পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুকের রূপরেখা তুলে ধরেন।
মার্কিন পক্ষ দুই দেশের নিজ নিজ ইন্দো-প্যাসিফিক নথির মধ্যে সমন্বয়ের বেশ কয়েকটি ক্ষেত্র উল্লেখ করেছে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম করতে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্র সচিবকে অবহিত করেন।
যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সম্পৃক্ত করার উন্মুক্ততার প্রশংসা করে।
ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে বুধবার ৯ম বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্ব সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স অ্যাম্বাসেডর ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
পররাষ্ট্র সচিব মোমেন বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফর এবং পরে ওয়াশিংটন ডিসিতে যাওয়ার বিষয়ে মার্কিন পক্ষকে অবহিত করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের সাম্প্রতিক মানবাধিকার কর্মকাণ্ডে কিছু ইতিবাচক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকব: জাপানি রাষ্ট্রদূত
তিনি র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে হস্তান্তরের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
নুল্যান্ড এ বছরের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পুনর্বিবেচনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণার কথা স্বীকার করেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বর্ধিত বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য শ্রম খাতের সংস্কারে অব্যাহত অগ্রগতির গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
উভয়পক্ষই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান এবং প্রাণবন্ত ব্যবসায়িক সহযোগিতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
তারা বাংলাদেশে মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টদের ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততা বাড়াতে সাইবার নিরাপত্তা ও ডেটা সুরক্ষায় আরও কাজ চালিয়ে যেতে সম্মত হন।
রাষ্ট্রদূত নুল্যান্ড মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অসাধারণ উদারতার প্রশংসা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত মানবিক সহায়তার আশ্বাস দেন।
পররাষ্ট্র সচিব মোমেন রাষ্ট্রদূত নুল্যান্ডকে রোহিঙ্গাদের অর্থায়নের সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং সীমিত সংখ্যক রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য নতুন করে পাইলট স্কিম সম্পর্কে অবহিত করেন।
উভয়পক্ষই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন কর্মসূচি আরও বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
উভয়পক্ষ জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত ইস্যুতে তাদের মতামত বিনিময় করে এবং এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আলোচনা করে।
পররাষ্ট্র সচিব আগামী বছর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় পার্টনারশিপ ডায়ালগের ১০ম রাউন্ডে আন্ডার সেক্রেটারি নুল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হোয়াইট হাউজ ও ইউএসএআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিটি নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো চ্যালেঞ্জ নেই: সিলেটে আইজিপি