আন্দোলনে নিহত
সিলেটে কবর থেকে তোলা হচ্ছে আন্দোলনে নিহত ৯ জনের লাশ
সিলেটে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ৯ জনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলা হচ্ছে। সব প্রস্তুতি শেষ হলে যেকোনো সময় লাশগুলো তোলা হবে।
কবর থেকে যেসব লাশ তোলা তার মধ্যে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ৬টি এং বিয়ানীবাজারের ৩টি লাশ রয়েছে।
গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মো. আব্দুন নাসের বলেন, এরই মধ্যে চারজন ম্যাজিস্ট্রেটকে লাশ তোলার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে আলোচনা করে যেকোনো সময় কবর থেকে লাশগুলো তোলা হবে।
পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর পৃথকভাবে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-২ এর বিচারক আবিদা সুলতানা মলি ছয়জনের লাশ তোলার আদেশ দেন।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের আগের দিন গোলাপগঞ্জে ছাত্র-আন্দোলনে গুলিতে নিহত হন উপজেলার নিশ্চিন্ত গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে নাজমুল ইসলাম (২৪), দক্ষিণ রায়গড় গ্রামের মৃত সুরই মিয়ার ছেলে হাসান আহমদ জয় (২০), শিলঘাট গ্রামের কায়ছার আহমদের ছেলে সানি আহমদ (২২), বারকোট গ্রামের মৃত মকবুল আলীর ছেলে তাজ উদ্দিন (৪০), দত্তরাইল বাসাবাড়ি এলাকার আলাই মিয়ার ছেলে মিনহাজ আহমদ (২৩) ও ঘোষগাঁও ফুলবাড়ি গ্রামের মোবারক আলীর ছেলে গৌছ উদ্দিন (৩৫)।
এসব ঘটনায় গোলাপগঞ্জ থানায় পৃথকভাবে ছয়টি মামলা হয়। আরও একটি মামলা করা হয় আদালতে। সবকটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ-সদস্যসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ কয়েকশ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, সরকার পতনের কারণে সে সময় লাশগুলোর ময়নাতদন্ত করা হয়নি। যে কারণে ময়নাতদন্তের জন্য মামলাগুলোর তদন্ত কর্মকর্তারা আদালতে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে লাশ তোলার আদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে চার মামলায় জামিন পেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর
এদিকে বিয়ানীবাজারে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিয়ানীবাজার থানা চত্বরে বিজয় উল্লাসের সময় উৎসুক জনতা বিয়ানীবাজার থানায় অগ্নিসংযোগসহ লুটপাট করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায় পুলিশ। এ সময় বিয়ানীবাজার পৌর শহরে ঘটনাস্থলেই ৩ জন মারা যান, আহত হন আরও অন্তত ১০জন।
এ ঘটনায় নিহত তারেক আহমদ, রায়হান আহমদ ও ময়নুল ইসলামকে ৬ আগস্ট দিনের বিভিন্ন সময়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করেন স্বজনরা। এসব ঘটনায় বিয়ানীবাজার থানায় তিনটি হত্যা মামলা রেকর্ড হয়েছে। নিহত তিনজনের লাশ দ্রুত উত্তোলন করে ময়না তদন্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, আদালত থেকে নিহতদের লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিগগির তাদের লাশ উত্তোলন করা হবে।
বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.এনামুল হক চৌধুরী জানান, আদালতের পূর্ণাঙ্গ নির্দেশনা হাতে আসেনি। পুরো আদেশ পাওয়ার পরই লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, ছেলে তারেক আহমদ নিহতের ঘটনায় ২০ আগস্ট বাদী হয়ে প্রথম মামলা দায়ের করেন তার মা ইনারুন নেসা। যদিও ২২ আগস্ট এ মামলা প্রত্যাহারে সিলেটের আদালতে আবেদন করেন তিনি। যেখানে উল্লেখ্য করেন আসামি কাউকেই তিনি চেনেন না। অপরদিকে একই সময়ে নিহত আরও দুইজন রায়হান আহমদ এবং ময়নুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা বাদী হয়ে পৃথক দু’টি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি গ্রেপ্তার
১ মাস আগে