চট্টগ্রাম
মাদকের টাকার জন্য স্ত্রীকে হত্যা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদকের টাকার জন্য স্ত্রী তানিয়া বেগমকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ফারুক (৩৪) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। এরপর থেকে স্বামী পলাতক।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) পৌর এলাকার পুনিয়াউট (হাসিনাবাগ) এলাকার ভাড়া বাসার বাথরুম থেকে তানিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে যুবকেকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
তানিয়া বেগম নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের কাঠালকান্দি গ্রামের রফিকুল ইসলাম ছোটন মিয়ার মেয়ে। আর স্বামী ফারুক জেলার কসবা উপজেলার খাড়েরা গ্রামের শাহআলম মিয়ার ছেলে।
পুলিশ জানায়, ফারুক মাদকাসক্ত ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে মাদকের টাকার জন্য ফারুক তার স্ত্রীকে মারধর করে। এর জেরে শুক্রবার ভোরে ফারুক শ্বাসরোধ করে তানিয়াকে হত্যা করে লাশ বাথরুমে ফেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে তানিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, ‘আমরা ফারুককে আটকের চেষ্টা করছি। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’
আরও পড়ুন: বরিশালে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
চুয়াডাঙ্গায় কিশোর হত্যায় একজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড
চট্টগ্রামে শনিবার সকাল ৬টা থেকে ১৪ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল
চট্টগ্রাম মহানগরীতে শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টা শিথিল থাকবে কারফিউ। এদিকে শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল চট্টগ্রামে।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় সিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় দেশব্যাপী কারফিউ জারি করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট
শুক্রবার সরকারি বন্ধের দিন ১২ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকায় আগের দিনের মতোই যানবাহনের চাপ ছিল সড়কগুলোতে। কারফিউ শিথিল সময়ে মহাসড়কে চলছে দূরপাল্লার যানবাহন।
সকাল থেকে নগরীতে আসা-যাওয়া করছে পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ ও যাত্রীবাহী বাস। সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে অস্থিরতা শুরু হলে নাশতা প্রতিরোধে সরকার গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে, মোতায়েন করা হয় সেনা সদস্যদের।
এরপর পরিস্থিতি উন্নতি হলে কারফিউ শিথিল করা হলেও তা তুলে নেওয়া হয়নি। তারই ধারবাহিকতায় শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
রাত ৮টার পর থেকে আবার চলবে কারফিউ।
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে কারফিউ চলাকালে রাতে ককটেল বিস্ফোরণ ইউএনবি নিউজ মুন্সীগঞ্জ PUBLISH-
‘কারফিউ’ ভেঙে খুলনায় সমাবেশ করবে বিএনপি: ফখরুল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৪ জুলাই) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার জিন্দাপুর ইউনিয়নের চারপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- মুরাদনগর উপজেলার বাইরা গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে সাব্বির (২০), জিন্দাপুর গ্রামের হাফেজ মিয়ার ছেলে রাব্বি (২১) ও জিন্দাপুর ইউনিয়নের মালাই গ্রামের কাদির মেম্বারের ছেলে পিয়াস।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, সাব্বির মোটরসাইকেলে করে নবীনগর যাওয়ার সময় চারপাড়া ব্রিজের কাছে রাব্বির মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সাব্বির এবং কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাব্বি ও পিয়াসের মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রামে কোটা আন্দোলন: ২৭ মামলায় ৭০৩ গ্রেপ্তার
কোটা আন্দোলন ঘিরে ভাঙচুর, হত্যাচেষ্টা, অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরণের ঘটনায় চট্টগ্রাম মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন থানায় ২৭টি মামলা দাযের করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৬ জুলাই রাত থেকে ২৪ জুলাই সকাল ৮টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭০৩ জনকে।
আরও পড়ুন: সালিশে নারী নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, ২ ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
পুলিশ আরও জানায়, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে গত ১৬ জুলাই নগরীর পাঁচলাইশ থানার মুরাদপুর এলাকায় তিনজন নিহত হন। ১৮ জুলাই চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাটে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হন। এদিন বহদ্দারহাট সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ চবি শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়া ২৩ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
সিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ ইউএনবিকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে কোটা আন্দোলনে হত্যা, দাঙ্গা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও নাশকতার ঘটনায় ১৬টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ জনসহ মোট ৩৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রামে কোটা আন্দোলন ঘিরে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় ১১টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৭ জনসহ মোট ৩৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলন: শেরপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ৩ মামলা, গ্রেপ্তার ৮
নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে ডিবির অভিযান, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতিসহ গ্রেপ্তার ৭
বান্দরবানে কেএনএফের ২ সদস্য নিহত
বান্দরবানের রুমা উপজেলার সৈকত পাড়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) দুই সদস্য নিহত হয়েছেন।
তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: কেএনএফের তৎপরতা নিয়ে ঢাকায় সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই: ডিএমপি কমিশনার
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সকালে ওই এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে কেএনএএফের দুই সদস্য নিহত হয়েছেন।
এ সময় বেশ কিছু অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে সেনা অভিযানে ২ কেএনএফ সদস্য নিহত: আইএসপিআর
বান্দরবানে অস্ত্রসহ কেএনএফের আরও ৯ সদস্য গ্রেপ্তার: আইএসপিআর
চট্টগ্রামে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ
চট্টগ্রামচট্টগ্রামে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এসময় বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুর ১২টায় বাকিলয়া নতুন ব্রিজ এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর কর্ণফুলীর শাহ আমানত সেতু (নতুন ব্রিজ) এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে কোটা আন্দোলনকারীরা। এতে বন্ধ হয়ে যায় দক্ষিণ চট্টগ্রামে চলাচলকারী সব যানবাহন। পরে পুলিশ শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরাতে গেলে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছে, পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তারপর কয়েকজনকে আটক করে।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের ওপর তারা পাল্টা আক্রমণ করেছে। তাদের যে আক্রমণাত্মক ভঙ্গি, এটা কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীদের হতে পারে না। তারা অসৎ উদ্দেশ্যে ঢাকা-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করতে ও নাশকতা করতে সমবেত হয়েছিল।’
এসময় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান উপকমিশনার।
এদিকে কোটা আন্দোলনকারীদের 'কমপ্লিট শাটডাউন' কর্মসূচিকে ঘিরে চট্টগ্রাম নগরীতে বড় ধরনের কোনো প্রভাব পড়েনি। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন জেলার সড়কগুলোতে যান চলাচল সীমিত রয়েছে। বন্ধ আছে দূরপাল্লার যান চলাচল।
আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন করছি। আমরা শুরু থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের ওপর যখন পৈশাচিক হামলা চালানো হয়েছে, তখন আমরা প্রতিরোধ করেছি। প্রতিরোধ গড়েও ব্যর্থ হয়েছি। ফলে আমাদের ভাইয়েরা শহীদ হয়েছে। হাজারো ভাই-বোন আহত হয়েছে।
চবি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা, আজকের মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ
কোটা সংস্কার আন্দোলনের চলমান পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) দেওয়া নির্দেশনা মেনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানায় চবি প্রশাসন।
বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম।
তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ১০টায় জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মেয়েদের সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে এবং ছেলেদের রাত ১০টার মধ্যে হল ত্যাগ করতে হবে।
এছাড়াও হল প্রভোস্টদের সবগুলো রুম সিলগালা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে দুপুর আড়াইটা থেকে রাত পর্যন্ত নিয়মিত শিডিউলে শাটল ট্রেন চলবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কোটা আন্দোলন: চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনজন নিহত
চট্টগ্রামে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) নগরীর ষোলশহর থেকে মুরাদপুর এলাকার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেছেন, নিহতদের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র আকরাম (২৪) ও পথচারী ফারুক (৩৫)। এছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে আরও একজনের পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে শিক্ষার্থী নিহত
ফারুকের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেলেও আকরামের শরীরে দৃশ্যমান কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি জানিয়ে কমিশনার বলেন, ফলে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ষোলশহরের ২ নম্বর গেট ও মুরাদপুরসহ নগরীর একাধিক স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে। ফলে ঠিক কোনো স্থানে মৃত্যুগুলো হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীনও গণমাধ্যমে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, দ্বিতীয় দিনের মতো মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুরো ষোলশহর ২ নম্বর গেইট থেকে মুরাপুর পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার আন্দোলন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ
এর আগে, চবিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে বিকাল ৩টা থেকে ষোলশহর স্টেশনে জড়ো হওয়া শুরু করে। এরপর তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হন।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি অংশ মিছিল নিয়ে দুই নম্বর গেট থেকে মুরাদপুরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এরপর বিকেল ৪টার দিকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এরইমধ্যে থেমে থেমে ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে; কারো কারো হাতে অস্ত্রও দেখা যায়।
তবে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের অবস্থান চোখে পড়েনি। নগরীরর কেজিডিসিএল কার্যালয়ের সামনে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান করছেন।
মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মুরাদপুর-ষোলশহরে সংঘর্ষ চলছে।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, তারা মুরাদপুর হয়ে অবস্থান কর্মসূচি সফল করতে ষোলশহর এলাকায় যাওয়ার পথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা করেন। এরপর তারা আত্মরক্ষার্থে পাল্টা হামলা চালান।
এসময় তাদের ২ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
কোটা সংস্কার দাবিতে সীতাকুণ্ডে সড়ক-রেলপথ অবরোধ, ৬০ কিলোমিটার যানজট
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার(১৬ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন আইআইইউসির শত শত শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: ঢাবি ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী-ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ
এসময় মহাসড়কের উভয়দিকে ৬০ কিলোমিটার যানজট লেগে দুর্ভোগে পড়েন হাজার হাজার মানুষ। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের বৈঠকের পর শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়।
কোটাবিরোধী আন্দোলন: সংঘর্ষ এড়াতে চবির শাটল ট্রেন বন্ধ
চট্টগ্রামে কোটাবিরোধী চলমান আন্দোলনে সংঘর্ষ এড়াতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) যাতায়াতের প্রধান বাহন শাটল ট্রেন বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম।
অহিদুল আলম বলেন, ‘ক্যাম্পাসে শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করতে বহিরাগত আনা হতে পারে এই খবরে শাটল ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সংঘর্ষ এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি শৃঙ্খলা বজায় থাকে তাহলে বুধবার (১৭ জুলাই) থেকে ট্রেন চলবে।
এদিকে ট্রেন বন্ধ থাকায় যাতায়াত সমস্যায় পড়েছে শহর ও ক্যাম্পাসগামী শিক্ষার্থীরা।
উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ানুর রহমান বলেন, ‘শাটল ট্রেন আমাদের একমাত্র বাহন। বিভিন্ন প্রয়োজনে শহরে যেতে হয়। ক্যাম্পাস শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে। শাটল অবরোধ করে সংঘর্ষ এড়ানো হয় কীভাবে বুঝি না। যারা আন্দোলনে যেতে ইচ্ছুক তারা যেকোনো ভাবেই চলে যাবে। কিন্তু যারা প্রয়োজনীয় কাজে শহরে যাবে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’
এর আগে সোমবার চবি ক্যাম্পাসে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
এদিন দুপুরে চবি শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফিকে শাটল ট্রেন থেকে তুলে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে আন্দোলনকারীদের চাপের মুখে তাকে প্রক্টর অফিসের কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়।