফ্রিল্যান্ডার, অ্যান স্ট্যানলি, থিসলথওয়েট এবং মন্ত্রী হুসিকের অফিস এবং মন্ত্রী রোলিনের অফিসের প্রতিনিধিরা যোগ দিয়েছিলেন। কাম্বারল্যান্ড সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলর সুমন সাহাসহ বাংলাদেশি কমিউনিটির ৪৬ জন নেতা নিজ নিজ ইস্যুতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।’
মন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশে সহিংসতার শিকার পরিবারের তিনজন সদস্যও তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘সেখানে খুব জটিল বিষয় রয়েছে এবং প্রতিটি প্রতিবেদন সঠিক হবে না। তবুও, আমি সন্তুষ্ট, তবে সত্যিকারের যে সমস্যা রয়েছে যা সমাধান করা দরকার। এই বৈঠকে প্রকৃত ইস্যুগুলো উত্থাপিত হয়েছে। তথ্যমতে ৭২৫টি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ৭২৪টি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট করা হয়েছে, ৫৮টি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, ১৭টি উপাসনালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ২১টি উপাসনালয় লুটপাট করা হয়েছে।’
এই পরিসংখ্যানের মধ্যে রয়েছে মানুষের গল্প উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, রাহুল আনন্দের বাড়িতে লুটপাট করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছে যে রাহুলের বাড়িটি সাংস্কৃতিক সম্প্রদায়ের কেন্দ্রস্থল ছিল। রাহুল বাংলাদেশি কমিউনিটিতে খুব জনপ্রিয় একজন সংগীতশিল্পী।
বোয়েন আরও বলেন, এর আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ তার বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। ‘কিন্তু হামলার পর থেকে রাহুল বাংলাদেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। এই ট্র্যাজেডির অনেক গল্পের মধ্যে এটি একটি। সকল সহিংসতাকে ঘৃণা করতে হবে। মন্ত্রী ওং স্পষ্ট করে বলেছেন, আমরা বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা দেখতে চাই। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের প্রচেষ্টাকে আমি সাধুবাদ জানাই।’
আরও পড়ুন: সংখ্যালঘুসহ প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষার আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টার
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার খবর অতিরঞ্জিত: মোদির সঙ্গে ফোনালাপে ইউনূস
২ মাস আগে