দেড়মাস
মেহেরপুরে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ডেঙ্গু রোগী, দেড়মাসে আক্রান্ত ৩৬২
মেহেরপুরে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, গাংনী ও মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও ক্লিনিকগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন আক্রান্তরা।
২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল পর্যন্ত মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ৯, গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫ ও মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন ভর্তি হয়েছেন।
বর্তমানে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ২৫ ও মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, আগস্টে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ৮০, গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬৬ ও মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫ জনসহ মোট ১৫১ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ১২৪, গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭৭ ও মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ জনসহ ২১১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। অর্থাৎ ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬২ জন।
জানা গেছে, সর্দি-কাশি-জ্বর দেখা দিলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই গ্রাম্য পল্লী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। পরে অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতালে আসছেন। এখানে পরীক্ষা করলেই মিলছে ডেঙ্গুর জীবাণু।
সাধারণ রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণ রোগীদের সঙ্গে রাখা হয়েছে ডেঙ্গু রোগীদের। এতে সাধারণ রোগীরাও রয়েছেন ঝুঁকিতে।
স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, স্থান সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের একসঙ্গে রাখা হয়েছে। তবে হাসপাতালে ডেঙ্গু নির্ণয় ও চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।
সূত্র জানা গেছে, মেহেরপুর ও গাংনী পৌরসভা থেকে মশা নিধন স্প্রে না করা, জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আগাম প্রস্তুতি না নেওয়া এবং জনসচেতনতামূলক প্রচারণা না থাকায় বেড়েছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা।
ডেঙ্গু আক্রান্ত গাংনী এলাকার আজিজুল হক রানি, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের গাংনীর এরিয়া অফিসের সমন্বয়ক হেলাল উদ্দিন, সাংবাদিক মাহবুব আলম ও গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত নার্স শাকিলা জানান, ডেঙ্গু রোগীর শরীরে হঠাৎ ১০৩-১০৪ জ্বর দেখা দেয়। জ্বর কমলেও ডেঙ্গুর ভয়াবহতা রয়ে যায়। শুরু হয় পেটব্যথা, মাথাব্যথা, বমি, মাথা ঘোরা, পাতলা পায়খানা ও শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) চিকিৎসক আব্দুল আল মারুফ বলেন, অনেকে জ্বর নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন। তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে রক্ত পরীক্ষা করার। এছাড়া ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু হোক আর হেমোরেজিক ডেঙ্গু যেটাই হোক, এই সময় জ্বর হলেই পরীক্ষা করিয়ে ওষুধ নেওয়া উচিত। ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আবারও ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে রোগীর অবস্থা বেশি ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাই জ্বর হলেই সতর্ক থাকতে হবে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক জমির মোহাম্মদ হাসিবুর সাত্তার বলেন, ‘গত ১ মাস ২২ দিনে জেলায় ৩৬২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় কীট, আলাদা ওয়ার্ডসহ সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। তবে সবখানে প্রচারণা চালানো প্রয়োজন। যাতে সবাই ডেঙ্গু নিয়ে সতর্ক হন। সেক্ষেত্রে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার ও নর্দমায় নোংরা পানি বা জলাবদ্ধতা না থাকে সেই ব্যবস্থা নেওয়াও জরুরি।’
আরও পড়ুন: ফের বেড়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা, আরও এক নারীর মৃত্যু
১ মাস আগে