বরিশাল
গাছ কাটা নিয়ে দ্বন্দ্বে ২ বৃদ্ধের মৃত্যু!
বরিশালের উজিরপুরে বুধবার রাতে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে বাক-বিতণ্ড চলাকালীন অসুস্থ হয়ে দুই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
তারা হলেন- উজিরপুর উপজেলার শোলক এলাকার মৃত কামিনী দত্তের ছেলে চিত্ত দত্ত (৬২)ও একই এলাকার মৃত করিম সরদারের ছেলে আব্দুল হক সরদার (৬০)।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মাদকাসক্ত ছেলের দায়ের কোপে বৃদ্ধের মৃত্যু
স্থানীয়রা জানায়, মৃত আব্দুল হক সরদার কিছুদিন আগে চিত্ত দত্তের বড় ভাই মন্টু দত্তের কাছ থেকে জমি ক্রয় করেন। সম্প্রতি চিত্ত দত্তের অপর ভাই শংকর দত্তের ছেলে দুর্জয় দত্ত সেই জমির ওপর থাকা কিছু গাছ বিক্রি করেন। বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার সন্ধ্যায় আব্দুল হক সরদার লোকজন নিয়ে সেখানে যান এবং দুর্জয় দত্তের কাছে গাছ বিক্রির কারণ জানতে চান। এসময় তাদের মধ্যে বাগ-বিতাণ্ড হয় এবং আব্দুল হক সরদারের লোকজন দুর্জয়কে চর-থাপ্পরও দেন। এই সময় দুর্জযয়ের চাচা চিত্ত দত্ত ঘটনাস্থলে আসেন ও আব্দুল হক সরদারের সঙ্গে বাগ-বিতান্ডায় জড়িয়ে যান এবং তারা হাতাহাতিও হয়।
এক পর্যায়ে চিত্ত দত্ত মাটিতে লুটিয়ে পরেন। তাৎক্ষণিক তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে নিয়ে গেলেচিকিৎসক চিত্ত দত্তকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: নেত্রকোনায় পানিতে ডুবে বৃদ্ধের মৃত্যু
এদিকে চিত্ত দত্তকে নিয়ে আসার কিছুক্ষণ পর আব্দুল হক সরদারও অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। তাকেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আর্শাদ বলেন, খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে আমরা এসেছি। চিকিৎসকের দেয়া তথ্যানুযায়ী উভয়ের মৃত্যু স্ট্রোকের কারণে হয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ছাগলের জন্য বিপাকে পুলিশ!
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানা এলাকায় একটি ছাগলসহ দুই যুবককে আটক করা হয় ২০ এপ্রিল। দুই যুবককে পরের দিন আদালত জেল হাজতে পাঠালেও ছাগল রয়েছে থানাতেই। আর এই নিয়েই বিপাকে পড়েছে পুলিশ।
থানা সূত্রে জানা গেছে, ২০ এপ্রিল সন্ধ্যায় নগরীর ব্রজমোহন কলেজের সামনে তালভিটা দ্বিতীয় গলির মুখ থেকে তানজিম ও নাদিম নামে দুই যুবককে একটি চোরাই ছাগলসহ আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরেরদিন গোয়েন্দা পুলিশের এসআই ফিরোজ আলম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে আটক দুইজনকে আদালতে পাঠালে আদালত জেল হাজতে প্রেরণ করে। তবে ছাগলটি কোতোয়ালি মডেল থানার হেফাজতে রাখা হয়েছে। এই ছাগলের দুর্গন্ধে পুরো থানা ভবনে অতিষ্ঠ পুলিশ সদস্যরা।
এক নারী পুলিশ সদস্য জানান, এক মাসের বেশি সময় ধরে থানা ভবনের নিচ তলায় অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের রাখার কক্ষের সামনে বেঁধে রাখা হয়েছে ছাগলটি। ছাগলটিকেও খাবার দিতে হচ্ছে। আর ছাগলের মল মূত্রের দুর্গন্ধে টেকা দায়।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক লোকমান হোসেন বলেন, আদালত থেকে কোনো নির্দেশনা না দেয়ায় ছাগলটি থানাতে রাখা হয়েছে। ছাগলের কোনো মালিকও আসছে না। তাই এই ছাগল নিয়ে আমরা একটা ঝামেলার মধ্যে রয়েছি।
আরও পড়ুন: বরিশালে সাংবাদিককে অপহরণ চেষ্টার অভিযোগে আটক ১
বরিশালে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে স্বামীর ‘আত্মহত্যা’
উজিরপুরে নিখোঁজের ৪ দিন পর শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার
বরিশালের উজিরপুরে নিখোঁজের চার দিন পর তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র দীপ্ত মন্ডলের বস্তাবন্দি লাশ ডোবা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ মে) সকাল ৭ টায় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আর্শাদ।
তিনি বলেন, নিহত শিশু দীপ্ত মন্ডল (৮) উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের কাজীবাড়ির দীপক মন্ডলের ছেলে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, একই এলাকার রতন বিশ্বাস, তার স্ত্রী ইভা ও নয়ন শীল।
ওসি আলী আর্শাদ আলী বলেন, গত ২৭ মে রাত ১১ টায় বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় দীপ্ত। এ ঘটনায় তার বাবা দীপক মন্ডল ২৮ মে রাতে উজিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ঘটনার চার দিন পর প্রতিবেশী রতন বিশ্বাস ও নয়ন শীলের ওপর সন্দেহ করে স্থানীয়রা। পরে আজ গভীর রাত সাড়ে তিনটায় স্থানীয়রা রতন ও নয়নকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা দীপ্তকে হত্যার কথা স্বীকার করে। এ সময় পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ভোর সাড়ে পাঁচটায় পার্শ্ববর্তী একটি ডোবা থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় দীপ্তর লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রতন বিশ্বাস, তার স্ত্রী ইভা এবং নয়ন শীলকে গ্ৰেপ্তার করা হয়েছে।
ওসি আরও জানান, শিশুটির লাশ বস্তাবন্দি অবস্থায় ডোবায় ফেলে রাখে হত্যাকারীরা। শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর লাশ উদ্ধার
রাজশাহীতে আবাসিক হোটেল থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
সিলেটে যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার
বরিশালে সাংবাদিককে অপহরণ চেষ্টার অভিযোগে আটক ১
বরিশাল নগরীতে সময় টেলিভিশনের ব্যুরো চিফ অপূর্ব অপুকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে রবিবার দুপুরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক হরিদাস নাগ জানান, আটক ব্যক্তি হলেন মুমীতু কমিউনিটি সেন্টারের মালিক শাহিন হোসেন মল্লিক।
বিকাল ৩টার দিকে নগরীর শীতলা খোলা এলাকায় মুমিতু কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে অপূর্ব অপু জানান, একটি দুর্ঘটনার খবর কভার করে পায়ে হেঁটে অফিসে ফিরছিলেন তিনি। এসময় কমিউনিটি সেন্টারের কাছে পৌঁছালে রিকশায় থাকা এক ব্যক্তি তার কাজের জন্য তাকে গালিগালাজ করতে থাকে।
তিনি বলেন, ‘ সে এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে। নিউজ কেন করি, এই সব নিয়ে গালাগাল শুরু করে। একপর্যায়ে আমার সাথে ধস্তাধস্তি শুরু হলে আমার দিকে ও ইট ও কাঁদা ছুড়ে মারে। তারপর আমি দৌড় দিয়ে মুমীতু কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এলে আরও এক ব্যক্তি আমাকে সাদা একটি প্রাইভেটকারে উঠানোর চেষ্টা করে। তারপর আবার দৌড় দিয়ে পালাই। এরপর সহকর্মী ও পুলিশকে ফোন দেই। আমার মাথায়ও আঘাত করা হয়েছে। কি কারণে বা কোন কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে এই হামলা করেছে সেটা বলতে পারছি না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রত্যক্ষদর্শী ইউএনবিকে জানান, সাংবাদিককে অপহরণের চেষ্টাকারীদের মধ্যে সাবেক স্থানীয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (জেসিডি) নেতা জেহাদ, মামুন ও আলম ছিলেন।
ডিবি পুলিশের (বিএমপি) উপকমিশনার মঞ্জুর হোসেন বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন এবং শিগগিরই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।
বরিশাল: শাহ আমানতে ২৮ স্বর্ণের বারসহ বিদেশ ফেরত যাত্রী আটক
মিরসরাইয়ে র্যাবের ওপর হামলার ঘটনায় আটক ১৩
বোনের জানাজায় অংশ নিতে গিয়ে ভাইয়ের মৃত্যু
বরিশালে বোনের জানাজায় অংশ নিতে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় রমজান হাওলাদার (৩৮) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লাশ শনাক্তকালে নিহতের মেয়ের জামাই মেহেদী হাসান সজল এ তথ্য জানিয়েছেন। নিহত রমজান বাকেরগঞ্জ উপজেলার সুন্দরকাঠি গ্রামের মৃত আবুল কাশেম হাওলাদারের ছেলে।
মেহেদী জানান, শনিবার দিবাগত রাতে বাকেরগঞ্জের দুধল মৌ ইউনিয়নের সুন্দরকাঠি গ্রামের নিজবাড়িতে মারা যান সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রমজানের বোন ময়না বেগম। রবিবার সকাল ১০টায় বোনের জানাজায় অংশ নিতে রমজান শনিবার রাতে ঢাকা থেকে যমুনা পরিবহণে বাকেরগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। গাড়িটি রবিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উজিরপুর উপজেলার বামরাইল এলাকায় পৌঁছালে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়।
উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আরশাদ জানিয়েছেন, এ সড়ক দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: উজিরপুরে বাস দুর্ঘটনায় শিশুসহ নিহত ৮, আহত ২০
পটুয়াখালীতে ঘুমন্ত স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা: অভিযুক্ত স্বামী আটক
পটুয়াখালীর দুমকিতে ঘুমন্ত অবস্থায় সাবেক স্ত্রীর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামীকে কুষ্টিয়া থেকে আটক করা হয়েছে।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সামন্ত গ্রামের বাড়ি থেকে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে তাকে আটক করে পুলিশ।
আটক আবদুল জলিল একই এলাকার নূর আলীর ছেলে।
বাউফল-দুমকি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শাহেদ চৌধুরী বলেন, আমাদের জেলা পুলিশ সুপার ( মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ পিপিএম)'র প্রচেষ্টায় এবং কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপারের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যে আবদুল জলিলকে আমরা আটক করতে সক্ষম হয়েছি।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে আটক ২, ফেনসিডিল জব্দ
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে দুমকির পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের উত্তর পাঙ্গাসিয়া গ্রামের বাবার বাড়িতে ঘুমন্ত স্ত্রী ইতি বেগমের গায়ে পেট্রোল দিয়ে আগুন দিলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। পরে কৌশলে জলিল বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ইতিকে প্রথমে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় পাঠায়। তবে বরিশাল থেকে ঢাকা নেয়ার পথে শুক্রবার (২৭মে) সকাল ৭ টার দিকে ইতির মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে গাঁজা জব্দ,আটক ২
দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আলামত হিসেবে ঘটনাস্থল থেকে দুটি পেট্রোলের বোতল জব্দ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর ইতির লাশ রাতেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ইতির বাবা বাদি হয়ে জলিলকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
বরগুনা গণহত্যা দিবস: জেলখানায় ৭৬ জনকে গুলি করে হত্যা
ঐতিহাসিক ২৯ ও ৩০ মে বরগুনায় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের এই দু’দিনে বরগুনা জেলখানায় ৭৬ জন স্বাধীনতাকামী নিরপরাধ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ২৭ মে মেজর নাদের পারভেজের নেতৃত্বে পাক হানাদার বাহিনী বরগুনায় প্রবেশ করে। তৎকালীন গণপূর্ত ডাক বাংলোয় অবস্থান নেয় বর্বর এ বাহিনীর সদস্যরা। ওইদিনই তারা বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন ও মুসলিম লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে একটি নিখুঁত গণহত্যার পরিকল্পনা করেন। তাদেরকে দেশীয় রাজাকার আলবদর বাহিনীর সদস্যরা সহায়তা করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা মুক্তিকামী পরিবারে হানা দিয়ে নারী ও পুরুষদের বেঁধে ক্যাম্পে নিয়ে আসে। সেখান থেকে নারীদের ডাকবাংলোয় আর পুরুষদের জেলখানায় পাঠানো হয়। পৈশাচিক নির্যাতন শেষে মেয়েদের পরের দিন ছেড়ে দেয়া হয়। জানানো হয় পুরুষদের দু’দিন পরে ছাড়া হবে। কিন্তু তাদের আর দেখা পায়নি পরিবারের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: হাতিয়া গণহত্যা দিবস পালিত
পরবর্তীতে ২৯ ও ৩০ মে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম জঘন্য এক ঘটনা ঘটে বরগুনার জেলখানায়। কারা অভ্যন্তরে ২৯ মে সকালে সারিবদ্ধ দাঁড় করিয়ে গুলি করা হয় ৪২ জন মুক্তিকামী জনতাকে। পরের দিন সকালে একইভাবে আরও ৩৪ জনকে হত্যা করা হয়। এই শহীদদের লাশও স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। জেলখানার পশ্চিম পাশে গণকবরে মাটি চাপা দেয়া হয় তাদের। মুক্তিযুদ্ধে অনেক নারকীয় ঘটনা ঘটেছে তবে জেলখানার অভ্যন্তরে গণহত্যার ঘটনা বিরল।
বরগুনা-১ আসনের সাংসদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বাবা ধৈর্য্যধর দেবনাথ ছিলেন সেই মহান শহীদদের ভেতরে অন্যতম প্রধান। তাকে ৩০ মে হত্যা করা হয়েছিল।
সেদিনের হত্যাকাণ্ড থেকে ভাগ্যগুণে বেঁচে যাওয়া কয়েকজন জানিয়েছেন, জেলখানা থেকে অনেক লোককে ছেড়ে দেয়া হলেও তখনকার তুখোড় ছাত্রনেতা শম্ভু মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে এবং বরগুনা শহরে তাদের বাড়িটি থেকে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হওয়ায় তার বাবাকে ছাড়া হয়নি।
এ কারণে সেসময়ে পটুয়াখালী জেলার সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত, ৬ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের মেজর নাদের পারভেজ প্রকাশ্য জনসভায় তখনকার প্রখ্যাত ছাত্রনেতা শম্ভুসহ ১২ জন ছাত্রনেতা এবং মুক্তিযোদ্ধার মাথার মূল্য এক সের স্বর্ণ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু বেশ কয়েকবারের চেষ্টাতেও ছাত্রনেতা শম্ভুকে ধরতে না পেরে তার বাবাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: জাতীয় গণহত্যা দিবস আজ
পাক বাহিনীর মেজর নাদের পারভেজ এবং ক্যাপ্টেন শাখাওয়াতের পক্ষ থেকে শর্ত দেয়া হয়েছিল, ‘শম্ভুকে আমাদের হাতে তুলে দিন অথবা তার খোঁজ দিন, আমরা আপনাকে ছেড়ে দেবো।’ একজন মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের বাবা হয়ে সেই শর্ত মেনে নিতে রাজি হননি তিনি। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জীবনের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষায় তিনি সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। অমানসিক নির্যাতন শেষে তাকে দুটো গুলি করেছিলেন তারা। প্রথম গুলিতে মৃত্যু না হওয়ায় দ্বিতীয় গুলিটি করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
এ প্রসঙ্গে বরগুনা সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ একাত্তর বরগুনা জেলা কমিটির আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন মনোয়ার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বরগুনা-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বরগুনার বাড়িটি মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রাগার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এ কারণে ধরে নেয়া সব বয়স্ক মানুষকে ছেড়ে দেয়া হলেও সংসদ সদস্যের বাবাকে ছাড়া হয় নি।
এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ১৯৭১ সালের ২৯ ও ৩০ মে বরগুনার ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরতম কালো অধ্যায় রচিত হয়েছিল। মুক্তিকামী সাধারণ জনগণকে ধরে নিয়ে তাদেরকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়, গুলির পরেও যারা মারা যায়নি তাদেরকে কোদাল ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছিল। সেদিনের সে মহান শহীদদের ভেতরে আমার বাবাও ছিলেন। তিনি আমাকে বাঁচাতে এবং দেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে নির্ভীক চিত্তে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম গণহত্যা দিবস : ৩১ বছরেও বিচার পাননি ভুক্তভোগীরা
এমপি বলেন, এটা আমার জন্য যেমন অত্যন্ত গর্বের তেমনি কষ্টের। সেদিন আমার বাবাসহ দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যারা আত্মত্যাগ করেছেন তাদের প্রতি আমি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।
তিনি বলেন, বরগুনা বধ্যভূমির সংস্কার ও উন্নয়নের লক্ষ্য ইতিমধ্যেই আমাদের সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেখানে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য ভবিষ্যতেও আমি যথাযথ পদক্ষেপ নেবো।
ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ অবৈধ ক্লিনিক সিলগালা, আটক ১
ঠাকুরগাঁওয়ে তিনটি অবৈধ ক্লিনিক সিলগালা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় শনিবার (২৮মে) বিকেলে এ অভিযান পরিচালনার সময় একজনকে আটক করা হয়।
জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে এ ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার রহমান।
এসময় জেলা শহরের পাঁচটি ক্লিনিকে তারা অভিযান পরিচালনা করেন। পরে বিভিন্ন অনিয়ম ও নিবন্ধনহীন ক্লিনিকে কাগজপত্র না থাকায় মেডিনোভা ডক্টরস জোন এন্ড ডায়াগস্টিক সেন্টার, নিউরন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও উত্তরা ডক্টরস ডায়াগনস্টিক সেন্টার এই তিনটি প্রতিষ্ঠানে সিলগালা করা হয়। সে সময় আটক করা হয় একজনকে।
অভিযান চলাকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার রহমান সাংবাদিকদের জানান, নিবন্ধনহীন এবং লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকায় তিনটি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়াই চলছে রমরমা ব্যবসা। স্বাস্থ্য সেবার নামে গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে রোগীরা। সরকার স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার পর থেকেই জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার তদারকিতে স্বাস্থ্য বিভাগ নড়েচড়ে বসেছে।
জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করাসহ বন্ধ করা হবে অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন: ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অনিবন্ধিত ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
উজিরপুরে বাস দুর্ঘটনায় শিশুসহ নিহত ৮, আহত ২০
বরিশালের উজিরপুরে যমুনা লাইন পরিবহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে শিশুসহ আট যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ২০ যাত্রী আহত হয়েছেন। রবিবার সকাল সাড়ে ৫ টায় উপজেলার বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের বামরাইল নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আর্শাদ।
তিনি বলেন, গাড়িটি ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে ভান্ডারিয়ার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। পথে উপজেলার বামরাইল পৌঁছালে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আটজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আরও ২০ যাত্রী আহত হয়েছেন। নিহত তিনজনের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে তাদের কারো নাম পরিচয় জানা যায়নি।
গাড়িটি উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট কাজ করছে।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট লিডার মো. জাহাঙ্গীর বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের গৌরনদী ও উজিরপুরের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ ঘটনায় বেশ কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। গাড়িটি গাছের মধ্যে ঢুকে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গাড়িটি কেটে যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাচ্ছে। উদ্ধার অভিযান শেষ করে হতাহতের সংখ্যা বলা যাবে।
উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. প্রণব রায় শুভ বলেন, এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত আট জনের লাশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে। ৫/৬ জনের চিকিৎসা চলছে।
আরও পড়ুন: বরিশালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২
বরিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় এনজিও কর্মকর্তার মৃত্যু
বরিশালে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে স্বামীর ‘আত্মহত্যা’
বরিশালে ২৮ বছর বয়সী এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের আটিপাড়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত আরাফাত হোসন রাজিব (২৮) পেশায় একজন কৃষক ছিলেন।
স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে রাজিব ‘আত্মহত্যা’ করেছে দাবি করে নিহতের ভাই সাকিবুর রহমান জানান, শুক্রবার সকালে রাজিব ও তার স্ত্রীর মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বাক-বিতণ্ডা হয়। এ ঘটনায় রাজিবের স্ত্রী অভিমান করে ওইদিন তার বাবার বাড়ি চলে যায়।ওই রাতে রাজিব খাবার খেয়ে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে যায়। শনিবার বেলা ১১টার দিকে ডাকাডাকি করলে কোন সাড়া না পেয়ে ঘরের বেড়া ভেঙে ভিতরে ঢুকে আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় রাজিবের লাশ দেখতে পান।
এ ব্যাপারে উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আর্শাদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিবারের কোন পক্ষের অভিযোগ না থাকায় এবং লাশের ময়নাতদন্ত না করার অনুরোধে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাসা বদল নিয়ে স্বামীর সঙ্গে বিরোধ, গৃহবধূর ‘আত্মহত্যা’
প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে কলেজছাত্রের আত্মহত্যা!