���������������������-���������������������
ইডিসিএফ থেকে বাংলাদেশকে ৩ বিলিয়ন ডলার প্রদানে ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্ট সই
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ) থেকে ২০২৩ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়ের ঋণ সংক্রান্ত একটি নতুন ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্ট সই করেছে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বোর্ড অব গভর্নরসের ৫৬তম বার্ষিক সাধারণ সভা উপলক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচিওনে সই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি ও অর্থ বিষয়ক ফার্স্ট ভাইস মিনিস্টার কিসুন বাং এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান নিজ নিজ পক্ষের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
উভয় পক্ষের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের মধ্যে এ উপলক্ষে ঢাকা এমআরটি লাইন ৪-এর জন্য সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সিএনজিচালিত বাস ক্রয় ও রেলওয়ে সিগন্যালিং ব্যবস্থার আধুনিকায়ন সংক্রান্ত দুটি প্রকল্পের জন্য ইডিসিএফ ঋণ চুক্তি (এল/এ) সই হয়েছে।
সই হওয়া অ্যারেঞ্জমেন্টটি দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের পক্ষ থেকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত ছাড়ের ঋণ প্রদানের আইনি ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
অ্যারেঞ্জমেন্ট অনুসারে, ইডিসিএফ ঋণের পরিশোধের সময়কাল ১৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ৪০ বছর এবং বার্ষিক সুদের হার হবে ০.০১ %থেকে ০.০৫% এর মধ্যে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও ইইউ দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে সম্মত
অ্যারেঞ্জমেন্ট অনুসারে, প্রার্থী প্রকল্পগুলো ভবিষ্যতে দুই সরকারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে।
নতুন ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্ট সইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে দক্ষিণ কোরিয়ার অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট এইড (ওডিএ) এর দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাপক হয়ে উঠেছে।
সদ্য সই চুক্তির দ্বারা অনুমোদিত পরিমাণ পূর্ববর্তী ইডিসিএফ ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবস্থার তুলনায় চারগুণ বেশি; যা ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৭০০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।
এ পর্যন্ত কোরিয়ান সরকার ইডিসিএফ-এর মাধ্যমে এক দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মোট পরিমাণ সহ ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পকে সমর্থন করেছে।
কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিবেচনায় যথেষ্ট পরিমাণে সহায়তা বাড়ানোর সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জাং-কুয়েন বলেন, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীতে একটি নতুন ইডিসিএফ ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্ট সই করা বিশেষভাবে অর্থবহ।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য রেয়াতযোগ্য ঋণের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির সঙ্গে আরও আশা করা যায় যে কোরিয়া বাংলাদেশে মেগা প্রকল্পগুলোকে সমর্থন করতে সক্ষম হবে, এই ধারায় বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে এই ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা বাংলাদেশিদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা যেমন-পরিবহন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে এবং বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব বৃদ্ধিতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দলকে রেখে অন্য রাজনৈতিক দলকে ‘সমর্থন’ করে না যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকব: জাপানি রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে 'অবাধ ও সুষ্ঠু' নির্বাচনের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড বাংলাদেশে 'অবাধ ও সুষ্ঠু' নির্বাচনের গুরুত্ব এবং মানবাধিকার, শ্রম অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষণাবেক্ষণে তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক গভীর করতে আমি পররাষ্ট্র সচিব মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনসহ মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছি। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার উদারতার জন্য আমরা বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি দু'দেশের জনগণের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের অসাধারণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আরও উজ্জ্বল অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক গতিপথের প্রশংসা করেন।
মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানান, আন্ডার সেক্রেটারি নুল্যান্ড রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান এবং দু'দেশের জনগণের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সম্পৃক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর উন্মুক্ততার প্রশংসা যুক্তরাষ্ট্রের
২০২৩ সালের ৩ মে ওয়াশিংটন ডিসিতে নবম যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব সংলাপের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স বৈঠকে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন।
উভয়পক্ষই বিভিন্ন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বের প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
পররাষ্ট্র সচিব স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম করতে নির্বাচন কমিশনের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সম্পৃক্ত করার উন্মুক্ততার প্রশংসা করে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দলকে রেখে অন্য রাজনৈতিক দলকে ‘সমর্থন’ করে না যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
রোহিঙ্গা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতির 'নীরব সাক্ষী' জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ: রাষ্ট্রদূত মুহিত
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত বলেছেন, রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর প্রায় ছয় বছর কেটে গেছে। এই সংকট নিরসনে নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং এটি ক্রমাগত নীরব ভূমিকা পালন করেছে।
বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অনুষ্ঠিত ‘ফিউচারপ্রুফিং ট্রাস্ট ফর সাস্টেইনিং পিস’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বক্তব্য প্রদানকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
জনগণ এবং বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অবিশ্বাসের প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূত মুহিত বিশ্বশান্তির জন্য দৃশ্যমান হুমকিসমূহ মোকাবিলা এবং রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের মতো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের সুরক্ষায় সংহতি ও ঐক্য প্রদর্শনের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাঝে বিশ্বাস অর্জনের নিমিত্ত্ব পরিষদকে আরও বেশি সক্রিয় হওয়া আবশ্যক।
মুহিত তার বক্তব্যে বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে শান্তিরক্ষীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন এবং এ প্রসঙ্গে তিনি জাতিসংঘ শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের (পিবিসি) এতদ্সংক্রান্ত ম্যান্ডেট আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ইন্টারন্যাশনাল সিবেড অথরিটির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করলেন রাষ্ট্রদূত মুহিত
তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের মতো নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় পিবিসির পরিপূরক ভূমিকা গ্রহণের জন্য পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘দুই মেয়াদের জন্য পিবিসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ কমিশনের সম্ভাবনাকে অধিকতর প্রসারিত করার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়েছে।’
তিনি টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি বিনির্মাণে নারীর পূর্ণ, সমান ও অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং মানবাধিকার রক্ষাসহ বৃহত্তর শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে জাতিসংঘের নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।
মে ২০২৩ এর জন্য সুইজারল্যান্ড নিরাপত্তা পরিষদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে এবং দেশটি পরিষদে তার প্রথম সভাপতিত্বের একটি সই-এর ইভেন্ট হিসেবে এই উচ্চ পর্যায়ের উন্মুক্ত বিতর্কের আয়োজন করেছিল। এতে সভাপতিত্ব করেন সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইগনাজিও ক্যাসিস।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের ৩ সংস্থার নির্বাহী বোর্ডের ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রদূত মুহিত
আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সম্পৃক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর উন্মুক্ততার প্রশংসা যুক্তরাষ্ট্রের
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুকের রূপরেখা তুলে ধরেন।
মার্কিন পক্ষ দুই দেশের নিজ নিজ ইন্দো-প্যাসিফিক নথির মধ্যে সমন্বয়ের বেশ কয়েকটি ক্ষেত্র উল্লেখ করেছে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম করতে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্র সচিবকে অবহিত করেন।
যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সম্পৃক্ত করার উন্মুক্ততার প্রশংসা করে।
ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে বুধবার ৯ম বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্ব সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স অ্যাম্বাসেডর ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
পররাষ্ট্র সচিব মোমেন বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফর এবং পরে ওয়াশিংটন ডিসিতে যাওয়ার বিষয়ে মার্কিন পক্ষকে অবহিত করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের সাম্প্রতিক মানবাধিকার কর্মকাণ্ডে কিছু ইতিবাচক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকব: জাপানি রাষ্ট্রদূত
তিনি র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে হস্তান্তরের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
নুল্যান্ড এ বছরের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পুনর্বিবেচনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণার কথা স্বীকার করেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বর্ধিত বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য শ্রম খাতের সংস্কারে অব্যাহত অগ্রগতির গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
উভয়পক্ষই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান এবং প্রাণবন্ত ব্যবসায়িক সহযোগিতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
তারা বাংলাদেশে মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টদের ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততা বাড়াতে সাইবার নিরাপত্তা ও ডেটা সুরক্ষায় আরও কাজ চালিয়ে যেতে সম্মত হন।
রাষ্ট্রদূত নুল্যান্ড মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অসাধারণ উদারতার প্রশংসা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত মানবিক সহায়তার আশ্বাস দেন।
পররাষ্ট্র সচিব মোমেন রাষ্ট্রদূত নুল্যান্ডকে রোহিঙ্গাদের অর্থায়নের সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং সীমিত সংখ্যক রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য নতুন করে পাইলট স্কিম সম্পর্কে অবহিত করেন।
উভয়পক্ষই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন কর্মসূচি আরও বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
উভয়পক্ষ জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত ইস্যুতে তাদের মতামত বিনিময় করে এবং এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আলোচনা করে।
পররাষ্ট্র সচিব আগামী বছর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় পার্টনারশিপ ডায়ালগের ১০ম রাউন্ডে আন্ডার সেক্রেটারি নুল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হোয়াইট হাউজ ও ইউএসএআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিটি নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো চ্যালেঞ্জ নেই: সিলেটে আইজিপি
বাংলাদেশ ও ইইউ দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে সম্মত
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ ও ইইউ অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে সম্মত হয়েছে।
ব্রাসেলসে মঙ্গলবার ও বুধবার (২ ও ৩ মে) পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব বিষয়ক কমিশনার জুটা উরপিলাইনেন, স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কমিশনার মিজ ইলভা জোহানসন, ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক কমিশনার জেনেজ লেনারসিচ, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান বার্ন্ড ল্যাঞ্জ, পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ডেভিড ম্যাকঅ্যালিস্টার এবং মানবাধিকার বিষয়ক ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোরের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠকে এ আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের অসাধারণ উন্নয়ন অগ্রযাত্রার প্রশংসা করে বাংলাদেশকে একটি সাফল্যের গল্প বলে অভিহিত করেছে।
আরও পড়ুন: এসডিজি: বিশ্বকে 'ট্র্যাকে ফিরে' পেতে ইইউকে সহায়তা করার আহ্বান জানাল জাতিসংঘ প্রধান
অপরদিকে স্বাধীনতার পর থেকে দেশের উন্নয়নে ইইউ-এর ভূমিকা বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দেশের সামাজিক কাঠামোতে ইতিবাচক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ইবিএ-এর অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
এছাড়া স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা হতে উত্তরণের প্রস্তুতি সম্পর্কে ইইউকে অবহিত করে ভবিষ্যতে ইইউ-এর আরও বড় ভূমিকা পালনের আশা প্রকাশ করা হয়।
এছাড়া এলডিসি-পরবর্তী বাণিজ্য সম্পর্ক, ইইউ-এর গ্লোবাল গেটওয়ে উদ্যোগের অধীনে অবকাঠামো উন্নয়ন, গ্রিন ট্রানজিশন, দক্ষ অভিবাসন, মানবাধিকার উন্নয়নের বিষয়গুলো বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ ও ইইউ এর সম্পর্ককে আরো সুসংহত করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি ভিত্তি হিসেবে অংশীদারিত্ব সহযোগিতা চুক্তি দ্রুত শুরুর আশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনৈতিক ও মানবিক সহায়তার প্রশংসা করেছে বাংলাদেশ পক্ষ।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্যেও ইইউ-এর সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ।
বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ইন্দো-প্যাসিফিক, মানব পাচার এবং অভিবাসী চোরাচালান প্রতিরোধসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ইস্যুতে উভয় পক্ষ মতবিনিময় করেছে।
বৈঠকে সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, বেলজিয়াম ও ইইউতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ব্রাসেলসে চারদিনের সরকারি সফরে রয়েছেন।
এ সফরে ইউরোপীয় কমিশনের কমিশনার এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও ইউরোপীয় থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সঙ্গে মতবিনিময় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: রানা প্লাজা ধসের মতো বিপর্যয় এড়াতে দরকার নিয়ন্ত্রিত আরএমজি শিল্প: ইইউ
বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলার কৌশল নিয়ে ইইউ, দক্ষিণ এশিয়ার নীতি নির্ধারক-বিশেষজ্ঞদের আলোচনা
নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকব: জাপানি রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেছেন, তিনি বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ উল্লেখ করে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে পছন্দ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সরকারি সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক 'কৌশলগত অংশীদারিত্বে' উন্নীত হওয়ার পর এক সাংবাদিক এ বিষয়ে জাপানের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকব। এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’
বুধবার টোকিওতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার মধ্যে সাম্প্রতিক বৈঠকের বিষয়ে জাপান দূতাবাসে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
ইওয়ামা কিমিনোরি এই মন্তব্য করেছিলেন ব্রিফিংয়ের সময় যখন একজন সাংবাদিক গত বছরের নভেম্বরে পূর্ববর্তী জাপানি রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যের বিষয় উল্লেখ করেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা গত ২৬ এপ্রিল জাপানে সরকারি সফর করেন এবং একটি শীর্ষ বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও জাপান 'বিস্তৃত ও লক্ষ্যভিত্তিক' অংশীদারিত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করছে: রাষ্ট্রদূত
বিদায়ী জাপানি রাষ্ট্রদূতের আশা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে: ডেপুটি প্রেস সচিব
বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দলকে রেখে অন্য রাজনৈতিক দলকে ‘সমর্থন’ করে না যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
যুক্তরাষ্ট্র পুনর্ব্যক্ত করেছে যে তারা বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে রেখে অন্য রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে ‘সমর্থন’ করে না।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল ২ মে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘এবং আমরা যেমন বলেছি, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থন করে এবং আমরা একটি রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে রেখে অন্য রাজনৈতিক দলকে ‘সমর্থন’ করি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিস্তৃতভাবে আমি যা বলব তা হলো- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উদ্বেগ ও আমাদের অভিন্ন স্বার্থসম্পর্কে আমাদের বন্ধু ও অংশীদারদের সঙ্গে সৎ সংলাপে হস্তক্ষেপ বলে মনে করে না, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে বা নাও করতে পারে, যা আঞ্চলিক উদ্বেগ ও আঞ্চলিক অগ্রাধিকারগুলোকে প্রভাবিত করতে পারে বা নাও করতে পারে।’
প্যাটেল বলেন, ঢাকার মার্কিন দূতাবাস বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের সব মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দূত হিসেবে কাজ করে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক ৫ প্রকল্পে সমন্বিত ২.২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ চুক্তি সই
তিনি বলেন, ‘এবং আমি যা লক্ষ্য করব - আপনারা গতকাল আমাকে এই বিষয়ে কথা বলতে শুনেছেন যে বাংলাদেশ আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ। এটি এমন একটি দেশ যার সঙ্গে আমরা আমাদের সম্পর্ক গভীর করতে আগ্রহী।’
২০২২ সালে দুই দেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করেছে এবং তারা বিশ্বাস করে যে বেশ কয়েকটি বিষয় রয়েছে যেখানে উভয় দেশ সহযোগিতা আরও গভীর করতে পারে, যা কেবল বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নয়, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গেও।
প্যাটেল জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবিলা, অর্থনৈতিক সম্পর্ক গভীর করা এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্কিত নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা উল্লেখ করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের যে কোনো দেশের জন্য এটাই আমাদের প্রত্যাশা যে নির্বাচন যেন অবাধে, সুষ্ঠুভাবে এবং আপনারা যেমন বলেছেন, নিরপেক্ষতার সঙ্গে তা অনুষ্ঠিত হোক, একইভাবে আমিও বলতে পারি।’
আরও পড়ুন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আরেকটি ব্যাংক ব্যর্থতা: ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক জেপি মরগানের কাছে বিক্রি
সত্য ও সত্য বলা মানুষগুলোকে আক্রমণ করা বন্ধ করতে হবে: বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে জাতিসংঘের মহাসচিব
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস (৩ মে) উপলক্ষে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাণী দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তিন দশক ধরে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের কার্যক্রমের কথা স্মরণ করে আসছে। এই দিবসটি একটি সহজ সত্যকে তুলে ধরে যা হলো - আমাদের সার্বিক স্বাধীনতা নির্ভর করে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর।’
তিনি আরও বলেন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হলো গণতন্ত্র ও ন্যয়বিচারের ভিত্তি। স্বাধীন সংবাদমাধ্যম বস্তুনিষ্ঠ তথ্য উপস্থাপন করে আমাদের মতামত গঠনে এবং ক্ষমতায় থেকে সত্য বলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা মানবাধিকারেরই প্রাণশক্তি।
মহাসচিব বলেন, ‘কিন্তু বিশ্বের প্রতি প্রান্তে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা আজ আক্রান্ত। মিথ্যা তথ্য দ্বারা সত্য হুমকির সম্মুখীন এবং বিদ্বেষপ্রসূত বক্তব্য সত্য ও অলীক কাহিনীর মধ্যেকার ফারাক, বিজ্ঞান ও ষড়যন্ত্রের মধ্যেকার ফারাককে ম্লান করে দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: প্রফেসর ইউনূসকে ‘জিরো ওয়েস্ট অ্যাডভাইজরি বোর্ড’-এর সদস্য নিযুক্ত জাতিসংঘের মহাসচিবের
তিনি বলেন, ক্রমান্বয়ে গুটি কয়েক মানুষের হাতে সংবাদমাধ্যম শিল্পের নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে। বহু স্বাধীন সংবাদ সংস্থা আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে, পড়ছে। সাংবাদিকের কণ্ঠরোধে দেশে দেশে আইন প্রণয়ন হচ্ছে। এতে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের সুযোগ যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা আরও বেশি হুমকিতে পড়ছে।
মহাসচিব আরও বলেন, এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ইন্টারনেটে এবং প্রাত্যহিক জীবনে সরাসরি আক্রমণের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমকর্মীরা। হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, আটক ও কারাবন্দী হওয়া যেন তাদের জীবনের নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠছে।
বিশ্বে ২০২২ সালে অন্তত ৬৭ জন সংবাদমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। আগের বছরের তুলনায় এই সংখ্যা অবিশ্বাস্যভাবে ৫০ শতাংশ বেশি। নারী সাংবাদিকদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অনলাইনে সহিংসতার শিকার হয়েছেন এবং এক-চতুর্থাংশকে সরাসরি হুমকি দেওয়া হয়েছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষায় এবং তাদের ওপর হওয়া অন্যায়ের দায়মুক্তির প্রবণতার ইতি টানতে ১০ বছর আগে জাতিসংঘ প্ল্যান অব অ্যাকশন অন দ্য সেফটি অব জার্নালিস্ট বা সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় কর্মপরিল্পনা প্রণয়ন করে।
তিনি আহ্বান জানান, আজ এবং প্রতিটা বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম স্বাধীনতা দিবসে সারা বিশ্বকে অবশ্যই একসুরে কথা বলতে হবে। হুমকি ও আক্রমণ বন্ধ করতে হবে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সাংবাদিকদের আটক ও কারাবন্দী করা বন্ধ করতে হবে। মিথ্যা ও গুজব রুখে হবে। সত্য ও সত্য বলা মানুষগুলোকে আক্রমণ করা বন্ধ করতে হবে।
মহাসচিব বলেন, সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো সাংবাদিকের পাশে সারা বিশ্ব দাঁড়িয়ে আছে।
আরও পড়ুন: আল জাজিরার সাংবাদিক হত্যায় শোকাহত জাতিসংঘের মহাসচিব, নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি
সৌদি আরবে অবতরণের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশে ফিরবেন সুদানে আটকা পড়া বাংলাদেশিরা: রিয়াদ দূতাবাস
সুদান থেকে প্রত্যাবর্তনকারী বাংলাদেশিদের সৌদি আরবের বেঁধে দেওয়া ৭২ ঘন্টার মধ্যেই দেশে ফেরত পাঠানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী সৌদি কর্তৃপক্ষকে প্রাথমিক নিশ্চয়তা প্রদান করেন।
সুদান থেকে বাংলাদেশিদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মক্কা শাখার প্রধান মাজেন বিন হামাদ আল হামালি-এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
সার্বিক ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে জেদ্দা কনস্যুলেটের তত্ত্বাবধানে জেদ্দায় প্রত্যাবাসনকারীদের বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইংলিশ সেকশনে থাকার ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠকে মদিনা থেকে বিমানের ফ্লাইট জেদ্দায় অবতরনের জন্য দ্রুতগতিতে ল্যান্ডিং পারমিট ইস্যু করবে বলে সৌদি কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়তা প্রদান করে এবং প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত অন্যান্য জরুরি যে কোনো বিষয়ে সৌদি পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন: সুদানে অবস্থানরত সকল বাংলাদেশিকে নিবন্ধন করার আহ্বান শাহরিয়ারের
এ সময় মাজেনের সঙ্গে ছিলেন মক্কা অঞ্চলের চিফ অব প্রোটোকল এবং কনসাল কনস্যুলার। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হোক এবং রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মিশন উপ-প্রধান মো. আবুল হাসান মৃধা।
বৈঠকে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মক্কা অফিসের প্রধান মাজেন সুদান থেকে বাংলাদেশিদের প্রত্যাবর্তনের জন্য সৌদি পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এরপর জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইংলিশ সেকশন পরিদর্শন করেন এবং সুদান থেকে প্রত্যাবর্তনকারী বাংলাদেশিদের সাময়িকভাবে থাকার প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং জেদ্দা মিশনকে দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।
এছাড়া রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ বিমানের জেদাস্থ রিজিওনাল ম্যানেজারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুদান থেকে প্রত্যাবর্তনকারী বাংলাদেশিদের সময়মতো দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য বিমানে পর্যাপ্ত আসন বরাদ্ধ বিষয়ে আলোচনা করেন ও বিমানের শিডিওল নির্ধারণ করে দেন।
আরও পড়ুন: সুদান থেকে বাংলাদেশিদের স্থানান্তরে সৌদি আরব ও ইন্দোনেশিয়ার সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ: শাহরিয়ার
শাহরিয়ার আলম ব্রাসেলসে ৩টি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিয়েছেন
বর্তমানে ব্রাসেলসে অবস্থানরত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ইউরোপীয় কমিশন ও ইইউ পার্লামেন্টের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন।
মঙ্গলবার তিনি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান বার্ন্ড ল্যাঙ্গের সাথে সাক্ষাৎ করেন; স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কমিশনার ইলভা জোহানসন এবং ইউরোপীয় কমিশনের সদর দপ্তরের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টের কমিশনার জেনেজ লেনারসিক।
শাহরিয়ার এবং ল্যাঞ্জ বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে দক্ষ অভিবাসনের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। প্রতিমন্ত্রী এবং জোহানসন পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক যেমন বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন, উন্নয়ন সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন:সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের অন্য দেশের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হবে: শাহরিয়ার
শাহরিয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে লেনারসিক অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করেন। উভয় পক্ষ পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বিশেষ করে রোহিঙ্গা ইস্যু এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়েও আলোচনা করেছে।
বৈঠকে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নাহিম রাজ্জাক এমপি।
শাহরিয়ার বেলজিয়াম সফর শেষে ৫ মে লন্ডনে যাবেন এবং রাজা চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গীতে যোগ দেবেন।
আরও পড়ুন: সুদান থেকে বাংলাদেশিদের স্থানান্তরে সৌদি আরব ও ইন্দোনেশিয়ার সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ: শাহরিয়ার