পররাষ্ট্রনীতি
একটা দেশের কাছে পররাষ্ট্রনীতি বন্ধক দেওয়া হয়েছিল: শফিকুল আলম
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার নীতিতে আছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আমাদের পররাষ্ট্র নীতি একটা দেশের কাছে বন্ধক দেওয়া হয়েছিল। এখন পররাষ্ট্রনীতি স্বাধীন।
তিনি বলেন, আমরা সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখছি। সেটা ভারত হোক, সেটা চীন হোক, যুক্তরাষ্ট্র হোক সবার সঙ্গে আমরা একটা সুসম্পর্ক রাখছি। আমি চাই আমার সঙ্গে তার সম্পর্ক হোক মর্যদার ও ন্যায্যতার এবং সেই জায়গায় আমরা গিয়েছি।বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে প্রেস সচিব বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কোনো কিছুই বাঁধা হবে না। বাংলাদেশের জনগণের যদি অংশগ্রহণ থাকে, কোনো কিছুই বাঁধা না। আগে তো জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়নি। তার আগেই রাতের বেলা ব্যালট পড়েছে। যখন ফ্রি অ্যান্ড সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তখন মানুষই রক্ষাকারী ঢাল হিসেবে কাজ করে।তিনি বলেন, ভালো নির্বাচনে একটা উৎসবের আমেজ হয়। কারণ আপনি যান, আমিও যাই। আমি আমার ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছি, উনি ওনার বৃদ্ধা বাবা-মাকে নিয়ে যাচ্ছেন। সবার অংশগ্রহণ থাকলে নির্বাচন সুন্দর হবে। আমরা আশাকরি এই নির্বচনটা খুবই উৎসবমুখর পরিবেশে, ভালো নির্বাচন হবে।তিনি আরও বলেন, প্রতি নির্বাচনে আমাদের কিছু না কিছু ভায়োলেন্স (সহিংসতা) হয়। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে ভায়োলেন্স জিরোতে নামিয়ে আনা। সেটার জন্য আমরা কয়েক দফা মিটিং করেছি। আমরা গত মিটিয়ে বলেছি- দেড় লাখ পুলিশ সদস্য নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবেন এবং তাদের ট্রেনিং শুরু হয়েছে। সেনাবাহিনীর কথা বলেছি। আশা করা যায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।
পড়ুন: নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই হবে, একদিনও দেরি হবে না: শফিকুল আলমআর এক প্রশ্নের উত্তরে শফিকুল আলম বলেন, প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করা কষ্ট সাধ্য কাজ ছিলো। গত ১২ মাসে বর্তমান সরকার এখানে অনেক শ্রম দিয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি, আপনারা দেখেছেন এখন অনেকেই নিরপেক্ষ। আমরা আশাকরি আওয়ামী লীগের অপশাসন থেকে আমাদের সমাজের সকলেই এখান থেকে শিক্ষা নেবেন। সাংবাদিকদের জন্যও একটা বড় শিক্ষা।তিনি বলেন, আমি আসলে একটা পার্টির সঙ্গে নিজেকে কতোখানি জাড়িয়ে ফেলবো। আপনি একটা রাজনৈতিক দলকে সাপোর্ট করতেই পারেন। কিন্তু ওটা করতে গিয়ে যদি আপনি হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দেন, নির্বাচনহীনকে বৈধতা দেন, তখন তো আর আপনার নিরপেক্ষতা থাকে না।তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রত্যেকটা সেক্টরে দোষর ছিল। হাসিনার মতো একটা মনস্টার তৈরি হয়েছে এদের দ্বারায়। আপা আপা বলতে বলতে তো ফেনা ফেলতো। ভবিষ্যতে আবার রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় আসবে, আমি আমাকে কতটুকু সংযত করব, সেটার শিক্ষা নিতে হবে। একটা দলকে আপনি সমর্থন করতেই পারেন, তাই বলে তার হত্যাযজ্ঞকে, ব্যাংক লুটকে বৈধতা দেওয়ার কাজগুলো সে সময় হয়েছে। এটা থেকে যদি আমরা সবাই শিক্ষা নেই—তাহলে আমাদের দেশে আর একটা মনস্টার তৈরি হবে না।চাঁদাবাজি এক প্রশ্নের উত্তরে প্রেস সচিব বলেন, গত কয়েক সপ্তাহে কিন্তু হাই প্রোফাইলের চাঁদাবাজ গ্রেপ্তার হয়েছে। চাঁদাবাজির বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি। সরকার যথেষ্ট কাজ করছে, পুলিশ প্রশাসনকে বলে দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো ধরনের চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটলে আপনাদের কাছে প্রমাণ থাকলে দেবেন, আমরা সে অনুযায়ী কাজ করব।জনশক্তি রপ্তানির ও ভিসা জটিলতার ক্ষেত্রে এই সরকার কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে কত লোক প্রতিমাসে বিদেশ যাচ্ছে সেই ডেটা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে আছে। আমরা সে তথ্য লুকাচ্ছি না। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতি মাসে ডেটা দেয়, সেখানে কোনো মাসে বাড়ে, কোনো মাসে কমে, সেটা আপনারা দেখেছেন।তিনি আরও বরেন, এই সরকারের বড় সাফল্য হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে জনশক্তি নেওয়া বন্ধ ছিল ও ভিসা দেয়া বন্ধ ছিল, সে জায়গায় জট ছাড়াচ্ছি। মালয়েশিয়া ও জাপান নিয়ে কাজ করছি। এক লাখ লোক জাপান নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিটি জায়গায় আমরা কাজ করার চেষ্টা করছি। কোরিয়াতেও আমাদের কাজ হচ্ছে আমাদের চেষ্টার কোনো অন্ত নেই।ভিসা জটিলতা নিয়ে প্রেস সচিব বলেন, এটা আগের সরকারের আমল থেকেই শুরু হয়েছে। ইউএই ভিসা বন্ধ হয়েছে কিন্তু আমাদের আমলে না, ২০১২-১৩ সাল থেকেই বন্ধ ছিল। আমরা চেষ্টা করছি সামনেও অব্যাহত থাকবে। আস্তে আস্তে যে ঝামেলাগুলো হচ্ছে সেটা কেটে যাবে।যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে শফিকুল আলম বলেন, ২৫টি বিমানতো এক দিনে কেনা হচ্ছে না, সময়টা দেখেন অনেক বছর ধরে কেনা হবে। ততোদিনে আমাদের এয়ার ট্রাফিকের উন্নয়ন হবে। প্রতি বছরই তো উন্নয়ন হচ্ছে। কোনো কোনো বছর তো দুই সংখ্যায় বাড়ে হয়। আমরা বোয়িং কেন দিচ্ছি, আমাদের পাইলটদের প্রশিক্ষণ হয় বোয়িংয়ে। পৃথিবীতে দুইটা এয়ারলাইন্স আছে কেউ এয়ারবাসকে নিচ্ছে, কেউ বোয়িংকে নিচ্ছে। আমরাও নিচ্ছি, ইন্দোনেশিয়াও নিচ্ছে। এখন দেওয়ার মানে হচ্ছে আমরা যাতে ঠিক মতো সাপ্লাই পাই। প্রথম সাপ্লাই কবে আসে সেটা দেখে নিয়েন। এটা যদি কালকে আনা হতো—তাহলে বলতে পারতেন কোথায় রাখব। কিন্তু আমাদের প্রতিমাসে একটা বৃদ্ধি আছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফ সভাপতি মাসউদুল হক। সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক উবায়দুল্লাহ বাদল। এ সময় প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামূল কবীর উপস্থিত ছিলেন।
১২৭ দিন আগে
ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ককে বাণিজ্যের চোখে দেখে ওয়াশিংটন: কুগেলম্যান
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ব্যাপকভাবে বিদেশি সহায়তা কমিয়েছে মন্তব্য করে দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক গবেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, “বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়া কিংবা রাষ্ট্রগঠনে অর্থব্যয়ে তাদের আগ্রহ ‘নিতান্তই কম’।”
এ সময়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মধ্যকার সাম্প্রতিক ফোনালাপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উভয় দেশের পক্ষ থেকে ওই ফোনালাপের যে বিবরণ প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট হয়েছে যে ওয়াশিংটনের কাছে এখন ঢাকার সঙ্গে সম্পর্কের গুরুত্ব বাণিজ্য ও আঞ্চলিক বৃহৎ শক্তিগুলোর সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার ক্ষেত্রে।’
ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কূটনীতি বিষয়ক সাময়িকী ফরেন পলিসির উইকলি সাউথ এশিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
কুগেলম্যান লিখেছেন, দুই নেতা অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার ও ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের (ইন্দো-প্যাসিফিক) নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে অংশীদারিত্বের বিষয়ে আলোচনা করেন। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তার অর্থ হলো চীনের প্রভাব মোকাবিলা।
কিন্তু এ দুটো লক্ষ্যই বাংলাদেশের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে বলে মনে করেন এই এই দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি না হলে বাংলাদেশকে ৩৭ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়তে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবেই জোট নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতিতে অটুট রয়েছে, এতে কোনো বড় শক্তির পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান না নেওয়ার কৌশল অনুসরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ: রাষ্ট্রদূত তারেক
এর আগে গেল সোমবার (৩০ জুন) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর ফোনালাপে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। এটি ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের ক্ষমতা নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সর্বোচ্চ পর্যায়ের আলোচনাগুলোর একটি।
কুগেলম্যান বলেন, ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। বাইডেন প্রশাসনের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র শেখ হাসিনার দেশ থেকে পলায়নের পর গণতন্ত্র পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে উন্নয়ন সহায়তা ও কারিগরি সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
ফোনালাপের পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধান উপদেষ্টা উভয়েই যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়েছেন।’
ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষিত শুল্ক নীতিমালার আওতায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এ সংকট মোকাবিলায় গত এপ্রিলে জরুরি বৈঠক করে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
এরই অংশ হিসেবে নতুন শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক কাঠামো ঘোষণা করেছেন অর্থ উপদেষ্টা, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত বাণিজ্য চুক্তি সহজ করার চেষ্টা চলছে।
চলমান আলোচনা থেকে শুল্ক সংকটের সমাধান আসবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ সরকার। আগামী ৮ জুলাই এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় দফা বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
১৫২ দিন আগে
নতজানু নয়, বাস্তবসম্মত পররাষ্ট্রনীতি চাই: উপদেষ্টা মাহফুজ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, তারা আলোচনার সক্ষমতা জোরদারে করার মাধ্যমে 'নতজানু পররাষ্ট্রনীতির' পরিবর্তে সব দেশের সঙ্গে একটি 'বাস্তবসম্মত সম্পর্ক' তৈরি করতে চান।
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, 'আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দর কষাকষির শক্তি বাড়াতে আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে চাই।’
উপদেষ্টা জাতীয় নিরাপত্তা, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সরকারের লক্ষ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো দলীয় এজেন্ডা পালন করার পরিবর্তে বাংলাদেশের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করবে।
তিনি বলেন, সরকার বাংলাদেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে সবার আগে রাখে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে মাহফুজ বলেন, এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং তারা শুনছেন তাকে হস্তান্তর করা হবে না।
মাহফুজ বলেন, 'আমাদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, তারা রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, তাকে ফেরত দেবেন না বা আমরা শুনছি।’
আরও পড়ুন: ভারত-চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে বাংলাদেশের: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
জসিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় 'নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা: অভ্যন্তরীণ সংস্কার ও পররাষ্ট্রনীতি' শীর্ষক পররাষ্ট্রনীতি সংলাপে অংশ নিয়ে এ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামও সংলাপে যোগ দিয়েছিলেন।
৩৪১ দিন আগে
জাতীয় স্বার্থ চালিত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ভারত ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা ব্যাখ্যা করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সবই জাতীয় স্বার্থ নিয়ে।
মঙ্গলবার ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিস (ইউএসআইপি) আয়োজিত যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের অগ্রগতি এবং গত ৫০ বছরের শিক্ষা নিয়ে ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথন’ শিরোনামের এক অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেন মোমেন।
ইউএসআইপির প্রেসিডেন্ট ও সিইও লিজ গ্র্যান্ডে অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন এবং রাষ্ট্রদূত টেরেসিটা শ্যাফার এটি সঞ্চলনা করেন।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাস দমনে র্যাবের ভূমিকা স্বীকৃত, তবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সময় লাগবে: ব্লিনকেন
ইউএসআইপি এর মতে, বাইডেন প্রশাসন ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বাস্তবায়ন করায় প্রতিবেশী ভারত ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বলছে বাংলাদেশ মার্কিন নীতিনির্ধারকদের ক্রমবর্ধমান দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও দেশটির জনগণের সমর্থন বাংলাদেশ কখনো ভুলতে পারবে না উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে।’
তবে তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের আরও সম্পদের প্রয়োজন এবং ভারতের কাছে বিনিময়ের মতো এত সম্পদ নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়তা করতে হবে এবং তাদের (চীনের) ঝুড়ি ভর্তি অর্থ রয়েছে। চীন ঝুড়ি ভর্তি অর্থের সঙ্গে সাশ্রয়ী ও আকর্ষণীয় প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল।’
মোমেন দাবি করেন, বাংলাদেশ ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং চীন কিছু মেগা প্রকল্প নির্মাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশের উষ্ণ সম্পর্কের ভিত্তি করে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, এমনকি ভারত চীনের কাছ থেকে ঋণ নেয় যদিও তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক নেই। ‘এটি একটি খুব অদ্ভুত পৃথিবী।’
তিনি বলেন, ভারত ও চীনের নিজস্ব সমস্যা রয়েছে এবং বাংলাদেশ সে সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। ‘আমরা একটি নিরপেক্ষ সম্পর্ক বজায় রাখি।’
মোমেন বলেন,চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জটিলতা থাকতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে শুধু উন্নয়ন প্রচেষ্টার জন্য সম্পর্কযুক্ত। ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আমরা আপস করি না।’
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দুটি চিঠির কথা উল্লেখ করে বলেন, এই দুটি চিঠি ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে অংশীদারিত্বের গল্প বলে।
এ বছর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী পালন করেছে।
১৩৩৯ দিন আগে
বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতির মূল দর্শন নিয়ে ৭ দিনব্যাপী চিত্রপ্রদর্শনী
'সকলের সাথে বন্ধুত্ব এবং কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্রনীতির মূল দর্শন নিয়ে গুলশানের বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ পার্কে সাত দিনব্যাপী চিত্রপ্রদর্শনী শুরু হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করা হয়। এটি ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্র নীতি 'সকলের সাথে বন্ধুত্ব এবং কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়' এর কারণেই বাংলাদেশ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের স্বীকৃতি অর্জন করতে পেরেছিল।
আরও পড়ুন: জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের প্রতিজ্ঞা নিন: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর এই নীতি, তার যাদুকরী ক্ষমতা এবং ব্যক্তিত্বের কারণে স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের ১৩৬টি দেশের মধ্যে ১২৬টি দেশই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, সরকার প্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে সাড়ে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এই অল্প সময়ে রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে তিনি নিজের জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও দিক নির্দেশনার স্বাক্ষর রাখেন। নেতৃত্ব, প্রজ্ঞা এবং বিশ্ব নেতাদের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্কের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু কূটনৈতিক সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল দর্শন দিয়ে গিয়েছিলেন 'সকলের সাথে বন্ধুত্ব এবং কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়'।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ফোরামে বঙ্গবন্ধুর পদক্ষেপ, শান্তিকেন্দ্রিক এবং টেকসই উন্নয়ন কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি অব্যাহত রেখেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। তার গতিশীল নেতৃত্বে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল এবং কর্ণফুলী টানেলের মতো বৃহৎ অবকাঠামো নির্মিত হচ্ছে। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ অচিরেই উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।’
আরও পড়ুন: মুজিব বর্ষে ঘর পাচ্ছেন ফরিদপুরের দেড় হাজার গৃহহীন পরিবার
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান ও অপরাজিতা হক, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, স্পেন, সুইজারল্যান্ড, ভ্যাটিকান সিটি, ডেনমার্ক, কসভো, মরক্কোর রাষ্ট্রদূত, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন, এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, ডিএনসিসির কাউন্সিলররাসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মুজিব বর্ষেই বঙ্গবন্ধুর বাকি খুনিদের দেশে আনা সম্ভব হবে, আশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
১৭১৬ দিন আগে
রাজধানীতে পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কসমস সংলাপ
রাজধানীতে ‘পররাষ্ট্রনীতিতে মূল্যবোধ বা তার অনুপস্থিতি’ শীর্ষক এক সংলাপ শনিবার সকালে শুরু হয়েছে।
২১১৩ দিন আগে